#আজও_বৃষ্টি_নামুক❤️
#লেখিকা:#তানজিল_মীম❤️
— পর্বঃ২২
_________________
অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে প্রিয়তা একটু আগে দিয়ে যাওয়া এক ডেলিভারি বয়ের পার্সেলের ভিতরে থাকা গিফটটার দিকে কারন কেউ তাকে মোবাইল পাঠিয়েছে। তাও নরমাল নয় বেশ নামি দামি কোয়ালিটির মোবাইল। প্রিয়তা থ মেরে তাকিয়ে রইলো মোবাইলটার দিকে তাকে মোবাইল পাঠালো কে? প্রিয়তা মোবাইলটা হাতে নিলো এরই মাঝে মোবাইলে একটা মেসেজ আসলো কেউ লিখেছে তাকে,
‘ তুমি বড্ড খামখেয়ালি আর ছন্ন ছাড়ায় গড়া মেয়ে, এত ভাবলে চলে। আজ থেকে এই মোবাইল নামক যন্ত্র দিয়েই তোমার বোন আর চাচার সাথে কথা বলবে কেমন। আর হা আমায় নিয়ে বেশি ভেবো না মেয়ে আমি আবার কারো ভাবনায় থাকা পছন্দ করি না।’
প্রিয়তা ফের চমকালো আশ্চর্য এ কে? তার সম্পর্কে এত কিছু জানলো কি করে বোন চাচা। মোবাইলও দিয়েছে আবার সিমও কিনে দিয়েছে। প্রিয়তা কি ভেবে যেন মেসেজের রিপ্লাই হিসেবে লিখলো,
‘ আপনি কে বলুন তো?’
মেসেজ তো দিলো কিন্তু রিপ্লাই কি আর আসলো, আসলো না তো এমনকি অপর প্রান্তের ব্যক্তিটি প্রিয়তার মেসেজের ভিতরে ঢুকে সিনও করে নি। শুধু নোটিফিকেশন আসাটাই দেখেছে। আনমনে মুচকিও হেঁসেছে সে তবে রিপ্লাই আর করে নি।’
___
– হঠাৎ একদিন তোমার নামে,
লিখবো খোলা চিঠি
মন খারাপের বিজ্ঞাপন ভেঙে
আসবে কাছে ঠিকই!’
– হঠাৎ করে প্রেম হবে
কথোপকথন নিয়ে
আকৃষ্টতায় মন আঁকাবে
করবো দুজন বিয়ে!’
– হঠাৎ করে জীবন ঘুরবে
আসবে নতুন স্মৃতি
কল্পনাতেই বাস্তব গড়বে
হবে নানান নীতি!’
– হঠাৎ একদিন তোমার নামে
লিখবো খোলা চিঠি
মন খারাপের বিজ্ঞাপন ভেঙে
আসবে কাছে ঠিকই!’
