কাজললতা পর্ব ২২

0
573

#কাজললতা
#লেখিকা_ইভা_আক্তার
#পর্ব_২২

—————————————————————————
-কেমন আছো প্রেয়সী?
– তুমি? তুমি এখানে কেনো এসেছো? আজ আমি তোমার কারণেই ধর্ষিত না হয়েও ধর্ষিতা নামে বেঁচে থাকতে হচ্ছে। তোমার সব কথাই তো আমি শুনেছি। তাও কেনো এখানে এসেছো?
– আরে প্রেয়সী উত্তেজিত কেনো হচ্ছো? আমি তো তোমার সঙ্গ দেওয়ার জন্যই এখানে এসেছি।
– দরকার নেই তোমার সঙ্গ। বেরিয়ে যাও এই মুহুর্তে আমার বাড়ি থেকে।
-বেরিয়ে যাওয়ার জন্য তো আমি এখানে আসি নি। তুমিই দেখো ইভা। ইফতি খুব শিগ্রই সুহাসিনীর হয়ে যাচ্ছে। তারপর তো ও আর তোমাকে মনেও রাখবে না। তাছাড়া ও নিজেও হয়তো বিশ্বাস করে নিয়েছে যে তুমি আসলেই ধর্ষিতা।
– একদমই ধর্ষিতা বলে ডাকবে না। আমি মোটেও ধর্ষিতা না।
– তোমার শাড়ি ছেড়া থেকে শুরু করে চোখের কাজল,ঠোঁটের লিপস্টিক আর চুলগুলো যে সুহাসিনী এলোমেলো করে দিয়েছে তা তো শুধুমাত্র তুমি, আমি আর সুহাসিনী জানি। বাকি সবাই তো জানে তুমি ধর্ষিতা।
আমি দুই কান চেপে বললাম,
– অনকে হয়েছে থামো বলছি শুভ। তুমি আর সুহাসিনী আমার জীবনে আসার পর থেকে সব কিছু শেষ করে দিয়েছো। এখন আবার কি চাও বলো।
– তোমাকে চাই। আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই।
– করবো না তোমাকে বিয়ে। কখনোই না। আমি এখান থেকে পালিয়ে যাবো।
– দেখো ইভা পাগলামি করো না। তোমার বাবা আমার কাছে খুবই কৃতজ্ঞ কেননা তার ধর্ষিতা মেয়েকে আমি বিয়ে করতে চাইছি এবং ভালোওবাসি। তাহলে তুমি কি করে নিজের বিয়ে আটকাবে বলো? আর পালিয়ে যাবে? তোমার ইচ্ছে। পরে আনার ইফতির মৃত্যুর পিছে আমাকে দায়ী করো না।
কথাগুলো বলতেই আমি স্ট্যাচু হয়ে গেলাম। সত্যিই তো বাবার তো এখন শুধুমাত্র আমাকে নিয়েই যতসব চিন্তা। কে আমাকে বিয়ে করবে? কেউ কি করতে চাইবে কোনে ধর্ষিতা মেয়েকে বিয়ে? কথাগুলো বলেই শুভ রুম থেকে চলে গেলো। সবকিছুই যেনো আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।
————————————————————————————-
আমার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে ইলমা,নাহিল ভাইয়া এবং ছোটো চাচ্চু। তার সেই ঘন্টাখানেক আগে থেকে আমাকে নান ধরণের কথা বুঝিয়ে যাচ্ছে। আমার মতোই তারা ইফতি ভাইয়ার কাছেও গিয়েছিল বোঝাতে কিন্তু ইফতি ভাইয়া নাকি কাজের অজুহাত দিয়ে তাদের চলে যেতে বলেছে।
– ইভা তুই কি সত্যি শুভ ভাইয়াকে বিয়ে করতে চাস? (ইলমা)
– ইভা তুই আর ইফতি বোধহয় সত্যি পাগল হয়ে যাচ্ছিস। একটা ভুলের কারণে তোরা দুজনেই আজ আলাদা হয়ে যাচ্ছিস (ছোট চাচ্চু)
– কোনটাকে তেমরা ভুল বলছো ছোট চাচ্চু। আমি তো সত্যিই একজন ধর্ষিতা। তাহলে আমার মতে একজন ধর্ষিতাকে একজন নামকরা বিখ্যাত ডাক্তার কেনে বিয়ে করতে যাবে?(আমি)
– ইভা,,,, (তিনজনে একসাথে চিৎকার করে)
– প্লিজ এই নিয়ে আর কথা বলতে চাই না। আর শুভকে বিয়ে করতে আমারই যেহেতু কোনে আপত্তি নেই তাহলে তোমাদের কেনো আপত্তি বলো তো?
