#ইফ্রিতে_মুসনাত
#পর্বঃ১৩
#লেখিকাঃ আস্থা রাহমান শান্ত্বনা
আয়ানাকে হস্পিটাল থেকে নিয়ে আসার পর থেকে সে সবাইকে শুধু একটাই কথা বলতে থাকে, “ওই মেয়েটা আমার বাচ্চাটাকে নিয়ে গেছে।”
অনবরত বাচ্চার জন্য কাদতে থাকে আয়ানা। সায়মা আয়ানাকে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরে রাখে। আয়ানা কেদে কেদে বলে,
” আপু, ওই মেয়েটা আমার মাথায় আঘাত করে আমার বাচ্চাটাকে নিয়ে চলে গেছে। আমার শেষ সম্বলটুকুও কেড়ে নিয়ে গেল। সাদ কে তো হারালাম ই, এখন নিজের সন্তানের মুখটাও দেখতে পারলাম। আমার সাথে এমনটা কেন হচ্ছে?”
সায়মা আয়ানাকে বলে, “এটা মেনে নে তুই মৃত সন্তান জন্ম দিয়েছিস। তোর বাচ্চাকে কেউ নেয়নি, আর বাচ্চার শোকে তুই নিজেই নিজের মাথায় বাড়ি দিয়েছিস। তখন তো তুই মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলি।”
আয়ানা নিজেকে সায়মার কাছ থেকে সরিয়ে নিয়ে বলল, “মোটেওনা। আমি নিজের চোখে আমার বাচ্চাকে নড়াচড়া করতে দেখেছি। কাদতে শুনেছি অবধি। কিন্তু তার মুখটা দেখার আগেই এক নারী অবয়ব আমার মাথায় আঘাত করে আমার বাচ্চাকে নিয়ে চলে যায়। বিশ্বাস কর, আপু আমার বাচ্চা বেচে ছিল।
আমি এটাও জানতে পারলামনা আমার বাচ্চা ছেলে নাকি মেয়ে?”
সায়মা অসহায়চোখে দরজার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সালমা আরার দিকে তাকায়। বাচ্চার শোকে আয়ানা নিজের মত করে ভাবতে শুরু করেছে। যেখানে ডাক্তার বলেছে আয়ানা মৃত সন্তান জন্ম দিয়েছে, সেখানে আয়ানা কিভাবে জীবিত বাচ্চা দেখতে পারে! এটা আয়ানার কল্পনা ছাড়া আর কিছুইনা।
সালমা আরা ছুটে এসে স্বামীর বুকে আছড়ে পড়ল। কাদতে কাদতে বলল,
” এমন করতে থাকলে আমার মেয়েটা এবার সত্যি সত্যি পাগল হয়ে যাবে। তুমি কিছু একটা করো। আমার মেয়েটার জীবনটা বোধহয় দুঃখেই কেটে যাবে।”
আয়মান শাফি সালমা আরার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলল,
” আমাদের মেয়েটার কপালে সুখ সয়না। এত সুন্দর একটা জীবন পেয়েও হারাল। জামাই টা কোথায় নিরুদ্দেশ হল নাকি কেউ মেরে ফেলল সেটাও জানতে পারলামনা। আমার নিজেরও আয়ানাকে নিয়ে খুব দুশ্চিন্তা হয়। রাতে ওর চিন্তায় ঘুম হয়না। আমার মেয়েটাকে যদি একটা সুখের জীবন উপহার দিতে পারতাম।”
সালমা আরা চোখ মুছে বলল,
” তুমি ওর আবার বিয়ে দিয়ে দাও। নতুন একটা সংসার পেলে ও সব ভুলে যাবে। তোমার বোনের জন্য যে অপূরণীয় ক্ষতি বারবার আমার মেয়ের হয়েছে সেটা আর ঘুচবেনা। এখন সব ভুলে আমার মেয়ের আবার বিয়ে দাও, ওকে একটা সুখের জীবন দাও। সব ঠিক হয়ে যাবে দেখো।”
” তুমি পাগল হলে সালমা? আয়ানার এই অবস্থা আমি তার বিয়ের চিন্তা করব। আর ওর স্বামী আদৌ মারা গেছে কিনা সেটাও আমরা ভালো করে জানিনা। এসব কিছু ভুলে ওর আবার বিয়ে দিব? আয়ানা এটা কিভাবে নিবে!”
