আমার_গল্পে_তুমি ৬_পর্ব

0
521

#আমার_গল্পে_তুমি??
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)
#৬_পর্ব
,
দেখো আমার কোনো পিএ প্রয়োজন নেই আমি একাই একশো তবে তোমার জবটা হলো,, পিএ এর মতোই,,এই যেমন সকালে আমি উঠি আবার কোনো কোনো দিন ঠিক পাই না তাই উঠতে দেরি হয়ে যায় আর আমাকে কেউ ডাকেও না,, তো তোমার প্রথম কাজ হলো আমাকে প্রতিদিন সকাল সকাল ফোন করে জাগিয়ে দেওয়া,, তারপর অফিসে এসে আমি যে কাজগুলি তোমাকে দেবো সেগুলি করা,,, সব সময় আমার পিছে পিছে থাকতে হবে আমার কখন কোথায় কয়টায় মিটিং সেটা মনে করিয়ে দিতে হবে,, ক্লাইন্ট এর ফোন রিসিভ করে তার সাথে কথা বলতে হবে,, আবার আমার কাজের জন্য বাহিরে যাওয়া লাগলে তোমাকেও আমার সাথে যেতে হবে,, তোমাকে নয়টার মধ্যে অফিসে আসতে হবে আর ওদিকে পাঁচটার মধ্যে তুমি বাড়ি চলে যাবে কেননা ছয়টা থেকে আবার চাম্পকে পড়াতে হবে,, আর এর জন্য প্রতিমাসে আমি তোমাকে বেতন ও দেবো এই ধরো ত্রিশ হাজারের মতো,, আর যদি তোমার কাজ ভালো হয় তাহলে এক দু হাজার বাড়তেই পারে,, আবার চাম্পকে পড়ালে ওখান থেকে হাজর খানিক পাবে, এবার বলো তুমি রাজি??

আমি ওনার কথাগুলো মন দিয়ে শুনলাম তারপর বললাম,,, আপনি ভাবলেন কি করে আমি আপনার এই প্রস্তাবে রাজি হবো,, আর তাছাড়া আমি একটা প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে এভাবে আপনার সাথে হুটহাট বাইরে যেতে পারবো না,, আর তাছাড়া আমার ভার্সিটি আছে,, আমার এতো টাকার লোভ নেই যে আপনি লোভ দেখালেই আমি রাজি হয়ে যাবো,, আমার নিজের উপর বিশ্বাস আছে আমি চেষ্টা করলে একটা না একটা জব ঠিকি পেয়ে যাবো,,, আসছি, এই বলে আমি বেরিয়ে আসতে যাবো তখনি ওনি বললেন।

দাঁড়াও মিস ইয়ানা,, তুৃমি কি বললে?? তুমি চেষ্টা করলে জব পেয়ে যাবে?? আরে তুমি জানো তোমার এই যোগ্যতা দিয়ে এই বাজারে একটা ভালো চাকরি পাওয়া কতটা দুঃসাধ্য,,, আর তুমি যদি অন্য কোথাও জব করো তাহলেও তুমি ভার্সিটিতে যেতে পারবে না,,, আর কি এমন বলেছি যে তুমি জবটা করতে পারবে না,,, আমার পরিবার আমাকে শিখিয়েছে কীভাবে একটা মেয়েকে সম্মান দিতে হয়, আর আমি তো একবারো বলিনি যে তোমায় একা আমার সাথে যেতে হবে,, আরে ভাইয়া কি একা গেছে ওর সাথে আরো দু একজন গেছে, তেমনি আমার সাথে তুমি সহ আরো কয়েক জন যাবে,,, আর আমি তোমাকে যে জবটা অফার করলাম সেটা তোমার আকসেপ্ট করা উঠিত কেননা তোমার উচিত তোমার মা কে সুখে রাখা।

ওনার কথা শুনে আমি ওনার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই ওনি বললেন।

