কৃষ্ণময়ীর অলংকার পর্ব ১০

0
1146

#কৃষ্ণময়ীর_অলংকার
#রাহনুমা_রাহা
#পর্ব১০

আরও একটি নিস্তব্ধ রাত। নিশুতি রাতে গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে থাকা তপার মনে হলো কেউ আছে। কেউ আছে তার পাশে। বন্ধ ঘরে কেউ তাকে গ্রাস করতে ধেয়ে আসছে।শক্ত নোংরা হাতের থাবায় নিজের কোমলমতি শরীরটা রিষ্ট পিষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দম বন্ধ করা অনুভূতি থেকে বাঁচতে নিজের সর্বচ্চ শক্তি দিয়ে ধাক্কা দিল। কিন্তু সে এক চুলও নড়ল না। তপা বিরবির করে বারবার মন্ত্র পড়ার মত বলছে,
“আমায় ব্যাড টাচ করো না মামু। আমায় ব্যাড টাচ করো না। আমি মরে যাব। কষ্ট হচ্ছে আমার। মরে যাব আমি।”
একসময় সর্বস্ব বল প্রয়োগ করে চিৎকার করে উঠে বসল। রুম অন্ধকার দেখে ভয়ে সিটিয়ে গেল। চোখ বন্ধ করে পুনরায় বিরবির করতে শুরু করল।
পলক তপার চিৎকার শুনে হন্তদন্ত হয়ে এসে বাতি জ্বালিয়ে দিয়ে তপার পাশে বসল। তপা নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে চোখ বন্ধ করে বিরবির করছে। পলক আধো আধো শুনতে পেলেও বুঝতে পারল না কিছুই।
শান্ত করতে তপার হাত ধরতেই তপা ঢলে পড়ল পলকের বাহুডোরে।
পলক তপাকে বিছানায় শুয়িয়ে দিয়ে নিজেও চুপচাপ বসে রইল পাশে। কপালে চিন্তার রেখা স্পষ্ট তার। কি এমন ঘটেছিল মেয়েটির জীবনে? কেন অন্ধকারে এত ভয় তার?

তপা ঘুম ভেঙে সামনে তাকিয়ে চমকাল। সামনে পলক ধ্যানমগ্ন হয়ে বসে আছে। তপা উঠে বসতে বসতে বলল,
“আপনি এখানে?”
পলক তপার দিকে তাকিয়ে নিষ্প্রাণ হাসল।
তপা পলকের চোখ দেখে আঁতকে ওঠে বলল,
“রাতে ঘুমোন নি?”
পলক তপার চোখের দিকে সরাসরি তাকাল।
“ছোটবেলায় কি হয়েছিল তোমার তিয়াশা?”
তপা আমতা আমতা করে বলল,
“মা -মানে?”
পলক তপাকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখে বলল,
“মানে টা তুমি খুব ভাল করেই জানো। কি এমন হয়েছিল যে তুমি অন্ধকারকে এত ভয় পাও? কেন নিজেকে হারিয়ে ফেলো অন্ধকারে? কেন তিয়াশা?”
তপা নিচের দিকে তাকিয়ে নিজেকে সামলে নিল। তার দুর্বল হলে হবে না।
“কাল রাতে কিছু হয়েছে?”
পলক কপালে আঙুল বুলিয়ে বলল,
“এটা আমার প্রশ্নের উত্তর নয়। কি হয়েছিল আমাকে বলা যায় না?”
তপা নির্নিমেষ তাকিয়ে বলল,
“না মিস্টার তাজওয়ার। সব প্রশ্নের উত্তর হয় না।”
পলক দু’মিনিট চুপচাপ তাকিয়ে রইল তপার মুখশ্রীতে।এরপর উঠে দুপদাপ পা ফেলে চলে গেল নিজের রুমে।
তপা সেদিকে তাকিয়ে বিরবির করে উচ্চারণ করল,
“আমাকে পালাতে হবে। আবার।”

