#কিশোরী_কন্যার_প্রেমে
#সুমাইয়া_সিদ্দিকা_আদ্রিতা
#পর্ব_২৪
.
ছাদের রেলিং ঘেঁষে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে নীরদ ও অর্ঘমা। প্রায় আধঘন্টা যাবৎ তারা এখানে আছে। মাঝে মাঝে টুকটাক কথাবার্তা বলছে, আবার চুপ হয়ে যাচ্ছে। নীরদ সেই তখন থেকে শুধু অর্ঘমাকেই দেখে যাচ্ছে। অধরে স্মিত হাসির রেখা। মনে পড়ছে তাদের প্রথম সাক্ষাৎ। পরপর তাদের একটু একটু করে কাছা আসা আর নিজেদের মন বোঝা। এই কিশোরী মেয়েটা তার চোখের সামনেই একটু একটু করে বড় হয়েছে। পাশাপাশি গাঢ় হয়েছে তার প্রতি অনুভূতি।
অর্ঘমা নিজের হাতের আংটির দিকে তাকিয়ে সেটা নাড়াচাড়া করছে। কিছুক্ষণ পর পর চুল ঠিক করে কানের পিঠে গুঁজছে। দু’জনই নীরব রয়েছে। নীরবতা ভাঙল নীরদ। বলল,
-“তো কী দিবে বলে ভাবছ?”
অবুঝ ভঙ্গিতে তাকাল অর্ঘমা। নীরদ দুষ্টু হেসে বলল,
-“আজকে এত বড় একটা সারপ্রাইজ দিলাম। এর পরিবর্তে তোমারও আমাকে কিছু দেওয়ার কথা ছিল। তুমি বলেছিলে রাতে ছাদে আসতে। তারপর ভেবে দেখবে কী দেওয়া যায়।”
-“দিতেই হবে?”
-“স্বীকার করেছ যখন তখন তো দিতেই হবে।”
ভীষণ লজ্জা লাগল অর্ঘমার। প্রসঙ্গ পাল্টানোর ভঙ্গিতে বলল,
-“আজকের আকাশটা ভীষণ সুন্দর।”
নীরদ তাকাল আকাশের দিকে। তারা ভরতি আকাশের মাঝে অর্ধচন্দ্র জ্বলজ্বল করছে। আসলেই সুন্দর দৃশ্য। পরপরই উষ্ণ স্পর্শে কেঁপে উঠল তার সর্বাঙ্গ। সামনে তাকিয়ে দেখল অর্ঘমা তাকে জড়িয়ে ধরেছে। ভীষণ শক্ত করে। এতগুলো বছরে কখনো এতটা কাছাকাছি আসা হয়নি তাদের। নীরদ সবসময় হাত ধরা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থেকেছে। পাছে যদি আবার অর্ঘমাকে কেউ খারাপ ভাবল? এই ভয়ে সবসময় দূরত্ব বজায় রেখে চলেছে। কিন্তু এখন তারা একে অপরের বাগদত্তা। এসব ব্যাপারে ভয় পাওয়া আর সাজে না। তাই নিজেও অর্ঘমার পিঠে হাত রেখে মৃদু হেসে ফিসফিস করে বলল,
-“এটা কী আমার গিফট ছিল?”
অর্ঘমা কিছু না বলে লজ্জায় মুখ গুঁজল নীরদের বুকে।
-“এমন গিফট যদি রোজ রোজ পাওয়া যায় তাহলে তো আমি রোজ সারপ্রাইজ দিতে রাজি।”
খিলখিলিয়ে হেসে উঠল অর্ঘমা।
খুকখুক কাশির শব্দে চমকে উঠল দু’জন। দ্রুত একে অপরের থেকে সরে দাঁড়াল। তাকাল ছাদের দরজার দিকে। কাশির শব্দ সেখান থেকেই এসেছে। পরপরই ছাদে প্রবেশ করল অভ্র। তার পেছন পেছন এলো নীরদ আর অভ্রর বন্ধুরা। অর্ঘমা আর নীরদ দু’জনই হকচকিয়ে তাকাল একে অপরের দিকে। আসিফ এসে নীরদের গলা পেঁচিয়ে ধরে বলল,
-“শালা, আমাদের রেখেই আংটি বদল করে ফেললি? কেন রে? আমাদের বললে কী আমরা খাবার বেশি খেতাম?”
