#আমার রাজ্যের রানী
#Part:15
#Writer :Sriti Nur Avni
?
পুরনো বাড়িটায় হাত পা বেঁধে রাখা হয়েছে একটা ছেলেকে,,, তার ঠিক সামনেই পায়ের উপর পা তুলে বসে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ছেলেটার দিকে নীল।চারপাশে নীরবতা,,, এমন নীরবতা যে কোনো কালবৈশাখী ঝড়ের পূর্বলক্ষন তা বেশ বুঝতে পারছে নীলের সাথের ছেলেগুলো।হাত পা বাঁধা ছেলেটা ও ভয়ে থরথর করে কাঁপছে কিন্তু সেদিকে নীলের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।বেশ কিছুক্ষন নীরবতা কাটিয়ে হাত পা বাধা ছেলেটা বলে উঠলো,,,
—ভাই আমি কি করছি ভাই?আমারে ছেড়ে দেন ভাই।আমারে কিছু করবেন না প্লিজ আমি মাফ চাই আপনার কাছে।
নীল এবার চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালো। লোকটার চারপাশে ঘুরতে লাগলো,,,,
—রাতুল নিচে থেকে ব্যাট টা দে।অনেক দিন যাবৎ ক্রিকেট খেলি না চল একটু ক্রিকেট খেলি।
নীলের কথায় সবাই একসাথে অভাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে যার মানে এই মুহূর্তে ক্রিকেট খেলার কথা ওরা কেউই এক্সপেক্ট করেনি,,,নীল ওদের দিকে একবার তাকিয়ে মুচকি হেসে আবারো ধমকের সুরে বললো,,,
—তুলে দিবি নাকি দিবি না?
ধমক দেয়াতে সাথে সাথে রাতুল একটা ব্যাট হাতে দিলো নীলের,,, নীল বললো,,,
—চল এবার খেলা শুরু করি।
নীলের কথায় এবারো সবাই অভাক হয়ে তাকিয়ে আছে,,,, ওরা আশা করেছিলো নীল হয়তো ব্যাট দিয়েই পেটাবে কিন্তু তাদের আশায় এক বস্তা জল ডেলে দিবে নীল তা ভাবেনি।তবে চলে যাওয়ার কথায় সবার মনেই একটু খটকা লাগতে লাগলো।
—কি হলো চল (ধমকের সুরে)
নীলের ধমকে সবাই হনহন করে বেড়িয়ে যেতে লাগলো হঠাৎ ধুমধুম শব্দে দাঁড়িয়ে গেলো সবাই। পিছনে তাকিয়ে দেখলো নীল ব্যাট টা দিয়েই ইচ্ছেমতো পেটাচ্ছে।নীলের পেটানো দেখে নীলের সাথের সবাই অভাক হয়ে আছে কারন নীল কাউকে এমন ভাবে পেটায় না।কম অপরাধ করলে ওদের দিয়ে পানিশমেন্ট দেয়িয়ে ছেরে দেয় আর বেশি করলে না মেরে gun দিয়ে Shoot করে দেয়।কিন্তু এমন ভাবে মেরেছলো সেদিন রাস্তায় নিয়ে ছেলে গুলোকে আর কয়েকজন ছেলেকে আর আজকে।তবে আজকে নীল ওর নিজের মধ্যে নেই সামনে হাত পা বাঁধা ছেলেটা জোরে জোরে চিৎকার করছে কিন্তু এতে নীলের কোনো ভাবান্তর নেই সে নিজের মতো করে পিটিয়েই যাচ্ছে।
বেশকিছুক্ষন পর নীল ব্যাট টা দূরে ফেলে দিয়ে সামনের চেয়ারে বসে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে লোকটার দিকে,,,ছেলেটার শরীরের ভিবিন্ন জায়গা থেকে রক্ত ঝরছে।নীল শান্ত সুরে বললো,,,
—নাম কি তোর?
ছেলেটা ঠিক করে কথা বলতে পারছে না তবুও কষ্ট করে বললো,,,
—আরিফ।
—তোর গাড়িরা কি শুধু তুই ই চালাস?
—হ ভাই।
—গুড!তো বল পরশু কোনো মেয়েকে তুলে নিয়ে গিয়েছিস?পা কেঁটেছিস?