নিঝুম রাত! চারিদিকে নিস্তব্ধতার হাহাকার। বাড়ির সামনের ল্যামপোস্টটাও আজ নীরব। কারন সন্ধ্যা থেকে কোনো এক কারনে জ্বলছে না সে হয়তো নষ্ট হয়েছে নয়তো তারে সমস্যা হয়েছে।
তবে খারাপ না, প্রকৃতিরা পুরো অন্ধকারে ঘেরা আজ। আর এই অন্ধকারের মাঝেই হাতে বিয়ার, গায়ে জড়ানো ইয়োলো রঙের টিশার্ট, সাদা প্যান্ট পরিধিত এক সুদর্শন যুবক আনমনেই উপরের কাব্য মিলানো কিছু অগোছালো কবিতাটা গেয়ে উঠলো। যুবকটি আর কেউ নয় একজন রাজনীতিবিদ নাম অপূর্ব। সে নিজেও জানে না হুট করে এমন কবিতা কি করে গেয়ে উঠলো। অপূর্ব হাসে, ইদানীং নিজের ওপর খানিকটা পরিবর্তন লক্ষ করছে অপূর্ব, হুটহাট কেন যেন হাসি পায় তার, প্রিয়তা নামক সেই মেয়েটিকে নিয়ে খুব ভাবতে ইচ্ছে করে। কথা বলতে মন চায়, কিন্তু বলে না। অপূর্ব বুঝতে পারছে ভালোবাসা নামক এক কঠিন ব্যামো ধীরে ধীরে তাকে আসক্ত করছে। কিন্তু এই আসক্তিটা বেশি ঘটে গেলে তারই তো বিপদ। অপূর্ব চেয়েও কেন যেন নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছে না, প্রিয়তা নামক রমনীকে নিয়ে ভাবনাটা বাদ দিতে পারছে না।’
আচ্ছা এই প্রেম, ভালোবাসা, মেয়ে এই তিনটা জিনিস জীবনে না আসলে কি খুব খারাপ হয়ে যেত। হতো না তো উল্টো প্রেম, ভালোবাসা, মেয়ে জীবনে আসলেই যত ভেজাল। অপূর্ব দীর্ঘ শ্বাস ফেললো। জীবনের এক অদ্ভুত জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে সে। মাথা, মন, মস্তিষ্ক সব এলেমেলো হচ্ছে অপূর্বের। এই বাবাটা যে এখনও কেন আসছে না এটাই বুঝচ্ছে না অপূর্ব। বাবার সাথে দুই তিন লাইন ত্যাড়া ত্যাড়া কথা বললেই অপূর্বের উদাসীন মনটা বোধহয় ঠিক হতো। অপূর্ব বিয়ারে চুমুক দিলো। মোবাইলটা হাতে নিয়ে বাবাকে একটা মেসেজ দিলো। লিখলো,
‘ তুমি কি উপরে আসবে বাবা নাকি আমি নিচে গিয়ে তোমায় কোলে করে নিয়ে আসবো।’
মেসেজ পাঠানোর তিন সেকেন্ডের মাথাতেই রিপ্লাই আসলো। লিখেছেন অপূর্বের বাবা,
‘ বদমাশ ছেলে আসছি দাঁড়াও, আমায় কোলে তুলতে পারবে তুমি। খালি বড় বড় কথা।’
অপূর্ব হাসে তার বাবার মেসেজ দেখে। আবারও লিখে,
‘ তুমি চাইলে আমি কোলে নিলেও নিতে পারি বাবা শুধু কোমড় ভাঙলে দোষ নেই আমার।’
লিখেই হাল্কা হেঁসে মোবাইলটা রাখে পাশে। সে জানে তার বাবা আর কোনো রিপ্লাই দিবে না।
অপূর্ব আবারও বিয়ারে চুমুক দিয়ে আকাশ পানে তাকায়। খানিকটা নির্জীব কন্ঠে বলে,
‘ আমি তোমার নামে লিখবো কবিতা হয়ে যাবো কবি,
কি করে বলবো বলো, আমি আজও যত্নে রেখেছি তোমার একখানা ছবি!’❤️
সেই ছবি এমনই এক জায়গায় গাঁথা, যে ছবির মালিকও দেখতে পারবে না কখনও আবার যে ছবি আঁটকে রেখেছে সেও বের করে দেখাতে পারবে না কখনো।’
বুঝলে কিছু?”
আবার হাসে অপূর্ব না সে গেছে। ভালোবাসা বোধহয় তাকে পাগল বানিয়ে দিচ্ছে।’
হঠাৎই পায়ের শব্দ পাওয়া গেল অপূর্ব বুঝেছে তার বাবা আসছে। অপূর্ব নিজেকে সামলালো এসব আবেগ মাখা কথা বার্তা তার বাবা শুনলে হয়ে গেল। অপূর্ব আগের ভঙ্গিতেই বসে রইলো চুপচাপ। অশান্ত মনকে শান্ত করতে লাগলো মুহূর্তেই। এরই মাঝে তার পাশে এসে বসলো তার বাবা। খানিকটা গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
‘ আমায় ডেকোছো কেন?’
