#আমার রাজ্যের রানী
#Part : 21
#Writer : Sriti Nur Avni
?
অফিসে নিজের কেবিনে বসে এক মনে বই পরছে অভনী।আজ নীল অফিসে আসেনি তাই নিজের কেবিনে বসে ফাইল গুলো ঠিক করা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই অভনীর।রাতের বেলা নীলের কাছে পড়তে হয় বিধায় সেই পড়াগুলো অফিসে বসেই complete করতে হয় তার,,,নাহলে এক পায়ে কানে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার কথা মনে হতেই গা শিউরে উঠে অভনীর। অভনী যখন একমনে পড়ায় ব্যাস্ত ঠিক তখনি নিজের হাতে টান অনুভব করে সে,,,আচমকা এমন হওয়ায় অভাক হয়ে নিজের হাতের দিকে তাকায় অভনী। তার হাতটাকে শক্ত করে ধরে আছে আরেকটি হাত।তবে সেই হাত তার অচেনা নয়।অভনী চোখ তুলে তাকালো নীলের দিকে।নীল একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অভনীর দিকে,,,তার দৃষ্টি এখন ভাবলেশহীন। অভনীর হাত ধরাটা নিজের টা নিজেই যেনো খুব কষ্টে হজম করছে সে।অভনী বলে উঠলো,,,,
—আপনি?হা..ত ধরে আছেন কেনো হি..রো সাহেব?
—বই টা রাখুন আর চলুন আমার সাথে।
—কিন্তু কোথায়?
—এতো প্রশ্ন করেন কেন?চলুন মানে চলুন,,আপনি কি ভুলে যান আমি অফিসে থাকি বা বাহিরে দুইদিক দিয়েই আমি আপনার স্যার।(ধমক দিয়ে)
অভনী বুঝতে পারেনা মানুষটা মাঝে মাঝে নরম,,মাঝে মাঝে রাগী আবার মাঝে মাঝে ভয়ংকর হয়ে যায় কেনো।একজন মানুষের কয়টা রুপ থাকে?তবে সে জানতে চায় নীল কে।গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে চায় তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নীল নামক প্রাণী টাকে।
অভনীর ভাবনার সুতোয় টান দিয়ে নীল বলে উঠলো,,,
—চলুন না!
অভনী বই টাকে ডেস্কের উপর রেখে কালো খয়েরি একরঙের হালকা সুতি শাড়ির কুচি গুলোতে হাত রেখে উঠে দাঁড়ালো।দাঁড়ানোর সাথে সাথেই আবারো হাতে টান অনুভব করলো সে।তবে এবার তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আর দাঁড়িয়ে নেই তার হাত ধরে হাঁটা শুরু করেছে। অভনীও দাঁড়ানোর আর সুযোগ না পেয়ে হাঁটা শুরু করলো। অভনী অবাক হচ্ছে তার হাঁত ধরে হেটে যাওয়া পুরুষ টির দিকে তাকিয়ে।মানুষ টা আজ কালো খয়েরি রঙের পাঞ্জাবির সাথে হুয়াইট রঙের চুরিধার পাজামা পরেছে। সিল্কি লম্বা চুল গুলো স্পাইক না করে ছেরে দিয়েছে যার কারনে কয়েক টা চুল অবাধ্য হয়ে বার বার কপালে চলে আসছে।বাম হাতে ব্রান্ড এর দামি ওয়াচ। আচমকা ভাবে নীল আর অভনীর ড্রেসের কালার টা সেম হয়েগেছে।আচ্ছা সেম হয়ে গেছে নাকি নীল ইচ্ছে করে পরেছে বুঝতে পারছে না অভনী। তবে এখন সে এইসব ভাবতে চায় না,,,এই মুহূর্তে মানুষ টাকে একদম অন্যরকম লাগছে।পাঞ্জাবি পায়জামা তে নীল কে কখনো দেখেনি অভনী।নীল হাঁত ধরাতে কি অদ্ভুত এক শিহরন ভয়ে যাচ্ছে তার মধ্যে। এই অনুভূতি গুলোর সাথে পরিচিত নয় অভনী।মাহিনের সাথে রিলেশন থাকলেও কখনো এমন লাগেনি তার।অদ্ভুত এক ভালোলাগা কাজ করছে তার মধ্যে। তবে এক প্রকার লজ্জাভূত ও কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে তাকে।নিজের সাথে রীতিমতো যুদ্ধ করে একমনে তাকিয়ে আছে নীলের দিকে।নীল গাড়ির সামনে এনে অভনীর হাঁত ছেড়ে দিয়ে অভনীর দিকে তাকিয়ে বললো,,,,
