একটি নির্জন প্রহর চাই পর্ব ২০

0
2322

#একটি_নির্জন_প্রহর_চাই
২০
#WriterঃMousumi_Akter.
ছোঁয়া মলিন মুখে চাতক পাখির ন্যায় চেয়ে আছে আমার দিকে। ওশানের বিরুদ্ধে প্রমাণ কি সত্য না মিথ্যা এই কৌতুহলে ছোঁয়ার বুক কাঁপছে।ছোঁয়ার চোখে আমি স্পষ্ট ভ*য় দেখতে পাচ্ছি,দেখতে পাচ্ছি মূল্যবান কিছু হারানোর ভ**য়।ওষ্টদ্বয়ের মাঝে কিঞ্চিৎ ফাঁকা।টেনশন আর উত্তেজনায় হাঁপাচ্ছে।অস্বাভাবিক ভাবে সমস্ত শরীর কাঁপছে ছোঁয়ার।ফুটফুটে মিষ্টি মেয়েটার মুখটা নিমিষেই মলিন হয়ে গিয়েছে।আমার জীবনে দেখা সব থেকে হাসি-খুশি আর সুখী মেয়েটা সেকেন্ডের মাঝে কেমন বদলে গেল।ধনী বাবার একমাত্র মেয়ে।ব্যাক্তিগত গাড়ি ছাড়া কলেজে আসে না কখনো।অথচ এক বিন্দু হিংসা বা অহংকার নেই ওর মধ্যে।আমাদের মত মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির কয়েকজন ফ্রেন্ডকে প্রাণ উজাড় করে ভালবেসেছে।আমাদের মত করেই মিশে থেকেছে আমাদের সাথে।অথচ চাইলেই ও ভিন্ন ধরণের জীবনযাপন করতে পারত।ছোঁয়া একটা জ্বলন্ত উদাহরণ- মেয়েরা ধনী হলেই বিগড়ে যায়না বা অহংকারীও হয়না।কোনদিন আমরা বুঝতেও পারিনি ও ধনীর দুলালি।আমার সাথে ৫০০ টাকার থ্রি পিছ কিনেও ম্যাচিং ড্রেস পরেছে;অথচ ৫০০০ টাকা দামের পোশাক কেনার সামর্থ সব সময় ছিল।কেনো জানি সব সময় আমার প্রতি আলাদা একটা উইকনেস কাজ করে ছোঁয়ার।তন্ময় মাঝে মাঝে ফান করে বলে তোরা কি লেসবিয়ান নাকি!ছোঁয়াকে কেউ উল্টো পালটা বললেই আমাকে ফোন দিয়ে বলবে দোস্ত অমুক ফালতু কথা বলছে দ্রুত আয় শায়েস্তা করতে হবে।

দ্বীপ আর মৃন্ময় ইশারা করল আমাকে,আর বলল, ‘সারাহ!তুই আর ছোঁয়া আর পাঁচটা মেয়ের মত নস। তোরা অন্য মেয়েদের থেকে আলাদা।তাই আমাদের বিশ্বাস আছে, এমন কোনো ছেলের জন্য ছোঁয়া কষ্ট পাবেনা।বরং রুখে দাঁড়াবে।’