-“আরে দোস্ত ছাড়। ব্যথা পাচ্ছি আসিফ।”
-“তোর ব্যথাই পাওয়া উচিত। শালা স্বার্থপর!”
-“সরি দোস্ত। দেখ, তুই বলতি না অর্ঘমাকে জলদি জলদি তোর ভাবী বানিয়ে ফেলতে? এখন তুই চাইলেই ওকে ভাবী বলতে পারবি। অর্ঘমাকে অলরেডি তোর হাফ ভাবী বানিয়ে ফেলেছি।”
-“চুপ থাক শালা!”
আসিফ রেগে নাক-মুখ ফুলিয়ে রেখেছে। নীরদের থেকে চোখ সরিয়ে অর্ঘমাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
-“তোমার কাছ থেকে আমি এটা আশা করিনি। অন্তত তুমি তো আমাকে জানাতে পারতে?”
-“আমি কী জানাব? আমি নিজেই তো জানতাম না। উনার বাবা-মা বাসায় এসে বলার পর জানলাম আমি। আমারও তখন প্রচন্ড রাগ হয়েছিল।”
-“তোমার আংটি বদলের মুহূর্তটা তুমি এনজয় করতে পারলে না। এর শাস্তি দেওয়া উচিত না ওকে?”
-“আপনারা চাইলে দিতেই পারেন।”
-“অর্ঘ!”
নীরদের অসহায় ডাককে উপেক্ষা করে অর্ঘমা বলল,
-“আমার তরফের শাস্তিটাও আপনারাই দিয়ে দিন।”
আসিফ যেন এই কথার অপেক্ষাতেই ছিল। লাফ দিয়ে বলল,
-“শাস্তি হচ্ছে তোমাদের দু’জনের আবার আংটি বদল হবে।”
কথাটা শোনামাত্রই নীরদ আসিফকে জড়িয়ে ধরে বলল,
-“আই লাভ ইউ দোস্ত। আমি এই শাস্তি মাথা পেতে নিতে রাজি।”
-“ছিঃ! সর, সর। আমি অর্ঘমা না।”
নীরদকে ধাক্কিয়ে নিজের থেকে সরিয়ে দিল আসিফ। সকলে একসাথে হাসি মজা করে আবারও নীরদ আর অর্ঘমার আংটি বদল করালো। নীরদ আর অভ্রর বন্ধুরা সকলে আবদার করে বসল তারা আজ রাতে নীরদদের বাসার ছাদে পার্টি করবে। খাবার-দাবার সব বাহির থেকে কিনে এনে খাবে আর সারারাত ছাদে বসে আড্ডা দিবে। এসব শুনে অর্ঘমা ওদেরকে স্পেস দিয়ে বাসায় চলে গেল।
___
অর্ঘমারা নিজেদের বাসায় এসেছে সপ্তাহখানেক হয়েছে। বাসা গোছগাছ করা শেষ হয়েছে গতকাল। ওই বাসা ছেড়ে আসার পর থেকে নীরদের সাথে অর্ঘমার আর দেখা হয়নি। ফোন কল অথবা ম্যাসেজেই কথা হয়েছে শুধু। অর্ঘমা ভেবেছিল আজ দেখা করবে নীরদের সাথে। কিন্তু নীরদ এখন ব্যস্ত। তিনদিন পর থেকে অর্ঘমাদের এক্সাম শুরু হচ্ছে। এর মধ্যে আর দেখা করাও সম্ভব হবে না। তাই অর্ঘমার কিছুটা মন খারাপ। মন খারাপ নিয়েই টেবিলে বসে গেল পড়তে।