—এইভাবে কারো দিকে তাকিয়ে থাকবেন না মিস. অভনী।নজর লেগে যেতে পারে।তাছাড়া আজ কিন্তু আমি নজর টিপ ও লাগাইনি (মুচকি হেসে)
অভনীর এই মুহূর্তে নিজের চুল গুলোই টেনে টেনে ছিঁড়তে ইচ্ছে করছে।ইসসসস কি লজ্জা।অভনী কে লজ্জা পেতে দেখে কথা গুড়িয়ে নীল বললো,,,
—ভিতরে গিয়ে বসুন মিস.অভনী।আমাদের লেট হচ্ছে।
অভনী নিচের দিকে তাকিয়ে প্রায় দৌঁড়ে চলে গেলো গাড়ির ভিতর।নীল গাড়ির দরজা খুলে যখন বসতে যাবে তখনি বলে উঠলো,,,
—ওহ শিট!আপনি বসুন আমি এক্ষুনি আসছি।
এটা বলেই নীল আবারো দৌঁড়ে চলে গেলো অফিসের ভিতর আর অভনী ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে ওর দিকে।কিছুক্ষনপর নীল অভনীর বইটা এনে ওর হাতে দিয়ে বললো,,,
—নিন পড়তে পড়তে যাবেন।তাছাড়া বইটা রাতেও কাজে লাগবে।
অভনী বিরক্তমাখা চোখ নিয়ে তাকালো নীলের দিকে কিন্তু নীল ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে গাড়ি চালাতে লাগলো। গাড়িতে উঠলে বাহিরের পরিবেশ দেখতে খুব ভালো লাগে অভনীর।বরাবরই প্রকৃতি প্রেমি সে।কিন্তু এই মুহূর্তে কিনা দুদুটো অদ্ভুত সুন্দর জিনিস দেখা রেখে বইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে সেটা কোনো ভাবেই মানতে পারছে না সে।তবুও নীলের ধমক খাওয়ার আগে বইয়ের দিকে মুঁখ গুজে দিলো সে।
বইয়ের দিকে মুখ গুঁজে দিয়েই এক সময় ঘুমিয়ে পরলো অভনী।বাইরের পরিবেশ দেখলে ঘুম টা উরে এসে ঝুরে বসতে পারতো না কিন্তু বই!বইয়ের কালো কালিতে লেখা অক্ষর গুলোতে সত্যিই হয়তো ঘুম আসার বা ঘুমের নেশা লাগার অদ্ভুত এক মন্ত্র বা ঔষুধ দেয়া থাকে যা নিতান্তই স্টুডেন্ট দের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য?
অভনীর বেনি করা চুল গুলোর সামনে ছোট ছোট চুল গুলো বারবার সামনে চলে এসে ঘুমের ব্যাগাত ঘটাচ্ছে।যা ঘুমের মধ্যেই অভনীর ভ্রু কুচকে যাওয়ার কারন হিসেবে যথেষ্ট। নীল মুচকি হেসে অভনীর হাত থেকে বইটা নিয়ে ছোট ছোট চুল গুলো কানের পিছে গুজে দিলো।আর অস্পষ্ট সুরে বলে উঠলো,,,
—পাগলি!!☺
?
অভনী ঘুম থেকে উঠে নিজেকে অচেনা একটা রুমে আবিষ্কার করলো।ঘুম জরানো চোখে নিজেকে এমন অচেনা একটা জায়গায় দেখে ভয় পেয়ে গেলো সে।রুম টাতে ৮-৯ টা খাট দেয়া আছে ছোট ছোট।রুমটাও আকারে অনেক টাই বড়,,দেয়ালে আঁকা রয়েছে নানা রকম ছবির আঁকিবুঁকি ।অভনী দুহাতে মাথায় চেপে ধরে ভাবতে লাগলো ও কোথায় ছিলো আর এখানে কিভাবে! অভনী যখন ভাবনা জগতে জাল বুনতে ব্যস্ত তখনি নীল ওর সামনে এসে বললো,,,
—ঘুম ভেঙেছে তাহলে আপনার?আমি তো ভেবেছিলাম আজ সারাদিন আপনি ঘুমিয়েই কাটাবেন (মুচকি হেসে)
অভনী ঘুমু ঘুমু চোখে নীলের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,,,,
—হিরো সাহেব আমরা কোথায় এটা?আমি তো চিনতে পারছি না।
—এটা আমাদের এতিম খানা মিস অভনী।বাহিরে চলুন বাচ্চারা আপনার ঘুমের ডিস্টার্ব হবে বিধায় কেউ এই রুমে আসছেনা।
এটা বলেই নীল বাহিরে চলে গিয়ে বুকে হাত রেখে জোরে জোরে শ্বাস নিতে থাকলো,,,
“ইসসস আরেকটু হলেই হার্ট অ্যাটাক করতাম।ঘুমুঘুমু চোখে কাউকে এতো টাও কিউট লাগতে পারে?”