আমি ফোন থেকে সমস্ত ছবি বের করলাম।এতদিনে ও বাড়ি থেকে সমস্ত ছবি তুলেছি।তরী আর ওশানের কাপল ছবি,ওদের সন্তান সহ ছবি।ছোঁয়ার সামনে আমি একে একে বিভিন্ন প্রকার ছবি দেখালাম।যত এভিডেন্স লাগে সব আমি ফোনে এতদিনে কালেক্ট করেছিলাম।ছোঁয়া আমার হাত থেকে ফোন টা নিয়ে গভীর মনোযোগ দিয়ে ছবিগুলি দেখছে।আমি, দ্বীপ আর মৃন্ময় ছোঁয়ার কাঁধের উপর ভীড় করে তাকিয়ে দেখছি।দ্বীপ আর মৃন্ময় বিশ্রী গালিগালাজ করছে ওশান কে।ছোঁয়ার শরীরের কম্পন ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে।আমি ছোঁয়াকে শক্ত করে ধরে রেখেছি।ছোঁয়ার জন্য এটা ছিল অপ্রত্যাশিত একটা ঘটনা।আমি বুঝতে পারছিনা ছোঁয়া এটা কীভাবে গ্রহন করবে!ছোঁয়ার চোখ দিয়ে অনবরত অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।চোখে মুখে সাথে সাথে পরিবর্তন চলে এলো।কেমন অস্বাভাবিক লাগছে ছোঁয়াকে।ফোনের স্ক্রিন পানিতে ভেসে গিয়েছে।কেমন অসহায়ের মত তাকাচ্ছে আমাদের তিনজনের দিকে।আমি তরীর জীবনের সমস্ত ঘটনা খুলে বললাম।কেননা, তরীর জীবন টা যে আরো ভায়াবহ,আরো করুণ,আর যন্ত্রণাদায়ক আর কষ্টের!ছোঁয়া হঠাৎ নিঃশ্বাস নিতে পারছেনা,ওর শ্বাস-প্রশ্বাস আটকে আসছে।হসপিটালের চারদিকে মানুষ। বুক ফাঁটা আর্তনাদ প্রকাশ করতে পারছেনা।চোখের প্রতিটা পলকেই অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।আমি ছোঁয়াকে শক্তকরে জড়িয়ে ধরে রেখেছি।দ্বীপ শক্ত কন্ঠে বলল, ছোঁয়া কেনো কাঁদছিস?তোর আসলেই কান্না পাচ্ছে?এই ধরনের পুরুষের জন্য কাঁন্না বের হয়?’

ছোঁয়া কিছু না বলেই উঠে দৌড় দিল।মৃন্ময় আর দ্বীপ ও ছোঁয়ার পিছু ছুটল।আমি মৃন্ময় কে ডেকে বললাম,

‘তোরা তন্ময়ের কাছে থাক।আমি দেখছি ছোঁয়াকে।’

দ্বীপ আর মৃন্ময় দু’জনেই থেমে গেল।আমাকে বলল, ‘ছোঁয়াকে একা ছাড়িস না সারাহ।ওকে বোঝা।’

আমি ছোঁয়ার পিছু ছুটলাম।ঝুম বৃষ্টিতে বিরামহীন ভাবে ছুটে চলেছে ছোঁয়া। কোথাও থামছেনা। বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাট একদম ফাঁকা।আমি ছোঁয়ার পিছু পিছু ছুটছি।ছোঁয়া ওর গন্তব্য জানেনা!কোথায় যাবে নিজেও জানেনা।ভ*য় হচ্ছে ছুটে গিয়ে একটা খারাপ কিছু না ঘটায়!ছুটতে ছুটতে একটা ফাঁকা মাঠের মধ্যে গিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ল।আকাশে পানে তাকিয়ে গগনবিদারী চিৎকার দিয়ে কেঁদে উঠল।হাউমাউ করে কান্না জুড়ল।কাঁদতে কাঁদতে বেসামাল অবস্থা ওর।আমি দৌড়ে হাঁপাতে হাঁপাতে ছোঁয়ার কাছে গিয়ে থামলাম।ছোঁয়াকে জড়িয়ে ধরে বললাম, ‘কান্না কর।চোখের পানির সাথে বিসর্জন দে সব আবেগ।সব কষ্ট।আমি তোকে কাঁদতে নিষেধ করব না।’
ছোঁয়া কাঁদতে কাঁদতে হেচকি তুলে ফেলেছে।আমাকে জড়িয়ে ধরে এক বুক যন্ত্রণা নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলল,

‘আমি মানুষ চিনতে এমন ভুল কীভাবে করলাম সারাহ!আমি ঠকে গিয়েছি! ভীষণ ভাবে ঠকে গিয়েছি।আমার জীবন টা নষ্ট হয়ে গেল!এই ধরনীতে মানুষ চেনা এত কঠিন আগে বুঝিনি!আমি ম*রে যেতে চাই, এত কষ্ট এত যন্ত্রণা নিয়ে আমি বেঁচে থাকতে পারব না।আমি সহ্য করতে পারছি না সারাহ!ওশানকে ছাড়া একটা মুহূর্ত আমি কল্পনাও করতে পারিনা।আমার এতদিনের সাজানো স্বপ্ন,আমার আশা-ভরসা,আমার ভালবাসা সব কিছু তছনছ হয়ে গিয়েছে!’