নীলের কথায় ছেলেটি একটু ভয় পেয়ে গেলো।ভয়ে আমতা আমতা করতে লাগলো,,,তখনি নীল জোরে ধমক দিয়ে বললো,,,
—বল তারাতাড়ি নইলে তোর এমন অবস্থা করবো কেউ তাকাতে পর্যন্ত ভয় পাবে।
ছেলেটা নীলের ধমকে ভয় পেয়ে গড়গড় করে বলতে লাগলো,,,
—হ্যা তুলে নিয়েছিলাম। কিন্তু আমি কিছু জানিনা আমাদের কে ভাড়া করে নেয়া হয়েছিলো।শুধু বলেছিলো গাড়িটা দিতে আর সাথে থাকতে তার জন্য আমাদের কে মোটা অংকের টাকাও দিয়েছিলো তাই রাজি হয়ে ছিলাম।ছেলেটার পুরা নাম বলে নাই শুধু বলেছিলো খান।আর কিছু জানিনা আমি,,,তবে মেয়েটার সাথে তো কিছুই করে নাই শুধু একটু পা কেঁটে ছেড়ে দিছে ভাই।কিছু করলে না হয় কথা ছিলো আপনি শুধু শুধু আমায় মারলেন কেন,,,
ছেলেটার পুরো কথা শেষ হবার আগেই নীল gun বের করে shoot করে দিলো।নীল এখন ভয়ানক পরিমানে রেগে আছে যা দেখে তার সাথের ছেলেগুলোও বারবার শুকনো ডুক গিলতে লাগলো,,,নীল ছেলেটাকে গুলি করার পরেও আবার একটা ব্যাট নেয়ে পিটাতে লাগলো আর বলতে লাগলো,,,,
—আমি এই শহরের সব থেকে বড় মাফিয়া ফারহান আহম্মেদ নীল। আর তোরা আমার ভালোবাসার দিকে চোখ তুলে তাকিয়েছিস?শুধু তোদের জন্য আমি আমার অনী কে এওো কষ্ট দিয়েছি। যারা আমার অনীর দিকে চোখ তুলে তাকায় আমি একটা কেও জীবন্ত রাখিনি,,,সবগুলোর হাত পা ভেঙে অনীর কাছে মাফ চাইয়ে সব গুলো কে আমি shoot করে মেরে ফেলেছি।তোদের মতো নরপশু দের জায়গা নেই এই পৃথিবীতে। ওই খান কে তো আমি বের করবোই।ওর সাহড হয় কোথা থেকে আমার ভালোবাসার দিকে নজর দিতে? (জোরে জোরে চিল্লিয়ে)
ছেলেটা মারা যায়।নীলের কাঁটা হাত দিয়ে ব্যান্ডেজ বেয়ে অজর ধারায় রক্ত পরতে লাগলো। সেদিকে নীলের কোনো খেয়াল নেই।সে ব্যাস্ত তার রাগ কমানোর ব্যার্থ চেষ্টায়।নীলের হাতের রক্ত দেখে রাতুল দৌঁড়ে আসলো নীলের কাছে,,,,এসে বললো,,,
—ভাই আপনার হাতে রক্ত চলুন ডক্টরের কাছে চলুন ভাই।নইলে ব্যান্ডেজ টা চেঞ্জ করে নিন প্লিজ।
—লাশ টার ব্যাবস্তা কর।
এটা বলেই আর কিছু না বলে হনহন করে সেখান থেকে বেড়িয়ে গেলো নীল।নীল বের হবার পরেই রাতুল নির্ঝিয় কে ফোন দিয়ে সব কথা বললো আর বললো নীল কে সামলানোর জন্য ওর হাতে ব্যান্ডেজ করে দেবার জন্য,,,ওরা সবাই জানে নির্ঝিয় নীলের সব থেকে কাছের বন্ধু। ছোটবেলা থেকেই একসাথে বেড়ে উঠা ওদের,,, ওদের বন্ধুত্ব টা খুব গভীর তাই একজনের জন্য আরেক জন জীবন দিয়ে দিতেও ভাববে না।নীল যখন খুব কষ্টে বা রেগে থাকে তখন ওকে সামলাতে পারে নীলিমা আহম্মেদ চৌধুরী আর নির্ঝয়।
নীল খুব জোরে গাড়ি ড্রাইভ করছে। হাত দিয়ে এখনো রক্ত পরছে তার।হঠাৎ ওর গাড়ির সামনে আরেক টা গাড়ি এসে থামায় খুব কষ্টে গাড়ি টাকে নিয়ন্ত্রণ করলো নীল।সামনের গাড়ির ড্রাইভার এর প্রতি এখন প্রচন্ড রাগ হচ্ছে তার তাই গাড়ি থেকে নেমে ওই গাড়ির কাছে গিয়ে ড্রাইভার কে দেখে আরো বেশি রাগ উঠেগেলো নীলের।ড্রাইভারের কলার ধরে টেনে সামনে এনে বললো,,,
