একমুঠো বসন্ত শেষ পর্ব

0
747

#একমুঠো_বসন্ত
#নাজমুন_বৃষ্টি
২৪+২৫
#পর্ব_২৪

রিহির বিদায় হয়ে গেল। যাওয়ার আগে কী যে কান্নাকাটি মেয়েটা! নিহিলা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। আজ পূর্ণিমা। তালার মতো চাঁদের আলোটা তার মুখে এসে পড়ছে। দেখতে দেখতে বিয়ে শেষ। তার খারাপ লাগছে রিহির জন্য। বারেবারে মনে পড়ছে রিহিকে। এইতো এরকম নিহিলা একা এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে রিহি চুপি চুপি এসে জড়িয়ে ধরবে নয়তো ভয় লাগাবে। যদি তাতে নিহিলা বিরক্ত হয় তবে হাসির হাসির কথা বলে হাসানোর চেষ্টা করতো। নিহিলার অনেক বেশি কান্না পাচ্ছে কিন্তু যেমনটা খারাপ লাগছে ততটা কেন জানি চোখ দিয়ে পানি পড়ছে না। সে এগিয়ে দোলনাতে বসে মোবাইলটা হাতে নিল রিহিকে কল করার উদ্দেশ্যে কিন্তু কল দিতে গিয়েও মোবাইল রেখে দিল। এখন তো আর যখন তখন রিহিকে কল করা যাবে না। এখন সেও কোনো না কোনো পরিবারের বউ। নিহিলা মোবাইল থেকে রিহির ছবি দেখতে লাগলো। ছোটবেলা থেকে একসাথে থাকতে থাকতে তার অস্তিত্বের সাথে মিশে গিয়েছে মেয়েটা। সারাদিন রিহির জন্য নিজেকে শক্ত রাখলেও এখন আর পারছে না। মেয়েটাকে ছাড়া সে কীভাবে থাকবে!

নিহিলা বেশ কিছুক্ষন পরে দোলনা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। রিহির মতো আস্তে আস্তে ঘরটা আবারো খালি হয়ে যাবে। তখনের কথা ভাবতেই পারছে না নিহিলা। ঘর খালি হয়ে যাবে ভাবতেই খেয়াল হলো ফুপিরাও তো বিয়ের উদ্দেশেই এসেছিলেন। তারাও বোধহয় চলে যাবে। অরিন আহান এদের সাথে নিহিলা নিজেকে অনেক মিশিয়ে ফেলেছে। আর রাহান ভাই! সবাই আস্তে আস্তে চলে যাবে। নিহিলা ব্যালকনি থেকে রুমে চলে এলো। অন্তত অরিন আহানদের সাথে গল্প করলে মন খারাপের সময়টা কেটে যাবে। এতক্ষনে চোখ থেকে পানি পড়ার ফলে চোখ মুখ লাল হয়ে গিয়েছে। সে বেসিন থেকে বেশ কিছুক্ষন পানির ঝাপ্টা দিয়ে মুখ মুছে নিল। এতে চোখগুলো আরো লাল আঁকার ধারণ করেছে।
নিহিলা উড়না ভালোমতো গায়ে জড়িয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসলো। সিঁড়ির কাছে আসতেই সাফাতকে উঠতে দেখা গেল। এই প্রথমবারের মতো মুখোমুখি। নিহিলা নিজেকে শান্ত করে নেমে যেতে নিতেই সাফাত দাঁড়িয়ে পড়লো। সে সাফাতকে পেরিয়ে দুই ধাপ নেমে গেল,

“কেমন আছিস নিহু?”

“ভালোই আছি।”

“আমি কেমন আছি জিজ্ঞেস করবি না?”

নিহিলা ঘুরে দাঁড়ালো তবে সাফাতের দিকে তাকালো না। ঘুরে দাঁড়াতেই রুমের কর্নারে রাহানকে দেখা গেল। সে চোখ ঘুরিয়ে নিল।

“দেখছিই তো কষ্ট পাচ্ছেন। কেন পাচ্ছেন জানি না কিন্তু এভাবে নিজেকে কষ্ট দিয়ে কী পাবেন! তাই বলবো, পরিবারের সাথে একসাথে থেকে নিজের জীবনকে গুছিয়ে নিন।”

“আমাকে ক্ষমা করে দিস নিহু।”

নিহিলা হাসলো।
“ভেবেছেন? আমি আপনাকে অভিশাপ দিয়েছি? তা ভাবলে ভুল ভাববেন সাফাত ভাই। আমি তো অনেক আগেই এসব ভুলে নিজেকে সুন্দর করে গুছিয়ে নিয়েছি। যদি নিজেকে গুছিয়ে তুলতে না পারতাম তবে হয়ত ক্ষমা করতাম না।”

সাফাত হুট্ করে এগিয়ে এসে নিহিলার হাত ধরে ফেলল। তাতেই নিহিলা ক্রোধপূর্ণ দৃষ্টি নিঃক্ষেপ করতেই সাফাত হাত ছেড়ে দিল।
“আপনার সাহস কীভাবে হয় আমার হাত ধরার? শান্তভাবে কথা বলছি তাই ভাবছেন সব ভুলে গেছি?”