‘ কেন আমি ডাকতে পারি না বুঝি।’
‘ না পারো না রোজ রোজ তোমার রাতের বেলা ডাকাডাকি আমার পছন্দ নয়।’
‘ পছন্দ কেমনে হবে আমি তো আর সাবানা আন্টি আর ববিতা নই।’
‘ তুমি কি আমায় এই ফালতু কথা বলার জন্য ডেকেছো অপূর্ব?’
‘ না।’
‘ তাহলে বলো জলদি ঘুমাতে যাবো।’
‘ কেন টিভিতে কি সাবানা আন্টির মুভি ছেড়ে এসেছো।’
উওরে চোখ রাঙিয়ে অপূর্বের দিকে তাকালো অপূর্বের বাবা। যা দেখে অপূর্ব বলে,
‘ একদম চোখ রাঙাবে না বাবা আমি তোমার চোখ রাঙায়ানোকে ভয় পায় নাকি।’
অপূর্বের কথা শুনে বেশ রাগী রাগী ভাব নিয়ে বললো অপূর্বের বাবা,
‘ তা পাবে কেন? তোমার মাথায় হাঙ্গাদিন খালি সাবানা আর ববিতাি ঘুরে।’
হাল্কা হাসে অপূর্ব। টপিক পাল্টে স্বাভাবিক কন্ঠে বলে,
‘ আজকের কাজটা কিন্তু তুমি একদমই ঠিক করো নি বাবা?’
‘ ঠিক করি নি মানে, ওমন মেয়ে আর পাওয়া যেত নাকি। মেয়েটা দেখতে কতটা সুন্দর। বলো তো।’
বাবার এবারের কথা শুনে এক অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকায় অপূর্ব তার বাবার দিকে। যা দেখে অপূর্ব কিছু বলার আগেই ধমকানো গলায় বলে উঠল অপূর্বের বাবা,
‘ একদম উল্টো পাল্টা কথা বলবে না অপূর্ব তাহলে কিন্তু তোমার খবর আছে।’
বাবার কথা শুনে উচ্চ স্বরে হাসে অপূর্ব। তারপর বলে,
‘ তাই নাকি তা কয়টার খবর দেখাবে বাবা দশটার নাকি ন’টার।’
অপূর্বের বাবা চুপ হয়ে যায়। না এই ছেলে তার চরম খারাপ। এর সাথে কথায় পারা যাবে না। বউ একটা আনলে তাকেও কথা শুনিয়ে শুনিয়ে মেরে দিবে। এর চেয়ে অপূর্ব বিয়েই না করুক।’
____
আজ ধরনী জুড়ে প্রবল বেগে বৃষ্টি নেমেছে। সেই ভার্সিটি ঢোকার পর থেকেই বৃষ্টি পড়ছে এখনও বন্ধ হওয়ার নাম গন্ধ নেই। ভার্সিটির এক কর্নারে বড় বাগানেও পানিতে ভরে যাচ্ছে। গাছের পাতা হচ্ছে ভেজালো।’
প্রিয়তা দাঁড়িয়ে আছে, অসহায় মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে সে ভার্সিটির করিডোরে বাড়ি কি করে ফিরবে তাই ভাবছে। প্রিয়তার কাছে ছাতা নেই, এখন এই বৃষ্টির মধ্যে বাড়ি ফিরলে নির্ঘাত তার জ্বর আসবে কিন্তু জ্বর আসার চেয়েও অনেক বড় সমস্যা হলো তার বোরকা হিজাব সব ভিজে যাবে। যেটা প্রিয়তা মোটেও চাচ্ছে না। কিন্তু কিছু তো করারও নেই। প্রিয়তা অনেক ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিলো বৃষ্টিতে ভিজেই বাড়ি ফিরবে সে। ভার্সিটি প্রায়ই ফাঁকা সবাই চলে গেছে বলতে গেলে। এখন এখানে একা একা দাঁড়িয়ে থাকাও যাচ্ছে না। কেমন যেন ছমছমে পরিবেশ। প্রিয়তা জোরে নিশ্বাস ফেলে বৃষ্টির ভিড়ে পা বাড়ালো তারপর আস্তে আস্তে ছুটে চললো বাড়ির উদ্দেশ্যে।’