—ওই তোর সাহস তো কম না।তুই এমন ভাবে গাড়ির সামনে আসলি কেন?যদি আমি নিয়ন্ত্রণ না করতে পেরে এক্সিডেন্ট হয়ে যেতো (চিল্লিয়ে)
—হলে মরে যেতাম।আমি আর তুই ২জন একসাথে মরে যেতাম।এতে আমি খুব শান্তি পেতাম তোর জ্বালা থেকে বাঁচতাম।হুহ চল আমার সাথে। (নির্ঝয়)
—কোথায় যাবো?আমি এখন কোথাও যাবো না।
—তুই যাবি আর তোর বাপ সহ যাবে চল (হাতে টেনে)
—ওই তুই আমার বাপ রে আনোস কেন?আমার কাছে gun আছে আমি কিন্তু shoot করে দিবো বলে দিলাম।
—ওকে করিস আগে হাতে ব্যান্ডেজ করতে দে পরে মন ভরে যতবার শুট করতে মন চায় ততবার করিস।
নীর্ঝয় ওর গাড়ি থেকে ফাস্ট এইড বক্স টা নিয়ে নীলের হাতের ব্যান্ডেজ খুলে আবারো ব্যান্ডেজ করে দিলো।নীল বললো,,,
—আচ্ছা নীর তুই কিভাবে জানিস বলতো আমার রাগ হলে বা মন খারাপ থাকলে?
—বন্ধুত্ব টা বন্ধুর মতো হলে এমনি ই বোঝা যায়।আমি যেই কয়েকদিন দেশের বাহিরে ছিলাম খুব মিস করেছি তোকে,,,আরে না তোকে কেন মিস করবে আমি তো মিস করছি আমার না হওয়া বউ টাকে ? (নির্ঝয়)
নীল হাসতে হাসতে নীর্ঝয় কে জরিয়ে ধরলো।নীর্ঝয় ও হাসি মুখে নীল কে জরিয়ে ধরলো তবে ওর ভিতরেও বইছে হাহাকার,,,
নির্ঝয় ড্রাইভার কে ফোন দিয়ে ওর গাড়ি টা নিতে বলে নীলের সাথে ঘুরতে বের হলো।কারন নীর্ঝয় জানে নীলের রাগ কমলেও এখনো শেষ হয়নি তাই ২ বন্ধু ঘুরে বেড়াবে আজ পুরো শহর।
?
অভনীদের বাসার সামনে বিকেলের আগেই বড় বড় ২ টা গাড়ি মাল নেবার জন্য আর আরেক টা ওরা যাবার জন্য পাঠিয়ে দিয়েছে নিহাল আহম্মেদ।
অভনীরা সবাই রেডি হয়ে নিলো।অভনীর যাবার আগে একবার ছাদে যেতে মন চাচ্ছে।হয়তো আর কোনোদিন আসা হবেনা যাওয়া হবে না ছাদে।হয়তো ভাড়াটিয়া দের এমন ভাবেই একটা বাসার মায়া ত্যাগ করে আরেকটা তে যেতে হয়।তাই শেষ বারের মতো একবার ছাদ থেকে ঘুরে আসতেই হয়।
অভনী আস্তে আস্তে হেটে ছাঁদে গিয়ে সবগুলোর গাছের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিচ্ছে সে,,ফুল গাছ বরাবরই খুব পছন্দ তার,,,তখনি পেছন থেকে একজন বলে উঠলো,,,,
—আমায় বিদায় দিবে না ঝাল মরিচ?
শাফিনের কথায় ভ্রু কুচকে পেছনে তাকালো অভনী।শাফিনের দৃষ্টিতে রাগে ভরপুর। অভনী ভয় পেয়ে গেলো শাফিনের দিকে তাকিয়ে।শাফিন কে দেখে অভনী কিছু না বলে আস্তে আস্তে হেঁটে চলে যেতে নিলে শাফিন ওর পথ আটকে দাঁড়ালো। সে বললো,,,,
—সেদিন ছাঁদে আসতে বলার পর আসলে না কেনো?
—রাতের বেলা করে আপনার কথামতো একলা একটা মেয়ে আমি ছাঁদে আসবো কেনো আজিব?আর আপনি কে যে আমাকে আপনার সব কথা বলতে হবে?