নীলের কথায় অভনীর চোখমুখ খুশিতে জ্বলজ্বল করছে।অভনী আর এক মুহূর্ত দেরি না করে দৌঁড়ে বাহিরে চলে গেলো।বাচ্ছা রা একেকজন একেক খেলায় ব্যাস্ত।অভনী দৌঁড়ে বাচ্চা দের কাছে গিয়ে বললো,,,
—হায় কিউট কিউটি রা কেমন আছো সবাই?
অভনীর কথায় বাচ্চাগুলো দৌঁড়ে একসাথে জরো হয়ে বললো,,,
—আমরা ভালা আপা,,,আজকে তো ভাই আর আপনি আইছেন আজকে আরো বেশি ভালা।আপনি কেমন আছেন?
—হুম আমিও আজ অনেক অনেক হ্যাপি তোমাদের কাছে এসে।
নীল পিছন থেকে বলে উঠলো,,,
—কলিজা রা তোরা এই আপুটাকে নিয়ে বালুচরে যা আমি আসছি।
বাচ্চারা অভনীর হাঁত ধরে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে বালুচরে যেতে লাগলো অভনীও দৌঁড়াচ্ছে আর খিলখিল করে হাঁসছে।যেই হাসির ঝুনঝুনের মতো শব্দ নীলের বুকের ব্যাথা টা বাড়িয়ে দেবার জন্য যথেষ্ট।
নীল গাড়ির কাছে গিয়ে রহিম চাচা, মিতু আর মিলা কে ডাকলো। রহিম চাচাই মূলত এই এতিম খানা টার দেখাশোনা করেন।মর্ধবয়স্ক থেকে একটু বেশি বয়স হবে ওনার।আর ওনারই দুই মেয়ে মিতু আর মিলা।ওদের মা নেই তবে মাঝে মাঝে মিসেস নীলিমা আহম্মেদ এসে ওদের সবাই কে মন ভরে আদর করে যান।মিতুর বয়স ১৩ বছর আর মিলার বয়স ১০ বছর।মিলার জন্মের সময়ই ওদের মা মারা যায়।রহিম চাচা একাএকাই ছোট বাচ্চা ২ জনকে বড় করেছে।ওনি বুঝতে পেরেছিলো এতিমদের কষ্ট কতটা তাই ওনি সিদ্ধান্ত নেন এতিমখানায় কাজ করবেন,,,সেই থেকেই নীলদের এতিম খানায়ই থাকেন ওনারা ৩ জন। ওনারা এতোবছরে নীল দের খুব কাছের মানুষ হয়ে গেছেন।
—জ্বি ভাইজান কন।(মিতু)
—এই ব্যাগ গুলো বালুচর নিয়ে যা তো।
—ভাইজান আমার কাছেও দেন আপনি লইয়েন না। (মিলা)
—আরে মিলু কই ছিলি তুই এতোক্ষন দেখলাম না যে।এই নে একটা ব্যাগ টাই তুই নিয়ে যা বাকি গুলো আমি নিয়ে আসবো।
—আইচ্ছা ভাইজান (মিলা)
নীল ব্যাগ গুলো নিয়ে বালুরচরে যেতে লাগলো তখন রহিম চাচা এসে বললো,,,
—আব্বাজান ব্যাগ গুলান আমার কাছে দেন দেহি। আমনে ক্যান নিতাছেন?
—আচ্ছা চাচা আপনি বড় না আমি বড় বলেন তো?তাছাড়া আমাকে দেখে কি রুগি মনে হয় আপনার?
