কানামাছি,পর্ব:২

0
2611

#কানামাছি
#পার্টঃ২
#জান্নাতুল কুহু
নাহিদ সাঁঝের পা থেকে মাথা পর্যন্ত একবার লোলুপ দৃষ্টিতে দেখে নিল। হঠাৎ সাঁঝের গলার সামনের হাড় আর কাঁধের কাছে চোখ আটকে গেলো। নাহিদের ধারনা মেয়েদের মুখের দিকে তাকিয়ে কোন লাভ নেই। মুখ তো সবাই দেখে। তাই সে সাঁঝের পা থেকে গলা পর্যন্ত আরো একবার চোখ বুলিয়ে নিলো। সাঁঝ বলে উঠলো,

—” যদি স্ক্যান করা হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে রাস্তা ছাড়েন”

নাহিদ এবার সাঁঝের মুখের দিকে তাকিয়ে হেসে বলল,

—” মাশাল্লাহ সাঁঝ! তুমি অনেক বড় আর সুন্দরী হয়ে গিয়েছো। যৌবন এসেছে তোমার শরীরে। তার তোমার গলার সামনে হাড় দুটা কিন্তু মাশাল্লাহ সেই লাগছে। যাকে বলে আর কি বিউটি বোন”

নাহিদের মুখের চ্যাটচেটে হাসি দেখে সাঁঝের গা ঘিনঘিন করে উঠলো। মাশাল্লাহ কথাটাকে অপবিত্র বানিয়ে দিলো। সে বেশ জোরে জোরে বলল,

—” আউযুবিল্লাহি মিনাশ শায়তনির রাজীম”

সাঁঝ নিজের গায়ে আর চারপাশে ফু দিলো। নাহিদ ভ্যাবাচেকা খেয়ে জিজ্ঞেস করলো,

—” তুমি হঠাৎ এটা কেন পড়লে?”

—” শয়তানের নজর থেকে বেঁচে থাকার জন্য এই দোয়া পড়ে নাহিদ ভাই। শয়তানের নজর লেগেছে যে আমার”

সাঁঝ মিষ্টি করে হেসে পাশ কাটিয়ে সিড়ি দিয়ে উপরে চলে আসলো। সকালবেলা এই অসভ্যটাকে দেখে মন মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে। রান্নাঘরের সামনে এসে দাঁড়ালো। বাড়িতে আজ এলাহি কান্ড। ফুফুর চরিত্রহীন দেবর এসেছে বলে কথা! সাঁঝ নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে দরজাতে কান পেতে থাকলো। সাথে সাথে দুরুম দুরুম করে শব্দ হতে থাকলো। মনে হলো সিড়ি দিয়ে কোন বস্তা বা ভারী কিছু পড়ে যাচ্ছে। শেষে একটা আর্তচিৎকার শোনা গেল,

—” ভাইয়া ভাবি বাঁচাও। মরে গেলাম সিড়ি থেকে পড়ে। কোমড় ভেঙে গেল আমার”

সাথে সাথে ফুফুর গলায় শুনতে পেলো,

—” নাহিদ পড়লে কি করে? ইশ লেগেছে খুব? তাড়াতাড়ি এম্বুলেন্স ডাকো”

ফুফা বলল,

—” আরে তুই পড়লি কি করে? আমি এম্বুলেন্স ডাকছি”

সাঁঝ দরজার কাছ থেকে সরে বাথরুমে গিয়ে হাত ধুয়ে নিলো। সিড়িতে তেল ফেলতে গিয়ে হাতেও কিছুটা তেল লেগে গেছে। একটা শান্তির নিঃশ্বাস ফেললো। এই নাহিদ আর কোন ঝামেলা করতে পারবে না। দরজার দিকে আরেকবার তাকিয়ে দেখে নিলো ছিটিকিনি লাগানো আছে কিনা। নাহলে ফুফা যেকোন সময়ে চলে আসতে পারে। ভাইয়া মারা যাওয়ার পরে একদিন মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে দেখে ফুফা বিছানায় বসে তার দিকে ঝুকে আছে। সাঁঝ ধড়মড় করে উঠে বসে জিজ্ঞেস করেছিলো,

—” ফুফা আপনি এতো রাতে এখানে?”