” আমি এত কিছু জানিনা। আমি আমার মেয়েকে ভালো দেখতে চাই। দিনের পর দিন চোখের সামনে ওকে পাগল হতে দেখতে পারিনা।”
” একটু শান্ত হও। সাদের আগে খোজ পাই তারপর….
” যে ছেলের খোজ এই ৯ মাসেও পাওয়া গেলনা, তার খোজ আদৌ পাওয়া যাবে কিনা ঠিক নেই। এদিকে আমার মেয়েটা বুকে কষ্টের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছে। বাচ্চাটা থাকলে একটা কথা ছিল। বাচ্চাটার দিকে তাকিয়ে ও একটা নতুন জীবন শুরু করতে পারত। কিন্তু বাচ্চাটাও পৃথিবীর আলো দেখার আগেই মরে গেল।
কি নিয়ে বাচবে ও বলতে পারো! আর কিচ্ছু শুনতে চাই নাহ। তুমি তোমার হুজুর কে ডাকো উনি নিশ্চয়ই ভালো পরামর্শ দিতে পারবেন।”
আয়ানার বিয়ের কথা আয়ানার কানে যেতেই ও রেগে গেল। সবকিছু ছুড়ে ফেলে দিয়ে বলল, ” তোমরা কি করে আরেকটা বিয়ের কথা ভাবতে পারো! যেখানে এখনো আমার স্বামী নিখোজ। তাকে খোজার চেষ্টা না করে তোমরা আমার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছো। কেমন মা-বাবা তোমরা?”
সালমা আরা আয়ানাকে ধমক দিয়ে বললেন,
” তোমার এসব পাগলামী বন্ধ করো। নিজের দিকে তাকিয়ে দেখো কি অবস্থায় আছো তুমি এখন! আর তোমার স্বামীর খোজ আমরা করিনি ভেবেছো। এই ৯ মাস তার খোজ করার সবরকম চেষ্টা করেছি। যে নিজে থেকে নিখোজ হয়, তার খোজ কেউ কিভাবে পাবে! তোমার বাচ্চাটাও নেই যে বলব তাকে সম্বল করে তুমি বেচে থাকবে। কি নিয়ে থাকবে তুমি বলতে পারো।
আমরা যা করছি তোমার ভালোর জন্যই করছি। এই ব্যাপারে তোমার কোনো মতামত ই খাটবেনা। জীবনটা ছেলেখেলা নয়।”
এইটুকু বলে সালমা আরা আয়ানার রুম থেকে বেরিয়ে যায়। আয়ানা মেঝেতে বসে পড়ে পাথরদৃষ্টি চোখে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ভাবে, ” তুমি কোথায় চলে গেলে সাদ! আমি বিশ্বাস করতে পারিনা যে তুমি আর নেই। সবকিছু ঘোলা করে দিয়ে কোথায় নিরুদ্দেশ হলে তুমি! আমি আর এসব নিতে পারছিনা। ফিরে এসো তুমি। আমার বাচ্চাটাকেও ফিরিয়ে দাও আল্লাহ।”
আয়ানা প্রতিনিয়ত নামায পড়ে মুনাজাতে কাদে। সেটা দেখে সালমা আরাও নীরবে নিজের চোখের পানি মুছেন। এভাবে আর কত দিন! বাচ্চা হওয়ার ২মাস পেরিয়ে গেছে, আয়ানাও কিছু শক্ত হয়েছে। তবুও সে বিশ্বাসী সাদ একদিন তার কাছে ফিরবেই। তার বাচ্চাও বেচে আছে, কোনো একদিন সেও তার মায়ের কাছেই ফিরবে।”
এদিকে আয়ানার মা সবার মতের বিরুদ্ধে ঘরোয়াভাবে আয়ানার বিয়ের ব্যবস্থা করে। আয়ানাকে বুঝাতে গেলে আয়ানা কিছুতেই রাজি হয়না। কিন্তু কোনো কথার পরোয়া না করেই আয়ানার মা বিয়ের আয়োজন করে। বিয়ের আগেরদিন রাতে আয়মান শাফি আয়ানার রুমে ঢুকেন। আয়ানা চুপচাপ বসে ছিল। আয়মান শাফি আয়ানার পাশে বসে বললেন,
” বাবার উপর রাগ করে আছিস?”
