কোথাও_হারিয়ে_যাব
#রূবাইবা_মেহউইশ
পর্ব -২
‘এ কেমন পাগলামি? বয়স কত তোমার?’
বজ্রকণ্ঠের মাত্র দুটি বাক্য অথচ নুপুরের ভেতর-বাহির সবটাই পাল ভাঙা নৌকার মত ভাঙতে লাগলো চুরচুর করে। মাত্র একটি সপ্তাহ, পাঁচটি কল এবং পঞ্চম বারেই ধ/রা পড়ে গেল। এ বড় ভুল হয়ে গেল যে! দেড় বছরের উত্তাল আকর্ষণ, প্রচণ্ড আবেগী টান যে মানুষটার প্রতি তিল তিল করে তৈরি হয়েছে তা কি আজই শেষ করে দিতে হবে? একদমই না! নিজেই নিজেকে শাসায় সে। কলেজে ভর্তি হওয়ার দ্বিতীয় দিনই দেখতে পেয়েছিল সে অর্ণবকে৷ লম্বা, চওড়া কাঁধের, ধারালো চোয়াল, লম্বা পাপড়িওয়ালা চোখের সুদর্শন, সুপুরুষ যার শুভ্র মুখশ্রীতে রাজকীয় গোফ। জীবনে সেই প্রথম নুপুরের কোন গোঁফওয়ালা পুরুষ চোখে লেগেছিল। তাছাড়া তো গোঁফওয়ালা মানেই তার চোখে বাংলা সিনেমার ফাঁ/সির মঞ্চের ভুড়িওয়ালা জ/ল্লাদই ভাসে। নিজের মনের বদল ভাবনায় ভীষণ চমকেছিল সেবার পরে অবশ্য মনকে বোঝাল সুন্দর মানেই ভ/য়ংকর সুন্দর মানেই চোখ ধাঁধানো। আসলে প্রেমে পড়ে ভাবনাগুলোই গোঁজামিল হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এই মুহূর্তে প্রেমের চলছে ক্রা/ন্তিলগ্ন। নিজেকে ধরিয়ে দেবে নাকি আলগোছে এড়িয়ে যাবে! বেশিক্ষণ ভাবতে হয়নি অর্ণব নিজেই পুনরায় কথা বলল, ‘ নামটা কি যেন তোমার? এমন ফাজলামো আর করবে না।’
-‘বড্ড মেপে কথা বলেন জনাব আপনারা দু ভাই-বোন আরেকটু বাড়িয়ে বলুন না। শুনতে শুনতে ম/রে যেতে ইচ্ছে করছে।’
একাই বিড়বিড় করে চলছে নুপুর। অর্ণবও টের পেল ওপাশের বিড়বিড়ানি। মেয়েটা কি একটু ছিটিয়াল নাকি! কল কেটে দিল সে। অত সময় নেই কোন মেয়ের বকবক শোনার। দাদীর খোঁজ নেয়া জরুরি তাই এবার বাড়ির নম্বরে কল দিল অর্ণব। বার দুয়েক রিং হতেই কল তুলল কাজের মহিলা। অর্ণবের ফোন শুনতেই আলেয়া খাতুন চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলতে লাগলেন, ‘ওই বেটি ফোন কাইট্টা দে আমি কারো লগে কথা কমু না। জামাই মরছে বইলা কেউ আর আমার কথা ভাবে না।’
অর্ণব শুনলো দাদীর সেই চেঁচানো সুর। বুঝতে পারলো আজও অভিমান করেছে বুড়ি। সময়, ব্যস্ততা সব মিলিয়ে দিনে দু বার কল না পেলে এভাবেই অভিমান করে। বাপ-মা হীন জীবনে তার ছোটদাদী আর অর্নিতার জীবনে বড় খালামনিই একমাত্র আশ্রয়স্থল, একান্ত সম্পদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিজের পড়াশোনার পাট চুকিয়ে এখন সে নিজের ব্যবসায় চূড়ান্ত মনোযোগী হতেই দাদীর আবদার বাড়িতে বউ লাগবে। অর্নিতা মাসে দু,চার দিনের বেশি থাকে না সেখানে তাতেই দাদীর অভিযোগ একলা বাড়ি সঙ্গী লাগবে। আসল কথা, লুকিয়ে লুকিয়ে ঘটক ডেকে মেয়েও দেখেন অর্ণব জানে সে কথা। কিন্তু বোনকে না পার করে নিজের চিন্তা করবে না সে। একলা জীবনে তারও একাকীত্বে কাউকে প্রয়োজন পড়ে কিন্তু সেই প্রয়োজন সারতে