—” আসলে তুমি ভয়টয় পাও কিনা তাই দেখতে আসলাম”

—” আমি তো দরজা লাগিয়ে দিয়েছিলাম আপনি আসলেন কিভাবে?”

—” ভালো করে লাগানো হয়েছিলো না তাই ধাক্কা দিতেই খুলে গেল”

এরপরও ফুফা বসেই ছিলো। তার এই ঘর থেকে যাওয়ার কোন ইচ্ছাই নেই যেন। সারারাত সাঁঝকে পাহারে দিবে। সাঁঝ বিরক্ত হয়ে বলেছিলো,

—” আমার ভয় করছে না। আপনি যান”

—” যাবো? ভয় পাবে না তো? কোন সমস্যা হলে আমাকে ডেকো। ফুফুকে ডাকার দরকার নেই। তার ঘুম গাঢ় অনেক”

এরপর অনেক অনিচ্ছা নিয়ে ফুফা চলে যায়। তখন রাতে দরজা লাগাতো। এখন দিনেও লাগায়। নাহলে সারাদিন দরজার সামনে ঘুরঘুর করতে থাকে।

সাঁঝ একটা ডাইরি খুললো। প্রথম পাতায় বাবা,ভাইয়া আর সাঁঝের একটা ছবি আছে। এরপর শুধু ভাইয়ার একটা হাস্যোজ্জ্বল ছবি। তারপরের পৃষ্ঠাতে একটা কমবয়সী ছেলের কম ছবি। ছবিতে সেই ছেলেটাও হাসছে। গায়ে পুলিশ ইউনির্ফম। নিচে সাঁঝ লিখেছে অনিক। ছেলেটার নাম অনিক।

এই সেই পুলিশ অফিসার যে তার ভাইয়াকে পুরো মাঠের শত শত ছেলে মেয়ের মাঝে মেরেছিলো। জুতার মালা গলায় দিয়ে হাঁটিয়েছিলো। একে দেখে নিজের ভিতরে জ্বলতে শুরু করেছে। এই লোকটার জন্য তার ভাইয়া সুইসাইড করেছে। রাস্তায় গাড়ির সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলো। এই লোকটা বিনা অপরাধে তার ভাইয়ে অভিযুক্ত বানিয়েছিলো।
সাঁঝ পৃষ্ঠা উল্টিয়ে সেখানে তার লেখা কিছু জিনিস আবার পড়তে থাকলো। পুলিশ অফিসারটার নাম অনিক মাহমুদ। ইয়াং পুলিশ কিন্তু ঘুষ আর অনিক একসাথে চলে। তার সাথে যারা কাজ করে তারা অনেকেই এটা জানে অনিক ঘুষ খায় কিন্তু অনিক নিজে পুলিশ এবং তার সাথে উপরওয়ালাদের সাথে ভালো সম্পর্ক। তাই কেউ কিছু বলার সুযোগ পায় না।

দেড় বছর আগে ভাইয়াদের ভার্সিটির একটা মেয়ে অভিযোগ করেছিলো সাহেল নামের একটা ছেলে মেয়েটার গায়ে হাত দিয়েছে, আর বাড়ি থেকে তুলে নেয়ার হুমকিও দিয়েছে। অনিকের কাছে অভিযোগ করা হয়েছিলো। কিন্তু সেই সাহেল আর যে সাহেলকে মারা হয়েছিলো তারা এক না। অপরাধী সাহেল বড়লোক বাবার নষ্ট হয়ে যাওয়া ছেলে। অনিক সাহেলের বাবার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে কেস বন্ধ করতে চেয়েছিলো। কিন্তু সাহেলের বাবা অন্য কোন সাহেলকে আটক করার প্রস্তাব দিয়েছিলো। তাই অনিক নিজের টার্গেট বানায় নিরপরাধ সাহেলকে। এরপরে ভাইয়ার কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা চেয়েছিলো তাতে তার ভাইয়া ধরা পড়বে না। কিন্তু ভাইয়া মানা করে দেয়। ভাইয়া বিষয়টা আমলে নেয় না। কারণ সে নিরপরাধ। একটা পুলিশ তার কি করবে? আর টাকার বিনিময়ে সে কোন ডিল পুলিশের সাথে করবে না।