—আরে কি কও আব্বাজান ওমন লাগবো ক্যান।আর তুমি তো আমার আব্বাজান তাহলে আমার বড় হইবা কেমনে (হাসি দিয়ে)
—তাহলে আমি থাকতে আপনি কেনো ব্যাগ বহন করবেন?কখনো কি দেখেছেন ছেলে খালি হাতে গিয়ে আব্বাজান কে ব্যাগ বহন করতে দিতে?আমি তো আপনাকে আমাদের সাথে বালুরচর যাবার জন্য ডাকলাম।(মুচকি হেসে)
রহিম চাচার হালকা ভাজ পরা চোখে চিকচিক করা জলগুলো বিকেলের রোদের হালকা আলোতে জ্বলজ্বল করছে।নীল আর না দাঁড়িয়ে রহিম চাচা কে আসতে বলে হাঁটা দিলো বালুচরের দিকে।
এতিমখানা টা বিশাল জায়গা জুরে অবস্থিত। লম্বা আকারের দালান ২ তলা করা হয়েছে।যার একতলা তে বড় বড় ১০ টা করে রুম আর রুম গুলো ৮-১০ টা করে ছোট ছোট খাট বসানো।সামনেই পাশে আরেকটা দালানের কথা বলেছেন নিহাল আহম্মেদ। ঘর টার সামনে বাচ্চাদের খেলার নানা রকম খেলনা সাজানো। তার একটু সামনেই বিশাল বড় বালুচর যার শেষ সীমান্ত রয়েছে বিশাল নদী। জায়গা টা কিছুটা গ্রামের কাছাকাছিই তবে আসেপাশে কোনো বাড়ি নেই।বিশাল জায়গা জুরে শুধু এতিম খানা টাই।
নীল বালুচরে গিয়ে দেখলো অভনী বাচ্চাগুলোর সাথে অভনী হৈ-হুল্লোড়ে মেতে আছে।বাচ্চা গুলোর সাথে সাথে অভনীও যেন আজ বাচ্চা হয়ে গেছে।বালুর ভিতর পা ডুবিয়ে একসাথে খেলা করছে।খয়েরী রঙের কাপরের আঁচল টা ছরিয়ে আছে বালুর মধ্যে,,,আঁচলের সাথে সাথে লম্বা বিনুনি টাও বালুতে মাখামাখি হচ্ছে।কিন্তু সেদিকে মেয়েটার কোনো খেয়াল ই নেই। অভনীর খিলখিল করে হাসির শব্দ নদীর তীরের গহীন অরন্যে আবারো প্রতিফলিত হয়ে ফিরে এসে ঝুনঝুন করে বাজছে নীলের কানে,,,নীল একপলকে তাকিয়ে আছে অভনীর দিকে,,,
ধরা যায় কোনো সূক্ষ্ণ শিকারির তীরের নিশানা ভুল হতে পারে,,,, কিন্তু নীলের একপলকে তাকিয়ে থাকা ভুল হতে পারেনা।নীল ভাবছে,,,
—-মেয়েটা কখনো বাচ্চা আবার কখনো বড় হয়ে উঠে।কখনো বাচ্চামো আবার কখনো কঠোর।হয়তো সবকিছুর জন্য পরিস্থিতিই দায়ী। পরিস্থিতিই একজন মানুষ কে বাচ্চা আবার কখনো বড় করে তুলে।
নীল একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,,,
—এই যে কলিজা রা এদিকে আয় দেখ দেখ তোদের জন্য কি এনেছে।
নীলের কন্ঠে বাচ্চারা ঘুরে নীলের দিকে তাকালো।সবগুলো বাচ্চা দৌঁড়ে নীলের কাছে চলে আসলো,,বাচ্চাগুলোর পিছন পিছন অভনীও দৌঁড়ে এসে বুকে হাত দিয়ে হাঁপাতে লাগলো।
—মিতু একটা টুল নিয়ে আয় তো ব্যাগ গুলো আমার কাছে দিয়ে।(নীল)
মিতু দৌঁড়ে চলে গেলো টুল আনতে,,, নীল অভনী কে ইশারা করলো ওর পাশে আসার জন্য।অভনী ভ্রু জোরা কুঁচকে নীলের পাশে এসে দাঁড়ালো।মিতু টুল নিয়ে আসতেই নীল ব্যাগ গুলো টুলের উপর রেখে বললো,,,
—আজ আমাদের গুলটোর জন্মদিন।সেই উপলক্ষে তোদের এই আপুটা সবার জন্য এই গুলো এনেছে আর গুলটোর জন্মদিন উপলক্ষে কেক আনা হয়েছে।সবাই সারি সারি ভাবে দাঁড়া এই আপু টা তোদের সবাই কে গিফট দিবে।
অভনী অবাক চোখে তাকিয়ে আছে নীলের দিকে।ও তো এইসব কিছুই জানতো না তাহলে ওর নাম কেনো বললো?অভনী যেই বলতে গেলো —আমি,,
তখনি নীল একটা ব্যাগ এগিয়ে দিয়ে বললো,,,
—নাও এটা ওকে দাও (একজন কে দেখিয়ে)
সবাই কে গিফট দেয়ার পর নীল অভনীর হাতে তুলে দিলো রহিম চাচার জন্য আনা গিফট।অভনী মুচকি হেসে রহিম চাচার দিকে এগিয়ে দিলো,,
—এইসবের কি দরকার ছিলো মা।তোমরা আইছো এই তো অনেক (অভনীর মাথায় হাত দিয়ে)
–আমি আনি,,,
অভনী কে আর কিছু বলতে না দিয়ে নীল বলে উঠলো,,,
—আরে চাচা ও তো আপনার মেয়ের মতোই তাই এনেছে।
বাচ্চাগুলো ব্যাগ খুলে দেখলো সবার জন্য খুব সুন্দর সুন্দর জামা।নীল বললো,,,
—সবাই এখুনি জামা গুলো পরে আসো।আর গুলটো জামা পাল্টিয়ে তারাতাড়ি আমার কাছে আয় তো।
বাচ্চারা সবাই সেখানেই জামা পাল্টাতে লাগলো আর খুশিতে লাফাতে লাগলো,,মিতু মিলা আর রহিম চাচা চলে গেলে জামা পাল্টাতে।অভনী মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে বাচ্চাগুলোর দিকে।বিকেলের সেই হালকা রোদে বাচ্চাদের হাসিগুলো কি মায়া ই না ফেলছে তাকে।তার থেকে বেশি মায়ায় ফেলছে বাচ্চাদের এই একটুকরো হাসি উপহার দেবার মালিক তার হিরো সাহেব কে।
অভনী ঠোঁট উল্টিয়ে কাঁদো কাঁদো মুখ করে হাত পেতে বললো,,,
—হিরো সাহেব আমার গিফট কই?