“চল না আমরা আবারো নতুন করে সব শুরু করি। তোকে ছাড়া আমি ঠিক নেই।”

নিহিলা হেসে উঠলো। যেন এই মুহূর্তে অনেক হাসির কথা শুনেছে। সে সাফাতের হাত ঝাপটা মেরে দূরে সরিয়ে দিল।
“ভালোভাবে কথা বলছি তাই এমন কথা বলার সাহস পেয়েছেন। দ্বিতীয়বার এমন দুসাহস দেখবেন না। নইলে হিতে বিপরীত হবে। আমাকে চারবছর আগের নিহিলা ভাবলে ভুল ভাববেন। আপনাকে তো আমি মনেই করি না।” বলেই থেমে গেল নিহিলা।
মুহূর্তের মধ্যে কণ্ঠে বিষাদের চাপ রেখে মলিন স্বরে আবারো বলে উঠল,
“আমার চারটা বছর ফিরিয়ে দিতে পারবেন? পারবেন কী সেসময় আমার প্রতিটা বিষাদ রাতগুলো আমার স্মৃতি থেকে মুছে দিতে। এখন ভালো আছি সেটাই দেখতে পারছেন কিন্তু এই ভালো থাকার পেছনে আমার চারটা বছর তিলে তিলে কষ্ট পেতে হয়েছিল। তবুও নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেরেছি বিধায় ভালো আছি। তবে সেই তিক্ততা মিশ্রিত অতীতটা ভুলিনি। দ্বিতীয়বার এমন দুঃসাহস দেখালে ফল খারাপ হবে। আর দয়া করে এতো আদিক্ষেতা করে আমাকে ডাকবেন না। আমার নাম ধরে ডাকলেই খুশি হবো। ভালো আছি,ভালো থাকতে দিন।” বলেই নিহিলা নেমে গেল।
রাহান সাফাতের এমন হাত ধরা দেখে শান্তভাবেই আসতে নিতেই নিহিলার কথাগুলো শুনে পিছু ফিরে গেল। সে নিচে নিহিলার দিকে এক পলক তাকিয়ে বিড়বিড় করে উঠল,’এই ভালো থাকাটাই যেন তোমার মধ্যে থাকে। ‘

————-
পরেরদিন নিহিলা সারাদিন রুমে ঘুমিয়েছিল। বিকালে রিহি আর ওর বর আসবে বিধায় সবাই মিলেমিশে কাজে লেগে পড়লো। অরিনও এটা ওটা এগিয়ে দিচ্ছে।
রাতে সবাই খেয়ে আড্ডা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বসতেই আমান শেখও এগিয়ে এসে বসলেন। সাফাতও এগিয়ে এসে সামনের সোফাতে বসলো। মূলত তাকে সবাই রেখে দিয়েছে। সে আর যেতে পারেনি। ছেলের এমন অবস্থা পরিবারের কেই বা চাইবে তাই বাড়িতেই রেখে দিয়েছে। ছেলে একা একা থাকলে কষ্ট আরো বাড়বে বৈ কী কমবে না। নিহিলার এক মন বলছিলো সাফাতের থেকে দূরে থাকতে। আরেক মন বলছিলো সে কেন এসব থেকে বঞ্চিত করবে নিজেকে! আর এখন এসবে তার একটু মায়া হবে কিন্তু ঐ ব্যাপারটা আসবে না তা সে নিশ্চিত।

আমান শেখ বসতেই সবাই চুপ হয়ে গেল। তার পিছু পিছু রিনা আহমেদ এসেও দাঁড়ালেন। তিনি নিহিলার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসলেন। ফুপির সাথে চোখাচোখি হতেই নিহিলাও বিনিময়ে হাসলো। আমান শেখ নিহিলার দিকে তাকালেন,

“আমি যদি তোর সম্পর্ক সিদ্ধান্ত নিই তাহলে তুই কী কষ্ট পাবি?”

নিহিলা থমকালো। সে সবার দিকে তাকালো। হঠাৎ এই প্রশ্নটা করার কারণ খুঁজে পাচ্ছে না। তবুও নিজেকে শান্ত করে স্বাভাবিকভাবেই উত্তর দিল,
“ছোটবেলা থেকে আমার অভিবাবক তুমি। আমার সব সিদ্ধান্তই তোমার উপর। কষ্ট কেন পাবো বড়ো বাবা!

