#কহিনুর
কলমে: লাবন্য ইয়াসমিন
পর্ব:১৩
সময় চলে যায় কিন্তু হৃদয়ে আঘাতের চিহ্ন গুলো রয়ে যায়। কখনও তা ভোলা যায় না। কথায় বলে বাক্য দ্বারা মানুষকে জান্ত দাফন করা যায় কথাটা একদম সত্য। জুবায়েরের ক্ষত জায়গাই ওষুধ লাগাতে গিয়ে ওর পূর্বের করা ব্যবহারগুলো বারবার মনে পড়েছে অধরার। লোকটা কারণ অকারণে ওকে আঘাত করেছে। চোখের পানি ঝরিয়েছে। ক্ষমা মহৎ গুণ তবুও হৃদয় কথা শুনছে না। অধরার এখন কাঁদতে মন চাইছে। পরিস্থিতি কখন কিভাবে বদলে গেলো বুঝতে পারেনি। জুবায়েরকে ও ক্ষমা করুক বা না করুক লোকটাকে রক্ষা করা ওর কর্তব্য। যেকোন সময় ওর জীবন নিয়ে টানাটানি পড়ে যাবে। কিভাবে ওকে সেভ করা যায় মাথায় আসছে না। বাবা হয়ে নিজের সন্তানের ক্ষতি করতে লোকটার বিবেকে বাঁধছে না। কথাগুলো আনমনে ভেবে চলেছে অধরা। জুবায়েরের যন্ত্রণায় চোখ বন্ধ করে আছে। ওষুধ লাগানো শেষে অধরা জুবায়েরের পাশে বসতে বসতে বলল,
> জ্বর আসতে পারে ওষুধ খাওয়া জরুরী। স্টোর রুমে আজ না গেলে হয়না? আপনার শরীরের যে অবস্থা কিছুক্ষণ পরে বিছানা নিবেন।
জুবায়ের অধরার মুখের সামনে আসা চুল গুলো কানের পিঠে গুজে দিয়ে বলল,
> আমি ঠিক আছি চিন্তা করো না। এইটুকুতে আমার কিছু হবে না। স্টোর রুমের চাবি চুরি করেছি বিষয়টা ধরা পড়ার আগে চেক করে নিতে হবে। আগামীকাল থেকে তুমি দাদুর আশেপাশে ঘুরবে। ভাব জমানোর চেষ্টা করবে।
> আমিও ভেবেছিলাম। তবে লোকটা খুব চতুর সহজে কিছু বলবে বলে মনে হয়না।
> আরে বলবে বলবে,পেটে মাল পানি পড়লে সব বলবে।তুমি এতো ভেবো নাতো। না বললে এমন জিনিস খাওয়াবো না হজম হয়ে যাওয়া বহুকাল আগের খাদ্য পযর্ন্ত বেরিয়ে আসবে।
অধরা ভ্রু কুচকে ফেলল জুবায়েরের কথা শুনে। কথাবার্তার কি হাল। ওকে অপমান করে সেদিন দু’টাকার মেয়ে বলেছিল অথচ নিজের কথাবার্তা একদম জাত মাতালদের মতো। অধরা দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
> মুরব্বি মানুষের সঙ্গে একদম আজেবাজে কিছু করার চেষ্টাও করবেন না। বেয়ার টেয়ারে কাজ নেই। বন্ধুত্ব করবো। আপনার মাথায় সত্যিই কিছু নেই।
জুবায়ের নিভে যাওয়া মন নিয়ে বলল,
> আমার ধৈর্য্য কম। হুটহাট কাজকর্ম করে অভ্যাস। তাছাড়া আমি কিন্তু ভালো বুদ্ধি দিয়েছি। বন্ধুত্ব করে সময় কষ্ট করা হবে। তারচেয়ে এক প্যাক সুন্দর মতো পেটে চালান করিয়ে দিবো তখন দেখবে গড়গড় করে সব বেরিয়ে আসছে। শুনো আমি তোমার বয়সে অনেক বড় বুদ্ধিও বেশি আমার উপরে কথা বলবে না।