নীল মুচকি হেসে উওর দিলো,,,
—সরি মিস. অভনী।আপনার টা আনতে ভুলে গেছি।তবে এই শাড়ি টাতেই আপনাকে খুব সুন্দর লাগছে।
নীলের মুখে সুন্দর শব্দ টা শুনে মুহূর্তেই লজ্জায় লাল হয়ে গেলো অভনীর গাল দুটো।এক মুঠো কন্যা সুন্দরী রোদ অভনীর মুখে এসে কি অদ্ভুত এক সৌন্দর্য এসে ভর করেছে অভনীর মুখে।নীল চোখ ঘুরিয়ে বাচ্চাগুলোর দিকে তাকিয়ে রইলো,,এই মূহুর্তে অভনীর দিকে আর তাকাতে চায় না সে।বড্ড মায়াবিনী এই মেয়ে,,নাহলে কি আর এতো দ্রুত তার মায়ার বাধনে বেঁধে ফেলতে পারতো?
?
বাচ্চারা সবাই ড্রেস চেঞ্জ করে আসলে গুলটোর জন্মদিনের কেক কাটে।নীল আরেকটা ব্যাগ থেকে বাচ্চাদের জন্য আনা চকলেট গুলো দিয়ে কতগুলো বেলুন ধরিয়ে দিলো সবার হাতে।সবার মধ্যে আবারো খিলখিল করে হাসির,,লাফানোর রুল পরে যায়।সন্ধ্যার হালকা আবছা আলো ফুটে উঠেছে।অভনী আবারো ব্যাস্ত হয়ে পরলো বাচ্চাগুলোর সাথে খেলায় আর এমন সুন্দর মুহূর্ত গুলোকে নিজের মোবাইলের ক্যামেরায় বন্দী করতে ব্যাস্ত নীল।
?
নদীর পানিতে পা ভিজিয়ে এক হাত দূরত্বে বসে আছে নীল আর অভনী,,,অভনী হাঁটুর একটু নিচ অবধি পর্যন্ত শাড়ি ধরে পা নাঁচাতে লাগলো,,,আজ যেন পুরোদমে বাচ্চা হয়ে গেছে সে।নীল ভ্রু কুচকে অভনীর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,,
—মিস.অভনী এভাবে পা নাচালে সারারাতেও মাছ আসবে না।
ওরা আজ রাতে বাচ্চাদের সাথেই খেয়ে যাবে।রান্নাও করবে সবাই মিলে।তাই অভনী বায়না ধরেছে নীল কে নদী থেকে মাছ ধরতে হবে।আর সেই বায়না পূরন করার জন্য বেচারা নীল প্রায় আধা ঘন্টা যাবৎ অসহায় চোখে ছিপের দিকে তাকিয়ে আছে,,কিন্তু একটা মাছ ও পায়নি।।বাচ্চা গুলোকে পরতে বসিয়ে এসেছে।
নীল নদীর মাঝখানে ছোট্ট মাঝির নৌকায় জ্বলজ্বল করা আলোর দিকে তাকিয়ে আছে,,,কিছুক্ষন পর মাঝিটাকে ডেকে উঠলো নীল,,,বারবার নীলের কথাগুলোই প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসছে,,,মাঝি শুনতে পেয়েছে বলে মনে হলোনা।তাই আবারো ছিপের দিকে নজর দিলো সে।অভনীর নীলের এমন বিরক্তি মাখা মুখ দেখে খুব হাসি পাচ্ছে।কিন্তু এই মুহূর্তে হেসে উঠলে নীলের ধমক খেতে পারে বিধায় চুপ করে রইলো।সন্ধ্যার অন্ধকার ফুটে উঠেছে চারদিকে।হয়তো একটু পরেই মাথার উপরে থালার মতো বৃও আকারের চাঁদ টা ফুটে উঠবে।
কিছুক্ষন পর মাঝি তার ছোট্ট নৌকাটি নিয়ে নীলদের দিকে এগিয়ে আসলো,,এসে বললো,,,
—সাব ডাকছিলেন?