“আমি অফিসে যাচ্ছি। তোমার কিছু লাগবে?”
পলকের মুখে এমন বুলি শুনে তপা চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বলল,
“আমি কি আপনার বউ, যে অফিসে যাওয়ার আগে এভাবে বলে যাচ্ছেন?”
পলক ভ্রু কুঁচকে তাকাল।
তপা ঈষৎ রেগে বলল,
“আপনি আমাকে ভ্রু দেখাচ্ছেন?”
পলক আচমকা হেসে উঠল। তপা বিরক্তি ভঙ্গিতে তাকাল। হাসার কি আছে। আশ্চর্য।
পলক হাসি থামিয়ে বলল,
“ভ্রু বলো আর চোখ বলো এটা দেখানোর একমাত্র এবং একমাত্র অধিকার পলক তাজওয়ারের। সো আমি তো দেখাবোই। তুমি শুধু দেখবে, ফুলবে আর ব্যাঙের মত ডাকবে। ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ।”
তপা মৃদু স্বরে বলল,
“আমাকে একটু রুমে দিয়ে আসবেন প্লিজ।”
পলক চমকে উঠল।
“রুমে? কিন্তু কেন? এখানে তোমার অসুবিধা হচ্ছে? তুমি তো সুস্থ নও। আজই কেন? কয়েকটা দিন থাকো।”
তপা মৃদু হেসে বলল,
“আমি ঠিক আছি। রুমেই থাকতে পারব। তাছাড়া একা তো নই। পৃথা আসবে কিছুক্ষণ পর। ও কদিন থাকবে। আপনাকে সব কিছুর জন্য অনেক ধন্যবাদ মিস্টার তাজওয়ার। এখন কাইন্ডলি আমাকে দিয়ে আসুন। নয়তো আমি নিজে নিজেই চলে যাব।”
পলক দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। এ মেয়ে কথা শুনবে না সেটা ও খুব ভালো করেই জানে। বিরবির করে বলল,
“দেখে দেখে এই ঘাড়ত্যাড়া মেয়ের প্রেমেই পড়তে হলো? নাহ আমি তো প্রেমে পড়িনি। প্রেম আমার উপরে পড়েছে।”
তপা গলার আওয়াজ বাড়িয়ে বলল,
“কি হলো? দিয়ে আসবেন? নাকি আমি নামবো বিছানা থেকে? নামি?”
পলক তপাকে ব্যঙ্গ করে বলল,
“নামবো? নামি?৷ নেমে দেখাও। যে পা ভালো আছে ওটাও ভেঙে দেব। শুধু ভেঙে নয়। একদম গুড়িয়ে দেব।”
তপা চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে রইল কেবল।