অভনীর কথায় শাফিনের রাগ আরো বেড়ে গেলো।সে অভনীর হাত দেয়ালের সাথে চেপে ধরে বললো,,,
—আমি কে সেটা তোমার জানতে হবে না।এখন তুমি অন্য বাসায় যাবে না মানে যাবে না।আমার কথা না শুনলে খুব বেশি খারাপ হয়ে যাবে তোমার।
—যাবো আমি।একশো বার যাবো।আপনার কথা মতো চলতে আমি বাধ্য নই।
—বাধ্য বাধ্য বাধ্য কারন আমি তোমাকে ভালোবাসি।তুমি এই বাসা ছেড়ে যাবে না (চিল্লিয়ে)
—কিন্তু আমি আপনাকে ভালোবাসি না তাই আমি আপনার কথা মতো চলবো না।সরুন সামনে থেকে।
—ভালোবাসা কীভাবে আদায় করে নিতে হয় তা আমি খুব ভালো ভাবেই জানি ঝাল মরিচ।তুমি আজ গেলে তার পরিনতি ভয়ানক থেকেও ভয়ানক হবে।
অভনী কোনোরকম নিজের হাত ছাঁড়িয়ে দ্রুত পায়ে চলে যেতে লাগলো। কান্না পাচ্ছে তার খুব।কেনো যে ছাঁদে আসতে
গিয়েছিলো,,,এই লোকটা ভালোবাসলে এটাই কি তার ভালোবাসার নমুনা?
?
সন্ধ্যা ৬ টা
অভনী রা চলে এসেছে নীলদের বাসায়।নিচের তলায় থাকবে শাহেরা বেগম আর অভনীর নানু।আর উপরের তলায় থাকবে আরিহা আর অভনী।মায়ের সাথেই থাকতে চাইলে নিচের তলায় আর রুম খালি ছিলো না।অভনীর নানু সিড়িদিয়ে বারবার উঠতে নামতে পারবে না তাই উপরে থাকতে পারবে না।অভনী মায়ের সাথে একরুমেই থাকতে চাইলো কিন্তু এতোগুলো রুম উপরে খালি থাকতে ওরা জটলা পাকিয়ে এক রুমে থাকবে সেটা মানতে পারলেন না নীলিমা আহাম্মেদ চৌধুরী। তাই আরিহা আর অভনী কেউ উপরে থাকার সিদ্ধান্ত টাই মানতে হলো।তবে অভনীর পা ঠিক হবার আগে পর্যন্ত নিচেই থাকবে।এই পা নিয়ে উপরে উঠতে নামতে সমস্যা হবে তার।
রাত ৯ঃ০০ টা
সবকিছু গুছিয়ে রেখে সবাই একসাথে ড্রইং রুমে বসে আছে।তবে নীল মাএ বাহিরে থেকে এসে শাওয়ার নিচ্ছে। এখনো পর্যন্ত দেখেনি অভনীদের। অভনীর মন টা এখন খুব ফুরফুরে লাগছে।কি সুন্দর একটা পরিবার পেয়েছে সে।বাবা কে হারিয়েও নিজেকে এখন আর এতিম লাগছে না তার।
৯ঃ৩০ মিনিটে শাওয়ার নিয়ে একটা ব্লাক টি শার্ট কালো টাওজার পরে ভেজা চুল গুলো জারতে জারতে নিচে নামতে লাগলো নীল,,,আর বলতে লাগলো,,,
—মামুনী খুব ক্ষুধা লেগেছে চলো তুমি আমায় খাইয়ে দিবে এখুনি।
অভনী নীলের দিকে তাকালো আর নীল ও অভনী কে নিচে বসে থাকতে দেখলো।অভনী একনজর তাকিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলল আর মনে মনে ভাবতে লাগলো,,,,
—শুনেছি মেয়েদেরকে শাওয়ারের পর খুব স্নিগ্ধ লাগে কিন্তু একটা ছেলেকেও যে শাওয়ারের পর ভেজা চুলে এতোটা স্নিগ্ধ পবিত্র আর সুন্দর লাগে সেটা জানা ছিলো না।ফর্সা শরীরে ব্লাক কালার টা যেনো আকড়ে ধরে আছে তাকে।।,,এই মুহূর্তে আমি আর এই লোকটার দিকে তাকাবো না কে জানে কখন আমার হার্টবিট বন্ধ হয়ে যায়,,কখন হৃৎপিন্ড ব্লক হয়ে যায় ?