“যদি তোর বিয়ের কথাবার্তা বলি তবে তোর কী কোনো আপত্তি আছে?”

নিহিলা স্তব্ধ হলো। কিছুক্ষন থম মেরে থেকে আমান শেখের দিকে তাকালো। বড়ো বাবা হুট্ করে এমন কথা বলবে সেটা তার ভাবনাতে আসেনি।

“বল।”আমান শেখ নিহিলার দিকেই প্রশ্নের জবাবের আশায় তাকিয়ে আছেন।
নিহিলা শান্তদৃষ্টিতে আমান শেখের দিকে তাকালো,
“আমাকে বোঝা মনে করছো?”

নিহিলার কথায় আমান শেখ মলিন হাসলেন,
“দেখ মা,মেয়ে যখন হয়েছিস বিয়ে তো দিতেই হবে। যদি ভালো পাত্র পাই অবশ্যই এগোবো।”

নিহিলা সবার দিকে তাকালো। সবাই উৎসুক হয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে। তার মানে সবাই এটা জানতো! রাহান ভাই আশেপাশে নেই, বোধহয় রুমে। সে তাচ্ছিল্যা হাসলো। এখনো কেন মানুষটার কথা ভাবছে! পরিবারকে একবার কষ্ট দিয়ে ফেলেছে এইবার আর কোনো বিরুদ্ধে যাবে না। উপর তলায় নিহিলার চোখ যেতেই দেখলো রাহান দাঁড়িয়ে আছে। নিহিলা চোখ সরিয়ে নিয়ে বড়ো বাবার দিকে তাকালো।
“তোমরা আমার কাছের মানুষ। আমার ভালো চাইবে। তোমরা রাজি থাকলে আমিও রাজি।”

বলতেই নিহিলা আরেকবার তাকালো উপরে। রাহান ভাই রুমের ভেতরে চলে যাচ্ছে। নিহিলা মলিন শ্বাস ফেলল। সে দ্রুত বসা থেকে উঠে সিঁড়ি উঠতে নিতেই নিচের শরগোলের আওয়াজে থেমে গেল। বড়ো বাবা হাসছেন!
আমান শেখ রেহেনা বেগমকে উদ্দেশ্য করে মিষ্টি আনিয়ে বোনকে খাওয়াচ্ছেন।
“নেয়, আরেকটা নতুন সম্পর্কের জন্য মিষ্টিমুখ কর।”
নিহিলা থেমে গেল। মানে কী এসবের! অরিন দৌড়ে এগিয়ে এলো।
“রাহান ভাইয়ের সাথেই তো তোর বিয়ে।”অরিনের কথা শুনে নিহিলার দৃষ্টি এতক্ষন রাহান যেখানে ছিল সেখানে দিল। তার মানে এসবকিছুর মূল রাহান ভাই!

সাফাত খুশি হলো। যাক এইবার যদি নিহিলা একটু ভালো থাকে তবে তার নিজেরও অপরাধবোধ কম হবে।তবুও বুঁকের কোথাও জানি চিনচিন ব্যথা অনুভব হচ্ছে। সাফাত নিজের উপরেই তাচ্ছিল্য হাসলো। সে তো এসবেরই প্রাপ্য। তার আরো শাস্তি দরকার।

নিহিলা নিজের রুমে যাওয়ার আগে রাহান ভাইয়ের রুমের সামনে গেল। দরজায় হাত দিয়ে ঠোকা দিতে নিতেই দরজা খুলে গেল। তার মানে দরজাটা এমনি আটকানো ছিল। নিহিলা লজ্জা পেলো, এভাবে অন্যের দরজা খুলে ফেলা। হোক না ভুলবশত কিন্তু এটাতো কেউ বিশ্বাস করবে না। নিহিলার ভয় হলো। এখন যদি মানুষটা নিচে গিয়ে বা আহান অরিনের যেকোনো একজনকে বলে যে,’নিহিলা বিয়ের কথা শুনে খুশিতে রাহানের রুমের দরজা খুলে ঢুকে পড়েছে!’ নিহিলা নিজেকে শান্ত করলো। পাগল না-কি সে! ভেতরের উৎফুল্লতার জন্য এসব উল্টোপাল্টা ভাবছে। মানুষটা জীবনেও এসব বলবে না। গম্ভীর স্বভাবের হয়ে এমন মজার কথা বলবে না। নিহিলা তাকালো। মানুষটা ব্যালকনির দরজার কাছে ঐদিকে মুখ করে আছে। তার মানে নিহিলাকে দেখেনি। নিহিলা আস্তে করে পিছু ফিরে নিতেই রাহানের কণ্ঠস্বর শুনে থেমে গেল,