– আচ্ছা আমরা আর কিছুই বলছি না। আর কখনো বলবোও না খুশি? (নাহিল ভাইয়া)
কিছুক্ষণ পর আমাদের বাড়ির কাজের মেয়ে নিপা শরবত আর কিছু নাসতা নিয়ে আসলো। নাসতা দিতে দিতে বললো,
– ইভা আপা খবর হুনছেন?
– কি খবর? (আমি)
– আপনের বিয়া তো ইফতি ভাইয়ের লগেই ঠিক হইছে।
নিপার কথা শুনে আমার মতো সকলেরই চোখ বর হয়ে গেলো।
– এসব কি বলছিস নিপা? ইফতি ভাইয়া কেনো আমাকে বিয়ে করতে যাবে?
– আরে না না আপা। ইফতি ভাই নাকি আপনের বাপেরে কল দিয়া কইছে আপনের আর আপনের জামাই। আর ইফতি ভাই আর হের বউয়ের একদিনেই একলগে বিয়া হইবো। আর সকলে রাজিও হইছে।
নিপার কথা শুনে আমার স্তব্ধ হয়ে গেলাম। ইফতি ভাইয়াও তাহলে বেশ খুশিমনে বিয়েতে রাজি হয়েছে। বাহ!
————————————————————————————-
বিয়ের শাড়ি পড়ে বিছানায় বসে রয়েছি। যদিও আমার মোটেও ইচ্ছে ছিলো না যে নিজের বিয়েতে শাড়ি পড়বো। কিন্তু যেহেতু সম্পূর্ণ বিয়েটাি আমার বিরুদ্ধে হচ্ছে সেখানে আর আমার ইচ্ছেতে কি যায় আসে? ইফতি ভাইয়ার কথায় আজ শুধুমাত্র আমাদের কাবিন হবে যা আমাদের বাড়িতেই হবে। আর বাকি অনুষ্ঠান নাকি এক-দুই মাস পরেই করবে। আমার হাতে রয়েছে ইফতি ভাইয়ার দেওয়া কাজল। কতদিন আর মাস পার হয়ে গেছে চোখে কাজল দেই না। আর দিতেও চাই না। কেমন জানি আজ এই কাজলটাকেও বিষাদ মনে হচ্ছে।
– ইভা মেঝো চাচ্চু তোকে নিয়ে যেতে বলেছে।
রুমে এসেই ইলমা কথাটা বললো। ইলমা আর নাহিল ভাইয়া দুজনের মুখই চুপসানো টাইপের। আমাদের দুই জনের বিয়েতেই যে ওদের মত নেই তা ওদের চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ইলমা আমাকে নিয়ে ড্রয়ইং রুমে নিয়ে গেলো। বাড়িতে প্রচুর মানুষ রয়েছে। আমাকে দেখে তারা সরে গেলো। ইলমা আমাকে নিয়ে শুভর পাশে বসালো। অনেকের মুখেই শুভকে নিয়ে নানা ধরনের গুনগান শোনা যাচ্ছে। সকলের মুখেই একটা কথা “ছেলেটা কত ভালো নাহলে কি আর ধর্ষিতা মেয়েকে বিয়ে করতে চায়? ” কিছুক্ষণ পরই আমার সামনের সোফাতে ইফতি বাইয়া আর সুহাসিনী আপু হাসতে হাসতে বসলো। সত্যি মানুষগুলো খুব স্বার্থপর। ওদের একসাথে দেখে আমার বুক ফেটে কান্না আসছিলো। খুব কষ্টে নিজের কান্নাকে আটকে রাখলাম। কিছুক্ষণ পর কাজী এসে বিয়ে পড়ানো শুরু করলো। কাজীর বিয়ে পড়ানোর শব্দ যেনো আমার কাছে সম্পূর্ণ বিষাদ লাগছিলো।
– মা কবুল বলো
কাজী সাহেবের কথায় আমি মাথাটা তুললমা। সত্যি কি আমাকে বিয়ে করতে হবে তাও আবার শুভ নামের এই জানুয়ারটাকে?