মাঝির কথায় নীলের অসহায় মুখে আলো ফুটে এলো,,,নীল বলে উঠলো,,,
—হাম হাম।তুমি মাছ পেয়েছো?
—হু সাব।আফনের লাগবো?
—-হুম লাগবে।আপনি যতগুলো মাছ পাইছেন সব গুলো দিয়ে যান।
মাঝি সবগুলো মাছ নীলের হাতে ধরিয়ে দিলো,,,নীল পকেট থেকে টাকা বের করে মাঝিকে দিলো।মাঝি বললো,,,
—আমার কাছে এহন ভাংতি নাই তো সাব।
নীল মুচকি হেসে বললো,,,,
—ভাংতি লাগবে না এটা পুরুটাই তোমার।তুমি জানো না আমার কত বড় উপকার করলে না হলে আমায় আজ সারারাত না ঘুমিয়ে এখানে বসে থাকতে হতো।
—ধইন্যবাদ সাব।
মাঝি চলে গেলে নীল অভনী কে বললো,,,
—মিস.অভনী আপনি এখানে একটু দাঁড়ান আমি আসছি।
নীল দৌঁড়ে চলে গেলো।আর অভনী এখনো ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে নীলের যাওয়ার দিকে।
?
কিছুটা দূরত্ব নিয়ে নদীর তীর ঘেসে খালি পায়ে হেঁটে বেড়াচ্ছে নীল আর অভনী। দুজনের মধ্যে শুনসান নীরবতা।নীরবতার বল রেখা কাটিয়ে নীল বলে উঠলো,,,
—গুলটো কে আমি অন্য সব বাচ্চাদের মতো পাইনি,,, গুলটো কে পেয়েছিলাম শহরের এক কোনো ময়লা আবর্জনার ড্রেনে।গুলটো চিৎকার করে কান্না করছিলো কিন্তু সেই কান্নার ভারী যন্ত্রণার শব্দ তার পাষান আপন জনের কাছে পৌঁছায় নি।আমি আসেপাশে বাচ্চার কান্না শুনে খুজতে লাগলাম কিন্তু আশে পাশে কোনো ঘর বা মানুষ ছিলো না।বাচ্চাটার কান্নার শব্দটা খুজতে খুজতে পেয়ে যাই ময়লা আবর্জনার মধ্যে। বুঝতে পারলাম কেউ তার পাপের বোঝ বাচ্চাটার উপর চাপিয়ে দিয়ে হাঁফ ছেড়ে চলে গেছে সেখান থেকে। মা নিজের সন্তানের জন্য নিজের কিডনী বিক্রি করতে পারে,,আবার কিছু মা নিজের সন্তানের গলায় ছুরি ধরে মেরেও ফেলতে পারে,,,আবার কিছু মা এইরকম ভাবেই রাস্তার মাঝখানে ফেলে যায় তার নারী ছেরা ধন কে,,,যেখানে নিজেরা মায়েরাই একেক জনের একেক রকম হয় সেখানে অন্য কাউকে কিভাবে বিশ্বাস করবে বলতে পারেন?ওর নাম গুলটো নয় মুন্না,,, ওকে সবাই আদর করে গুলটো বলে ডাকে।
অভনী খেয়াল করলো নীলের কন্ঠে বিষন্নতা। অভনী একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে উঠলো,,,
—আচ্ছা আমি তো ওদের জন্য গিফট আনিনি তাহলে আপনি ওদের কাছে আমার কথা বলবেন কেনো?
—গিফট গুলো আপনিই দিয়েছেন মিস. অভনী।আপনার তো অনেক দিনের শখ ছিলো ওদের জন্য কিছু করার।তাই এখন আমি আপনার হয়ে দিয়ে দিলাম।বেঁচে থাকলে এর জন্য কিছু চেয়ে নিবো(হালকা হেসে)
—ধন্যবাদ (হেসে)
রান্না এখনো হয়নি।অভনী কাঁদো কাঁদো মুখ করে বলে উঠলো,,,
—আমার ক্ষিদে লেগেছে ?
নীল মুচকি হেসে পাজামার পকেট থেকে কয়টা চকলেট বের করে বললো,,,
—দুপুরে খান নি ক্ষিদে তো লাগবেই।আপাতত চকলেট খেয়ে থাকেন।
অভনী আর কিছু না বলে নীলের হাত থেকে চকলেট গুলো নিয়ে খাওয়া শুরু করলো,,খেতে খেতে হাঁটতে লাগলো আগে আগে,,,।হঠাৎ নীল পেঁছন থেকে আবেগ প্রবন কন্ঠে ডেকে উঠলো,,
—মিস. অভনী?
