আমার রাজ্যের রানী পর্ব-৩৭

0
820

#আমার রাজ্যের রানী
#Part : 37
#Writer : Sriti Nur Avni

?
সময় কারো জন্য অপেক্ষা না করলেও সময়ের স্রোতে মানুষ ভেসে গিয়ে প্রিয় মানুষ গুলোর প্রতি অনুভূতি,,আবেগ,ভালোবাসা গুলো সর্বদা মানুষের হৃদয়েই থেকে যায় অনাদিকাল পর্যন্ত।ভালোবাসা!!সে তো ভালোবাসাই।

 

ঘরির কাটা ছুটে চলছে নিঃসংকোচে নিজের আপন গতিতে।।চারদিকে বিষাক্ত নীরবতার সাথে রাতের অন্ধকার টাও গাঢ় থেকে গাঢ়তর হয়ে চলছে প্রতিনিয়ত।।ছাদের কার্নিশ ঘেঁষে নির্জীব দোলনায় গা এলিয়ে দিয়ে বসে আছে নীল।দিন পাঁচেক ধরে বেশ সূক্ষ্ণভাবে এড়িয়ে চলছে অভনী তাকে।।জগতের সবচেয়ে কষ্টের পাল্লায় প্রিয় মানুষের অবহেলার কষ্ট বেশ ভারী।।মনের গভীর থেকে গভীরতম দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসছে বারবার তার।।

দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়ালো নীল।।ধীর পায়ে হেঁটে এগিয়ে গেলো ছাদের এককোনে।।ল্যাম্পপোস্টের হঁলদে আলোয় জমাট বেঁধে আছে একঝাঁক কুয়াশা।দুহাত প্রশস্ত করে দিয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে নীল।।অভিমানের বোঝা গুলো চিৎকার করে বের করে দিতে ইচ্ছে করছে তার।।কিন্তু নাহ!!
ছেলেদের কান্না করতে নেই।।কষ্টের বোঝা পাহাড় হয়ে গলে পড়তে চাইলেও ছেলেদের কান্না করা মানা।।মনের গহীনের দলা পেঁকে যাওয়া কষ্ট গুলো গলা পর্যন্তই আঁটকে থাকা উচিত তাদের।।হয়তো কোনো এক কোনে চিৎকার করে কান্না করে নিজের কষ্ট গুলো কেই হালকা করতে ব্যাস্ত অভনী।।

.

.

.

?
———————
রাত মানেই কেউ কফির মগ হাতে বারান্দায় বসে চন্দ্র বিলাসে,,কেউবা প্রিয় গানে বিভোর হয়ে খাটের এক কোনে।কেউ হয়তো পরিবারের চিন্তায় হতাশ।কেউবা কাছের মানুষের কাছেই প্রতারণা বা অবহেলার শিকার।কেউ আবার খুব করে চাইছে সবটা ঠিক করতে,আবার কেউ চাইছে যেকোনো বাহানায় পিছু ছাড়তে। কেউ দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে প্রিয় মানুষের ফেলে যাওয়া স্মৃতি হাতড়াতে,, কেউবা আবার প্রিয় মানুষকে নিজের করে পাবার আনন্দে ব্যাস্ত উল্লাসে মেতে উঠতে।।
জীবন!!
শব্দ টা বড্ড ভারী আর অদ্ভুত।
কেউবা রঙ খেলায় নিজেকে রঙে মাতিয়ে তুলতে ব্যাস্ত কেউবা আবার নিজেকে ঘুটিয়ে নিয়ে রুমের এক কোনে সুখ টাকে পুঞ্জীভূত করতে ব্যাস্ত।।

কাল নীর্ঝয়ের গায়ে হলুদ।বারান্দার এক কোনে স্থীর থাকা রকিং চেয়ারে এক কাপ কফি হাতে বসে আছে নীর্ঝয়।।তার ইচ্ছায় বেশ সাদামাটা ভাবেই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে।।বিয়ে নামক উল্লাসে নিজেকে মাতিয়ে রাখতে ইচ্ছে না করলেও মনের কোনো এক কোনে ফুটে উঠেছে এঁকগুচ্ছ ভালোলাগা।যার কারন এখনো অজানা নীর্ঝয়ের কাছে।।সম্পর্ক নামক শব্দে বেশ দ্বিধাদ্বন্দ্বে পরে গেছে আজ সে।।
আর মাত্র ১দিন!!
ভালোবাসার মানুষ টার সুতো সারাজীবনের জন্য কেটে দিয়ে অন্য আরেকটা মানুষের সুতোয় জুড়ে যেতে হবে তাকে।।বিয়ে নামক দ্বায়িত্বের বন্ধনে আটকে পড়তে হবে দুজন মানুষ কে।।