অধরা চোখ বন্ধ করে নিজেকে সামলে নিলো। দিনদিন লোকটার বুদ্ধি কমছে নাকি প্রথম থেকেই একরকম কে জানে। আগে ভাবতো জুবায়ের লোকটা খুব বুদ্ধিমান আর গম্ভীর টাইপের কিন্তু না এতো পুরোপুরি তার ছেড়া। অধরা কিছু বলতে চাইলো কিন্তু হলো না তাঁর আগেই আয়াত ভেতরে প্রবেশ করলো। ছেলেটা চোখেমুখে লজ্জা। নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে অসুবিধা হচ্ছে হয়তো। অধরা বিছানা থেকে নেমে গিয়ে ওকে বসতে দিয়ে বলল,
> ভাই তোর কোনো অসুবিধা হচ্ছে? সরি ভাই আমি ক্লান্ত ছিলাম তোর খোঁজ নিতে পারিনি। খুব সরি রে।
আয়াত লাজুক হাসলো। ব্যাস্ত ভঙ্গিতে বলল,
> না না আপু আমি ঠিক আছি। তোমার শশুর বাড়ির লোকজনগুলো সত্যিই চমৎকার। আমি তো সেদিন না জেনেই আজেবাজে কথা বলেছিলাম। জুবায়ের ভাইয়ার কাছে আমি ক্ষমা চাইছি। রাগের মাথায় সেদিন অনেক খারাপ আচরণ করেছি। আমি সত্যি লজ্জিত।
জুবায়ের বালিশে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে বলল,
> কিছু মনে করিনি এটা স্বাভাবিক ছিল।
কয়েকটা কথা বলে আয়াত বিদায় নিলো। জুবায়ের ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে গেলো। অধরা ওর পাশে বসে আছে। মনের মধ্যে হাজারো চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। জুবায়েরের উপরে পরপর দুবার হামলা হয়েছে। কতদিন এভাবে বাঁচতে পারবে? একটা সাধারণ ডাইরি করা উচিত ছিল। অধরা দ্রুত উঠে রুম থেকে বেরিয়ে আসলো। ঘরে বসে থেকে কাজ নেই। কিচেনে নিশ্চয়ই রান্না চলছে। অধরা সিদ্ধান্ত নিলো এবার থেকে রান্নাঘর কব্জা করতে হবে। রান্নাঘরে ঢুকতে পারলে বাড়ির মহিলাদের সঙ্গে টুকটাক কথাবার্তা বলার সুযোগ পাবে। কিছু না কিছু তো তখন জানতে পারবে। তাছাড়া আরও একটা ঝামেলা আছে। জুবায়েরকে এই বাড়ির কোনো খাবার খাওয়ানো যাবে না। ওকে অধরা নিজের হাতে রান্না করে খাওয়াবে।না পারলে বাইরে থেকে অর্ডার করবে। জুবায়েরের আচরণ পরিবর্তন হওয়ার পিছনে খাবারের ভেতরে ওষুধ মেশানো থাকতে পারে। শুধু সন্দেহর বসে কিছু করা উচিত না তবুও অধরা ফেলে দিতে পারছে না। কথাগুলো ভাবতে ভাবতে ও ডাইনিং রুমে এসে থামলো। রান্নাঘরে ফুপি শাশুড়ি কাজের মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে রান্না করছে। অধরাকে দেখে মারিয়া এগিয়ে আসলো। ওর সঙ্গে আছে জুবায়েরের ফুপি লতিফা ফারুকীর মেয়েটা। অধরা মেয়েটার নাম জানেনা। মারিয়া ওকে ইশারা করে বসতে বললো। অধরা ওষ্ঠে হাসি নিয়ে বলল,