অভনী থমকে দাঁড়ালো,, এই ডাক টাকে ওপেক্ষা করার সাধ্যে ওর নেই।অভনী সৃক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো নীলের দিকে।নীল নিজের পাঞ্জাবীর পকেট থেকে এক জোরা ঝুম নুপুর অভনীর দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,,,
—ঠিক যখনি তুমি আমার সাথে সাগর/নদীর পাড় দিয়ে বা পানির মধ্যদিয়ে হাঁটবে তখন এই নুপুর গুলো পরে হাঁটবে।আর এটাই তোমার আজকের গিফট (মুচকি হেসে)
অভনী একটু অবাক নয়নে তাকিয়ে রইলো নীলের দিকে,,,নজর নদীর দিকে করে বলে উঠলো,,,
—-হিরো সাহেব আজকের এই দিনটা আমি কোনোদিন ও ভুলবো না।আপনাকে ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটা দিন উপহার দেবার জন্য। তাই আজকের জন্য আলাদা কোনো উপহার আমার লাগবে না।
অভনীর শেষের কথাটা শুনে নীলের রাগ উঠে গেলো।ও সবসময় চায় অভনীর সামনে নিজের রাগ না দেখাতে।কারন দেখিয়েই অভনী কে হসপিটালে ভর্তি করতে হয়েছিলো,,,নীল নিজের পাজামা টা ধরে একটু উঁচু করে হাটু গেড়ে বসে গেলো।অভনী অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে শুধু।মাথার উপরের থালার মতো চাঁদ থেকে জোসনা ছরিয়ে পরছে।ন অভনীর একটা পা টেনে হাঁটুর উপর রাখলো।অভনী পা ছোটাতে চেয়ে বলে উঠলো,,,
—পায়ে ময়লা আরে কি করছেন আপনি।
—সাট আপ (ধমক দিয়ে)
নীলের ধমকে অভনী মুখে হাত দিয়ে চুপ করে গেলো।আর নীল পরম যত্নে অভনীর দুপায়ে নুপুর পরিয়ে দিয়ে বললো,,,
—এবার হাঁটুন মিস. অভনী। আমি কারো পাওনা জিনিস নিজের কাছে রাখিনা।
এটা বলেই নীল হালকা পানিতে নেমে আগে আগে হাঁটা শুরু করলো,,অভনীও মাথা নিচু করে চাঁদের আবছা আলোয় পায়ে ফুলের মতো ফুটে উঠা নুপুর গুলো দেখতে লাগলো আর হাঁটতে লাগলো,,,,নদীরতীড়ের বাতাসের শু-শা শব্দের সাথে অভনীর পায়ের নুপুরের ঝুমঝুম শব্দ টা যেনো অসম্ভব সুন্দর এক বাজনা বাজিয়ে তুলতে লাগলো। নীল পিছন ফিরে অভনীর সমানে সমানে পানি দিয়ে হাঁটতে লাগলো,,,,নীলের এই মুহূর্তে খুব কবিতা কবিতা পাচ্ছে,,,, কিন্তু কবিতা না গেয়ে সে গান গাইতে লাগলো,,,,,,
“তুমি চাঁদের জোছনা নও,,ফুলের উপমা নও
নও কোনো পাহারী ঝর্না,,,
আয়না,,,তুমি হৃদয়ের আয়না,,,
আয়না,,,,তুমি হৃদয়ের আয়না,,,,
নীল অভনীর দিকে তাকিয়ে ইশারা করলো ও পরের টুকু বলার জন্য,,অভনী একটা মুচকি হাসি দিয়ে গাইতে লাগলো,,,,
★ তুমি সাগর নিলিমা নও,,,তুমি মেঘের বর্ষা নও,,
তুমি সাগর নিলিমা নও,,তুমি মেঘের বর্ষা নও তুমি শুধু আমারি গয়না,,,,
আয়না,,,তুমি হৃদয়ের আয়না,,,,
আয়না,,,,তুমি হৃদয়ের আয়না,,,, (নীলের দিকে আর চোখো তাকিয়ে)
★কবির লেখা যত কবিতা,,,
শিল্পীর আঁকা যত ছবি,,,
তোমার তুমির কাছের হার মেনে যায় যেনো সবি,,,,,
★সাজের বেলায় রাঙা গোধূলি,,
বর্ষা কানের ভরা নদী,,,,
তোমার রুপের কাছে হার মেনে যায়
যেনো সবি,,,,
গান শেষে নীল বললো,,,
—এবার চলুন ওই দিক টায় কি অবস্থা দেখা যাক।
—আচ্ছা এখান থেকে বাসায় যেতে কয়টা বাজবে?(অভনী)
—১০-১০ঃ৩০.
