গুছিয়ে রাখা আবেগ পর্ব ১৩

0
488

#গুছিয়ে_রাখা_আবেগ
#পর্ব_১৩
#লেখিকা_আজরিনা_জ্যামি

বর্তমান,,

আবরার সেই পুরোনো সুভাসিনীর চিরকুট গুলো হাত দিয়ে ছুয়ে বলল,,

“শুনো সুভাসিনী তোমার নিশান তোমায় অপছন্দ করে না। সে যে তোমার থেকে অনেক আগেই তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছে। তুমি কি মনে করেছো তুমি আমায় চিরকুট লিখবে আর আমি সেটা বুঝতে পারবো না যদিও প্রথমবার বুঝতে পারি নি। কিন্তু দ্বিতীয় বার ঠিকই বুঝেছি কারন আমি তোমায় মার্কেটে দেখেছিলাম। তৃতীয়বার তুমি যখন আমার হাসির প্রশংসা করলে সেদিন তো সিওর ই হয়ে গেছিলাম যে তুমিই সেই কারন আমার হাসি মুখের দিকে তোমার মুগ্ধ চোখে তাকানো আমি দেখে ফেলেছিলাম। তাছাড়া তুমি আমার পেছনে আমার ব্যাগ ধরেছিল এ সেটাও দেখেছিলাম। তারপর তো এটাও দেখতাম আফরিন লুকিয়ে আমার রুমে আসতো আমার ব্যাগে কি যেন করতো আর সেদিনি আমি চিরকুট পেতাম। এভাবেই আমি জেনেও অবুঝের মতো থাকতাম। তোমাদের কাছে খেলার বাহানায় ব্যাগ রেখে আসতাম তুমি কত যত্ন করে চিরকুট রাখতে আমি সব দেখতাম আর ভিশন ইনজয় করতাম। আমি সেদিন এই জন্যই বলেছিলাম তোমাকে খোঁজা আমার জন্য ফরজ হয়ে গেছে কারন আমি দেখেছিলাম আফরিন দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ও যাতে না জানতে পারে আমি তোমার বিষয়ে জানি। তবে জানো কি তোমার ঐ চিরকুট গুলো দেখে আমার ভিশন ভয় হতো শেষ বেলায় আমি তোমায় পাবো তো। তোমাকে প্রত্যাখান করার পেছনে তোমার ভালো নিহিত ছিল। আমাকে ভালোবাসতে গিয়ে তুমি তোমার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে যাচ্ছিলে। তুমি নাইন থেকে টেনে উঠেছিল কোন রকমে পাশ করে অথচ তুমি ছিলে ক্লাসের ফার্স্ট গার্ল আমার জন্য তোমার পড়াশোনায় অনীহা বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছিলাম। তাছাড়া ঐ বয়সটা খুব খারাপ সুভাসিনী আমি জানি আমি যদি তোমায় আমার কথা জানাতাম তাহলে তুমি বলতে বিয়ে করতে যেটা কখনোই সম্ভব ছিল না। তোমার জন্য যে তোমার বাবা মায়ের অনেক স্বপ্ন ছিল তুমিই তো বলেছিলে নিশু কে । তুমিও চাইতে সবসময় উচ্চ পর্যায়ে যেতে তোমার বাবা মায়ের ইচ্ছা পূরণ করতে। তাই তো তোমাকে নিজের থেকে সরিয়ে দেওয়া। তুমি আজ ধন্য পড়াশোনা শেষ না করেও নিজেকে ব্যস্ত রাখতে বিজনেস এ ঢুকেছো বিজনেস ওয়ার্ল্ড এ তোমার নাম ও জানে সবাই । তবে তোমার জন্য কঠোর হতে গিয়ে কি আমি তোমায় হাড়িয়ে ফেলেছি‌। আমিও যে তোমায় ভালোবাসি তুমি জানো আমি তোমার সেভেনে পড়াকালীন তোমার হাসির মায়ায় পড়েছি। যে আমাদের এলাকার পার্কে খেলতে আসতো ব্যাথা পেলেই না কেঁদে গাল ফুলিয়ে থাকতো। সবার সাথে বন্ধুদের জন্য মারামারি করতো। সেই ছোট্ট মেয়ের মায়ায় পড়েছিলাম আমি। অথচ তুমি তো আমার কথা শুনলেই না পুরোটা। আমি তোমায় সবার অগোচরে ভালোবাসতাম তখন ভালোবাসতাম কি এখনো ভালোবাসি তোমায়। তোমার জন্য আমার সমস্ত আবেগ গুছিয়ে রেখেছি। যদি তুমি আমার না ও হও তবুও কোন একদিন আমার #গুছিয়ে_রাখা_আবেগ গুলো সব তোমায় দিয়ে দেব আরুহি না না তুমি তো আমার সুভাসিনী।