> আসলে মারিয়া তোমার ভাইয়ার একটূ জ্বর এসেছে। আমার হাতে তৈরী সুপ খেতে চেয়ছে। আমি ওর জন্য সুপ তৈরী করতে এসেছি। তুমি বসো আমি পরে আসছি।
অধরা মোটামুটি মিথ্যে বলে দিয়ে কেটে পড়লো। ডাইনিং রুমের শব্দ কিচেন পযর্ন্ত অনায়াসে যায়। অধরাকে দেখে লতিফা ফারুকী ব্যস্ত হলেন। দুঃখজনক বিষয় উনিও কথা বলতে পারেন না। অধরা উনার আকার ইঙ্গিত দেখেই বুঝে গেলো এই বাড়ির মেয়েরা সব বোবা কিন্তু ছেলেরা সবাই কথা বলতে জানে। কি অদ্ভুত মেয়েদের কথা বলার শক্তি নেই কিন্তু কেনো? শাশুড়ি মায়েরা পরের বাড়ির মেয়ে বলে তাঁরা বলতে পারে। অভিশাপ টা হচ্ছে সুলতান পরিবারের উপরে। যেটা কাটাতে এরা কহিনুরের গল্প ফেদেছে। কিন্তু জুবায়েরেকে মারার পিছনে কি থাকতে পারে? মাথা কাজ করছে না। প্রশ্নের পর প্রশ্ন এসে ভর করছে মাথায়। অধরা কোনরকম নিজেকে স্বাভাবিক করে মলিন হাসলো। হাসিটা বড্ড বেশি দরকার। সহজে ভড়কে গেলে বিপদ ঝপাং করে ঘাড় মটকে ধরবে। স্বাভাবিক থেকে কাজ করতে হবে। অধরা কাজের মেয়েটার সামনে বলল,
> ফুপিকে বলে দিবেন আমি জুবায়েরের জন্য রান্না করতে চাই। ওর জ্বর এসেছে।
মেয়েটা লতিফাকে বুঝিয়ে দিলো। ভদ্রমহিলা বিনিময়ে হাসলো। দরকারী জিনিসপত্র সব ওর সামনে এগিয়ে দিলো। অধরা সময় নষ্ট করলো না। দ্রুত রান্না বসিয়ে দিলো। কাজের মেয়েটা ওকে সাহায্য করছে। অধরা বারবার ফুপিকে দেখছে। ভদ্রমহিলা এক ভাবে ওকে দেখছে কেমন অস্বস্তিকর বিষয়। ওকে এভাবে দেখার কি হলো বুঝতে পারছে না। অধরা দ্রুত চিকেন সুপ করে নিয়ে চলে আসলো। দাদু কোথায় আছে দেখার জন্য আশেপাশের তাকালো, ভদ্রলোক কোথায় ঘাপটি মেরে বসে আছে কে জানে। অধরা রুমে আসতেই জুবায়ের চোখ খুলে তাঁকালো। ওর হাতে খাবার দেখে ভ্রু কুচকে ফেলল। অধরা সেসব পাত্তা দিলো না। একেবারে জুবায়েরের সামনে গিয়ে বসে পড়লো। জুবায়ের কৌতূহল দমিয়ে রাখতে না পেরে বলল,
> তুমি কেনো খাবার আনতে গেলে! আমি যেতাম, তাছাড়া এটা তুমি কি এনেছো? এতবড় হাতির মতো যুবকের জন্য এইটুকু সুপ?এতো পেটের কোনে পড়ে থাকবে।
অধরা বিরক্ত হলো। যথেষ্ট পরিমাণ খাবার এনেছে তবুও পেটুক লোকটা আরও খাওয়ার বায়না করছে। অধরা দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
> ঢং করবেন না চুপচাপ খাবেন। আজ থেকে আমি যা খেতে দিবো তাই খাবেন। অন্য কারো হাতে খাওয়া চলবে না। দ্রুত শেষ করুণ। ওষুধ খেতে হবে। শরীর ঠিকঠাক না হলে স্টোর রুমে আবারও জ্ঞান হারাবেন তখন ঝামেলা।
জুবায়ের মিনমিন করে বলল,
> নিজের হাতেই খেতে হবে নাকি?