কিন্তু ভাইয়ার ধারনা ভুল করে দিয়ে অনিক তার জীবনটা বরবাদ করে দেয়। মারার পরে জেলে একরাত থাকতে হয়েছিলো। তারপর ছেড়ে দিয়েছিলো। কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার সব হয়ে গেছে। বাইরে বের হলেই সবাই ধিক্কার জানাচ্ছে ইভটিজার হিসেবে। ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সবাই ছি ছি করছে। ভাইয়া বাসার বাইরে যেতে পারে না। সবাই ঘুরে ঘুরে তাকায় আর ফিস ফিস করে কথা বলে।

সাঁঝ পড়া থামিয়ে নিঃশ্বাস ফেললো। পরের পাতা উল্টালো। সেখানে একটা কাগজ আঠা মেরে রাখা। কাগজটাতে ভাইয়ার হাতের লেখা আছে। সেখানে লেখা,
আমি আর পারছিনা এই অপমান নিয়ে বাঁচতে। নিরপরাধ হয়ে আজ আমি সবার চোখে ঘৃণার একজন মানুষ। সবাই আমাকে দেখে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। আজ আমার বোনটাকে যেতে আসতে শুনতে হয় ইভটিজারের বোন। আমি এগুলো নিয়ে আর বেঁচে থাকতে পারবো না। আমার কাছে আর দ্বিতীয় কোন উপায় খোলা নেই।
এটা ছিলো ভাইয়ার নিজের ডায়েরিতে লেখা শেষ কথা। যেদিন লেখা হয়েছে সেদিন ভাইয়ার লাশ পাওয়া যায়।
অনিকের ব্যপারে সব তথ্যগুলো ভাইয়া জোগাড় করেছিলো। সাঁঝ সত্যতা যাচাই করেছে। আর কথাগুলো আসলে ঠিক। অনিকের জন্য তার ভাইয়ের জীবন ধ্বংস হয়ে গেলো।
সাঁঝ পাতা উল্টে লিখলো “কানামাছি”

জানালার বাইরে কোন একটা পাখির ডাক শুনে সাঁঝ বাইরে তাকালো। কিন্তু পাখিটাকে খুঁজে পেলো না। মন উদাস হয়ে উঠলো। তার জীবনটাও অনেক পাল্টে গেছে। এখন তার আড়ালে অনেকেই তাকে মেয়ে গুন্ডা বলে ডাকে। যদিও সে কোন গুন্ডামী করে না। কিন্তু তার কিছু দল আছে। একটা এলাকায় আরেকটা তার ভার্সিটিতে। দলগুলো কোন খারাপ কাজ করে না বরং খারাপ কাজ আটকানোর চেষ্টা করে। তবুও মানুষ গুন্ডার দল বলে। তার সাথে বেশ কিছু মেয়ে আছে। তাদের নামের শেষে গুন্ডা কথাটা লাগেনি। তার নামের শেষে কেন লেগেছে এটার কারণ তার জানা নেই।

ফোনের রিংটোনে ভাবনা থেকে বাইরে আসলো। মুখে বাঁকা হাসি খেলে গেল। অনিক ফোন করেছে। সাঁঝ ফোন ধরার পরে ওপাশ থেকে বলল,

—” সাঁঝ ফোন করেছিলে রাতে? তখন আসলে ব্যস্ত ছিলাম একটা কেস নিয়ে। এখন বলো কেমন আছো?”