“অন্যের রুমে অনুমতি ছাড়া দরজা খুলে ঢুকে যাওয়া এটা কোন ধরণের স্বভাব!”
নিহিলা তাকালো। মানুষটা দিব্যি পকেটে হাত দিয়ে ঐদিকে মুখ করে আছে কিন্তু ভেতরে কে ঢুকেছে সেটাও বা কীভাবে বুঝতে পেরেছে! নিহিলার লজ্জা লাগলো কিন্তু এখন লজ্জা পেলে চলবে না। ধরা যখন পড়েছে এখন আর লজ্জা করে লাভ নেই।

“আমি আসলে রুম লক কিনা দেখতে গিয়ে ভুলে দরজা খুলে গিয়েছে।”

“বিয়ে শুনে মনে পড়েছে?” রাহান ফিরে তাকাতেই নিহিলা চোখ বড়ো করে করে তাকালো। বলে কী এসব! আজকে চিনতে পারছে না সে এই মানুষটাকে। এতক্ষন একরকম এখন আরেকরকম।

“দেখুন, যেমন ভাবছেন তেমন না। আমি শুধু এসেছি..”

“ভালোবাসো আমাকে সেটা জানাতে? আই নো আমার স্বভাবটাকে প্রথমে সবাই অপছন্দ হলেও আস্তে আস্তে প্রেমে পড়ে যেতে বাধ্য।এটা আর বলা লাগবে না।”

নিহিলা তাকালো। নিজেকে কী মনে করে কী জানি! এই মানুষটাকে সে নিজের অজান্তে কীভাবে ভালোবেসে ফেলেছে!

“ভালো যখন বেসে ফেলেছো এখন আফসোস করে লাভ নেই।”
নিহিলা রেগে গেল। সে রাহানের দিকে আঙ্গুল তাক করে এগিয়ে যেতেই রাহান থামিয়ে দিল,
“উঁহু, একেবারে হালাল হলেই ছুঁয়ো। এখন হারামের পর্যায়ে। এতো উতলা হচ্ছ কেন মেয়ে?”

“মানে কী!”

রাহান নিহিলার দিকে তাকিয়ে ঠোঁটের কোনা প্রশস্ত করলো।
“মানে এই যে! সব উল্টো কাজগুলো তুমি করছো। যেগুলো ছেলেদের করা উচিত সব তুমি করে ফেলছো। হবু বরের রুমে ঢুকে যাওয়া, ছুঁতে চেষ্টা করা। এগুলো তো ভালো না মেয়ে।”

নিহিলা আঙ্গুল তুলে আবারো কিছু বলতে নিতেই তার কান্না পেয়ে গেল। সে রেগে হনহনিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। নিহিলা বেরিয়ে যেতেই রাহান হাসলো।

#চলবে ইন শা আল্লাহ।

#পর্ব_২৫(অন্তিম পর্ব)

পরেরদিন ঘুম থেকে নিহিলা বেশ বেলা করে উঠলো। ঘুম ভাঙতেই সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে নামতে দেখলো বাসার ডেকোরেশন হচ্ছে আবারো নতুন করে। নিহিলা নিচে নেমে অরিন আহানদের সামনে বসলো। অরিন আহান তার দিকে তাকিয়ে মিটমিট হাসছে। নিহিলা তাদের দুজনের দিকে সরু চোখে তাকালো,
“কী ব্যাপার! সূর্য আজ কোনদিকে উঠলো!”
নিহিলার কথায় অরিন ভ্রু কুঁচকালো,
“কেন?”
নিহিলা সোফায় বসতে বসতে অরিনের জবাব দিল,
“মানে এই যে তোরা আজ তাড়াতাড়ি উঠলি কেমনে ?”

নিহিলার কথায় আহান বসার মধ্যেই দুহাতে তালি দিয়ে উচ্চস্বরে হেসে দিল। তা শুনে নিহিলা আহানের দিকে আড়চোখে তাকাতেই অরিন থামিয়ে দিল,
“আমি তাড়াতাড়ি উঠেছি নাকি তুই রাতে কল্পনা করতে করতে ঘুমাতে দেরি করেছিস সেটা বল। ঘড়ির দিকে একটু তাকান তো।”
অরিনের মুরব্বি টাইপ কথা শুনে নিহিলা ভ্রু কুঁচকে ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখলো বেলা দুইটা বাজছে। নিহিলা থম মেরে রইল। আজ এতসময় ঘুমালো! সে টেরই পেলো না! কেমনে কী!
ততক্ষনে রিহিও এসে সামনে বসলো। নিহিলা তাকাতেই সে হেসে দিল।
“কিরে নতুন বউ! জামাই কই?”