আবরারের চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরল। দরজার ওপাশ কেউ একজন এই দৃশ্যটা দেখতে পেল। তার চোখ দিয়েও পানি পরছে কিন্তু সে যে এখন অসহায় বোধ করছে। সে কি কিছুই করতে পারবে না।

_______________

এদিকে আরুহির কেঁদে কেটে খারাপ অবস্থা। বাইরে বৃষ্টি হচ্ছিল আরুহিও বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ভিজেছিল। ওর পুরোনো দিনগুলো খুব বাজে ভাবে মনে পরছে। মাথায় শুধু দুটো কথায় ঘোরে “তোমাকে আমার পছন্দ নয় সুভাসিনী আমি তোমাকে চাই না। শুনতে পেয়েছেন আপনাকে আমার পছন্দ নয় আমি আপনাকে চাই না।

খুব কষ্টে ও নিজেকে এতগুলো বছর সামলে ছিল। হুট করে একটা কল আবারো ওকে আবেগী বানিয়ে ফেলেছে। ওযে কতটা কষ্টে ছিল সেটা ওর নিস্তব্ধ রাত জানে। আরহাম ও দেখেছে সে কান্না। ওর খুব কষ্ট হচ্ছে।

নিজের দিকে একদম খেয়াল নেই। ও যে বৃষ্টিতে ভিজেছে সেটা ওর মনেই নেই। ও কি মনে করে ফোনটা তুলল আর একজন কে ফোন করতে লাগলো। ওর ভিশন কষ্ট হচ্ছে। এদিকে ওপর পাশের লোকটা বোধহয় জেগেই ছিলো কারো ফোন পেয়ে কানে ধরতেই আরুহির আওয়াজ শোনা গেল,,

‘মা আমার ভিশন কষ্ট হচ্ছে মা আমি জানি তুমি আমার মা এর জন্য আমার কোন প্রমানের দরকার নেই।”

এ কথা শুনে ভালো মা বোধহয় থতমত খেয়ে গেলেন। তবে উনি বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছে আরুহি কাঁদছে খুব করে কাঁদছে তিনি নিজেকে সামলিয়ে বলল,,

‘কে বলছেন?”

“মা প্লিজ আর নাটক করো না। আমি জানি তুমি বুঝতে পেরেছো কে ফোন দিয়েছে। তোমার সব মনে আছে আমাদের কথা নিশানরা যতই বলুক তোমার আগের কিছু মনে নেই। তবুও আমি বলবো তোমার সব আছে মা। প্লিজ তোমার মেয়ে খুব কষ্টে আছে মা। প্লিজ একবার আসো না।”

“কে তুমি? আর এভাবে আমাকে ফোন দিয়ে কাঁদছো কেন? কি হয়েছে তোমার?”

“চারপাশে কি হচ্ছে জানিনা তবে এটুকু বুঝতে পারছি আমি ভালো নেই। আমার দম বন্ধ হয়ে আসে বুকের ভেতর চিনচিন ব্যথা হয়। মস্তিষ্ক বারবার জানান দেয় তুমি শেষ হয়ে যাচ্ছো এই অসুস্থ সমাজে তুমি বেশিদিন বাঁচতে পারবে না।”

এ কথা শুনে ভালো মা চুপ করে থাকতে পারলো না। উনি বললেন,,

“কিসের এতো কষ্ট তোমার?”

“জানিনা আমার ভালো লাগছে না কিছুই আমার বুকটা ভারি হয়ে যাচ্ছে আমি চোখে অন্ধকার দেখতে পাচ্ছি আমি,, আহহ

“আরুহি!!!!