‘সব ঠিক হয়ে যাবে বেবি!কোন কষ্টই চিরস্থায়ী নয়।চিরস্থায়ী কোনো কষ্ট আমাদের মনের মধ্য থাকেনা বেবি।সময়ের সাথে সব ঠিক হয়ে যায়।বরং শুকরিয়া আদায় কর যে অনেক বড় ভুল হওয়ার আগে আল্লাহ তোকে বাঁচিয়েছেন।পুরো হাত কা*টা*র আগে আঙুল কে*টে*ছে এটার জন্য আলহামদুলিল্লাহ বল।’

‘ওশান এত অভিনয় জানে!কই কখনো তো বুঝতে পারিনি ওর অভিনয়।এত নিঁখুত অভিনয় মানুষ কীভাবে করতে পারে?দিনের পর দিন অভিনয় করে গিয়েছে!’

‘চরিত্রহীন মানুষের অভিনয় নিঁখুত হয়।ওরা বেশি এক্সপার্ট থাকে এসব বিষয়ে। বুঝেছিস?আজ পর্যন্ত যতগুলা মেয়ে ঠকেছে সবাই এই চরিত্রহীন ছেলেদের কাছেই ঠকেছে।মেয়েরা আবেগী,ভালবাসা পেলে পৃথিবীর সব কিছু ভুলে যায়।ভালবাসায় বিশ্বাসী মেয়েদের চোখ দেখলেই বোঝা যায়।কিছু ছেলে এই সুযোগ টা ই কাজে লাগায়।সরলতার সুযোগ নিয়ে চরমভাবে ঠকিয়ে যায়।আর এমন ক্ষত দিয়ে যায় যা আজীবন বয়ে বেড়াতে হয়।উচিত কাজ হচ্ছে এদেরকে শিক্ষা দেওয়া।চরম শিক্ষা দেওয়া।এমন শিক্ষা দেওয়া; অন্তত আর পাঁচজন ছেলে তা দেখে যেন শিক্ষা নিতে পারে।দুনিয়া কি আজব ছোঁয়া!কিছু ছেলে ভীষণ ভালবাসতে জানে কিন্তু অভিনয় করে প্রকাশ করতে পারেনা।আমরা তাদের কথা ভাবিও না।অথচ তাদের একটু ভালবাসা দিলে নিজেকে শ্রেষ্ঠ সুখী মানুষ ভাবে।আবার কিছু মেয়ে আছে ভালবাসায় বিশ্বাসী ওই ছেলেগুলোকে ঠকিয়ে মন ভেঙে দেয়।ছেলে মেয়ের উভয় পরম্পরায় এই ঠকানোর জন্য ছেলেরাও মেয়েদের বিশ্বাস করতে ভ*য় পায়।ছেলেরাও মেয়েদের বিশ্বাস করতে ভ*য় পায়,আবার মেয়েরাও ছেলেদের বিশ্বাস করতে ভ*য় পায়!’

‘আ ‘আমি কী এমন পাপ করেছিলাম সারাহ!আমার সাথে এমনটা কেনো হলো?আমিতো কাউকে ঠকায়নি!তাহলে কেনো?’

‘এটাও হয়তো জীবনের একটা শিক্ষা।শান্ত হ প্লিজ।’

‘আমি কীভাবে শান্ত হব?আমি আর পারছি না সহ্য করতে সারাহ!’

‘কেনো পারছিস না?কষ্ট হচ্ছে তোর ওশানের জন্য?ওশানকে হারানোর জন্য দুঃখ হচ্ছে?’

