আমার_গল্পে_তুমি ৮_পর্ব

0
566

#আমার_গল্পে_তুমি??
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)
#৮_পর্ব
,
তুমি এখানে কি করছো??

তো কোথায় থাকবো, আপনি তো শুধু চাকরিটা দিলেন কোথায় বসবো সেটা তো বলেন নাই আর এখানকার কিছু চিনিও না তাই এখানেই বসেছি।

ওহ আচ্ছা আমি তো ভুলেই গিছিলাম, আচ্ছা আজকের মতো তুমি এখানে বসেই কাজ করো আজকে ভাইয়া আসলে তেমার একটা বসার জায়গার ব্যবস্হা করা যাবে,, চেয়ারে বসতে বসতে বলল আর্দ্র।

তা আমার কি কাজ বোঝায় দেন।

ওকে লিসেন এই যে ফাইল গুলো দেখছো এই ফাইলে খুবিই গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রজেক্ট আছে আমি অর্ধেক দেখেছি বাকিটা তুমি দেখো তারপর আমাকে দেবে ওকে।

ওকে বোঝেছি,, এই বলে ফাইল গুলো নিয়ে ইয়ানা সোফায় বসে দেখতে লাগল,, আর আর্দ্র নিজের কাজ করতে লাগল কিছুক্ষণ পর আর্দ্র বলল,,শোনো স্টোর রুমে একদম উপরের তাকের পাঁচ নাম্বার বস্কে চারটা ফাইল আছে যাও নিয়ে আসো।

ওকে,, এই বলে ইয়ানা দরজা অবধি গিয়ে আবার পিছন ফিরে আর্দ্রর দিকে তাকিয়ে কমরে হাত রেখে দাঁড়িয়ে থাকল।

কি হলো না গিয়ে এভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেনো?? সময় কম জলদি যাও।

আপনি জানেন না আমি এই অফিসে বিগত চার বছর ধরে কাজ করি আমি এখানকার সবকিছু চিনি একেবারে পানির মতো,,, দাঁতে দাঁত চেপে বলল ইয়ানা।

আর্দ্র ইয়ানার কথা বুঝতে না পেরে বলল,, মানে??

মানে হলো আমি চিনি স্টোর রুম কোথায়?? আজকেই প্রথম আসিনি আমি??

এটা সোজাসাপটা বললেই তো হতো এতো ঘুরিয়ে বলার কি আছে,, এই বলে আর্দ্র পিওন কে ডাকলো কিন্তু পিওন আসলো না, হয়ত কোনো কাজে গেছে আচ্ছা চলো আমিই তোমাকে দেখিয়ে দিচ্ছি,, এই বলে আর্দ্র আগে আগে চলে গেলো।

নিজেই যখন যাবে তখন নিজেই আনলে কি হতো শুধু আমাকে বিরক্ত করার ফন্দি, এই বলে ইয়ানাও আর্দ্র পিছনে গেলো,,আর্দ্র স্টোর রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বলল,, এই যে এটাই স্টোর রুম ভিতরে যাও আর ফাইলটা নিয়ে এসো।

ইয়ানা রেগে বিরবির করতে করতে ভিতরে গেলো, তারপর উপরে দিকে তাকিয়ে দেখলো একদম উপরের তাকের একটা বস্কের গায়ে পাঁচ লেখা আছে, তবে সেটা ইয়ানার ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

এটা তো অনেক উপরে আমি তো নাগাল পাচ্ছি না আপনি লম্বা আছেন আপনি পেরে নিননা।

একদম কাজে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করবে না, পাশের ওই টুলটা নিয়ে ওটার উপর দাঁড়িয়ে পারো,, দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে দুহাত বুকে গুজে বলল আর্দ্র।