ভালো মা চিৎকার দেয়। কিন্তু আরুহির কোন শব্দ পাওয়া যায় না। ভালো মা বলতে শুরু করে,,

“আরু শুনতে পাচ্ছিস আমি তোর মা আরু কি হয়েছে কিসের এতো কষ্ট তোর। সারা দিচ্ছিস না কেন?

কে জানে কথাটা কি আরুহি শুনতে পেল নাকি পায় নি। । ও হয়তো আরো কিছু বলতে চাইলো কিন্তু আওয়াজ করার সুযোগ পেল না। ওর চোখ বন্ধ হয়ে গেল।
আরুহি ওর রুমে থাকা বুকশেলফ এর কাছে এতক্ষন দাঁড়িয়ে ছিল। হুট করে চোখে মুখে অন্ধকার দেখার দেখার জন্য বুকশেলফ ধরতে গেলেই ও ব্যালেন্স হারিয়ে দেয়ালের সাথে ধাক্কা খায় ওর মাথাটা দেয়ালে লেগে কিছু টা ফুলে যায় আর ও নিচে পরে যায়। আর ও মৃদু চিৎকার দেয়।
________________

“কি হলো আরু তুই শুনতে পাচ্ছিস। কথা বল আমি তোর সব কথা শুনবো ।

ভালো মায়ের পাশের রুম হচ্ছে আফরিনের রুম।তার পাশেই আবরারের রুম এত রাতে ভালো মায়ের চিৎকার শুনে ওরা দুজনেই রুম থেকে দৌড়ে বেরিয়ে এলো। ওরা দুজনের কেউই এখনো ঘুমায় নি। আবরার দৌড়ে এসে দেখলো ভালো মা কাঁদছে আর চিৎকার করে বলছে ,,

“আরু কি হয়েছে তোর শুনতে পাচ্ছিস।”

‘কি হয়েছে ভালো মা তুমি কাঁদছো কেন?”

“এখন বলার সময় নেই এখনি আরহামদের বাড়িতে যেতে হবে আবরার প্লিজ আমাকে নিয়ে যাবি। আরুহির কিছু হয়েছে।’

“কি বলছো তুমি?”

“এখন দেরি করা যাবে না আবরার!”

ভালো মা তাড়াতাড়ি করে রুমে থেকে বের হলো। বেরিয়েই দেখতে পেল আবরার এর বাবা মা দুজনেই দাড়িয়ে আছে। নাহিয়ান খান বললেন,,

“রুনা তুমি চিৎকার করছো কেন? আর এত রাতে কোথায় যাবে।”

“নাহিয়ান ভাই আমার জন্য অনেক করেছেন আজ আরেকটা কাজ করে দিন ভাই আমার মেয়ের কাছে যেতে দিন। ওর কিছু হয়েছে ও আমার সাথে কথা বলছিল ওর অনেক কষ্ট হচ্ছিলো।আমার সাথে কথা বলতে বলতেই চুপ হয়ে গেছে আমার ডাকে সারা দিচ্ছে না নাহিয়ান ভাই।’

“কি বলছো তুমি?”

এ কথা শুনে ভালো মা একটু উত্তেজিত হয়ে একটু চিৎকার করেই বলল,,

“তোমাদের সবার সব কথা কি এখনি বলতে হবে। আমি তোমাদের বলবো পরে এখন প্লিজ আমাকে আমার মেয়ের কাছে নিয়ে চলো। ”

“কে তোমার মেয়ে?”

তখন আফরিন বলল,,

“আরুহি !বাবা এখন বেশি প্রশ্ন করো না। ভালো মা উত্তেজিত হয়ে পরছে। ভালো মা চলো ভাইয়া গাড়ির চাবি নিয়ে এসেছে।”

তখন নাসরিন খান বললেন,,

“আমরাও যাবো।”

“চলো এখন দেরি করা যাবে না।”

“আবরার তুমি একবার আরহামের ফোনে ফোন করো।”

ভালো মার কথায় আবরার আফরিনের কাছে ফোন দিল আর নিজে ড্রাইভ করতে লাগলো। কিন্তু আরহাম ধরলো না।