” বাবা তুমি কেন মাকে আটকাচ্ছোনা? এত বড় একটা সিদ্ধান্ত মা কেন নিচ্ছে!”
” তোর মা তোর মত আমাদেরকে কসম দিয়েছে আর বলেছে আমরা কেউ যদি তাকে আটকানোর চেষ্টা করি তবে সে আত্মহত্যা করবে। তাই বাধ্য হয়ে আমি চুপ আছি। আমিও চাই তুই নতুনভাবে জীবন শুরু কর, কিন্তু এভাবেনা যেভাবে তোর ইচ্ছে নেই।”
আয়ানা তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাদতে থাকে।
বিয়ের দিন সকাল থেকেই আয়ানাকে কোথাও খুজে পাওয়া যাচ্ছেনা। সালমা আরা ভীষণ অস্থিরচিত্তে সারাবাড়ীতে আয়ানাকে খুজতে থাকে। কিন্তু কোথাও আয়ানার খোজ পায়না। সালমা আরা মাথায় হাত দিয়ে বলল,
” ওগো এবার কি হবে?”
আয়মান শাফি একটু চুপ থেকে বলল, “যা হওয়ার তাই হবে। আয়ানা নিজের পথ নিজে খুজে নিয়েছে, তাকে আটকানোর সাধ্য আমাদের নেই। ও ওর ভালোটা নিশ্চয়ই বুঝতে শিখেছে।”
.
আয়ানা আনমনে রাস্তায় হাটছে। খুব ক্লান্ত লাগছে আজ, অফিসে কাজের চাপ একটু বেশী ই ছিল। অফিস সেরে টুকটাক শপিং করে বাসার উদ্দেশ্যে হাটছে সে। ৫ বছর হয়ে গেল, বাসার কারো সাথে তার কোনো যোগাযোগ হয়নি একমাত্র আব্বু ছাড়া। আয়মান শাফি সবার অগোচরে আয়ানার সাথে যোগাযোগ রাখেন। আয়ানা ভাবতে থাকে, সেদিন রাতে যদি তার বাবা তার হাতে পাসপোর্ট ধরিয়ে দিয়ে লন্ডনে পাঠানোর ব্যবস্থা না করতেন তাহলে হয়ত আয়ানাকে আত্মহত্যা ই করতে হয়। সাদ ছাড়া অন্য কাউকে মেনে নেওয়া তার পক্ষে অসম্ভব ছিল। সেই রাতে আয়ানার আব্বু আয়ানাকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত এগয়ে দিয়েছিল। আয়ানা ইমিগ্রেশনে ঢোকার আগে আয়মান শাফি আয়ানার কপালে একটা চুমু একে দিয়ে বলেছিল, ” এখন থেকে নিজের মত করে জীবন শুরু কর। যেদিন পরিপূর্ণভাবে নিজের জীবন গুছাতে পারবি, সেদিন ই ফিরিস। আমার বন্ধুকে বলে সব ঠিক করে রেখেছি, ও তোকে এয়ারপোর্টে রিসিভ করতে আসবে। ওর ফ্যামিলির সাথেই তুই থাকবি, মন দিয়ে পড়ালেখাটাও চালিয়ে যাস। যা লাগে, আমি এখান থেকে ব্যবস্থা করে দিব।”
সেদিন নিজের বাবাকে আয়ানার সবচেয়ে সেরা বাবা মনে হয়েছিল। আর কেউ না বুঝুক, বাবা তাকে ঠিক ই বুঝতে পেরেছে। তাই তাকে তার মত করেই জীবন শুরু করার অনুপ্রেরণা দিয়েছে। সেদিন বাবার পা ছুয়ে সালাম করার মত সুযোগ পায়নি আয়ানা, ভেবে রেখেছে যেদিন বাবার সামনে গিয়ে দাঁড়াবে সবার আগে বাবার পা ছুয়ে সালাম করবে সে।