“কিভাবে হলো এসব? তপা? একবার জানানোর প্রয়োজন মনে করলি না? আমি এতই পর?”
প্রান্তর ধমক শুনে তপা মাথা নিচু করে বলল,
“সরি ভাইয়া। আমি ভেবেছি তুমি হয়তো চট্টগ্রাম চলে গেছো। শুনলে না আবার তখনই চলে আসো। তাই বলিনি।”
পলকের দিকে তাকিয়ে গমগমে গলায় বলল,
“ও নাহয় অজ্ঞান হয়ে ছিল। ব্যথায় কাতর ছিল। কিন্তু তুই? তুই কি করে পারলি? একবার জানার অধিকার কি আমাদের নেই?”
পলক ভ্রু কুঁচকে তাকাল। এখন যত অপরাধ, পলক তাজওয়ার।
পৃথা প্রান্ত কে থামিয়ে বলল,
“ভাইয়া বাদ দাও না। তপা তো ঠিক আছে এখন। এটাই যথেষ্ট।”
প্রান্ত দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল,
“কেমন ঠিক আছে সে তো নিজের চোখেই দেখতে পাচ্ছি। না জানি কতটা যন্ত্রণা হচ্ছে আমার ছোট্ট পাখিটার।”
তপা মৃদু হেসে বলল,
“ভাইয়া আমি ঠিক আছি। আমার এখন কোনো কষ্ট হচ্ছে না। সত্যি।”
প্রান্ত তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তপার দিকে তাকিয়ে রইল কয়েক প্রহর। অতঃপর মৃদু স্বরে বলল,
“কিন্তু তপা এসব হলো কি করে? এত মারাত্মক ভাবে আঘাত পেলি কি কিভাবে ?”
তপা কিছুটা ভেবে বলল,
“সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়েছিলাম।”
প্রান্ত চমকে উঠল। উঁচু গলায় বলল,
“সে কি। লিফট কাজ করে না? লিফটে উঠানামা করলেই তো দূর্ঘটনা ঘটতো না।”
তপা মাথা নিচু করে বলল,
“লিফটে ভয় লাগে ভাইয়া।”
প্রান্ত মোলায়েম কণ্ঠে বলল,
“লিফটে ভয় কিসের আপু?”
“একদিন লিফটে আঁটকে গিয়েছিলাম। কারেন্ট চলে গিয়েছিল। অনেকক্ষণ লেগেছে খুলতে।ইনফ্যাক্ট আমি জানিই না কখন খুলেছে। আমি তো আধা অজ্ঞান হয়ে ছিলাম।”
পলক মৃদু স্বরে বলল,
“সেদিন যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে লিফট এতক্ষণ আঁটকে ছিল। সবসময় তো এরকম হয় না।”
প্রান্ত চমকে উঠে বলল,
“তারপর কি হয়েছিল? লিফটের ভেতরে আর কেউ ছিল না?”
তপা পলকের দিকে তাকাল। পলক মৃদু স্বরে বলল,
“আমি ছিলাম। তিয়াশা আধা নয় পুরো অজ্ঞান অবস্থায় ছিল। বাপরে সেকি কাঁপা-কাঁপি তোর বোনের। আমি তো আর একটু হলে মৃগী রোগী ভেবে বসতাম।”
তপা চোখ ছোট ছোট তাকিয়ে রইল পলকের দিকে। পলক তা দেখে ঠোঁট কামড়ে হেসে আশেপাশে তাকাল।
প্রান্ত দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
“তোর সাথে কি শুধু দুর্ঘটনাই ঘটে নাকি?”
তপা অবুঝের মতো মুখভঙ্গিতে মাথা উপর নিচ করে সায় জানালো। পরক্ষণেই কিঞ্চিৎ গম্ভীর গলায় বলল,
“কিন্তু ভাইয়া আজকের ব্যাপারটা নিছকই দূর্ঘটনা নয়। আমার মনে হচ্ছে এটা কারো কারসাজি। কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে ফেলে দিয়েছে।”
পলক, প্রান্ত দুজনেই চমকে উঠল। পলক ভ্রু কুঁচকে বলল,
“তুমি শিওর? আরও আগে কেন বলো নি?”
তপা ভাবার ভঙ্গিতে বলল,
“শিওর না বলেই বলিনি। তবে আমার মনে হচ্ছে। আমি নামার সময় তেমন ভীড় ছিল না। আমি খামখেয়ালী ভাবেও নামিনি। তিনতলা অবধি ঠিকই ছিল। তবে দ্বিতীয় তলার প্রথম ধাপ পাড় হয়ে দ্বিতীয় ধাপে পা রাখতেই মনে হলো কেউ ইচ্ছে করে পায়ের সাথে পা লাগিয়ে দিয়েছে। কিছু বুঝে উঠার আগেই পড়ে গেলাম। তারপর আর মনে নেই।”
পলক কিছু বলতে চাচ্ছিল। তার আগেই তপা আবারও বলল,
” সিঁড়িতে সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। রাইট?”
তপার কথা শুনে পলক মৃদু স্বরে বলল,
“ব্রিলিয়ান্ট। তুমি কি কাউকে সন্দেহ করছো? তোমার ক্লাসের কেউ বা রাত্রি?”
তপা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। ভার্সিটি জীবনে তার কেবল দুটোই শত্রু। এক. রাত্রি, দুই.পলক তাজওয়ার। দুজনের কেউই শান্তি দেয় না।