– কি হলো মা কবুল বলো।
কবুল তো দূরের কথা মুখ থেকে একটা শব্দও বের হচ্ছিলো না। হটাৎ করে ইফতি ভাইয়া দাঁড়িয়ে গেলো। ইফতি গিয়ে মেইন দরজার সামনে দাঁড়িয়ে হুট করে দরজাটা খুলে দিতেই ভেতরে বেশ কয়েকজন মহিলা এবং পুরুষ পুলিশ আসলো। সকলের নজর ছিলো তাদের দিকেই।
– ভেতর আসুন আপনারা (ইফতি ভাইয়া)
– ইফতি কারা এরা? এখানে কেনে এসেছে? (বাবা)
– এখনই বুঝতে পারবো মেঝো চাচ্চু (ইফতি ভাইয়া)
ইফতি ভাইয়া কিছু একটা ইশারা করতেই পুলিশরা গিয়ে আমার পাশে বসা শুভর হাতে হ্যান্ডকাপ পড়ালো।
– আরে আরে কি করছেন আপনারা? আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? কি করেছি আমি? (শুভ)
– আমি বলছি কি করেছে ও (ছোটো চাচ্চু)
ছোটে চাচ্চু বলতে লাগলো,
– ইভা আসলে ধর্ষণ হয় নি। ইভার ছেড়া যে শাড়িটা ছিলো সেটা সুহাসিনী নিজেই ছিঁড়েছে। আর তারপর ওরা ইভাকে বন্দুকের ভয় দেখিয়ে বলেছে যদি ইভা ওদের কথামতো কাজ না করে তাহলে ইফতিকে গুলি মারবে। মানে ইভাকে বলতে হবে ও সত্যি ধর্ষিতা। কি আমি ঠিক বলছিতো সুহাসিনী আর শুভ?
ছোটো চাচ্চু কি করে সত্যি কথাগুলো জানতে পারলে? কি হচ্ছে এসব? শুভ আর সুহাসিনীর দিকে তাকিয়ে দেখি ওরা ভয়ে বারবার ঢোক গিলছে। ইফতি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি ইফতি ভাইয়া একদম স্বাভাবিক রয়েছে। তারমানে কি ইফতি ভাইয়া সব কিছুই জানতো।
– এসব মিথ্যে কথা। আমরা কেনো এমন করতে যাবো। আমাদেরকে ফাঁসানো হয়েছে (সুহাসিনী আপু)
ছোটো চাচ্চু বাঁকা হাসি দিয়ে পুলিশকে বললো,
– আসলেই কি তাই ইন্সপেক্টর জিসান?