এদিকে আরহাম অসুস্থ ছিল বিধায় তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পরেছিল বোনের চিৎকারে ওর ঘুম হালকা হয়। ও তাড়াতাড়ি করে বোনের রুমের সামনে গিয়ে আরুহিকে ডাকতে থাকে কিন্তু ও ভেতর থেকে কোন সারা শব্দ পায় না। ও দরজা ধাক্কা দেয় ভাগ্য ভালো দরজা খোলাই ছিল ও তাড়াতাড়ি ঢুকে দেখে আরুহি পরে আছে। ও তাড়াতাড়ি ওকে ধরে খাটে ওঠায় ততক্ষনে বাড়ির কাজের মহিলা চলে এসেছেন। ও বুঝতে পারে আরুহির জ্বর এসেছে শরীর ও ভেজা। আরহাম আরুহিকে ডাকতে লাগল কোন সারা শব্দ না পেয়ে বলল,,

“খালা তাড়াতাড়ি লাইট অন করুন আর আরুকে চেঞ্জ করান ওর গায়ে ধুম জ্বর বোধহয় বৃষ্টি তে ভিজেছে আর রুমে এসে অজ্ঞান হয়ে গেছে।”

খালা তাড়াতাড়ি করে লাইট অন করে নিচে চলে গেল এতক্ষণ আরহাম দেখেনি আরুহি মাথায় একটু চোট পেয়েছে লাইট অন করতেই ও আরুহির অবস্থা দেখে থম মেরে গেল। কি অবস্থা আরুহির চোখের পানি গলা পর্যন্ত তারমানে আরুহি কেঁদেছে। উশখু খুশকো ভেজা চুল মুখটাও শুকনো বৃষ্টিতে ভিজে সাদা হয়ে গেছে তারওপর মাথার আঘাতে কপালটা একটু ফুলে গেছে। আরহাম বুঝতে পারল কোনোকিছুর সাথে ধাক্কা লেগে এরকমটা হয়েছে এ অবস্থা দেখে আরহাম এর বুকটা ধক করে উঠলো। ও তাড়াতাড়ি বাইরে চলে গেল বোনকে চেঞ্জ করাতে বলে ও তাড়াতাড়ি ডাক্তার কে কল করলো।

আরহাম এর ইচ্ছে করছে চিৎকার করে কাঁদতে। কেন তার বোনের কষ্ট। কেন সে এই কষ্ট কে লাঘব করতে পারে না। আপাতত আরহাম রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর খালা দরজা খুলে বলল চেন্জ করা শেষ। আরহাম দৌড়ে ভেতরে ঢুকে বোনের হাত ধরলো। তখন আরুহি অস্ফুট স্বরে বলতে লাগলো,,

“যদি জানতেম আমার কিসের ব্যথা তোমায় জানাতাম।
কে যে আমায় কাঁদায় আমি কী জানি তার নাম।।

কোথায় যে হাত বাড়াই মিছে, ফিরি আমি কাহার পিছে,
সব যেন মোর বিকিয়েছে, পাই নি তাহার দাম।।

এই বেদনার ধন সে কোথায় ভাবি জনম ধ’রে।
ভুবন ভরে আছে যেন, পাই নে জীবন ভরে।

সুখ যারে কয় সকল জনে বাজাই তারে ক্ষণে ক্ষণে,
গভীর সুরে “চাই নে’ “চাই নে’ বাজে অবিশ্রাম।।

~রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“ওরা আমাকে কেউ ভালোবাসে নি আমায় ওরা কেউ ভালোবাসে নি। আমি যাকেই আকরে ধরে থাকতে চাই সেই আমার থেকে দূরে চলে যায়। আমার এখন কাউকে চাই না। আমি একাই থাকতে চাই‌‌। আমার ভাইয়ার সাথে থাকতে চাই তোমাদের কাউকে লাগবে না আমার! আমি আর আমার ভাইয়া খুব ভালো আছি‌।”

এ কথা শুনে আরহাম কেঁদে ফেলল একটা মানুষ কতটা অসহায় হলে এরকম বলতে পারে ওরা কেউ ভালোবাসে নি আমায়। আরুহি আবার বলতে শুরু করল,,

” মা আমায় ভালোবাসে নি। কতোবার মাকে বললাম আমার খুব কষ্ট হচ্ছে একবার আসো না প্লিজ উনি বললেন কে তুমি? মা আমায় ভালোবাসে নি। উনি আমার কষ্টের কথা শুনেও আমার কাছে আসেনি। ভাইয়ার মতো কেউ আমায় ভালোবাসে নি।”

আরহাম বুঝতে পারল আরুহি জ্বরের ঘোরে আবোল তাবোল বকছে। ও ডাক্তার আসার অপেক্ষা করতে লাগলো আর বোনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। তখনি কলিং বেল বাজল আরহাম ভাবলো ডাক্তার এসেছে তখনি কাঁদতে কাঁদতে ভালো মা ঢুকে পড়লো। আরহাম তো অবাক ও বলল,,

“মা তুমি এখানে না মানে আন্টি আপনি এখানে?”