গিয়ে বোনের প্রতি যদি অবহেলা হয়! সেই ভয়ে ভাবছে না আর আগে পিছে। দাদীর মান ভাঙাতে সময় লাগবে তাই এখন আপাতত থাক অভিমান। কাজের বুয়া খালাকে বলে ফোন রেখে দিল অর্ণব। তার ছোট্ট ব্যবসা, পরিশ্রম অনেক আশা আছে উন্নতি হবেই হবে। বড় খালু আর ছোট দাদার সাহায্যেই পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার টাকা-পয়সাগুলো ব্যবসায় লাগিয়েছিল। পরিশ্রম, মেধা দুটোই সমান থাকায় একলা কাঁধেই সামলে চলছে সবটা। সন্ধ্যে হতে বাকি নেই বেশি। পিয়নকে ডেকে চা আনিয়ে ফাইলপত্র ছড়িয়ে বসলো।
___________
শার্টের হাতা গুটিয়ে গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে হাত রাখতেই মনে পড়লো মোবাইলটা নিজের কেবিনেই ফেলে এসেছে রিদওয়ান । অফিসে এসে বাবার সাথে লাঞ্চ করে কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল সে। চোখের কোলে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট হয়েছে টানা কর্মব্যস্ততায়। নিজেদের ব্যবসায় ঢুকেও প্রচুর ছুটি কাটানোর দায়ে তার প্রমোশন আটকে আছে। বসের ছেলে হয়েও তার কর্মদক্ষতা আর ঢিলেমির শা/স্তিস্বরূপ বাবা তার পদবী উপরে তুলছেন না। এদিকে রিমনটা বয়সে ছোট, পড়াশোনাও শেষ হয়নি তবুও কাজের প্রতি দারুণ ডেডিকেটেড হওয়ায় এ মাসেই প্রমোশন পেল উপরি হিসেবে মা’কে পটিয়ে নতুন গাড়ি হাতিয়ে নিয়েছে। রিদওয়ানের কিছুতেই কিছু হয়ে উঠছে না আর হবে বলে তার মনেও হয় না। ছোট থেকে মন আটকে ছিল তার ফুটবলে। এ দেশে নাকি ফুটবল মানে বিশ্ব দরবারে পৌছানোর সুযোগ নেই এমন কথা বলে বাবা ক/টাক্ষ করতো। মা অবশ্য বলতো খেলাধুলা বয়সের দোষ কাজে নামলে ঠিক হয়ে যাবে। ঠিক হলো কি! দীর্ঘ তিন বছরের কর্ম জীবনে সে আজও ভুলে যায় অফিস টাইম তার ঠিক নয়টায়। কখনো কখনো অফিস ফেলে চলে যায় ক্লাবে যেখানটায় শখের বশে কখনো গিটার বাজাতো বন্ধুরা মিলে। কখনো আবার বাড়ি ফিরে মায়ের ঘরে ঘাপটি মারতো মায়ের কোলে মাথা রেখে একটু আরাম করতে। বোহেমিয়ান স্বভাবের রিদয়ানের জীবনের মায়ের কোলে মাথা রাখা এই একটা ব্যাপারই ভিন্ন শুধু। বাবার বক্তব্য এই ছেলেটার জীবনে গভীরতা নেই সে আবেগে ভরপুর ছোট্ট এক ডিঙি নৌকা। হালকা ঝড়েই কু/পোকাত হয়ে যাবে। রিদওয়ান হাসে বাবার বাণী শুনে কখনো জবাব দেয়নি। তার গভীরতা কতটুকু সে খবর কাউকে দিতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করে না সে। তবে এ কথা সত্যি হালকা ঝড়ে বহুবার ভেঙে গুড়িয়ে যাওয়া নৌকাই তো হয়েছে। বারংবার নিজেকে মেরামত করে টিকে আছে জগত সংসারে। গাড়িতে বসে আলগা ভাবনাতেই কাটিয়ে ফেলল দশ মিনিট। নাহ্ এভাবে চলে না আর নিজেই নিজেকে বলে বের হলো গাড়ি থেকে। মোবাইলটা এনে আবারও বসলো ড্রাইভিং সিটে গন্তব্য তার হাট- বাজার। বৃষ্টির ভাষায় সুপারশপ।
______
‘অর্নিতা পড়তে বসিসনি এখনো?’