নীরা এখনো ঘোরের মাঝে আছে।খান বাড়ির মেয়ে হবার পরেও নীর্ঝয়ের কথা মতো বেশ সাদামাটা ভাবেই বিয়ের আয়োজন করেছেন আলতাফ খান।। একমাত্র মেয়ে নীরারও তাতে কোনো দ্বিমত নেই।।ভালোবাসার মানুষ কে নিজের করে পাওয়ার আনন্দে নিজেকে উল্লাসে হেলিয়ে দিতেই ভুলে গেছে নীরা।।মাত্র চারদিন আগেই বিয়ের দিনঘন ঠিক করা হয়েছে তাদের।।ঘরোয়া ভাবে বিয়ের আয়োজন করা হলেও খান বাড়ি হবার সুবাদে ছোট খাটো ব্যাপারেই বেশ উপছে পড়া ভীর হয়ে যায় বাড়িতে।।নীরার মামা মামি,,চাচা চাচি,,ফুপু, খালামনির সাথে ছোট বড় আপুদের হাজারো আনাগোনার মাঝে বাচ্চাদের হাসি কান্না মিশ্রিত পরিবেশ টা বেশ উপভোগ করছে অভনী।। যখন ভালোলাগা কাজ করে তখন সব কিছুই অদ্ভুত ভালো লাগে।।হয়তো সকল উপভোগ করার মাঝে একটা কথাই বারবার বেজে ওঠে সাইরেনের শব্দের মতো,,, “সে আমার।।আর মাত্র একদিন! সকল বাঁধা বিপত্তি কে উপেক্ষা করে আমার ভালোবাসার মানুষ টা শুধুই আমার।আচ্ছা জগতে এর থেকে সুখের কোনে অনুভূতি ও কি আছে??হয়তো আছে যা অনুভব করার জন্য সবসময় ভালোবাসায় মানুষ টাকেই কাছে পাবো।”❤

.

.

.

?
—————–
আজ নীর্ঝয়ের বিয়ে!!
চাঁপা মিষ্টি কালারের শাড়ির কুঁচি ধরে ধীর পায়ে এগিয়ে যাচ্ছে অভনী।।মা,নানু,ছোট মা,ছোট আব্বু আর আরিহার সাথে।বন্ধুর বিয়ে বলে কথা!
নীল সকালেই চলে এসেছে নীর্ঝয়দের বাসায়।।বিয়ে নামক জঞ্জালে চারদিকে উল্লাসিত ভরপূর পরিবারেও বেশ কয়েকজনের মুখে ঝুলে আছে কৃত্রিম হাঁসি।।নিচের দিকে তাকিয়ে হাঁটতেই কারো হেঁচকা টান অনুভব করে চোখ জোড়া বন্ধ করে নিলো অভনী।।
নিজেকে কারো কোলে অনুভব করতেই দ্রুত চোখ দুটো খুলে ফেললো অভনী।।নীলের বাহুডোরে নিজেকে আবিষ্কার করতেই মুহূর্তে চোখ দুটো লাল টকটকে হয়ে গেলো তার।বিয়ে বাড়িতে বেশ কয়েকজন কেমন ডেবডেব করে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে।কিন্তু এতে নীলের কোনো ভাবান্তর নেই।।।

একরাশ অভিমান বুকে পুড়ে নিয়ে নিজেকে ছাড়াবার বৃথা চেষ্টা করতে লাগলো সে।।কিন্তু এমন বিশাল দেহ গঠনের মানুষটার সাথে কি আর পারা সম্ভব?