এখানে এসে আয়ানা নিজেকে অনেকটাই গুছিয়ে নিয়েছে। পড়াশোনা কম্পলিট করে এখন একটা ভালো জব ও করছে৷ নিজের আলাদা বাসা নিয়েছে, সবমিলিয়ে নিজের মত করেই ভালো আছে সে। কিন্তু ভিতর থেকে সে ভালো নেই। এখনো স্বামী-বাচ্চার জন্য প্রতিনিয়ত তার মনটা কাদে। ভাবতে থাকে কবে তার অপেক্ষার প্রহর কাটবে! ওর ভাবনাকে সত্যি করে দিয়ে সাদ তার কাছে ফিরবে! কবে সে নিজের বাচ্চার মুখে মা ডাক শুনতে পারবে। অন্যের বাচ্চাগুলোকে দেখে তার প্রচন্ড লোভ হয় মা ডাক শোনার। সাদ ঠিক ই বলেছিল মেয়েদের জীবনে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি এটাই।
এসব ভেবে ভেবে হঠাৎ আয়ানা কারো সাথে ধাক্কা খায়। সাথে সাথে তার হাত থেকে সবকিছু পড়ে যায়। ছেলেটি এগিয়ে এসে স্যরি বলে তাকে তুলতে সাহায্য করে। আয়ানা একপলক ছেলেটির দিকে তাকায়। ছেলেটির চোখে কালো সানগ্লাস, পরনে ফরমাল ড্রেস। গায়ের রঙ লালচে ফর্সা, গালে বেশ ছোট খোচা খোচা দাড়ি। আয়ানা ইট’স ওকে বলে সরে আসে। হঠাৎ কি ভেবে পিছনে তাকাল। দেখল ছেলেটি সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে একজনের সাথে কথা বলায় ব্যস্ত। কথা বলতে বলতে ছেলেটির নিজের চোখ থেকে সানগ্লাস খুলল। ছেলেটির চোখ দেখে আয়ানার বুকটা ধড়াস করে উঠে। সেই নীল-কালো বর্ণের সংমিশ্রিত চোখ, যে চোখ তার খুব পরিচিত। ছেলেটি তাহলে আর কেউ নয়, তার সাদ।
আয়ানা ছুটে গিয়ে সাদের সামনে গিয়ে দাড়াল। আবেগাপ্লুত হয়ে বলল,
” সাদ!! তুমি ফিরে এসেছো?”
” স্যরি! আই ডোন্ট আন্ডারস্ট্যান্ড ওয়াট আর ইউ সেইং!”
” সাদ আমি আয়ানা।”
ছেলেটি বেশ বিরক্ত হয়ে বলল, ” আপনাকে আমি চিনতে পারছিনা। এই নামের কাউকে আমি চিনিওনা। আমার নাম সাদ নয়, আপনি কারো সাথে আমাকে ঘুলিয়ে ফেলছেন।”
” তুমি সাদ নও। হতেই পারেনা, তুমি সাদ। বাহ্যিক থেকে তুমি অনেকটা পরিবর্তন হলেও তোমার সেই চোখ দুটো একই আছে ”
” আশ্চর্য, আপনি যার কথা বলছেন, আমি সে নই। আমি মুহসীন সামি। প্লীজ ডোন্ট ডিস্টার্ব মি।” বলে ছেলেটা সেখান থেকে চলে গেল।
আয়ানা একইভাবে তার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল। যে চোখের প্রেমে পড়েছিল, যার জন্য এতবছর ধরে অপেক্ষা করেছিল তাকে আয়ানা চিনতে পারবেনা। আয়ানা কিছুই বুঝতে পারলনা। এইছেলেটা যদি সাদ ই হত তাহলে আয়ানা কে কেন চিনবেনা! হয়ত এই ছেলেটা সাদ ই নয়। কিন্তু আয়ানাকে সাদকে চিনতে এতটা ভুল হবে!