‘আমার কষ্ট হচ্ছে ওশানের ওয়াইফের জন্য।ওই অ-দেখা, অজানা মেয়েটাকে নিজের অজান্তেই আমি কষ্ট দিয়েছি।আমি পাপী সারাহ!একটা মেয়ের স্বামীকে নিয়ে দিনের পর দিন স্বপ্ন দেখেছি, হেসেছি আর অন্যদিকে ওই মেয়েটার স্বপ্ন ভেঙেছে আর কষ্ট পেয়েছে!আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারব না কোনদিন।আমি পরকিয়ায় লিপ্ত ছিলাম।আমি ওশানের ওয়াইফের লাইফটা নষ্ট করেছি, সাথে নিজের লাইফ টাও।আমার শরীর রিরি করে উঠছে ঘৃণায় যে আমি ওশানকে ভালবেসেছিলাম!আমার এজন্য ম*রে যেতে ইচ্ছে করছে আমি এমন একটা মানুষের সংস্পর্শে ছিলাম নিজের প্রতি ঘৃণা লাগছে।আমি এটা কী করলাম সারাহ?’

‘তুই সত্যি সবার থেকে আলাদা ছোঁয়া।অন্য কোনো মেয়ে হলে ওশানের ওয়াইফের কথা ভাবতই না।বরং সব জেনেও এই অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত থাকত।’

‘ছিঃ!মানুষ কীভাবে পারে অন্যের স্বামী কেড়ে নিতে?আমিতো কল্পনাও করতে পারিনা।’

‘তোর জন্য প্রাউড ফিল হচ্ছে ছোঁয়া।’

‘কিন্তু আমি মা-বাবাকে কী বলব সারাহ!আমি কত বিয়ে ভেঙেছি ওশানের জন্য।ওশান আমার বাড়িতে গিয়েছে কতবার।বাবা আমাকে বলত ছেলেটার চোখে মুখে অন্য কিছু আছে।ছেলেটা ভাল নয়।কিন্তু বাবার কথা মেনে নেইনি।এখন কীভাবে মুখ দেখাব?আমি তো এপাশ -ওপাশ সবই হারালাম সারাহ!’

‘কিচ্ছু হারাসনি তুই।চল,আমার সাথে বৃষ্টিতে ভিজে দু’জনেরই জ্বর হবে।আমাদের ফর্ম ফিল-আপ আজ।জীবনে সুখ-দুঃখ সব ই আসবে? কিন্তু আমাদের থেমে থাকলে চলবে না।এগিয়ে যেতে হবে বেবি।’

আমি বুঝতে পারছি ছোঁয়ার ভেতর টা জ্বলে পুড়ে ছারখার যাচ্ছে।এত সহজে এসব মেনে নেওয়া সম্ভবপর নয় ওর জন্য।খুব সহজে স্বাভাবিকও হতে পারবেনা।ছোঁয়াকে নিয়ে আবার হসপিটালের নিচে গেলাম।দুজনেই ভিজে ঠান্ডায় কাঁপাছি।ছোঁয়ার ড্রাইভার হসপিটালের নিচেই আছে।ড্রাইভারকে দিয়ে উপরে খবর পাঠালাম।মৃন্ময় আর দ্বীপ নিচে এলো।ছোঁয়াকে বলল,’একদম ভেঙে পড়বিনা।ওই ওশানের মাদারবোর্ড এর হাত -পা আস্ত রাখব না প্রমিস। ‘
আমি ওদের বললাম, ‘ওশান আমার দেবর হয়।প্লিজ ওর সাথে আমাকে লড়তে দে।ওর বিষয়টা আমি দেখে নিব।তোরা কুল থাক।’
মৃন্ময় বলল, ‘ফর্ম ফিল-আপ এর কী হবে?তন্ময় এর কী হবে?ওর পাশেও তো থাকতে হবে না-কী?’
দ্বীপ বলল, ‘আচ্ছা আমি মেসে যাচ্ছি।তোদের কাগজ পত্র নিয়ে আমি ফর্ম ফিল আপ করে দিব।’
মৃন্ময় বলল, ‘হসপিটালের খরচ তো দিতে হবে। আমার কাছে এক্সট্রা টাকা নেই।যা ছিলো তন্ময়ের ওষুধ কিনেছি।এখন টাকা পাব কই।’