নীল অভনীর দিকে তাকিয়ে থেকে নিচে নেমে আসলো।নীল নিচে আসার পর সবাই একসাথে খেতে বসতে লাগলো।আজ রাতের খাবার টা অভনীরা নীলদের সাথেই খাবে।নীলিমা আহম্মেদ চৌধুরী নীল কে খাইয়ে দেয়ার সময় অভনী আর আরিহা কেও খাইয়ে দিচ্ছে একসাথে।এ যেনো এক মায়ের পরম মমতা,,,মায়ের ভালোবাসা❤
?
“রাএি ভেজা আকাশ জুরে
বন্ধুত্বের অচিনপুরে
আজ পৌঁছে গেলাম আমি।
যে বাঁধন চাইতে ভাঙার
আছে সে সাধ্যে কাহার?
যে বাঁধন যায় না ছেড়া
যত্নের দৃঢ় বেরায়
অন্ধবিশ্বাস
কোনোদিনো যাবো না বলে
দে আজ আশ্বাস ❤
ছাঁদের এককোনে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে একমনে কবিতা আওড়াতে লাগলো নীর্ঝয়।বন্ধুত্বের জালে আটকে আছে সে।তবে এই বন্ধুত্ব শেষ হবার নয়।নীর্ঝয় চায় ও না শেষ করতে। সত্যিকারের বন্ধুত্ব কখনো শেষ হবার নয় বরং কঠিন পরিস্থিতি গুলো তে বন্ধুত্ব আরো দৃঢ় হয়।নীর্ঝয় চায় নীল হ্যাপী থাকুক।নীল অভনী কে পছন্দ করে সেটা সে সেদিনই বুঝেছিলো যেদিন না চেনার বাহানা করে অভনীদের বাসায় নিলো না।তবে আজ খুব ভালো করেই বুঝতে পারলো নীলের অভনীর প্রতি ভালোবাসা।কতটা ভালোবাসলে তার একটু অপমান কষ্টের জন্য কাউকে খুন করতে পারে তা জানা নেই নির্ঝয়ের।তবে নির্ঝয়ের বুকটাও হাহাকার করছে আজ।লাভ এট ফাস্ট সাইড কখনো বিশ্বাস করতো না নীর্ঝয় তবে অভনী কে দেখে সে বুঝেছে।অভনী ওর ভালোলাগা নয় ভালোবাসা।তবে আজ থেকে সেই ভালোবাসা কে মাটি চাপা দেয়ার চেষ্টা করবে।কারন সে নীল কেও ভালোবাসে।নীল ওর বন্ধু,,, ওর ভালোবাসা,,ওর ভাই।তাই শুধু ভালোবাসার জন্য বন্ধু কে হারাতে পারবে না সে।তার বন্ধু অভনীর সাথে ভালো থাকুক এটাই থাকবে এখন থেকে তার চাওয়া।এই মুহূর্তে একটা কারনে খুব ভালো লাগছে নীর্ঝয়ের,,, নীল ভালো থাকবে❤,,, নীলের ভালো থাকার জন্য নিজের লাইফের এতো বড় একটা জিনিস ত্যাগ করতেও তার খুব ভালো লাগছে।এটাই তো বন্ধুর মতো বন্ধুত্ব,,, যে বন্ধুত্ব কখনো এতোদিনের বন্ধুত্ব কে বাদ দিয়ে একটা মেয়েকে পাবার জন্য লড়াই করবে না।ভালোবাসা তো দূরে সরেও বাসা যায়❤
কথাগুলো ভাবতে ভাবতে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিচের দিকে হাঁটা দিলো সে।নিজের মনের,,কষ্টের কথা গুলো যখন খুব কাছের বন্ধুর কাছেও বলা যায়না,,, নিজের মধ্যেই সেই কষ্ট টাকে পুষে রাখতে হয় তার থেকে কষ্টের কিছু আছে বলে এই মুহুর্তে মনে পরছে না নির্ঝয়ের।
তবে সেই মুহূর্তে ডায়েরির পাতাতেই নিজের কষ্টগুলো হালকা করার উত্তম মাধ্যম বলে মনে হলো তার।তাই সে ব্যাগ থেকে ডায়েরি টা নিয়ে লিখতে বসে পরলো নিজের অনুভূতি,,, নিজের কষ্ট,,,অভনী কে না বলা কথা আর বন্ধুত্বের ভালোবাসা❤
চলবে,,,,,