এই লোকটা বড্ড বেশি অভদ্র,, জেনেশুনে আমাকে খাটাচ্ছে মনে চাই মেরে মাথা ফাঁটিয়ে দিই, এসব বিরবির করতে করতে ইয়ানা পাশ থেকে টুলটা নিয়ে তার উপর দাঁড়িয়ে ফাইলটা পারার চেষ্টা করলো কিন্তু হলো না তবুও নাগাল পাচ্ছে না তাই পা টা একটু উঁচু করে পারতে চেষ্টা করলো ওদিকে টুলটা নড়বর করছে,, ইয়ানা কোনোমতে ফাইলের নাগাল পেয়েছে তখনি পা পিছলে হুরমুর করে নিচে পড়ে গেলো, ইয়ানা ভেবেছিলো যে আর্দ্র হয়ত ওকে ধরবে কিন্তু সে গুড়ে বালি আর্দ্র আগের মতোই বুকে দু হাত গুজে দাঁড়িয়ে আছে।

আহ আমার কমরটা গেলো, কি নিষ্ঠুর লোক একটু ধরলোও না আমাকে,,, ইয়ানা কমরে হাত দিয়ে উঠার চেষ্টা করতে করতে বলল।

৷ আর্দ্র রুমের ভিতর এসে ইয়ানার দিকে একটু ঝুঁকে বলল নিজের দোষে নিজেই পরেছো তোমার উচিত ছিলো আর একটু দেখে কাজ করা এখন থেকে উঠে ফাইলগুলো নিয়ে যলদি আমার কেবিনে আসো কাজ আছে,,, এই বলে আর্দ্র যেই বাইরে বেরতে যাবে তখনি নিচে পড়ে থাকা টুলটাই বেঁধে সোজা গিয়ে ইয়ানার উপর পড়ল।

ইয়ানা কেবলি কষ্ট করে একটু উঠেছিলো তখনি আবার আর্দ্র হুরমুর করে ওর উপর পড়ে গেলো,, আহ এবার আমার একেবারে শেষ কমরটা এবার সত্যি সত্যি গেলো,, এখন তো নিজেই দেখে চলতে পারেন না।

তোমাকে কে বলেছিলো টুলটা এখানে রাখতে যত্তসব,, এই বলে আর্দ্র রেগে ইয়ানার উপর থেকে উঠে চলে গেলো, তার উপর ইয়ানাও উঠে পড়ল এভাবেই দুজনের খুনশুটি আর ঝগড়ার মধ্যে দিয়ে দিনটা কেটে গেলো।

,,,,সন্ধ্যাই,,,

উফ কমরটা গেছে এখনো বেথ্যা আছে রাতে বাড়ি গিয়ে মা কে বলবো তেল গরম করে মালিশ করে দিতে তাহলে যদি কমে , কি কুক্ষণে যে ওই লোকটার সাথে আমার দেখা হয়েছিলো কে জানে,, আর্দ্র অনেক কিছু বলতে বলতে অবশেষে পরশের বাড়ি আসলো কলিং বেল চাপতেই অন্তরা এসে দরজা খুলে দিলো।

কি ব্যাপার আজকে এতো সাজুগুজু করেছো যে কাহিনি কি হুম??

ধ্যাত তুমিও না, এসো ভিতরে আসো।

হুমম বুঝি বুঝি জানিতো আজকে ভাইয়া আসবে সেই জন্যই এতো আয়োজন,, ভিতরে এসে বলল ইয়ানা।

অন্তরা লজ্জা পেয়ে বলল,,,পরশ ওর রুমেই আছে তুমি উপরে যাও।

ওলে এতো লজ্জা পেতে হবে না,,, এই বলে হাসতে হাসতে উপরে যেতে গেলে দেখলো আর্দ্রর সেই ফুপি নেই তাই অন্তরাকে জিগাস করল,, আপু তোমার সেই জ্ঞানী ফুপি শাশুড়ী টা কই দেখছি না তো।

আরে ওনি তো সকালেই চলে গেছে,, ওনি এমনি এসে আর্দ্র কে জ্ঞান দিয়ে আবার চলে যাই থাকেন না,,

ওহ আচ্ছা আমি তাহলে গেলাম,, এই বলে যখনি উপরে উঠতে যাবে তখনি দেখলো আর্দ্র মা নিচে নামছে,, আসসালামু আলাইকুম আন্টি ভালো আছেন??