মেয়েদের ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে থেকে লক্ষ্য করছিলেন রায়না বেগম কে কি করছে। বৃষ্টি ল্যাপটপ কোলে নিয়ে বেলকোনির দরজায় হেলান দিয়ে মুভি দেখছে বোধহয়। মাথার চুল এলোমেলো গায়ের ওড়নাটাও আশেপাশে নেই৷ তারপরই দৃষ্টি ফেরালেন অর্নিতার দিকে। নীল রঙা কামিজে সাদা ওড়নায় হলদে রঙা মুখটা কেমন আদুরে বেড়ালের মত কোমল লাগছে। খাটের ওপর পা গুটিয়ে আলতো হাতে নেইল পেইন্ট করছে ভীষণ মন দিয়ে৷ নিয়মমাফিক সে সন্ধ্যের চা শেষ করেই বই নিয়ে বসে পড়ে আজ ভিন্নতা দেখেই তিনি প্রশ্ন করলেন মেয়েটিকে৷ তৎক্ষনাৎ হাতের নেইল পলিশ পাশে রেখে জবাব দিলো, ‘আজকে পড়ব না খালামনি।’
‘ওমা কেন!’ কথাটা বলেই তিনি ঘরে ঢুকে বিছানায় বসলেন অর্নির ঠিক পাশেই।
‘কালকে নাকি কলেজেও যাবে না ও।’
ল্যাপটপে দৃষ্টি রেখেই বলল বৃষ্টি। রায়না বেগম বিষ্ময়ে চক্ষু বড় বড় করলেন। আগামীকাল সোমবার না ছুটির দিন না দিবসগত কোন উৎসব। যে মেয়ে জ্বরে পড়ে কাঁপতে কাঁপতে কলেজে উপস্থিত থাকে সে হঠাৎ এত আয়োজন করে বসে নখ রাঙাচ্ছে, আবার বলছে কলেজেও যাবে না। ঘটনা কি! খালামনির কৌতূহলী নজর চশমার আড়াল থেকেই দেখে নিয়েছে অর্নিতা তাই এবার সোজা হয়ে বসল।
‘খালামনি এবারও ভুলে গেছো তুমি তাইনা!’
-কি ভুলে গেলাম?
-‘কাল ভাইয়ার জন্মদিন আর সে উপলক্ষে আমাদের একটুখানি আয়োজন করার ছিল।’
কথাটা বলতে গিয়ে আক্ষেপে মুখ ফোলাল অর্নি। রায়না সত্যিই ভুলে গিয়েছিলেন অর্ণবের জন্মদিনের কথা। বৃষ্টি অবশ্য এক সপ্তাহ আগেই একবার স্মরণ করিয়েছিল পরে তিনি বিভিন্ন কারণে ভুলে গেছেন।
– এই রে তোরা না বলেছিলি কোথাও দূরে বেড়াতে যাবি এবার? আমি তো তোর খালুকে জানাতেই ভুলে গেছি।
আফসোসের সুরে বললেন রায়না বেগম৷ বৃষ্টি এবার ল্যাপটপ বন্ধ করে বিছানায় বসলো। মায়ের গায়ে গা ঘেঁষে ছোট বাচ্চাটি হয়ে বলল, ‘ থাক আর আফসোস করতে হবে না। তোমাদের নবাবজাদা দু দিন আগেই অর্নিকে বারণ করে দিয়েছে এ ব্যাপারে।’
– কে! অর্ণব?
-হ্যা খালামনি। ভাইয়া বলেছিল এ বছর যেন কোন রঙ তামাশা না করি। আর অবশ্যই এ বিষয়ে কড়া নিষেধাজ্ঞা তোমার ওপর।
-যাহ বাবা! আমার ওপর কড়া কেন?