“ইমন এখানে কেন থাকবে। আমাকে রেখে গিয়েছে একটা স্পেশাল দিন সেজন্য। আপাতত আজকে এখানেই আছি। কেন আমি আছি বলে তুই খুশি হোসনি?”

“হবো না কেন? আর ভাইয়া চলে যাওয়ার সময় তো দেখলামই না।”

“তুই দুপুরে ঘুম থেকে উঠলে উনি রয়ে যাবে না কি!আর সন্ধ্যায় আসবে তো।”

নিহিলা চারপাশে তাকালো। আরো বিভিন্ন ফুল নিয়ে দুইজন ঢুকছে। নিহিলা সবার দিকে তাকালো। সবার মুখভঙ্গি স্বাভাবিক। নিহিলার খটকা লাগলো। সে সন্দীহান কণ্ঠে রিহির দিকে তাকালো,

“আজ তো তোদের কারোর বার্থডে নয় আমার জানামতে। তাহলে হুট্ করে এমন করে সাজাচ্ছে কেন? আর বাসায় এতো ফুল নিয়ে ঢুকছে তবুও তোরা স্বাভাবিক।”

“একটা স্পেশাল দিন।”

“কী ব্যাপার! তোরা ইদানিং আমার কাছ থেকে কথা লুকোচ্ছিস। সত্যি করে বল তো।”

নিহিলার কথায় আহান হ্যায় তুলে দুহাত সোজা করে তুলে আয়েসী ভঙ্গিমা থেকে পিঠ সোজা করে বসলো,
“কী বলি লজ্জার কথা!”

আহানের এমন কথায় নিহিলা তাকালো,
“কী এমন লজ্জা!”

আহান আরো কিছু বলতে নিবে তখনই অরিন থামিয়ে দিল,
“আমরা চলে যাবো পাঁচদিন পরে।” অরিনের কথা শুনে নিহিলার মন খারাপ হলো। তারা চলে যাবে! নিহিলা অন্যমনস্ক হতেই অরিন হাসলো,
“তোকে সহ একেবারে ভাবী বানিয়ে নিয়ে যাবো। তোর জন্যই পাঁচদিন আছি কজ তোর বাইরে যাওয়ার ডিটেইল সব নতুন করে বানানো লাগবে। তুই সহ যাবি চিন্তা করিস না।”

“চিন্তা করছি না তো।”

“ওহ আচ্ছা তাই নাকি। চিন্তা তো করছিসই।”

“কখন করলাম!”

নিহিলার কথা শুনে আহান হাসি হাসি মুখ করে বলে উঠল,
“তুমি কিন্তু কালকে ভাইয়ার রুমে ঢুকেছো তা আমি দেখে ফেলেছি। যদিও বা লুকিয়ে ঢুকেছো বাট ব্যাড লাক আহান ভুলবশত দেখে ফেলেছে।”

নিহিলা থম মেরে রইল। ছি! কী লজ্জা! তবুও সে মাথা উঁচু করে তাকালো। সে ভেতরে ভেতরে মিইয়ে গেছে তা এদের বোঝানো যাবে না। এরা বুঝতে পারলে তাকে হেনস্থা করতে দুদন্ডও ভাববে না। নিহিলা মাথা উঁচু করে আহানকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“তো?”

“তো কেন গিয়েছিস সেটা জানতে পেরেছি। যদিও বা বড়ো ভাইয়া বলতো না কিন্তু আমি জোর করছি বিধায় বলেছে। তাই তো এতো আয়োজন।”
অরিনের কথায় নিহিলা ভ্রু কুঁচকে তাকালো,

“কী বলেছে তোর বড়ো ভাইয়া?”

“এই যে আমরা চলে যাবো তাই তুই কালকে ভাইয়ের রুমে গিয়ে বলছিস তোরেও যেন নিয়ে যায়। অনুষ্ঠানটা দরকার হলে পরে হবে। আগে ঘরোয়াভাবে আগদটা হয়ে যাক। তাই তো এসব আয়োজন। নয়তো আমাদের সাথে এইবার তো তুই যেতিস না,দুইমাস পরে যেতিস। আমরা কালকেই চলে যেতাম নাহলে।”

নিহিলা থমকালো। তার কাঁশি উঠে গেল।শেষপর্যন্ত এসব বলেছে সে! নিহিলা মানুষটাকে চিনে উঠতে পারছে না। তার মাথা এভাবে কা’টা’বে সে ভাবেইনি।

খাওয়াদাওয়ার পরে নিহিলা নিজের রুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই আবার পিছু ফিরে রাহানের রুমের দিকে তাকালো। দরজা বন্ধ। সে বুঝে উঠে পায় না এই ছেলেটা সারাদিন রুমের ভেতর কীভাবে থাকে! নিহিলার তো দমবন্ধ হয়ে আসে। এতসব ভাবনা আসতেই সে দূরে সরিয়ে দিল। এসব ভাবা তার কাজ নয়। সে যেটা জিজ্ঞেস করতে এসেছে সেটাই করে চলে যাবে। উল্টাপাল্টা কিছু ভাববে না। সে রাহানের রুমের কাছে গিয়ে ঠোকা দিল। রাহান বেশ আয়েশিব ভঙ্গিতে দরজা খুলে সোফায় বসে পড়লো।

“আমাকে না দেখে এক মুহূর্তও কাটছে না তাই না?”