—” এই তো ভালো আছি। তুমি কেমন আছো?”

—” হুম ভালো আছি। তোমার গলার আওয়াজ এমন কেন মনে হচ্ছে? শরীর খারাপ? বাসায় কিছু বলেছে?”

—” না অনিক তেমন কিছু না”

—” আচ্ছা তোমার সাথে জরুরী কিছু কথা আছে।”

—” হুম বলো”

অনিক কিছুটা থেমে বললো,

—” তোমার আমার সম্পর্ক এক বছর হয়ে গেছে। আমি এটাকে সম্পর্কই বলবো। কারণ আমি তোমার সাথে যেদিন থেকে কথা বলা শুরু করি সেদিন থেকে আমার ভালো লাগে তোমাকে। আমি এই এক বছরের মধ্যে অনেক বারই অনেকভাবে তোমাকে বলেছি যে আমি শুধু তোমাকে পছন্দ করিনা। এর থেকেও বেশি কিছু। তুমি বিশ্বাস করবে কিনা জানিনা আমি সত্যি তোমাকে নিজের কল্পনা আর স্বপ্নে সর্বোচ্চ জায়গা দিয়েছি যেটা অন্য কাউকে দেয়া সম্ভব না। এখন এমন হয়েছে যে তোমার সাথে আমার কথা না বললে অস্থির লাগে। তোমার কিছু হলে আমার রাতে ঘুম হয় না। তাই আজ অফিসিয়ালি বলছি সাঁঝ আমি তোমাকে ভালোবাসি। অনেকটা ভালোবাসি। হয়তো অন্য কাউকে এতোটা ভালোবাসতে পারবো না ”

সাঁঝের মুখে একটা হাসি খেলে গেলো। আপন মনেই বলল, অনিক তোমার চোখ বাঁধা শেষ। এবার তোমাকে ভেঙে দেয়া বাকি।

সাঁঝ যথাসম্ভব চেষ্টা করলো নিজের গলায় জড়তা আর লজ্জা আনার। বলল,

—” হুম। ধন্যবাদ”

অনিক একটু হাহাকার করে বলল,

—” ধন্যবাদ? কি ধন্যবাদ? প্রপোজ করলে কেউ ধন্যবাদ বলে?”

—” আর কি বলবো?”

—” আরে বাবা নিজের অনুভূতিটা বলো। আমার প্রতি তোমার কি অনুভূতি? ”

সাঁঝ একটু আমতা আমতা করে বলল,

—” আমারও তোমাকে ভালো লাগে”

অনিক একটু হেসে বলল,

—” লজ্জা পাচ্ছো? আমার না খুব ইচ্ছা হচ্ছে তোমার লজ্জামাখা মুখটাকে দেখতে। জানো আমার খুব ইচ্ছা আমি আর তুমি একসাথে বৃষ্টিতে ভিজবো। জ্যোৎস্না দেখবো। সকালে সূর্য ওঠা দেখবো। আর যখন আমি বলবো ভালোবাসি তখন তোমার লজ্জারাঙা মুখটাও দেখবো।”

—” আমি রাখছি”

—” এখনো লজ্জা পাচ্ছো দেখছি। আচ্ছা আর লজ্জা দিচ্ছি না। পরে কথা বলবো। নিজের খেয়াল রেখো। খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করো। কিছু লাগলে আমাকে বলো”

—” হুম রাখছি।”