-গত বছর তোমার জন্যই তো তোমার সেই বান্ধবী আর তার কন্যারা এসেছিল ভাইয়ার বার্থডেত….
‘তারপর আন্টির ছোট কন্যা অর্ণব ভাইয়ার প্রেমে পিছলে পড়ে কি যন্ত্র/ণাই না দিলো সবাইকে।’
অর্নিকে থামিয়ে নিজেই কথাটা বলে খিলখিলিয়ে হাসলো বৃষ্টি। রায়না বেগমের মনে পড়লো সে ঘটনা। এ নিয়ে বহুদিন বান্ধবীর সাথে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলল। কিছুদিন ধরে পুনরায় ভাব হলো দুজনে সে কথা ভাবতেই মনে মনে তওবা করলেন, আর কখনো অর্ণবের উপস্থিতিতে বান্ধবীকে ডাকবেন না।
‘কিন্তু কাল যদি ঘুরতে নাই যাবে তবে কলেজ বন্ধ করবে কেন?’
এ প্রশ্নের জবাবও বৃষ্টিই দিয়ে দিল, ‘কাল আমরা অর্ণব ভাইয়ার বাড়ি যাব সকাল সকাল। সারাদিন সেখানে থেকে নিজেদের মত রান্না-বান্না করব, ঘর সাজাব তারপর রাতে কেক কেটে ফিরে আসব। আর হ্যাঁ আম্মু তুমি আর আব্বু কিন্তু রাতে যাবে দিনে আমরা আমরাই থাকব।’
মেয়ের কথা শুনে অল্প হেসে সম্মতি জানালেন রায়না বেগম । এরপর আরও কিছু সময় মা, মেয়েরা গল্প আড্ডায় মজেছিলেন নির্বিঘ্নে। রাত আটটার ঠিক পাঁচ মিনিট পরই বাড়ি এসে পৌঁছুলো রিদওয়ান। পরনে ফরমাল শার্টের ওপর ঢিলে টাই, উসকোখুসকো চুল। দাঁড়িবিহীন ধারালো চোয়াল। দু হাতে ব্যাগ ভর্তি কিছু শুকনো খাবার আর বেলুনের প্যাকেট। সবটাই বৃষ্টির দেয়া লিস্ট মোতাবেক নিয়ে এসেছে হতে পারে কিছু বাদ পড়েছে ঠিক খেয়াল করেনি সে৷ ক্লান্তিতে চোখ বুঁজে আসতে চাইছে তার অনেকক্ষণ যাবৎ। আজ দুপুরে খাওয়া ঠিকঠাক হয়নি বিকেলে এক মগ কফি আর এ বেলা মার্কেটে শপ খুঁজে খুঁজে অর্নির বলে দেওয়া লাইট না পেয়ে আরও বেশি ক্লান্ত সে। বাড়ি ফিরেই চেঁচিয়ে ডাকলো, ‘বৃষ্টি, অর্নি এদিকে আয়।’
বৃষ্টি মুখে মাত্রই প্যাক লাগিয়েছিল বিধায় অর্নিকে বলল, ‘তুই গিয়ে দ্যাখ সবকিছু ঠিকঠাক এনেছে কিনা!’
অর্নি বসে বসে ফোনে কিছু দেখছিল। বৃষ্টির কথা শুনে চুপচাপ চলে গেল রিদওয়ানের ঘরের দিকে।
‘রিদওয়ান ভাই আসব?’
– ‘আয়’ বলেই রিদওয়ান খাটের ওপর ব্যাগগুলো ইশারা করে অর্নিকে দেখতে বলে চলে গেল ওয়াশরুমে৷ সারাদিনের ক্লান্তি শুধু মাত্র গোসলেই দূর হবে তার এই ভেবেই গোসল করা। অর্নি আলগোছে ব্যাগগুলো তুলে নিয়ে বেরিয়ে গেল ঘর থেকে। বৃষ্টি আর অর্নির ঘর একটাই সে ঘরে সব নিয়ে উপস্থিত অর্নি।
‘আপু এই যে ব্যাগগুলো এনছি।’
‘এ ঘরে কেন?’