তখন উনি কাঁদতে কাঁদতে বলল,,

‘সরি আরহাম আমি আরুহি ও ”

এইটুকু বলেই ওনার নজর পড়লো আরুহির দিকে উনি দৌড়ে আরুহিকে জরিয়ে ধরে বললেন,,

“আই এম সরি আরু মা আমি তোকে বলতে পারি নি আমিই তোর মা! কি হয়েছে তোর দ্যাখ আমি এসেছি।

“আরুহির বৃষ্টি তে ভিজে জ্বর এসেছে আর অজ্ঞান হয়ে গেছে। তাছাড়া এখানে কি হচ্ছে কেউ বলবে আরুহিও এর আগে বলছিল মা আমার কষ্টের কথা শুনেও মা আসে নি। আপনারা কি আজকে কথা বলেছেন।

“আসলে ও অজ্ঞান হওয়ার আগে আমাকে ফোন দিয়েছিল। আমার সাথে কথা বলতে বলতেই অজ্ঞান হয়ে যায়। ও বলেছিল ও চোখে অন্ধকার দেখছে।”

আরহাম আরুহির দিকে তাকালো। তারমানে কষ্ট বলতে ও মাকে বুঝিয়েছে। ওর মা আজ বলেছে ওর মাই এটা কিন্তু কেন যেন খুশি হতে পারছে না। তখনি ডাক্তার চলে এলো। আরহাম কিছু না বলে ওর বোনের হাত ধরে বসে রইল। বাকি সবাই নিরব দর্শকের মতো দেখে গেল। কিন্তু আবরার ওর যে বুকটা হাহাকার করছে আরুহির জন্য আজকের ওর অবস্থার জন্য ও নিজেও দায়ী করছে ও। ওর খুব কষ্ট হচ্ছে কিন্তু কাউকে দেখাতে পারছে না। আফরিন ও দেখতে পারছে না হাজার হোক বান্ধবী। ওর ও ইচ্ছে করছে এগোতে কিন্তু পারছে না। আবরারের অবস্থা বুঝতে পেরে ও ভাইয়ের হাত ধরলো। আবরার অসহায় চোখে ওর দিকে তাকালো। আফরিন চোখ দিয়ে বোঝানো সব ঠিক হয়ে যাবে। আরহাম তাকায়ও নি ওর মায়ের দিকে। খান পরিবার এর সকলে অবাক হয়ে ওদের দুজনকে দেখছে। ডাক্তার দেখে বলল,,

“চিন্তার তেমন কোন কারন নেই। আসলে প্রথমত উনি ডিপ্রেশনে ছিলেন কোন কিছু নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করছিলেন। পুরোনো কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা মনে করছিলেন তারওপর বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর এসেছিল সবকিছু মিলিয়ে উনি অজ্ঞান হয়ে গেছে। এখনো অনেকটাই জ্বর আছে আমি ওষুধ লিখে দিচ্ছি কিছু খায়িয়ে ওটা খায়িয়ে দিন। ইনশাআল্লাহ কাল সকালের মধ্যে জ্বর অনেকটাই কমে যাবে।

আবরার ডাক্তার কে এগিয়ে দিলেন। আর প্রয়োজনীয় ওষুধ নিয়ে এলো। রেহানা খান মেয়ের জন্য স্যুপ বানিয়ে আনলেন নিজে হাতে খায়িয়ে দিলেন আরহাম আর বাকিরা শুধু দেখেই গেল। আরহাম সবাইকে ঘুমোতে যেতে বলল রেহানা খান ছাড়া সবাইকেই জোর করে পাঠিয়ে দিলেন।

অতঃপর সকালের অপেক্ষা,,,

~চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here