– হয়েছে আপনার কথা ডঃ সুহাসিনী খান? আমাদেরকে কিন্তু সকল প্রমাণ অনেক আগেই দেওয়া হয়ে গেছে। যেমন আপনারা যেই গোডাউনে ইভার সাথে শারীরিক এবং মানসিক টর্চার করেছেন সেখানের সিসি ক্যামরা ফুটেজ অনেক আগে থেকেই আমাদের হাতে পৌঁছে গেছে।
ইন্সপেক্টর জিসানের কথা শুনে ওরা আরও ভয় পেয়ে গেলো।
– আর আসলো কখন আমি শুনেছি যে ইভাকে ভয় দেখিয়ে বলা হয়েছে যে ইভা যদি শুভকে বিয়ে না করে তাহলে ইফতিকে গুলি করবে তাই তো? সবই সম্ভব হয়েছে ছোটো চাচ্চুর কারণে। ছোটো চাচ্চু সময় বুঝে ইভার সাথে কথা বলার মাঝখানেই ওর টেবিলে মাইক্রোফোন লাগিয়ে আসে। ( ইফতি ভাইয়া)
ইফতি ভাইয়া আর ছোটো চাচ্চুর একেকটা প্ল্যান শুনে আমি চরম অবাক হয়ে যাচ্ছি। আমার মতো উপস্থিত সকলেই অবাক হয়ে গিয়েছে। একজন মহিলা পুলিশ গিয়ে সুহাসিনী আপুর হাতে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছিল আর সুহাসিনী আপু চিৎকার করে বলতে লাগলো,
– আমি তোমাকে কখনোই ছাড়বো না ইভা। শেষ করে দেব তোমাকে। তোমাকে বাচিঁয়েয়ে রাখাটাই আমার সবচেয়ে বড় ভুল হয়েছে।
পুলিশরা শুভকেও নিয়ে যেতে লাগলো। শুভর মুখে ছিল রাগ আর কষ্টের ছাপ। পুলিশদের সাথে ছোটে চাচ্চুও চলে গেলো। বাড়ির সকলে এমন অদ্ভুত ঘটনা দেখে থ হয়ে গেলো। কি থেকে কি হয়ে গেলো তা নিজেই বুঝতে পারলাম না। পাশ থেকে আন্টিরা বলতে লাগলো,
– মেয়েটার দেখি এই নিয়ে দু দুবার বিয়ে ভেঙে গেলো। এই মেয়েকে তো এখন এমনিতেই কেউ আর বিয়ে করতে চাইবে না।
ওনাদের কথায় সকলের মুখ চুপসে গেলো। হটাৎ করে ইফতি ভাইয়া আমার হাত ধরে তার পাশে সোফায় বসিয়ে কাজীকে বললো,
– কাজী সাহেব আপনি বিয়ে পড়ানো শুরু করুন। কিন্তু কাবিননামায় নাম লিখবেন ইভা চৌধূরী আর ইফতি চৌধুরীর।
ইফতি ভাইয়ার কথায় সকলে হা হয়ে গেলো। আর এদিকে আমি মুগ্ধ নয়নে ইফতি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে রয়েছি। মানুষটাকে যতবার ভুল বুঝি ততবার আমার সামনে স্পেশাল হয়ে উঠে। বাবা আর বড় চাচ্চুর দিকে তাকিয়ে দেখি তারা দুজনেই নিশ্চুপ হয়ে রয়েছে। তারা চাইলেও এখন আর আমাদের বিয়ে আটকাবে না সেটা তাদের মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। আম্মু, ছোটো কাকি, বড়ু কাকি,ইলমা আর নাহিল ভাইয়া তো মহা খুশি। নাহিল ভাইয়া তো ক্যামেরা দিয়ে আমাদের ছবি তুলতে শুরু করলো। আর তানিয়া বুড়ি তো চিৎকার করে হাত তালি দিয়ে বলতে লাগলো,
– ইয়ে কি মজা। ইফতি ভাইয়া আর ইভা আপুর বিয়ে হবে।
————————————————————————————–
হাজারো বাঁধা- বিপত্তি পার করে অবশেষে প্রিয় মানুষের বন্ধনে আবদ্ধ হলাম। বিশ্বাসই হচ্ছে না অবশেষে আমি ইফতি চৌধুরীর স্ত্রী। কবুল বলার পর চোখ থেকে টপ করে দু ফোঁটা অশ্রু ঝড়েছিলো যা ছিল সম্পূর্ণ খুশির কান্না। আমার কান্না দেখে ইফতি ভাইয়া আমার হাতে হাত রাখলো। বিয়ে শেষে আমাকে আমার রুমে পাঠানো হলো। আর এদিকে ইলমা সেই তখন থেকে ভাবি ভাবি বলে খেপাচ্ছে। কিছু হলেই ভাবি এটা লাগবে?ভাবি কিছু খাবে? সত্যি আমার ফাজিল বোন একটা ওফ সরি ননদ।
ইফতি ভাইয়া ভেতরে আসতেই সকলে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। ইফতি ভাইয়া রুমের দরজা আটকাতেই আমার বুকটা ধক করে উঠলো। ইফতি ভাইয়া এগিয়ে বিছানায় আমার মুখোমুখি বসতেই সারা শরীরের ভেতরটা কাপুনি দিয়ে উঠলো। ইফতি ভাইয়া অনেক ক্ষণ যাবৎ আমার দিকে এক পানে চেয়ে রয়েছে। কিছুক্ষণ পর ড্রেসিং টেবিলের উপর থেকে কিছু একটা নিয়ে এক হাত দিয়ে আমার মুখটা উঁচু করে বললো,
– আমার দিকে তাকাও।
ইফতি ভাইয়ার তুমি করে কথা বলায় যেনো আমার দেহের হৃৎস্পন্দনের গতি বেড়ে গেলো। এই প্রথম ইফতি ভাইয়া আমাকে তুমি করে সম্বোধন করেছে। ইফতি ভাইয়ার দিকে তাকাতেই ইফতি ভািয়া তার হাতে থাকা কাজলটা আমার চোখে দিতে লাগলো আর আমি এক পানে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। নিজেকে এখোনে ইফতি ভাইয়ার বউ হিসেবে মানতে অবাক লাগছে।
– কাজল দাও নি কেনো?