বন্ধ রুমে হাত পা বাঁধা অবস্থায় বসে আছে রাত্রি। নিকষ কৃষ্ণ আধারে হাতের আঙুলটা পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। রাত্রি চোখ মেলে আশেপাশে দেখতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে মুখ দিয়ে বিরক্তিকর শব্দ করল। ভার্সিটি চত্বরে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিল সে। হঠাৎ এক ছেলে এসে বলল পলক তাজওয়ার ডাকছে। রাত্রির সন্দেহ হয় পলক কেন ডাকবে? কিন্তু পরক্ষণেই ভাবল হয়তো দরকার। তাই ছুটে গেল গেটের বাইরে। সেখানে থেকেই কিছু বুঝে উঠার আগেই বন্দী হয়ে গেছে সে। গেটের বাইরে আসতেই কেউ হ্যাচকা টানে গাড়িতে তুলে নিল। তার মুখটা দেখার আগেই অবচেতনে চলে গেল রাত্রি।

কতক্ষণ যাবত বসে আছে এভাবে তা জানা নেই রাত্রির। বিরক্ত যখন চরম শিখরে তখন খুট করে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করল কেউ। অন্ধকারের মায়া কাটিয়ে দরজার ফাঁক গলে কিছুটা আলো ভেতরে প্রবেশ করল। তবে আধো আলো আধো অন্ধকারে কিছু বুঝে উঠার আগেই পুনরায় বন্ধ হয়ে গেল দরজাটা। কিন্তু এতটুকু সময়ে দুটো পুরুষ অবয়ব রাত্রি স্পষ্ট দেখতে পেয়েছে। মূহুর্তেই গা হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেল তার। গলা শুকিয়ে কাঠ। হৃদপিণ্ড কেঁপে উঠল। কি হবে তার সাথে? এরাই বা কারা? আদৌ বেঁচে ফিরতে পারবে তো?