অর্ঘমা আর নীরদের বিয়ের তারিখ ধার্য করা হয়েছে চলতি মাসের ২৮ তারিখ। অর্ঘমার পরীক্ষা শেষ হবে ২১ তারিখ। বিয়ের তারিখ অর্ঘমাই এগিয়ে এনেছে নীরদকে বলে। এই বাসায় থাকার মতো রুচি আর তার মাঝে নেই। মিনা বেগমের ব্যবহার দিন দিন জঘন্যর চেয়েও জঘন্য হয়ে যাচ্ছে তার প্রতি। ছোটবেলা থেকেই অর্ঘমা খেয়াল করেছে মা তাকে তেমন একটা আদর করে না। সবসময় অভ্রকে মাথায় তুলে রাখে। এর কারণটা তখন না জানলেও এখন জানে অর্ঘমা। সত্যিটা যদিও তার মানতে কষ্ট হয় তবুও সত্যি তো সত্যিই। বছরখানেক আগে একদিন বাবা-মায়ের রুম থেকে কথা কাটাকাটির শব্দ পেয়ে এগিয়ে গিয়েছিল সেখানে। সে ছিল দরজার আড়ালে। যখন বুঝতে পেরেছিল তাকে নিয়ে কথা কাটাকাটি হচ্ছে তখন কপালে ভাজ পড়েছিল। পরক্ষণেই সেই ভাজ মিলিয়ে গেল মিনা বেগমের কথা শুনে। অর্ঘমার প্রতি তার এত অবহেলার কারণ অর্ঘমা এই বাসার মেয়ে নয়।
অভ্রর বাবার একমাত্র চাচাতো ভাইয়ের মেয়ে অর্ঘমা। তারা গ্রামে থাকত। মেয়ে হয়ে জন্মেছিল বলে অর্ঘমার বাবা তার চেহারা পর্যন্ত দর্শন করেননি। স্ত্রীকে বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরেছিলেন নতুন বউ নিয়ে। স্বামীর এমন বেইমানী সহ্য করতে না পেরে অর্ঘমার মা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। অর্ঘমার বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী জানায় সে সতীনের মেয়েকে ঘরে রাখবে না। অর্ঘমার বাবাও মত দেন সেই কথায়। ঠিক করা হয় শহরের অনাথ আশ্রমে রেখে আসবেন অর্ঘমাকে। কোনো একভাবে এই কথা জানতে পারেন অভ্রর বাবা। তৎক্ষনাৎ তিনি গ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। চাচাতো ভাইয়ের বাড়ি গিয়ে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। আলোচনার এক পর্যায়ে কথা কাটাকাটি হয় অনেক। পুরো গ্রামবাসী জড়ো হয়ে যায় সেখানে। অর্ঘমার সৎ মা জানায়, যদি অর্ঘমা এখানে থাকে তাহলে তিনি নিজেই একদিন মেরে ফেলবেন এই মেয়েকে। তার সংসারে সতীনের সামান্যতম কোনো চিহ্নও তিনি রাখবেন না। পরে আর কোনো উপায় না পেয়ে অভ্রর বাবা অর্ঘমাকে সাথে নিয়ে আসেন। বাসায় আসার পর অভ্রর মা সব শুনে চেঁচামেচি করেন। কিন্তু অভ্রর বাবার শক্ত জবাবের কাছে হার মানতে বাধ্য হন। তার আবার বরাবরই নিজের সংসার নিয়ে একটা ভয় ছিল। গরীব ঘরের মেয়ে তিনি। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা ছিল তার বাড়িতে। না খেয়ে থাকতে হত প্রায় প্রায়ই। চাওয়া-পাওয়া পূরণ করা তো সেখানে বিলাসিতা ছিল মাত্র। অভ্রর বাবার সাথে বিয়ে হওয়ার পর থেকে স্বচ্ছল জীবনযাপন করা শুরু করেছেন তিনি। কথা কাটাকাটি বা ঝগড়াঝাঁটির কারণে যদি সম্পর্ক ডিভোর্স পর্যন্ত গড়িয়ে যায় তখন! এই ভয়ে সবসময় নিজেকে এসব ব্যাপার থেকে গুটিয়ে রেখেছেন। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই অর্ঘমাকে মেনে নেন। কিন্তু মন থেকে কখনো মানতে পারেননি। অভ্রও জানে না যে অর্ঘমা তার আপন বোন নয়। মূলত এটাই কারণ অর্ঘমাকে অপছন্দ করার। নিধি তো শুধুমাত্র একটা ছুতো ছিল। আসলে তিনিই বহু বছর ধরে চাইছিলেন অর্ঘমা যেন তার থেকে দূরে থাকে। তাই সুযোগ পেয়ে নিধিকে ছুতো বানিয়ে অর্ঘমার সাথে ঝামেলা করেছিলেন সেদিন।
___
নিধি পরীক্ষা দিয়ে হাসিমুখে হল থেকে বের হলো। অর্ঘমা তার জন্য অপেক্ষা করছিল। তার পরীক্ষাও যথেষ্ট ভালো হয়েছে। পরীক্ষার ব্যাপারে কথা বলতে বলতে বের হলো দু’জনে। গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে অর্ঘমা বলল,
-“তুই বাসায় চলে যা। আমি পরে আসব।”
-“কেন? কোথায় যাবি?”
-“নীরদ ভাইয়ের সাথে দেখা করতে যাব। অনেক দিন হয়েছে দেখা হয় না। নেক্সট এক্সামের আগে চারদিন বন্ধ আছে। তাই এখন দেখা করতে চাচ্ছিলাম।”
-“বান্ধবীর দেখি তর সইছে না।”
-“চুপ থাক অসভ্য!”
-“হুম হুম বুঝতে পেরেছি। কোথায় দেখা করবি?”
-“ক্যাফেতে।”
-“একা একা এতদূর যাবি?”
-“মাঝরাস্তা থেকে নীরদ ভাইয়ের সাথেই যাব। উনি অফিস থেকে বেরিয়েছেন।”
-“আচ্ছা তাহলে যা। সাবধানে যাবি কিন্তু! আর নীরদ ভাইয়ের সাথে দেখা হওয়া মাত্রই আমাকে কল করে জানিয়ে দিবি।”
-“ঠিক আছে।”
অর্ঘমা রিকশা নিয়ে চলে যেতেই নিধিও বাসার উদ্দেশ্যে হাঁটতে লাগল।
কিছুদূর যাওয়ার পর হঠাৎ নিধি দাঁড়িয়ে গেল। তার চোখ পড়েছে অভ্রর উপর। যে এখন রাস্তার পাশে এক মেয়ের সাথে কথা বলছে। মেয়েটাকে নিধি চেনে। কলেজে থাকাকালীন এই মেয়েটা এসে অর্ঘমাকে হুমকি দিয়েছিল। এমনকি নিজের বন্ধুবান্ধবদের দিয়েও অনেক জ্বালিয়েছে তাদের। পরে অভ্র আর নীরদ গিয়ে পাল্টা হুমকি দিয়ে এসেছিল বলে এদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল। এই মেয়ের সাথে অভ্র কী কথা বলছে? কথা বলার মাঝেই অভ্রর চোখ পড়ল তার দিকে। হকচকিয়ে উঠল নিধি। দ্রুত সেখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই অভ্র লম্বা লম্বা পা ফেলে এগিয়ে এলো। তার চোখ-মুখ শক্ত হয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে রেগে আছে। নিধির হাত ধরে টেনে নিয়ে রিয়ার সামনে গেল। নিধি এতটাই চমকে গেছে যে অভ্রকে কিছু বলতে ভুলেই গেছে। রিয়ার কথায় ধ্যান ভাঙল নিধির। রিয়া চোখ রাঙিয়ে প্রশ্ন করল,
-“এসব কী অভ্র? কে এই মেয়ে? তুমি ওর হাত ধরে টেনে নিয়ে এলে কেন?”