ইফতি ভাইয়ার কথায় ধ্যান ভাঙলো।
– কাজল দেওয়ার মানুষ নেই বলে।
আমার কথায় ইফতি ভাইয়া কাজলটা রেখে আমার কপালে একটা গভীর চুপু বসিয়ে দিলো। ইফতি ভাইয়ার ঠোঁটের স্পর্শে আমার শরীরে কারেন্ট বয়ে গেলো।
– এসে পড়েছি আমি। তোমার চোখে একমাত্র কাজল দিয়ে দেওয়ার অধিকারী ব্যক্তী। আমার কাজললতার প্রেমিক পুরুষ আমি।
ইফতি ভাইয়ার কথায় হুট করেই কেঁদে দিলাম। ইফতি ভাইয়া আমার কান্না দেখে অস্থির হয়ে বললো,
– কি হয়েছে ইভা? কাঁদছো কেনো?
ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে বললাম,
– জানো ইফতি ভাইয়া আমার এখোনো বিশ্বাস হচ্ছে না যে অবশেষে আমি তোমাকে পেয়েছি। অবশেষে তুমি আমার স্বামী। জানো আমি ভেবেছিলাম হয়তে তুমিও আমাকে ধর্ষিতা ভেবে একা ফেলে ছেড়ে দিয়েছো। আমি অনেক কেঁদেছিলাম। বারবার কাঁদতাম যার জন্য এতোকিছু করলাম সেই কি অবশেষে আমাকে ছুড়ে ফেলে দিলো?
ইফতি ভাইয়া আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো,
– সুহাসিনী আর শুভ দুজনেই জঘন্যকর হয়ে গিয়েছিলো। ওরা চাইলে আমাদেরকে মেরেও ফেলতে পারতো। সুহাসিনী বলেছিলো যদি আমি ওকে বিয়ে না করি তাহলে ও তোমার ক্ষতি করে বসবে। একারণেই মূলত আমার বিয়েতে রাজি হওয়া। আর যেই মানুষটা আমার জন্য একজন নারীর সত্বিত্ব হারাতেও দ্বিধাবোধ করলো না তাকে কিভাবে আমি ছেড়ে দেই বলো। এতোটা নিষ্ঠুর আমাকে কি করে ভাবলো আমার কাজললতা?
ইফতি ভাইয়ার কথা শেষ হতেই তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললাম,
– ভালেবাসি ইফতি ভাইয়া তোমাকে। অনেক বেশি ভালোবাসি আমার এই প্রেমিক পুরুষকে।
– ভালোবাসি আমার কাজললতাকে। দীর্ঘ ২৪ বছর পর আমার কাজললতাকে নিজের করে পেয়েছি। কাজললতার আজীবনের ভালোবাসায় নিজেকে ডুবিয়ে ফেলতে চাই। ভালোবাসি আমার কাজললতাকে।

চলবে,,,,,,,,,, 💜

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here