আরও একটা শব্দ হলো বন্ধঘরে। সুইচ অন করার শব্দ। শব্দ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দিনের আলোর মত চকচক করে উঠল ঘরটি। হঠাৎ আলোয় রাত্রি চোখ বন্ধ করে ফেলল।কিয়ৎক্ষণ পরেই পিটপিট করে যা দেখল তাতে তার অক্ষিজোড়া কোটর ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চাইল।
পলক তাজওয়ার দাঁড়ানো সামনে। সাথে প্রান্ত শাহরিয়ার। রাত্রি চোখ পিটপিট করে বলল,
“তোরা দুটো একসাথে এখানে? আমাকে বেঁধে রেখেছিস কেন? কি চাই তোদের?”
পলক চেয়ার টেনে রাত্রির মুখোমুখি বসে বলল,
“তোকে একটা সিনেমা দেখানোর আছে। সোজা বললে তো আসবি না। তাই কিডন্যাপ করে নিয়ে আসলাম। তাই না বল প্রান্ত?”
প্রান্ত মুচকি হেসে সায় জানালো।
ফোনে সেদিনের ফুটেজ বের করে রাত্রির সামনে ধরল। যেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে রাত্রি তপাকে পেছন থেকে পায়ে পা লাগিয়ে ফেলে দিচ্ছে।
রাত্রি একটু দেখেই চোখ বন্ধ করে ফেলল। আজ আর রক্ষে নেই তার।
পলক দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“দেখে নে মন ভরে। কে জানে আর কখনো সিনেমা দেখার সুযোগ পাবি কিনা।”
রাত্রি কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,
“ছেড়ে দে আমাকে।”
পলক ফোন বন্ধ করে পকেটে রেখে বলল,
“কেন করলি এটা?”
রাত্রি কিছু না বলে মাথা নিচু করে রইল।
পলক চিৎকার করে উঠল।
“বল কেন করলি? তুই জানিস ও কত বাজে ভাবে আহত হয়েছে? একটা মেয়ে হয়ে কি করে তুই এতটা নির্দয়? কেন রাত্রি? কি দোষ ওর?”
রাত্রি চোখ তুলে তাকাল। কঠিন গলায় বলল,
“দোষ ওর নয়।দোষ তোর। তুই কেন ওর সাথে এত মিশিস? এর শাস্তি তো ওকে পেতেই হতো। কি আছে ওর মধ্যে? যে তোকে শুধু ওর সাথেই চিপকে থাকতে হবে? ”
পলক মৃদু স্বরে বলল,
“আমি ওকে ভালবাসি।”
রাত্রি খ্যাপা বাঘিনীর মত বলল,
“ভালবাসা মাই ফুট। ওর মধ্যে কি আছে যা আমার মধ্যে নেই? ওকে ভালবাসতে পারলে আমাকে কেন পারলি না পলক? আমি তো তোর সাথে সেই ছোট বেলা থেকে আছি।আমার মধ্যে কি কমতি আছে ?”
পলক মুচকি হেসে বলল,
” ওর মধ্যে যা আছে তা হাজার বার জন্মালেও তোর মধ্যে আসবে না। তুই যা তুই তাই রয়ে যাবি। তুই মেয়ে হয়েও পাষণ্ড। কিন্তু তিয়াশা মায়াবতী। তুই সুন্দরী হয়েও আমার মন কাড়তে পারলি না। আর ও কৃষ্ণময়ী হয়েও এক পলকে আমার মন কেড়ে নিল। শুধু মন নয়। আমাকেও ঝাঁঝরা করে দিল। তুই ছোট বেলা থেকে সাথে আছিস। কিন্তু তোর প্রতি আমার কোনো টান নেই। কিন্তু তোর জায়গায় ও থাকলে এতদিনে ডজন খানেক বাচ্চার বাবা থাকতাম আমি। আফসোস। একটা বাচ্চাও নেই আমার। ”
রাত্রি অবাক হয়ে বলল,
“ও তোর বাচ্চার মা হবে?”
পলক ভ্রু কুঁচকে বলল,
“কেন? তোর কি আমার এবিটিলি নিয়ে কোনো সন্দেহ হয়?”
রাত্রি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। তার চেনা পলক তাজওয়ার এটা নয়। কাঠখোট্টা পলক তাজওয়ার বদলে গেছে। রাত্রি চিনতে পারছে না পলক কে। অসহায় মুখ করে বলল,
” কি হতো আমাকে একটু ভালবাসলে? মা আন্টিকে বলেছিল বিয়ের কথা। একটা মেয়ে হয়ে আমি মুখ ফুটে বিয়ের কথা বলেছি। কিন্তু দেখ তারপরও আমি রিজেক্টেড। এটা তো কেবল ওরই জন্য তাই না?”
“নাহ। তিয়াশা আমার জীবনে না এলেও আমি তোকে ভালবাসতাম না। আমি যেরকম টা চাই আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে তুই তার ধরে কাছেও নোস। হ্যা তোর মত করেও তোকে কেউ ভালবাসবে। কিন্তু ততদিন অপেক্ষা করতে হবে তোর। একটু তো ধৈর্যশীল হতে হবে তাই না?”
রাত্রি ক্ষেপে গিয়ে বলল,
“আমার তোকেই চাই। যে কোনো কিছুর বিনিময়ে। প্রয়োজনে ওই কালি তপাকে আমি খুন করবো। তবুও আমার তোকেই চাই।”
পলক চোখ বন্ধ করে দু’হাত মুঠো করে ফেলল। শক্ত গলায় প্রান্তকে বলল,
“এর জায়গা যেন তিয়াশার বেডের পাশের টায়ই হয়।৷ একটা আচরও যেন কম না থাকে বোনাস হিসেবে দু’চারটা বেশিও দিতে পারিস। আই ডোন্ট মাইন্ড।”

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here