আরে এভাবে দেখছো কেনো?? এটা ভেবো না যে আমি তোমার উপর নজর রাখছি তুমি মা আর ভাবিকে বলেছিলে যে তোমার বাসায় তুমি আর তোমার মা থাকে, সেখান থেকেই জেনেছি,,, আর শুধু তোমার কেনো আমাদের সবারি উচিত বাবা মা কে সুখে রাখা খুশি রাখা কেননা মা বাবা আমাদের জন্য অনেক কষ্ট করেন,, আমাদের পিছনেই তাদের অর্ধেক জীবন ব্যায় করে ফেলেন আর আমাদের উচিত বাকি অর্ধেক জীবনে তাদের সুখে রাখা মাথায় তুলে রাখা,, এবার দাখো তুমি কি করবে।

দয়া করছেন??

না আমি তোমাকে দয়া করছি না শুধু সাহায্য করছি,, যাতে আমাদের দেশ থেকে একজন বেকার কমে,,, তোমার কাজটা অনেকটা ফ্রিল্যান্সি এর মতো আমি তোমাকে সবকিছু বুঝিয়ে দেবো আর তুমি কাজ করবে,, বলো রাজি??

আমার একটু সময় লাগবে,, ভেবে দেখতে হবে।

ভাবো তবে বেশি সময় নয়,, সন্ধ্যাই উত্তরটা দিতে হবে,, ওকে এখন তুমি যেতে পারো।

তারপর আমি ওখান থেকে চলে আসলাম৷,,, বাইরে এসে রিক্সা নিয়ে সোজা বাড়ি চলে গেলাম, ফ্রেশ হয়ে খেয়ে আম্মুর কাছে বসে আম্মুকে সব বললাম।

দেখ আমি তোর উপর কিছু চাপিয়ে দেবো না তোর যা ভালো মনে হয় তুই কর,,, আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল আম্মু ,, আমি ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি বুঝতেই পারিনি।

,,,,,সন্ধ্যায়,,,,,

আস্তে আস্তে দিন আগের তুলনায় অনেকটায় ছোট হয়ে গেছে,, ছয়টা নাই বাজতে সূর্যের আলো কমে যায়, আমি পরশদের বাসায় গিয়ে কলিং বেল চাপতেই আপু দরজা খুলে দিলো,,

ভিতরে আসো,, ফিসফিস করে বলল আপু।

এতো ফিসফিস করে বলার কি আছে জোরে বললেই তো হয়,,, আমি কিছু না বলে ভিতরে চলে গেলাম দেখলাম পুরো বাড়ি কেমন চুপচাপ,, পরশ ঠোঁটের উপর হাত রেখে বসে আছে,, আমি গিয়ে পরশের সাথে বসে জোরেই বললাম,,, কি হয়েছে এভাবে বসে আছো কেনো।

হিসসসস কিউটিপাই আস্তে কথা বলো নয়ত বিপদে পরবে। ফিসফিস করে বলল পরশ।

কেনো?? পরশ কিছু বলবে তার আগেই কলিং বেল বেজে উঠল,, আপু রান্না ঘরে আর পরশও ছোট ডয়িং রুমে কেউ না থাকায় আমিই গিয়ে দরজাটা খুললাম, দেখলাম আর্দ্র এসেছে।

কি ব্যাপার তুমি দরজা খুললে কেনো বাড়িতে কেউ নাই নাকি।

পরশের মতো আমিও ফিসফিস করে বললাম,,, আছে কিন্তু ডয়িং রুমে নেই তাই আমি খুললাম।

আর্দ্র ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,, মাথাটা কি গেছে?? এতো আস্তে কথা বলছো কেনো??

কেনো বলুন তো??