রাহানের কথা শুনে নিহিলা কিছু বলতে যাবে তার আগেই সে থামিয়ে দিল,
“উল্টাপাল্টা এক্সপ্লেইন করা লাগবে না। আই নো, মিস করছো তাই বাহানা তো একটা দিতেই হবে।”
নিহিলা থমকালো। কী উল্টাপাল্টা কথা! নিহিলা মুখ খুলতে নিতেই রাহান সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বললো,

“বাট ডোন্ট ওয়ারি, আমি বুঝে নিয়েছি। বাহানা দেওয়া লাগবে না। এইবার আমার মোবাইলটা এদিকে পাস করো তো দেখি।”

নিহিলা রাগী দৃষ্টিতে তাকালো। কী আজব! মানুষটা ইদানিং নিজে থেকেই সব বলে নিহিলাকে কিছু বলারই সুযোগ দিচ্ছে না।

“অদ্ভুত তো!”

“আই নো আমি অদ্ভুত। খাট থেকে মোবাইলটা দাও।”

নিহিলা তাকালো। রাহান সোফার এখানেই দাঁড়িয়ে আছে। খাট থেকে এটার দুরুত্ব দুই সেকেন্ডও না। তবুও নিহিলাকে আদেশ করছে।

“আমি মোবাইল দেওয়ার জন্য এসেছি? আপনার হাত নেই?”

“বড়দের মুখে মুখে তর্ক করা অনুচিত।”

নিহিলা জানে সে কথায় পারবে না। তাই চুপচাপ মোবাইল এগিয়ে দিতেই রাহান মোবাইল নিয়ে আবারো বসে পড়লো।

“এখন দেখা শেষ হলে চলে যাও। আফটার অল কালকের মতো আবার তোমারই মাথা কা’ট’বে।” শেষের কথাটা বলতে রাহান হেসে দিল। তা দেখে নিহিলার রাগ নিমিষে পড়ে গেল।
“মানুষটার হাসি কী সুন্দর! অথচ হাসেই না!

“আই নো, আমার হাসি সুন্দর। এভাবে তাকিয়ে নিজেকে বে’হায়া প্রমান করছো।”
নিহিলার চেহারা মুহূর্তের মধ্যে পানসুটে আঁকার হতে গেল। লোকটা কোনোদিনই বোধহয় মিষ্টতা-মিশ্রিত কথা বলবে না বোধহয়। নিহিলা রুম থেকে বেরিয়ে নিজেই নিজেকে গা’লি দিল। জানে না কেন বিয়ে ঠিক হওয়ার পরে থেকে সব উলোটপালোট হয়ে যাচ্ছে তার। যেটা ভেবে যায় সেটার কিছুই হয় না। মানুষটার সামনে দাঁড়ালে সে অন্য নিহিলা হয়ে যায়। তবে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে এখন মানুষটাকে প্রতি মুহূর্তে মুহূর্তে দেখার ইচ্ছে জাগে। কিন্তু সে স্বীকার কিছুতেই করবে না সে। যেমন মানুষটা এতদিন ভালোবেসেও চুপ ছিল, এখনো কিছুই দেখাই না তবে একটু হলেও গম্ভীর খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। তা দেখে নিহিলার ভালো লাগলো।
—-
সন্ধ্যা গড়িয়ে আসতেই বাড়িটার ভেতরে ফুলে ফুলে ভরে গেল। নিহিলা অরিনের সাথেই বসেছিল। দরজা ধাক্কানোর শব্দে এগিয়ে গেল। দরজা খুলতেই দেখলো রিনা আহমেদ একটা শাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি নিহিলার দিকে তাকিয়ে হেসে শাড়িটি এগিয়ে দিল রিহিকে।

