একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবি – ১২
নওরিন আমি বাসার সামনে আছি, চলে এসো। – অমিতের ডাকে নওরিন বের হয়ে দ্রুত হেঁটে এলো। অমিতের পাশের সিটে বসে পড়ল। আজ অমিত ড্রাইভারের সিটে।
গুড মর্নিং –
নওরিন একটু হাসল কিন্তু কোনো উত্তর দিলো না।
সত্যি, তুমি আমাকে না চিনলে আমি তোমাকে বলতামই না আমি কে।
নওরিন বলল, বুঝতে পেরেছি।
বোঝার জন্য ধন্যবাদ।
গতকাল যারা ছিল, তারা কোথায়?
প্রোডাকশনের সাথে ঢাকায় ফিরে গেছে। রাতে ডাবিং আছে, সারাদিন কাজ নেই।
ও আচ্ছা। আপনাদের প্রচুর খাটনি।
হ্যা।
মানুষ ভাবে সিনেমার হিরো হিরোইন সারাদিন সেজেগুজে ছবি তোলে। মানে একটা নিশ্চিন্ত লাইফ কাটায়।
হ্যা। ঠিক বলেছ। আমি ভোর চারটায় ঘুমিয়েছি গতরাতে।
বুঝতে পেরেছি।
তোমার প্রোগ্রাম কেমন হলো?
প্রোগ্রাম?
যে কারনে এলে।
ওহ, আসলে আমার জন্য একটা বিয়ের প্রস্তাব এনেছে মামা। ওনারাই এসেছিলেন।
ওহ আচ্ছা। ছেলে কি করে?
ব্যাংকার।
নাম কি?
আশফাক।
তোমাদের পছন্দ হলো একে অপরকে?
আশফাক সাহেব বলেছেন, ওনার দিক থেকে সব ঠিক আছে। আমি একটু সময় চেয়েছি।
ভালো করেছ, বিয়ের মত বিষয় হুট করে সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক না।
নওরিন একটু আশাহত হলো। তার কেন মনে হচ্ছিল যে অমিত বিয়ের কথা শুনে একটু মন খারাপ করবে, বা তাকে অন্যকিছু বলবে, এরকম তো কোনো কারণ নেই।অমিত কেন তাকে পছন্দ করতে যাবে! কোনো কারনে একটা বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে, সেটা বেশি কিছু নয়।
নওরিন ঠিক করল, সে আশফাককে ফোন করে বলে দিবে যে সে রাজী। তার কোনো আপত্তি নেই, এসব নায়কের সাথে নাটক সিনেমার কোনো মানে হয় না।
নওরিন ভেলপুরি খাবে?
নওরিন বাইরে তাকিয়ে বলল, হ্যা খাওয়া যায়।
আচ্ছা আপনার সমস্যা হবে না? আপনাকে সবাই চিনে ফেলবে।
ফেলুক৷ এখন সমস্যা নেই। সব সময় মুড থাকে না। এখন চিল আছি।
নওরিন বের হয়ে ভেলপুরি নিলো, অমিতও নিলো।
আশেপাশে কয়েকজন এগিয়ে এলো অমিতকে চিনতে পেরে। অল্প সময়ে ভীড় জমে গেল। নওরিন একটু সাইড হয়ে দাঁড়ালো। অমিত সবার সাথে হাসিমুখে সেলফি তুলল, অটোগ্রাফ দিলো, তারপর ভেলপুরি নিয়ে গাড়িতে উঠে গেল। নওরিনও এসে বসল।
কোথায় যাবে এখন?
আসাদগেট আড়ংয়ের সামনে নামব।
আমি বাসায় নামিয়ে দিলে সমস্যা আছে?
না, কোনো সমস্যা নেই।
রবিবারে তো জয়েন করবে?
হ্যা।
কাল কি করবে?
ভাবছি আশফাক সাহেবের সাথে একটু দেখা করে কথা বলে নিব।
ওহ আচ্ছা।
অমিত নওরিনকে নামিয়ে দিলো। তারপরে চলে গেল। নওরিনের একটু ফাঁকা ফাঁকা লাগতে শুরু করল।
কিন্তু এমন তো হওয়ার কথা ছিল না। এমন কি কথা হয়েছে যে অমিতের জন্য মন কেমন করবে!
অদ্ভুত তো!
কিন্তু নওরিন এক মুহুর্তেও অমিতকে মাথা থেকে সরাতে পারল না। সারাদিন অমিতের মুভিগুলো দেখল, ইউটিউব থেকে গান শুনল। অফিসিয়াল পেজে ঢুকে ছবিগুলো ফোনে নিয়ে নিলো।
কোনো মানে হয়!!
চলবে
শানজানা আলম