> তো আপনাকে হাত ধার দিবে কে? নিজের হাতে খেতে ইচ্ছে না করলে লোক রাখুন। জুবায়ের ফারুকী আপনাদের বাড়ির মেয়েরা বোবা বিষয়টা কেমন রহস্যজনক না? কারণ জানতে পারলেই রহস্যের অর্ধেক বুঝে যাবো।
জুবায়ের খেতে খেতে বলল,
> বংশগতির ধারা বলতে পারো। আমাদের বংশের মেয়রা কথা বলতে পারেনা। তাপপর আরও একটা বিষয় তুমি জানো না। লতিফা ফুপির জামাইটা কিন্তু স্বাভাবিক না। বছরে একবার এখানে আসেন সাতদিন থাকেন তারপর কোথায় যে গায়েব হয়ে যায় জানিনা। বাড়ির কেউ কিন্তু এটা নিয়ে চিন্তিত না। ভদ্রলোকের চেহারার কোনো পরিবর্তন নেই। ছোট থেকেই যেমন দেখি বড় হয়েও তেমনি।
> কথা বলেছেন উনার সঙ্গে? নাম কি উনার? বাসা কোথায়?
> এক সঙ্গে এতো প্রশ্ন? আঙ্কেল বেশ গম্ভীর টাইপের, কথাবার্তা বিশেষ হয়নি টুকটাক আলাপ হয়েছে। উনার নাম সুলাইমান হক। দেখবে কয়েকদিনের মধ্যে আসবে। উনার আসার সময় হয়ে গেছে। ভদ্রলোকের বাসা কোথায় জানিনা। কেউ বলেনি আর আমারও আগ্রহ নেই।
> আপনাদের বাড়ির সবাই একটু এলিয়েন টাইপের। বাবা কেনো যে এই ঘরে আমার বিয়ে দিলেন এখন আফসোস করতে হচ্ছে। না পেলাম ভালো বর না পলাম ভালো ঘর। আমি পরের বার এমন ভূল করবো না বুঝলেন? দেখেশুনে ভালো ছেলে দেখে বিয়ে করবো।
অধরার কথা শুনে জুবায়েরের রাগ হলো। হাতের চামুচটা ফ্লোরে ফেলে দিয়ে বাটিতে চুমুক দিয়ে সুপের বাটি খালি করে বলল,
> ফালতু চিন্তা বাদ দিয়ে কাজের কথায় আসো। বিয়ে বিয়ে করো কেনো? একবারে সখ মিটেনি? যেটুকু খায়েশ আছে আমি পুরণ করে দিবো ইনশাআল্লাহ। দ্রুত চলো।
জুবায়ের তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে নেমে পড়লো। ঘরে বেশ সময় পার করে ফেলেছে। বাইরে এতক্ষণে খাওয়া দাও শেষ করে যে যার রুমে নয়তো পার্টির উদ্দেশে বেরিয়ে গেছে। সুযোগ বারবার আসবে না। জুবায়ের অধরার হাতে ধরে কক্ষ ত্যাগ করলো। স্টোর রুমটা বাড়ির গোপনীয় জায়গাই। অধরা জুবায়েরের পেছনে পেছনে হাটছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাড়িটা কেমন ভুতুড়ে হয়ে উঠেছে। স্টোর রুম সিঁড়ি রুমের নিচে অবস্থিত। হঠাৎ করে কেউ বুঝতে পারবে না সিঁড়ির নিচে কোনো রুম আছে। বাইরে থেকে দেখে চেনা বা বোঝা বেশ কঠিন। জবাব ওকে নিয়ে দেয়ালে থাকা সামান্য ছিদ্রে চাবি লাগিয়ে দরজা খুঁলে ফেলল। রঙ দিয়ে সব এক রকম করে রাখা হয়েছে। অধরা অবাক নয়নে জুবায়েরের পেছনে পেছনে ভেতরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো। বিশালাকার রুমটা বিভিন্ন পুরাতন আসবাবপত্র দিয়ে বোঝাই করা। ধুলাবালি পূর্ণ আলমারির ভেতরে কিছু কাগজপত্র পেলো। ততটা গুরুত্বপূর্ণ না। জুবায়ের সেসব চেক করছে। অধরা সামনে এগিয়ে গিয়ে হালকা চিৎকার করে উঠলো। জুবায়ের দ্রুত এসে ওর মুখ চেপে ধরে ফিসফিস করে বলল,
> আরে চিৎকার করছো কেনো?