“নে, ধর নিহিলাকে পড়িয়ে দেয়। সুন্দর করে পড়িয়ে দিবি কিন্তু।”
রিনা আহমেদ তাড়াতাড়ি করতে বলে বেরিয়ে গেলেন।নিহিলা রিহির হাতে থাকা শাড়িটির দিকে এক পলক তাকালো। হাল্কা গোলাপী জামদানি। বেশ কিছুক্ষন পরে রেহেনা বেগম এসে মেয়েকে পরম আদরে গালে হাত বুলিয়ে জড়িয়ে নিলেন। নিহিলাও মায়ের গলা ধরে আষ্টেপৃষ্টে গুটিয়ে রইল। তার মেযেটা বড়ো হয়ে গিয়েছে! বিয়েও হয়ে যাচ্ছে! তবে এটুকু নিশ্চিন্তে আছে এই ভেবে যে সে তার ফুপির কাছে ভালো থাকবে। এতদিন তো চিন্তা ছিল মেয়েকে বিয়ে দিলে সেই পরিবারে সুখী থাকবে তো কিন্তু এখন আর সেই চিন্তা নেই। তিনি মেয়ের কপালে পরম আদরে চুমু খেলেন।

রিনা আহমেদ এসে দেখতেই নিহিলাকে সেজে দেখে গালে হাত বুলিয়ে দিলেন,
“কী সুন্দর লাগছে!”

“আরো সাজলে সুন্দর বেশি লাগতো।” পাশ থেকে অরিনের কথা শুনে রিনা আহমেদ হেসে দিলেন,
“শোন, রাহান বেশি সাজ পছন্দ করে না তাইতো সব সিম্পলের মধ্যেই হয়ে যাচ্ছে। নয়তো আজকে মেহমান বলারও কথা ছিল কিন্তু রাহান চায় ঘরোয়াভাবেই সব হোক, যা থাকবে ঘরের একদম কাছের।” বলেই তিনি নিহিলার দিকে তাকালো,
“কিরে তুই খুশি না?”
রিনা আহমেদের কথা শুনে নিহিলা মাথা নিচু করে ফেলল। যার অর্থ রুমে থাকা সবাই নিজ দায়িত্বে বুঝে নিল।

“আমার গম্ভীর ভাইকে পেয়ে কেমন লাগছে।”অরিন পাশ থেকে ধাক্কা দিয়ে কথাটা বলতেই নিহিলা তাকালো,
“মোটেও গম্ভীর না।”
নিহিলার কথা শুনে রিনা আহমেদ উচ্চস্বরে হেসে দিলেন,
“হাহা,হ্যাঁ ও আমার সাথে ঠিকই মিষ্টি কিন্তু ছোট ভাইবোনের সামনে একটু খোলস ঢাকা থাকতো। যাতে করে ওকে ভয় পায়। ও শাসন করলে যেন শুনে। হয়েছেও তাই। আমাদের কথা না শুনলেও ওর কথা শুনে। তবে হ্যাঁ বাইরে গম্ভীর বলে যে ঘরের অতি কাছের মানুষটার সাথেও গম্ভীর থাকবে তাতো না।”

“মা তার মানে বলতে চাচ্ছ আমরা ভাইয়ার কাছের না?” অরিন মুখ ফুলিয়ে কথাটা বলতেই রিনা আহমেদ তাকালেন,
“তা কখন বললাম! আমার পাগলী উল্টো বুঝে। আচ্ছা, আয় নিচে আয়, হুজুর এসেছে।” বলেই তিনি নিচে চলে গেলেন।

———–
রাত ঘনিয়ে এসেছে। নিহিলা জামা খুলে সিম্পল সুতি কাপড়ের কুর্তি পড়ে নিল। সে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যার মুহুর্তটা ভাবছে। সে ভাবেইনি সবকিছু এতো তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে। হাতে থাকা আন্টিটার দিকে তাকালো। আন্টিটা জ্বলজ্বল করে জানান দিচ্ছে যেন সে এখন একজনের বাগদত্তা। তারই ভালোবাসার মানুষের! নিহিলা কল্পনাও করেনি যে রাহানকে পাবে!
নিহিলা ভাবতে লাগলো। সে কী আদো এই মানুষটার ভালোবাসার মূল্য দিতে পারবে! তার ভালোবাসার মানুষটি তারই থাকবে তো! কারণ তার যে সেই বিষাক্ত অতীতটা আছে। যাকে ভালোবেসে চারটা বছর দূরে ছিল। কিন্তু পরমুহূর্তে নিহিলা ইতিবাচক ধারণা খুঁজে নিল। হয়ত সৃষ্টিকর্তা চেয়েছেন বলেই এমন হয়েছে। নয়তো সেই ভালোবাসা পেয়ে গেলে এই মানুষটার দেখাই তো নিহিলা কোনোদিন পেতো না। নিহিলা চাঁদের দিকে তাকালো। আজ বহুদিন পরে সে প্রাণ খুলে হাসলো। আজ তার মন ভীষণ ভালো। তার চোখ গড়িয়ে পানি পড়ছে আবার মুখে হাসি। এটাকেই বোধহয় বলে খুশির কান্না! সে বিড়বিড় করে বললো,’মাঝে মাঝে কিছু খারাপ হওয়া ভালো। হ্যাঁ সাময়িক কষ্ট পেতে হয় কিন্তু সেই খারাপটার পরেই ভালোটার সানিধ্য পাওয়া যায়। নয়তো এই মানুষটাকে তো আমি কোনোদিন চোখের দেখাও দেখতাম না।” নিহিলার সাফাতকে ধন্যবাদ দেওয়ার ইচ্ছে জাগলো, তার ইচ্ছে হচ্ছে এখনই গিয়ে ওকে বলতে যে ‘তুমি আমাকে পথ করে দিয়েছো বলেই এমন সুন্দর মুহূর্ত পাচ্ছি। নয়তো তো এমন সুন্দর মনের মানুষকে নিজের জীবনের সাথে কোনোদিনও পেতাম না।’