‘তুমি দেখবে না!’
‘ওরে গাধি ভাইয়ার ঘরেই তো দেখতে পারব এখানে কেন আনলি? ভাইয়া বলছে?’
সন্দিহান চোখে তাকায় বৃষ্টি।
‘না’
চোখের পাতায় রাখা শশার টুকরো দুটো সরিয়ে ফেলল বৃষ্টি। দু হাতে টেনে ব্যাগগুলো এক এক করে খুলে দেখলো কি কি এনেছে। খাবার বলতে, কিছু কুকিজ, ফ্রোজেন কিছু স্ন্যাকস আর অনেকগুলো বেলুনের প্যাকেট। হতাশ চোখে তাকায় বৃষ্টি। সে তো বলেছিল অর্ণব ভাইয়ের মাপ অনুযায়ী একটা শার্ট আর পারফিউম সেটের কথাও। রাগ হচ্ছে তার অর্নিকে জানালো বৃষ্টি। অর্নি অবশ্য তার ভাইয়ের জন্য গিফট দু দিন আগেই কিনে রেখেছিল। হঠাৎ মনে পড়লো গিফট তো নুপুরও কিনেছে ভাইয়ার জন্য সেটাও তারই কাছে আছে অথচ নুপুরকে তো সে দাওয়াতই করেনি৷
-আপু নুপুরকে দাওয়াত করতে ভুলে গেছি।
-নুপুর তোর ওই আধপাগল বান্ধবীটা না! ওকে কি দরকার আমাদের ছোট্ট আয়োজনে দাওয়াত করার? বাদ দে।
-আচ্ছা!
অর্নির মন খারাপ হলো একটু তবে তা মুখাবয়বে প্রকাশ পেলো না। সল্প বাক অর্নি এটাও বলতে পারলো না যে নুপুর একটা গিফট দিয়েছে ভাইয়াকে সে খাতিরেই না হয় বলা যাক!
রিদওয়ান গোসল শেষে বেরিয়ে দেখলো রুম ফাঁকা। সে জানতো এ ঘরে অর্নি এক দন্ডও বসবে না। তবুও ইচ্ছে করেই ডেকেছিল এখানে আসুক। শান্ত স্বভাবের বাচ্চা মেয়েটা এত কেন গম্ভীর আর চুপ থাকে! অতীত কি আর কারো মন্দ হয় না? সবাই কি জীবনটাকে খোলসে গুটিয়ে পার করে দেয়! কই আশপাশে কত অভাগা, নিঃস্ব মানুষ দেখছে তারা তো কেউ এমন নিরব রাত্রি হয় না। রিদওয়ান চায় না ভাবতে তবুও ভাবনা আসে অর্নিকে নিয়ে। নিজের থেকে অনেকটা ছোট্ট অর্নির স্বভাব তাকে অবাক করে। শীতল দীঘির মত তিরতিরিয়ে বয়ে চলা এক নীরব স্রোতস্বিনী যার কলরব কেবল কান পাতলেই শোনা যাবে দূর থেকে সে বড় শান্ত। রিদওয়ানের ইচ্ছে করে সেই স্রোতধ্বণি শোনার অথচ সাধ্য নেই। আর মাত্র দিন কয়েক তারপরই সে ধ্বনির একমাত্র, একান্ত স্রোতা হবে শিবলী ভাই। হায়! এ যে নীরব আঘা/ত হৃদপিণ্ডে চলছে রিদওয়ানের।
চলবে
(ক্ষমা করবেন পাঠকগণ, লম্বা বিরতির পর টের পাচ্ছি লেখায় আমি ভীষণ কাঁচা। শব্দ, বাক্যের মেলবন্ধনে প্রচণ্ড বিব্রত হয়ে পড়ছি। এ পর্বটা একদমই আগাতে পারলাম না তাই আন্তরিকভাবে দুঃখিত। ইনশাআল্লাহ পরবর্তী পর্ব আরও মনোযোগী হয়ে লিখব। আনাদের মন্তব্যই এখন একমাত্র ভরসা লেখার প্রতি আরও যত্নশীল হতে।আপনাদের মন্তব্যের অপেক্ষায় রইলাম।)