-“আল্লাহর ওয়াস্তে আমার পেছন ছাড়তে বলেছিলাম তোমাকে। তুমি তো শুনলে না। তাই তুমি যাতে আমার পেছন ছাড়ো তার ব্যবস্থা করতে এনেছি ওকে। ও হলো নিধি। অর্ঘমার বেস্টফ্রেন্ড আর আমার হবু বউ।”
নিধি কিছু একটা বলতে চাচ্ছিল এর আগেই অভ্রর কথা শুনে তার চোখ কপালে উঠে গেল। কথা বলার মতো ভাষাই সে হারিয়ে ফেলেছে এক মুহূর্তের জন্য। ততক্ষণে রিয়া চেঁচিয়ে উঠেছে। চেঁচামেচি শুনে নিজেকে স্বাভাবিক করে নিল নিধি। এখুনি তার ছোট্টখাটো একটা হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেত বোধহয়। রিয়া আর অভ্র দু’জন কথা কাটাকাটি করছে। নিধি ফ্যালফ্যাল করে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের কথা শুনে বুঝতে পারল যে এই মেয়েটাই রিয়া অর্থাৎ অভ্রর প্রাক্তন। মেয়েটা যে সুবিধার নয় তা নিধি শুধু শুনেছিল অর্ঘমার কাছ থেকে। আর আজ দেখেও নিল। হ্যাঁ, রিয়া অভ্রকে সত্যি ভালোবাসে এটা সত্যি। কিন্তু তার ভালোবাসার ধরনটা টক্সিক। নিধি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। অভ্র এখনো তার হাত ধরে আছে শক্ত করে। তার অবস্থাটা হচ্ছে এমন, ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। অভ্র আর রিয়ার চেঁচামেচি একপর্যায়ে সহ্য করতে না পেরে বিরক্ত হয়ে নিধি নিজেই চেঁচিয়ে উঠল। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে রিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল,
-“কানের নিচে দুইটা পড়লে তাহলে কথা মাথায় ঢুকবে। এক প্যাঁচাল কতক্ষণ ধরে শুনছি। সোজা কথা কী সোজাভাবে মাথায় ঢুকে না? কাকের মতন কা কা করে সারা রাস্তা মাথায় তুলে ফেলছ একেবারে। নিজেকে কী বিশ্ব সুন্দরী মনে করো যে অভ্র তোমাকে ছাড়া অন্য কোনো মেয়েকে ভালোবাসতে পারবে না বলছ বারবার? চেহারাটা আয়নায় গিয়ে একবার দেখে নিয়ো। হুহ্! যেই না চেহারা, নাম রাখছে পেয়ারা। যত্তসব ফাউল! আর কখনো যেন অভ্রর ধারের কাছেও না দেখি তোমাকে। নাহলে একেবারে চোখ দু’টো তুলে ফেলবো। আমার ধৈর্যের একটা সীমা আছে। সেই সীমাটা লঙ্ঘন করো না।”
কথা শেষ করে নিধি উল্টো অভ্রর হাত ধরে টানতে টানতে হাঁটা ধরল। অভ্র, রিয়া দু’জনই বেকুবের মতো দাঁড়িয়ে ছিল এতক্ষণ। রিয়া হা করে তাদের যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে। আর অভ্র বিস্মিত দৃষ্টিতে হা করে তাকিয়ে আছে নিধির দিকে। তার মস্তিষ্ক এখনো ব্যাপারটা স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারেনি। পুরো ব্যাপারটা তার মস্তিষ্কে প্যাঁচ লেগে গেছে। সেটাই এখন ছাড়ানোর চেষ্টায় আছে সে।
চলবে…