“আমার কথা ভাবছো বুঝি!”
নিহিলা চমকে পেছনে তাকাতেই দেখলো রাহান বুকে হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে আছে।
নিহিলা ফিরে চোখ মুছে নিল,
“কেন আপনার কথা সবসময় ভাবি এমন ধারনা কেন আপনার!”

“আই নো তুমি স্বীকার করার মেয়ে নও। তাই আশাও করছি না।”

“আপনি এ রুমে?”

“কান্না করেছো কেন?”

“চোখে ভুল দেখেছেন।”

“আই নো আমাকে পেয়েই খুশি হয়েছো।”

“বাজে কথা।”

“রাত অনেক হয়েছে। ঘুমিয়ে পড়ো।” বলেই রাহান রুম থেকে বেরিয়ে যেতে নিতেই নিহিলা তাকালো,
“এটা বলতেই এসেছেন না কি?”

রাহান ভ্রু নাচিয়ে এগিয়ে আসলো।
“তো কী আশা করছো?” বলেই রাহান পরমুহূর্তে নিহিলার দিকে সরু চোখে তাকালো,
“এই মেয়ে তোমার ভাব তো সুবিধের লাগছে না। উল্টাপাল্টা কিছু ভাবছো না তো?”

নিহিলার কী হলো জানে না সে হুট্ করে এগিয়ে গিয়ে রাহানের একদম কাছাকাছি দাঁড়ালো,
“ছেড়ে যাবেন না তো কোনোদিন?”
রাহান এগিয়ে এসে তার দুহাত মুঠোয় ভরে নিল,
“রাহান কথা দিয়ে কথা রাখে। এটুকু নিশ্চিত থাকতে পারো।”

“কথা দিন।” বলেই নিহিলা হাত বাড়িয়ে দিতেই রাহান ভ্রু কুঁচকে তাকালো,
“কেন? সেটার বাহানা দিয়ে আমার হাত ধরতে চাও? ঘুমিয়ে যাও মেয়ে। নয়তো উল্টাপাল্টা আচরণ করবে।” বলেই সে বেরিয়ে গেল। আর নিহিলা তার যাওয়ার পানে তাকিয়ে হাসলো।
তার গ্রীষ্মের কড়া রোদের মাঝে একমুঠো বসন্ত হয়ে মানুষটা এসেছে। তার জীবনটাকে বসন্তের বাতাসে দুলিয়ে দিয়েছে। সে এটার আস্তা যেভাবেই হোক রাখবেই। মানুষটাকে কোনোদিন কষ্ট পেতে দিবে না।

#সমাপ্ত
(আসসালামু আলাইকুম। অবশেষে ইতি টানলাম। অনেকেই হয়ত আরো বড়ো আশা করেছেন কিন্তু সত্যি বলতে গল্পটা বড়ো করা মানেই রাহান নিহিলাদের কথা আনা। আর তাঁদের কথা আনলেই রোমান্টিকতা আনতে হবে যেটা আমি পারি না। লেখার আগে নিজেরই লজ্জা লাগে। এটা আমার দ্বারা সম্ভব হবে না ভাই 😑। জানি শেষটা অনেকের পছন্দ বা মানানসই লাগবে না কিন্তু তবুও একটা আশা রাখছি এইবার অন্তত একটা হলেও সবাই গঠনমূলক মন্তব্য করবেন প্লিজ। আমি আপনাদের মন্তব্য পড়েই বারবার লেখার জগতে অনুপ্রেরণা পাই। অবসর সময়ে আপনাদের মন্তব্য পড়লে নিজেরই ভালো লাগে। যদিও বা আমি ভালো লিখি না সেটা জানি কিন্তু যারা পড়েছেন একটা হলেও মন্তব্য আশা রাখি। রেসপন্স আশা রাখছি 🌸সর্বোপরি এতদিন পাশে থেকে উৎসাহ দিয়েছেন তাদের অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই। ভালোবাসা নিবেন। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। 🌸💙)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here