.
আয়ানা রাত জেগে এসব ভেবেও কোনো কূল পেলনা। নিজেকে বুঝ দিল হয়ত তার ই চিনতে ভুল হয়েছে। নতুবা সাদ তাকে দেখলেও না চেনার ভান কেন করবে! এসব বলে নিজের ভিতরটাকে বুঝ দিল আয়ানা। যদিও সে জানে সাদের চোখ দুটো চিনতে সে একটুও ভুল করেনি। কিছুদিন কেটে যাওয়ার পর আয়ানা বাসা শিফট করে নতুন বাসায় উঠল। তার অফিসের প্লেস শিফট হওয়ার কারণে তাকেও শিফট হয়ে অন্য বাসা নিতে হল।
আয়মান শাফির সাথে ফোনে কথা বলতে বলতে ক্যাব থেকে নামল আয়ানা। এ্যাপার্টমেন্ট টা একনজর দেখে নিল, থার্ড ফ্লোরেই তার নতুন বাসা। ক্যাব থেকে নেমে লাগেজগুলো লিফটের সামনে রেখে আয়ানা তার বাবার সাথে কথা বলছে।
” তুই ঠিকমত পৌছেছিস?”
“হ্যা আব্বু। এই তো নতুন বাসার নিচে দাঁড়িয়ে আছি। কোনো সিকিউরিটি দেখছিনা যে লাগেজগুলো লিফটে ঢুকিয়ে দিবে। আচ্ছা আব্বু আমি ফ্রি হয়ে তোমার সাথে কথা বলব। লাগেজ গুলো লিফটে ঢুকিয়ে নিই।”
আয়ানা ফোন রেখে এক এক করে লাগেজ গুলো লিফিটে ঢুকাল। হঠাৎ একটা অদ্ভুত দেখতে বাচ্চা ছেলে সালাম দিয়ে বলল, ” ক্যান আই হেল্প ইউ?”
আয়ানা বলল, বাচ্চাটা তো ছোট। ও তো লাগেজ ক্যারি করতে পারবেনা। সিকিউরিটি গার্ডটা কোথায় গেল?
” আন্টি, সালামের উত্তর দেওয়া ওয়াজিব।
আপনি চাইলে আমি আপনাকে হেল্প করতে পারব।” বলে ছেলেটা সর্বশেষ মাঝারি লাগেজ টা টেনে একনিমিষে লিফটের ভিতরে ঢুকল। আয়ানাও ঢুকল।
আয়ানা অবাকদৃষ্টিতে একবার তাকিয়ে বাটন প্রেস করল, ছেলেটা দেখতে পুরো বিদেশীদের মত কিন্তু কথা বলছে শুদ্ধ বাংলায়। বেশ হেল্পফুল, ফ্যামিলির শিক্ষাটার ধরণ খুব উচ্চমানের। থার্ড ফ্লোরে নামলে আয়ানার লাগেজ গুলো নিতে হেল্প করল ছেলেটা। আয়ানা দরজার সামনে এসে পার্স থেকে টাকা বের করে ছেলেটাকে চকলেট খাওয়ার জন্য দিতে চাইলদ ছেলেটা বলল,
” স্যরি আন্টি। আমি আপনাকে হেল্প করতে পেরেই খুব খুশি। আসি, আল্লাহ হাফেজ।”
আয়ানা ছেলেটার দিকে অবাকচোখে তাকিয়ে রইল। বয়স আর কত হবে ৪-৫ বছর, তাও ম্যানারস আর সেল্ফ রেস্পেক্ট কত স্ট্রং। পরিবারের পরিপূর্ণ শিক্ষা একেই বলে।
(চলবে…..)