সাঁঝ ফোন কেটে দিলো। তার মিশ্র অনুভুতি হচ্ছে। একদিকে অনিকের প্রোপজ শুনে ভালো লাগছে। তার কাছে ধরা দিয়েছে অনিক। ভালোবাসার কাছে ধরা দিয়েছে। অনিক আসলে তাকে অনেক ভালোবাসে। আর এটাই অনিককে শেষ করে দিবে। আর ভিতরে জ্বলতেও শুরু করেছে ভাইয়ের খুনির কাছ থেকে এসব ভালোবাসার কথা শুনে।
অনিককে তিলে তিলে শেষ করার আরো ব্যবস্থা সাঁঝ করেছে। সেগুলোর কাজে আজ ভার্সিটি যেতে হবে। এমনি সময়ে সে ভার্সিটিতে বেশি যায় না। মাঝে মাঝে পরীক্ষা বা অন্য কাজ থাকলে যায়। রেডি হয়ে ঘর থেকে বের হয়ে দেখলো কেউ নেই। দেখে খুশি হলো। নাহিদকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছে মনে হয়। যা রান্না হয়েছিলো তার থেকে কিছু খেয়ে নিয়ে সাঁঝ বের হয়ে গেলো।

রাস্তায় যাওয়ার সময় বারবার অনিকের বলা কথাগুলো মনে হচ্ছিলো। লজ্জামাখা মুখ দেখবে। এক বছর ধরে অনিকের সাথে এই নাটক করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত নিজের সাথে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। বারবার ভাইয়ার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো চোখের সামনে ভাসছে। ভাইয়াকে মারার ভিডিও সে দেখছিলো। সেদিন খুব কান্না করেছিলো। কিন্তু এখন দেখলে অনিককে মেরে ফেলার নেশা চাপে মাথায়।

রিকশা থেকে নেমে ভার্সিটি থেকে একটু দূরে একটা দোকানে দাঁড়িয়ে নিজের বান্ধবীদের জন্য অপেক্ষা করছে। কেউ এসে পৌছায়নি। সাঁঝ একটা সিগারেট নিয়ে সেটা জ্বালিয়ে একটু সাইড হয়ে দাঁড়িয়ে আগুনের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলো।
,
,
,
?
ইহান জার্মানি থেকে আজ দেশে ফিরলো। আজ তার খুশি আর ধরছে না এতোদিন পরে দেশে ফিরে। বাবা-মায়ের সাথে জেদ ধরে একটা ভার্সিটির লেকচারার হিসেবে জার্মানিতে গিয়েছিলো। কিন্তু দুই বছর হতে হতে না হতেই বুঝলো জার্মানি তার জন্য না। কোন আপনজন নেই সেখানে, নিজের মতো কাজ করার স্বাধীনতা পাচ্ছে না, কোন কিছুই ঠিক নেই। তাই চাকরি ছেড়ে চলে এসেছে। এখানে নিজের একটা সফটওয়্যার কোম্পানি দিবে বলে ঠিক করেছে। তবে বাবার সাথে ডিল হয়েছে বাবা তার কোম্পানি দিতে সাহায্য করবে যদি সে বাবার ব্যবসায় জয়েন করে। ডিলটা মেনে নিয়েছে।

গাড়িতে বসে চারিদিক যতো দেখছে ততই মুগ্ধ হচ্ছে ইহান। নিজের দেশের ট্রাফিক জ্যাম, হকার, শব্দ দূষণ সবই তার ভালো লাগছে। মানে এক কথায় অপূর্ব লাগছে। এক জায়গায় জ্যামে পড়ে গাড়ি আটকে গেলে ইহান জানালা নামিয়ে চোখ ভরে সব দেখতে থাকলো। হঠাৎ একটা মেয়েকে সিগারেট হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভ্রু কুঁচকে নিলো। বলে উঠলো,

—” আজকার পশ্চিমা দেশের মতো বাংলাদেশের মেয়েরাও কি রাস্তাঘাটে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাওয়া শুরু করেছে নাকি?”

ড্রাইভার কোন উত্তর দিলো না।
ইহানের মন কিছুটা খারাপ হয়ে গেল এই দৃশ্য দেখে। সে নিজে কত গর্ব করতো যে তার দেশের মেয়েরা অন্য দেশের মেয়েদের মতো না। মদ, সিগারেট এসব খায় না। অনেক শালীন। এই দুই বছরে এতো পরিবর্তন হয়ে গেলো সব? (চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here