অধরা উত্তর দিলো না। আঙ্গুল উচু করে সামনে ইশারা করলো। জুবায়ের সেদিকে দৃষ্টি দিয়ে ঝটিকা খেলো। সামনে একটা মাথার খু*লি পড়ে আছে। খুঁ*লিটা একদম টাটকা। ফোঁটা ফোঁটা র*ক্ত লেগে আছে তাঁতে। অধরা ধরা গলাই বলল,
> এরকম একটা দৃশ্য মায়ের রুমে দেখেছিলাম। জুবায়ের খোঁজ নিন নিকটবর্তী কেউ মা*রা গেছে কিনা। চলুন খু*লিটা উঠিয়ে নিয়ে যায়। ডিএনএ টেস্ট করলে খু*লির মালিককে সন্ধান পাওয়া যাবে।
> একদম না। এটা কি কাজে ব্যবহিত হয়েছে না জেনে ঘরে নিলে যদি উল্টোপাল্টা কিছু হয়? কাজটা ঠিক হবে না। একটা ছবি তুলে নিয়ে যেতে পারি।
অধরা কাঁপছে। এই বাড়িতে যা হচ্ছে সেম ওই বাড়িতেও হয়েছিল। হঠাৎ একটা ছায়া আলমারির পেছনে সরতে দেখে অধরা জুবায়েরের হাতটা ধরে ফেলল। বলল,
> আজ চলুন পরে আবার আসবো। আমাদের কেউ ফলো করছে।
জুবায়ের ছায়াটা দেখেছে। ওরা আর সময় নষ্ট করলো না। দ্রুত বেরিয়ে আসলো। রহস্য জানা তো গেলোই না উল্টোপাল্টা দৃশ্য দেখে হয়রানি।
☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆
জুবায়ের হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। হাতে ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট। আসার সময় যতটা আগ্রহ নিয়ে এসেছিল যাওয়ার সময় ততটাই কষ্ট যন্ত্রণা নিয়ে ফিরতে হচ্ছে। কঠিন এক সত্যি ওর সামনে এসে উপস্থিত হয়েছে। হাউমাউ করে কান্না করতে মন চাইছে কিন্তু ইচ্ছা করলেই তো আর হয়না। এমন কেনো হলো কার জন্য হলো কিছুই মাথায় আসছে না। এতদিনের বিশ্বাস ভরসা ভালোবাসা সব ভেঙে চুরমার হয়ে গেলো চোখের নিমিষে। ওর চোখদু’টো জ্বলে উঠলো। তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠে বসলো। বাড়িতে পৌছাতে মিনিট দশেক টাইম লাগলো। অধরা বিছানায় হেলান দিয়ে তখন বই পড়ছিল। জুবায়ের হন্তদন্ত হয়ে ভেতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলো। অধরা দরজা বন্ধের শব্দ শুনে চমকে উঠলো। ছেলেটার চোখে আগুন। কিছু বুঝে উঠার আগেই ও অধরার গলা চেপে ধরে বলল,
> সব আগে জানতে তাইনা? আমাকে কষ্ট দিতে তোমার মজা লাগে? আমি ম*রে গেলে শান্তি তো? তবে আমি ম*রেই যায়।
অধরা জোরকরে নিজের ছাড়িয়ে নিয়ে হাপাতে হাপাতে বলল,
> আজেবাজে বকছেন কেনো? কি হয়েছে না বলে গলা টিপে দিলেন। ম*রে আপনি না আমি যেতাম।
জুবায়ের থম মেরে বসে থেকে হুট করে অধরাকে নিজের সঙ্গে জড়িয়ে ধরে শব্দ করে কেঁদে দিয়ে বলল,
> তুমি জানতে বলো আরমান ফারুকী আমার কেউ হয়না? ভদ্রলোকের সঙ্গে আমার ডিএনএ মিলেনি কেন?
অধরা জুবায়েরের পিটে হাত রেখে ওকে সামনে টেনে নিয়ে বিস্মিত হলো। ছেলেটার চোখ লাল হয়ে উঠেছে। ও কি বলবে বুঝতে পারছে না। বোকার মতো বলল,
> উনি তোমার বাবা না?
(চলবে )
ভুলত্রুটি মার্জনা করবেন।