অভনীকে গাড়িতে বসিয়ে সিট বেল্ট লাগিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো নীল।।কিন্তু এই লোকটার সাথে কোথাও যাবার কোনো ইচ্ছা নেই অভনীর,,তাই বা হাত এগিয়ে সিট বেল্ট খুলতে চাচ্ছে সে।।নীল গাড়ির ভিতর এসেই অভনী কে জোড়ে এক ধমক দিলো।।নীলের ধমকের শব্দে হাত পা নড়াচড়া বন্ধ করে দিলো অভনীর।।কিন্তু চোখ তার বাঁধা মানতে নারাজ।।সে তার নিজগতিতে নিজের স্রোতে বয়ে যাচ্ছে।।

গাড়ি নিজ গতিতে এগিয়ে গিয়ে ফুচকার দোকানের সামনে থামলো।।চোখ দুটো তে এখনো রাগে ভরপুর হয়ে আছে।।চোয়াল জোড়া শক্ত করে রেখে অভনীর হাত ধরে গাড়ি থেকে বের করলো তাকে।।অভনী ভ্রু কুঁচকে নীলের দিকে তাকালো।।লোকটার মতিগতি কিছুই বুঝতে পারছে না সে।।রাস্তায় দাঁড়িয়ে কোনো কিছু খাওয়া মোটেই পছন্দ করেনা নীল।।কিন্তু আজ নিজের ইচ্ছাতেই নিয়ে আসাতে বিষয় টা বেশ ভাবাচ্ছে অভনী কে।।অভনী ভাবছে,,,”আচ্ছা এটা আমাকে কষ্ট দেবার নতুন কোনো ফন্দি নয়তো? ”

নীল অভনীর হাত ধরে ফুচকার দোকানে এগিয়ে গেলেন।।
নরম সূরে ফুচকা ওয়ালা মামার সাথে কৌশল বিনিময় করে ফুচকা দিতে বলে আবারো অভনীর হাত ধরলো নীল।।অভনীর ইচ্ছে করছে হাত পা ছরিয়ে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কান্না করতে।।কি পেয়েছে টা কি?যখন যা ইচ্ছে তখন তাই করতে হবে আমাকে?হুহ!

নীলের হাতের মুঠোয় থেকে নিজের হাত আলগা হতেই আসেপাশে তাকালো অভনী।।চারদিকে বাতাসের শু শা শব্দে সাথে পাখির কিচিরমিচিরের শব্দ আপন মনে বেজে যাচ্ছে।।তবে মানুষের কোনো আনাগোনা নেই।।সামনে তাকাতেই মস্ত বড় এক পুকুরের সাথে জুড়ে থাকা ঘাট দেখতে পেলো সে।।নীলের দিকে না তাকিয়ে পা চালিয়ে দিয়ে ঘাটের শেষ প্রান্তে গিয়ে শেষ সিড়ি তে বসে পড়লো অভনী।।পুকুরের হালকা শেউলা যুক্ত টলমল করা পানির দিকে তাকিয়ে নিজের চোখে টলমল করা নোনাজল গুলোর সাথে যুদ্ধে মত্ত হয়ে গেলো সে।।পাঁ জোড়া সবুজে আবৃত্ত পানিতে ডুবিয়ে দিয়ে ভাবছে সে,, “আচ্ছা আমার কোনো ভুল হচ্ছে নাতে?মানুষ টা কি সত্যিই আমায় ভালোবাসে না??

নীল শান্ত দৃষ্টিতে আছে পানিগুলোর দিকে।।এতোক্ষন রাগে পুরো শরীর রিরি করলেও বর্তমানে একগাদা কষ্ট আর অভিমান এসে ভর করেছে তার মধ্যে।। শান্ত দৃষ্টিতেই পুকুরের অপর প্রান্তে নারকেলের চিড়ল পাতায় বসে থাকা হলুদ পাখিটার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো নীল,,,,

—পরী বউ আমাকে এভাবে এড়িয়ে চলছো কেনো??কেনো করছো এমন অবহেলা??

অভনীর চোখে মুখে এবার একবস্তা রাগ এসে ভীর জমালো।।রাগে বা হাতের মুঠো বেশ শক্ত করে চেঁপে ধরে আছে সে।।কিন্তু নাহ! মুখ দিয়ে কোনো কথাই বের হচ্ছে না তার।।উপছে পড়া অভিমানের সাথে একতালে পা জোড়া নিজ গতিতে নেঁচে চলছে অভনীর।।
নীল ঘার ঘুরিয়ে অভনীর দিকে তাকালো।।পেন্ট ভিজিয়ে পা ডুবিয়ে অভনীর এক হাত দূরত্বে বসে পরলো সে।।অভনীর দিকে তাকিয়ে তার বাহু জোরা নিজ হাতের মুঠোয় নিয়ে বলে উঠলো নীল,,,,

—কি হলো! কথা বলছো না কেনো? অন্য সবার সাথে তো ঠিকই হেসে খেলে কথা বলো।তাহলে আমার সাথেই এমন কেনো?হুয়াই?নীরা ভাবির মামাতো ভাই টা কেমন ডেবডেব করে তাকিয়ে ছিলো দেখেছো তুমি?তার পরেও বারবার আমি তোমাকে তার আসেপাশেই দেখেছি।।অথচ আমার থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছো!বাট হুয়াই মিস. অভনী??