—দাঁড়ান মা কে কল দিয়ে বলে নেই।
—-আপনার বলতো হবে না। আমি বলে দিয়েছি মামুনির কাছে যে আজ আমরা এখানে এসেছি।মামুনি বলে দিবে।
নীল এতিম খানার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো,,,অভনী পেঁছন থেকে বলে উঠলো,,,
—আচ্ছা আমার একটা শর্ত আছে ?
—কি শর্ত (ভ্রু কুঁচকে পেছনে তাকিয়ে)
—আজকে আর আমি আপনার কাছে পড়বো না।নিজের রুমে নিজে নিজেই পড়বো।
নীল আর কিছু না বলে মুচকি হেসে হাঁটা শুরু করলো।
—আরে আরেহ চলে যাচ্ছেন কেনো।কিছু তো বলুন।
নীল ছোট্ট করে বললো,,,
—ওকে।
বাচ্চাদের পড়া শেষ আজ আর ওরা পরবে না।একেক জন একেক কাজে ব্যাস্ত অভনী আর নীলও এখন সবার সাথে রান্না করতে ব্যাস্ত,,,বাচ্চা দের সাথে আনন্দে রান্না করে সবাই খেয়ে উঠলো,,,অভনী বাচ্চাদের কপালে চুমু একে দিয়ে বললো,,,
—আসি কলিজা রা।
—আপা এই নামে তো আমগোরে বাইয়া ডাহে (একটা বাচ্চা)
—-আজ থেকে নাহয় আমিও ডাকবো (মুচকি হেসে)
—আপা আমনে আবার আইসেন,,,আমনেও ভাইয়ের মতো খুব ভালা।(বাচ্চারা)
—তোমরাও এওো এওো ভালো। আসি কলিজা রা টাটা।
?
কিছুদিন পর,,,
নীল বাহিরে থেকে দৌঁড়ে ভিতে আসলো,,নীলিমা আহম্মেদ চৌধুরী সোফায় বসে খবরের কাগজ পরছেন।নীল মায়ের দিকে একবার তাকিয়ে চিল্লিয়ে বলে উঠলো,,,,
—ভাইয়া রে কই তুই?শুনলাম মোশাররফ চৌধুরী নাকি খুব বড় এক্সিডেন্ট করেছে।বাঁচবে বলে মনে জয়না।শেষ বারের মতো দেখার খুব শখ ছিলো রে কিন্তু তা বুঝি আর হলো না।
নীলিমা আহম্মেদ চৌধুরী চমকে উঠলেন।বুকে তীব্র ব্যাথা অনুভব হচ্ছে ওনার।মনের মধ্যে আপন কাউকে,,ভালোবাসার কাউকে হারানোর ভয় তীব্র ভাবে আকরে ধরেছেন ওনাকে।এই মুহূর্তে ওনি আগের সব অতীত ভুলে গিয়ে হন্তদন্ত হয়ে উঠে গিয়ে নীল কে জিজ্ঞাসা করলো,,,
—-কি বলছিস তুই এইসব নীল।কিভাবে হলো এমনটা?আমি যাবো আমার ভাইয়ের কাছে।কতো দিন দেখিনা আমার ভাই টাকে।আমারে নিয়ে চল না বাবা।আমি যাবো মুশুর কাছে।মুশু আমাকে রেখে যেতে পারেনা।প্লিজ নিয়ে চলনা বাবা (কাঁদতে কাঁদতে)
—তুমি সত্যিই যাবে মা? (নীল)
—-বলেছি না একবার সময় নষ্ট করছিস কেন?নিয়ে যা আমায়।
নীরব উপর থেকে বলে উঠলো নীল আমিও যাবো চল,,,ওরা তিনজন বেরিয়ে গেলো হসপিটালের উদ্দেশ্য।
ভাইবোনের সম্পর্ক গুলো বুঝি এমন ই হয়।যত রাগ অভিমান ই থাকুক না কেনো ভাই/বোন ভালো নেই শুনলে ঠিক থাকা যায় না।সব বাধা পেরিয়ে চলে যেতে হয় তাদের কাছে।এক মুহূর্তেই ভেঙে যায় সব অভিমান।পুনরায় আবার দেখা দেয় দুষ্টুমিষ্টি ভালোবাসা গুলো।❤
বেঁচে থাকুক অনন্তকাল ভাইবোনের এমন অফুরন্ত পবিএ ভালোবাসা❤
চলবে,,,,
(সত্যিটা কি আমি জানিনা,,তবে এই দুইদিন আমি মেঘ আপুর জন্য কষ্ট পেয়েই লিখতে পারিনি।কেউ বলছে মারা গেছে কেউ বলছে যায়নি সবটা আল্লাহ ভালো জানেন।তবে দোয়া করি।আর হ্যাঁ শাফিন আবারো আসবে,,,শাফিনের মতো কালো ছায়া গুলো এতো সহজে ছেড়ে দেবার নয়)