ছোঁয়া মলিন কন্ঠে বলল, ‘আমার ব্যাগ ফেলে এসছিলাম।এনে দেতো।’

মৃন্ময় ব্যাগ এগিয়ে দিয়ে বলল, ‘নিয়েই এসছি।’

ছোঁয়া ব্যাগ থেকে টাকা বের করে বলল, ‘তন্ময়ের যেন কিছু না হয় মৃন্ময়।ওর সব ধরনের ট্রিটমেন্ট করা।আমার শরীর ভালো লাগছে না, বাসায় যাচ্ছি।আর সারাহ!আমার ফর্মটা ফিল-আপ করে দিস একটু।’

ছোঁয়া আমি আর দ্বীপ ছোঁয়ার গাড়িতে করে রওনা হলাম।দ্বীপ আর আমি সারা রাস্তা বুঝিয়েছি ছোঁয়াকে।ছোঁয়া থেকে থেকে কেঁদে উঠছে।সারারাস্তা একটাও কথা বলেনি।এরই মাঝে ছোঁয়ার ফোন বেজে উঠল।ফোনের স্কীনে ভাষছে ওশানের ছবিসহ নাম্বার।মাই লাইফ দিয়ে নাম্বার টা সেভ করা।ছোঁয়া সাথে সাথে ফোনটা রিসিভ করে প্রচন্ড রেগে গিয়ে গালি দিয়ে বলল,’জা** নো** য়া**রে**র বা*চ্চা আর যদি কোনদিন আমাকে ফোন দিস তোকে পুলিশে দিবো।কী ভেবেছিলি আমি কোনদিন জানতে পারব না তোর ওয়াইফ আছে!লজ্জা থাকলে আর কোনদিন ফোন দিবিনা।তোকে কি মানুষ জন্ম দিছে না অ*মানুষ। তোর মা অ*মানুষ না হলে ছেলেকে এইভাবে এগিয়ে দেয়।তুই আর তোর মা কাউকে ছা*ড়*ব না আমি।মেয়েদের জীবন নিয়ে মজা করিস।তোর মা তোর বউ থাকতেও কেনো আমার বাবার কাছে প্রস্তাব নিয়ে গেছিলো।তোর মায়ের সাথে আমার কথা আছে।’
ছোঁয়া নাম্বার টা ব্লক করে ফোন ব্যাগে রেখে দিলো।
দ্বীপ ওর মেসের কাছে নেমে গেল।আমি কলেজের ক্যাম্পাসে নেমে গেলাম।ছোঁয়া বাসায় চলে গেল।এমন ভেজা শরীরে কী করব!কলেজের ভিতরেই বা কীভাবে যাব।ঠান্ডায় হাঁচি হচ্ছে বারবার।একটা গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ভাবছি কী করব!এরই মাঝে একটা ছেলে আমার কাছে এসে বলল,
‘আপু আপনাকে একাউন্টিং ডিপার্টমেন্টের লেকচারার রোশান সিদ্দিকী ডাকছেন, স্যার কমন রুমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছেন।’
বুকের মাঝে হঠাত ধুক করে উঠল।আমিতো উনাকে না বলেই বেরিয়েছিলাম।নিশ্চয়ই খুজেছেন আমাকে।এই অবস্থায় দেখলে কি বলবেন।ভিজতে ভিজতে কমন রুমের বারান্দায় গেলাম।রোশান স্যার প্যান্টের পকেটে হাত গুজে থমথমে মুডে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।উনার চোখে মুখে হাজারো প্রশ্ন।দেখে চিন্তিত ও লাগছে।আশে পাশে তাকিয়ে দেখি, ক্যাম্পাসে এক দু’জন ছাড়া আর কেউ নেই।উনি কিছু বলার আগেই ভয়ংকর বজ্রপাত এর শব্দ হলো।আমি চিৎকার দিয়ে উনাকে শক্তকরে জড়িয়ে ধরলাম।উনি হঠাত এভাবে উনাকে জড়িয়ে ধরাতে কেঁপে উঠলেন।

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here