একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবি -১৮
(১ম পার্ট শেষ)
নওরিন রেজিগনেশন লেটার নিয়ে জিএম স্যারের রুমে গেল। জিএম স্যার লেটার দেখে বললেন, চাকরি ছাড়ছেন কেন?
স্যার, আমি ঢাকার থাকব না৷ গ্রামে চলে যাব।
হুম, সত্যি বলতে আমি খুবই বিরক্ত হচ্ছি। আপনার জন্য সুপারিশ ছিল। নিয়োগের পরে ট্রেনিং করানো হয়েছে, এখন আপনি জব ছাড়বেন, মানে এটা কি ছেলেখেলা মনে হয়? একজন এম্প্লোয়ী রেডি করা, তার পেছনে খরচ হয় না?
সরি স্যার, কিছু পার্সোনাল প্রবলেমের কারণে এই জব করা সম্ভব হচ্ছে না৷
আপনি ছুটি নিয়ে গ্রামে থেকে আসুন। জব ছাড়ার দরকার নেই। যান এখন, বিরক্ত করবেন না।
নওরিন বিব্রত হলো, ঠিকই তো৷ মাত্র চাকরিটা শুরু হয়েছে, কেন ছাড়বে সে চাকরি৷ বাড়ি থেকে ঘুরে আসবে নাকি! সেখানে গেলে ভালো লাগবে এমনও না।
তাহলে?
অফিস শেষকরে বের হলো নওরিন। আনমনে হাঁটতে গিয়ে দেখল অমিতের গাড়ি। নওরিন এগিয়ে গেল। ড্রাইভিং সিটে উঁকি দিয়ে দেখল ক্যাপে চোখ ঢেকে অমিত হেলান দিয়ে আছে।
আপনি এখানে?
চোখ না মেলেই বলল, এড়িয়ে যেতে পারতে! গেলে না কেন?
পরিচিত কাউকে দেখে এভয়েড করা অভদ্রতা।
অমিত বলল, তারপর, মত বদল করলে?
নওরিন হেসে বলল, না। বদল করি নি। আপনার আজ কোনো কাজ নেই?
না, উঠে এসো।
কোথায় যাব?
বিয়ে করে প্রেস কনফারেন্স করে ফেলব। কাউকে জানাতে চাই না বলেই তো আস্থা রাখতে পারছ না, তাই না?
নওরিন বলল, এটা একটা কারণ আর পেছনে আরো অনেক কারণ আছে। এত অল্প সময়ে আপনার উপরে মায়া তৈরি হয়েছে, এটা হয়তো প্রেম ভালোবাসা না।
আর বিয়ে হুট করে সিদ্ধান্ত নিয়ে করা উচিৎ না। আমার মনে হয়, আমরা ঠিক একে অপরের জন্য না।
এটা কখন মনে হলো? তোমার আশফাক সাহেবকে ভালো লেগেছে, এটা বললেই হতো।
নওরিন উত্তর দিলো না। আবার ফিরে আসার পরে তার অমিতকে ফেরাতে ইচ্ছে করছে না৷ কিন্তু কি করবে, খুবই অসহ্যকর একটা পরিস্থিতি।
কিছু বললে না তো?
অমিত, আপনি নিজের ক্ষতি করেও বিয়ে করতে চাইছেন কেন?
জানি না। হয়তো এটাই চাইছি মন থেকে।
অমিত ক্যাপ খুলে বের হয়ে দাঁড়ালো। কড়া পারফিউমের সুবার নওরিনের নাকে গিয়ে লাগল।
কয়েকটা ছেলে অমিতকে চিনতে পেরে এগিয়ে এলো, নওরিন একটু দূরে সরে দাঁড়ালো। অমিত সবার সাথে ছবি তুললো, সেলফি তুলে দিলো, অটোগ্রাফ দিলো।
কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে নওরিন গিয়ে অমিতের গাড়িতে বসল।
নওরিন ঢুকেছে দেখে, অমিতও তাড়াতাড়ি শেষ করে গাড়িতে বসে পড়ল।
-যাব?
নওরিন উত্তর দিলো না।
অমিত আবার জিজ্ঞেস করল, মৌনতা কি সম্মতির লক্ষণ?
নওরিন এবারে বলল, সবটা ভেবে নিয়েছেন আগাগোড়া?
অমিত হেসে বলল, একদম। কয়েকটা মাস সময় দাও, সব ঠিক করে ফেলব। সবাই অপেক্ষা করে আছে। চলো যাই।
যাব?
নওরিন স্মিত হেসে মাথা নাড়ল। অমিতের প্রস্তাবে রাজী হয়ে মনে হলো, মাথা থেকে ওজন সরে গেছে। যা হয় পরে দেখা যাবে। হোক একটু অন্যরকম সব কিছু, সম্পূর্ণ রঙিন!
শানজানা আলম
(শেষ না, এখান থেকে নতুন গল্প শুরু হবে অমিত আর নওরিনের)
-হিজলের ফুল জলে ভাসা ভুল – প্রি-অর্ডার চলছে।