সেটা আমি কীভাবে জানবো?? রেগে বলল আর্দ্র।

আমিও তো জানিনা বাড়ির সবাই এভাবে কথা বলছে তাই আমিও বললাম,,,। আমার কথাশুনে আর্দ্র কিছু একটা ভেবে বলল,, ওহ শিট সরো সামনে থেকে এই বলে আমার পাশদিয়ে হেঁটে ভিতরে চলে গেলো।

কি হলো ব্যাপারটা?? সবাই এমন করছে কেনো আর আর্দ্র এভাবে চলে গেলো কেনো?? ওনার সাথে তো আমার কথা আছে সেটা না শুনেই চলে গেলো,, আমিও ভিতরে গিয়ে পরশকে নিয়ে ওর রুমে গিয়ে ওকে পড়াতে বসালাম,, পরশের রুমে আসার পথে দেখলাম আর্দ্রের রুমের দরজা বন্ধ,, কি হলো ওনি তো প্রতিদিন আমার সাথে ঝগড়া করার জন্য একদম উৎ পেতে থাকে তাহলে আজকে রুমের দরজা বন্ধ করে রেখেছে কেনো??

আচ্ছা পরশ কি হয়েছে বলোতো?? তোমরা সবাই এতো আস্তে কথা বলছো কেনো?? আর তোমার চাচ্চু ওভাবে রুমের দরজা বন্ধ করে রেখেছে কেনো??

পরশ আমার কানের কাছে মুখ নিয়ে এসে বলল,, চাচ্চু বাইরে বেরোবে না তো?? কেননা বাইরে বেরোলে তো চাচ্চুকে ধরে বিয়ে দিয়ে দেবে।

কে??

রাগি দীদুন।।

এই রাগী দীদুন টা আবার কে??

আরে তুমি জানো না?? রাগি দীদুন ভীষণ রাগি তাই ওনি রাগী দীদুন,,, কেউ জোরে কথা বললে ওনি ভীষণ রেগে যান।

ওনি তোমার কেমন দীদুন হন??

তখনি অন্তরা রুমে ঢুকতে ঢুকতে বলল,,আরে তোমাকে তো বলায় হয়নি আসোলে আমার ফুপি শাশুড়ী এসেছেন ওনি একটু রাগি কিন্তু মনটা অনেক ভালো,, ওনি এখন ওনার রুমে আছেন ওনার কথায় বলছে পরশ,,,, এই নাও মিষ্টি খাও।

সেটা তো বুঝলাম, কিন্তু ওনার আসা দেখে আর্দ্র কেনো দরজা বন্ধ করে রেখেছে??

আর বলো না ,, আসোলে কি বলোতো ওনি এসেই শুধু বলেন আর্দ্র বিয়ে করছিস না কেনো বয়স তো আর কম হলো না আর কয়েকদিন পর তো চুলে পাক ধরবে তখন মেয়ে পাবো কই,, এই সব বলে আর বিভিন্ন মেয়েদের ছবি দেখায়,,, যেহেতু ওনি বাবা মানে আমার শশুরেরও বড় তাই আর্দ্র কিছু বলতেও পারে না আবার সয্য করতেও পারে না, শুধু রাগে কড়মড় করে,, এই জন্যই রুমে দরজা বন্ধ করে বসে আছে,, বিছানায় বসে বলল অন্তরা।

আপনার ফুপি শাশুড়ী তো ঠিকি বলেছেন আসোলেই ওনার বয়স হচ্ছে বিয়ে করা উচিত ওনার।

হুমম তুমিও বলো তারপর দেখো ও কি করে আচ্ছা তুমি পড়াও আমি গেলাম,, এই বলে অন্তরা চলে গেলো।

এই তো পাইছি একটা বুদ্ধি আমার পিছে লাগা এবার দেখাবো মজা,,, মনে মনে এটা বলে ইয়ানা পরশকে বলল,,এই পরশ একটা মজার গেম খেলবা পড়ার পরে??

গেম?? কি গেম আমি খেলবো।

আচ্ছা আগে পড়া শেষ হোক তারপর আমরা দুজনে মিলে গেমটা খেলবো ওকে??

ওকে ডান।

এবার বুঝবে আর্দ্র চান্দু এই ইয়ানা কি জিনিস,, একটা মিষ্টি মুখে দিয়ে মনে মনে কথাগুলি বলে হাসলো ইয়ানা।

চলবে,,,,,,??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here