আলহামদুলিল্লাহ ভালো, তুমি কেমন আছো মা,,মুচকি হেসে বলল আশা।

আমিও ভালো আন্টি।

আচ্ছা দাদু ভাই উপরে আছে তুমি যাও,,

হুমম,, ইয়ানা উপরে গিয়ে দেখলো পরশ পড়ার টেবিলে বসে আছে।

কি ব্যাপার চাম্প দেখি আজকে নিজে থেকেই পড়তে বসেছে গুড বয় হয়ে গেছে দেখছি,, ইয়ানা চেয়ারে বসতে বসতে বলল।

কি বলোতো আজকে তো পাপ্পা আসবে তাই যলদি পড়তে বসেছি, শোনোনা কিউটিপাই তুমি কিন্তু আজকে তারাতারি ছুটি দিবে ওকে।

আচ্ছা ঠিক আছে বেবিটা,, পরশের গাল টেনে বলল ইয়ানা।

আহ তোমাকে বলছি না চেহারায় হাত দিবা না।

ওলে বাবা আচ্ছা ঠিক আছে,, ইয়ানা পরশকে পড়ানোর কিছুক্ষণ পরই আর্দ্র ল্যাপটপ নিয়ে এসে পরশের বিছানায় বসে পড়ল এদিকে ইয়ানা আর্দ্র কে দেখে কমরে হাত দিয়ে নড়েচড়ে বসল।

কি হয়েছে তোমার কমরে কিউটিপাই??

কি বলতো আমার উপরে না একটা মস্ত বড় পাহাড় পরেছিলো তাই কমরে বেথ্যা পেয়েছি,, আর্দ্রের দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলল ইয়ানা।

ইয়ানার কথা শুনে আর্দ্র ভ্রু কুঁচকে ইয়ানার দিকে তাকিয়ে পরশকে বলল,, জানোত চাম্প কেউ যদি দেখে শুনে না চলে তাহলে তো তার কমর ভাঙ্গবেই তাই না কেয়ারলেস একটা।

কিহ আমি কেয়ারলেস?? নিজে কি হ্যাঁ আলুর বস্তা এতো ভারি আমার জীবন শেষ ।

সেকি কিউটিপাই তুমি না বললে তোমার উপর পাহাড় পরেছিলো তাহলে এখন আবার আলুর বস্তা বলছো কেনো??

পাহাড় আলুর বস্তা সব কিছুই,, এভাবেই এক কথায় দুই কথায় আর্দ্র আর ইয়ানার ঝগড়া বেঁধে গেলো,, পরশ কানে হাত দিয়ে জোরে চেঁচিয়ে বলল,, তোমরা ঝগড়ায় করবে নাকি আমাকে পড়তেও দেবে।

পরশের কথায় দুজনেই চুপ হয়ে গেলো, তখনি কলিং বেল এর আওয়াজ শুনলো,, এই পাপ্পা এসে গেছে আমি গেলাম এই বলে পরশ দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো, এই আস্তে যাও ইয়ানা আর আর্দ্র ও ওর পিছনে গেলো।

এই কেউ দরজা খুলবে না আমি খুলবো,, দৌড়ে দরজার কাছে গিয়ে পরশ দরজা খুলার চেষ্টা করল কিন্তু পারলো না ওতোটুকু হাত কি আর দরজার সিটকেনি অবধি পৌঁছায়।

কি হলো খোল এখন দাঁড়িয়ে আছিস কেনো??

তুমি একটু খুলে দাও না মাম্মাম,, করুন মুখ করে বলল পরশ।

পাগল ছেলে,, হেসে কথাটি বলে অন্তরা দরজা খুলে দিলো, কিন্তু দরজার উপারে অনিককে দেখে হাসি মুখটা নিমেষেই চুপসে গেলো কেননা অনিকের পাশে একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

অনিক ভিতরে এসে বলল,,,, সরি অন্তরা একটা ভুল হয়ে গেছে.

চলবে,,,,,,??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here