অভনী এবার একটু কেঁপে উঠলো।।নিজের ভালোবাসা কে প্রকাশ করার পর থেকে কখনো মিস. অভনী বলে ডাকেনি তাকে।।এখন হয়তো বেশ রাগ আর অভিমানে জমাট বেঁধে আছে তার মন।।কিন্তু তাতে কি!
অভনীর রাগ ও কম না।।নীলের অভিমানের সূরে গলে গিয়ে নিজেকে ঠকাতে পারবে না সে।।তাই মুখে যথেষ্ট রাগের আভা ফুটিয়ে তোলে বলে উঠলো অভনী,,,,

—আমার দিকে যার ইচ্ছা সে তাকিয়ে থাকুক তাতে আপনার কি??আপনার কেনো এতো জ্বলবে?? আপনি তো আর আমায় ভালোবাসেন না।।আপনি তো ভালোবাসুন নিতু আপু কে।।তাহলে?তাহলে কেন আমি আপনাকে জবাবদিহিন যাবো?? হুয়াই??

নীলের চোখে মুখে প্রশ্ন বোধক চিহ্ন ঝুলে আছে।।অভনীর কথার কিছুই বুঝতে পারেনি সে।।কিছু প্রশ্ন করার আগেই ফুচকাওয়ালা মামা ফুচকার একটা প্লেট এগিয়ে দিলো অভনীর দিকে।অভনী একটু ভ্রু কুঁচকে তাকালো।।এমন জনমানবশূন্য যায়গায় ফুচকা নিয়ে বসে থাকার কোনো মানে আছে বলে মনে হচ্ছে না তার।।গলায় প্রশ্নের কুন্ডুলি পাকাতে না দিয়ে ফুচকাওয়ালা মামার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো অভনী,,,,,

—মামা এখানে তো কোনো মানুষ নাই।তাহলে এখানে বসে থাকেন কেনো? এখানে কি বিক্রি করতে পারেন??

বেশ বার্ধক্য বয়েসে পা দিয়ে লোকটা।। সামনের এক পাটি দাঁত বের করে হেসে গলায় ঝুলানো গামছা দিয়ে হাত মুছতে মুছতে বললো,,,,,

— মেডাম আমি তো আপনের জন্যই এইহানে থাহি।।নীল বাবা কইছে আপনেরে লইয়া যেকোনো দিন আসবো এইহানে।আর আপনে ফুচকা খাইতে পছন্দ করেন।।তাই আমার বেঁচা লাগে না নীল বাবাই আমারে প্রতিদিনের টাকা দিয়া দেয়।।
আপনেই নীল বাবার বউ না?

অভনী এবার কপাল কুঁচকে তাকালো নীলের দিকে।।একবার নীলের দিকে তাকিয়ে আবারো ফুচকা ওয়ালা মামার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো সে।ফুচকা হাতে নিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে উঠলো অভনী,,,,

—আমি মেডাম নই মামা।।আমি আপনার মেয়ের মতো। আর আপনাকে এখানে আমার জন্য ন,,,,

অভনী কে আর কিছু বলতে না দিয়ে মুখে হাসির রেখা টেনে বলে উঠলো নীল,,,,

—মামা তুমি ওইখানে যাও আরেক প্লেট ফুচকা বানাও।।

আবারো এক পাটি দাঁত বের করে হেসে চলে গেলেন ওনি।।অভনী ফুচকার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আছে।।নীল পা জোড়া উঠিয়ে অভনীর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো।।অভনী অবাকের সাথে সাথে বেশ রাগের আভা ফুটে উঠলো মুখে।কিন্তু এতে নীলের কোনো ভাবান্তর নেই।লম্বা লম্বা নারিকেলের চিড়ল পাতার ফাঁকে সূর্যের আলো নিজ গতিতে উঁকি দিয়ে যাচ্ছে।।
পাশের সিড়িতে ফুচকার প্লেট রেখে অভিমানী কন্ঠে বলে উঠলো অভনী,,,,

—আপনি আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লেন কেনো? আপনি নিতু আপুর কাছে যান।যার জন্য ফুচকাওয়ালা মামা কে এখানে বসিয়ে রাখছেন।।আর সেদিন তো খুব ভালোবাসার বর্ননা দিচ্ছিলেন।হুহ!

অভনীর মুখপানে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে উঠলো নীল,,,,

—-তুমি আসলেই বাচ্চা পরী বউ।।শুধু মাঝে মাঝে পরিস্থিতি তোমাকে বড় করে তোলে।এই একটা ভুল বোঝাবুঝি!! একটা ভুল বোঝাবুঝির জন্য তুমি পাঁচ পাঁচটা দিন কতটা কষ্ট দিছো আমায় জানো তুমি??সেদিন নিতু বলছিলো ও নাকি আমায় ভালোবাসে।।তাই আমিও বলছিলাম ভালোবাসা জোর করে হয়না।ওর আমার প্রতি ভালোবাসা টা যেমন হয়ে গেছে ঠিক তেমনি আমার তোমার প্রতি ভালোবাসা টাও হয়ে গেছে।।

অভনী অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো নীলের দিকে।।হুটহাট অভিমান এসে ভীর জমানোয় এতো কিছু ভাবার সময় হয়নি ওর।।এই মুহূর্তে পৃথিবীর সব থেকে বড় ভুলদ্রাতা বলে মনে হচ্ছে নিজেকে অভনীর।।
কোলে মাথা রেখেই চোখ জোরা বন্ধ করে দিয়ে বলে উঠলো নীল,,,,

—এখন আর ভুল বুঝলে কিছু হবেনা।।আমাকে যে এতোদিন কষ্ট দিছো তা আমি ঠিক পুষিয়ে নিবো।।তবে সেটা বিয়ের পর।।আর খুব শীঘ্রই।

একবস্তা রাগ অভিমান অনুতাপের ছায়া বিলীন হয়ে একরাশ লজ্জা এসে ভর করছে অভনীর মাঝে ❤

.

.

.

?
—————
বাসর ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে পায়চারি করছে নীর্ঝয়।।বেশ অনেক্ষন আগেই নীল আর জাহিদ ভাইয়া এসে দাঁড় করিয়ে দিয়ে গেছে ওকে।।কিন্তু ভিতরে যেতে একবালতি সংকোচভূত এসে জমা হচ্ছে তার মধ্যে।। নিজের সাথে নিজে পালাক্রমে যুদ্ধ শেষ করে ধীর পায়ে রুমের দিকে এগিয়ে গেলো নীর্ঝয়।।রুমের মধ্যখানে অবস্থিত বড় খাঁটে বউ সেজে অপেক্ষার প্রহর গুনছে নীরা।।ধীর পায়ে নীরার খাটের কাছে এগিয়ে গিয়েই আমতা আমতা করতে করতে বলে উঠলো নীর্ঝয়,,,,,,

—দেখো তুমি তো সব কিছুই জানো।এতো সহজেই আমি তোমাকে বউয়ের মর্যাদা দিতে পারবো না।তবে আমি চেষ্টা করবো খুব দ্রুত যেনো নিজেকে প্রবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ করে নিতে পারি।।আমি দুঃখিত।

খাটের এক কোন থেকে একটা বালিশ আর কাঁথা নিয়ে সোফার দিকে এগিয়ে গেলো নীর্ঝয়।।নববধূবেশে চোখের মোটা কাজল লেপ্টে নীরার চোখের নোনাপানি গুলো ঘোমটার আড়ালেই সীমাবদ্ধ করে দিলো নীরা।।চোখের জলের মায়ায় মানুষ টাকে পেতে চায়না সে।।যাই হোক না কেন,সব কিছুর পরও দিনশেষে মানুষ টা তো তারই।।শুধুই তার❤
পবিত্র সম্পর্কের শক্ত বাঁধনে খুব দ্রুত পুরোপুরি নিজের হয়ে যাবে নীর্ঝয় তার।।

#চলবে,,,,,,
(আমার নিউ মোবাইল কেনা হয়নি এখনো। এই পার্ট আমার আপুর মোবাইল দিয়ে লিখেছি।আমি দুঃখিত এমন লেট করার জন্য। বাট আমার কিছুই করার নেই ?)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here