বৃষ্টি নেমেছে, ঘন ফোঁটার ভিড়ে বৃষ্টি নেমেছে খুব। বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট সব ভিজে টুইটুম্বর, রিকশা জুড়ে থাকা নীল রঙের পলিথিনগুলো উড়ে যাচ্ছে একের পর এক প্রিয়তা দেখছে তাদের আর আনমনে হেঁটে যাচ্ছে। ভিজে গেছে সে, কালো হিজাব, বোরকা সব ভিজে গেছে অনেক। প্রিয়তার জিনিসটা মোটেও ভালো লাগছে না। এমন সময় হঠাৎই পায়ে সিলিপ কেটে পড়ে যেতে নিলো প্রিয়তা সঙ্গে সঙ্গে কেউ একজন ধরলো তাকে। জোড়ালো বাতাসের ধাক্কায় মুখের নিকাবটা খানিকটা উপরে উঠে মুখটা দৃশ্যমান হলো তার। প্রিয়তা এক মুহূর্তের জন্য পুরো থমকে গেল চোখ বন্ধ করে ফেললো নিমিষেই।
অন্যদিকে,
অপূর্ব ছাতা হাতে তাকিয়ে আছে প্রিয়তার ভেজালো মুখটার দিকে। আজ অনেকদিন প্রিয়তার মুখটা দেখলো সে। মেয়েটার মুখে এক অদ্ভুত মায়া আছে যেটাকে না চাইতেও এড়াতে পারছে না অপূর্ব। কিন্তু মেয়েটা বড্ড বেখেয়ালি এত বৃষ্টির মধ্যে কেউ ভিজে ভিজে বাড়ি ফিরে নাকি।’
এদিকে,
অপূর্ব প্রিয়তার থেকে বেশ খানিকটা দূরত্বে একটা চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে একটা ছেলে। অপূর্বের মুখটা দেখতে না পেলেও প্রিয়তার মুখটা ঠিকই দেখেছে সে। আজ কতদিন ধরে যে মেয়েটাকে খুঁজছে তারা তার হিসাব নেই। ফাইনালি সেই মেয়েটাকে খুঁজে পেল তারা। বোরকার আড়ালে থাকার কারনে এতদিন চিনতে পারে নি। ছেলেটি একটা ফোন করলো কাউকে। ফোন রিসিভ হতেই বললো,
‘ বস মেয়েটাকে পেয়ে গেছি এতদিন চোখের সামনেই ছিল কিন্তু বোরকা পড়ে থাকায় চিনতে পারে নি।’
উওরে অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তিটি বললো,
‘ মেয়েটি কি একা।’
‘ না বস একটা ছেলেও আছে।’
‘ এবার বুঝলাম কাহিনি ঠিক আছে তুই রাখ আমি দেখছি। মেয়েটাকে ফলো কর আর জায়গাটা চিনে রাখ আমি কালই আসছি ঢাকায়।’
‘ আচ্ছা বস। মেয়েটাকে এখানেরই একটা ভার্সিটিতে পড়ে।’
‘ ওহ তাহলে তো হয়েই গেল কালই মেয়েটাকে ধরে আনতে হবে।’
‘ আচ্ছা বস।’
বলেই ফোনটা কাটলো ছেলেটি। আবারও তাকালো অপূর্ব আর প্রিয়তার দিকে।’
___
‘ আর কতক্ষণ এভাবে চোখ বন্ধ করে থাকবে মেয়ে, আইথিংক এবার তোমার চোখ খোলা উচিত।’
প্রিয়তা চমকালো, ভড়াকালো, হুট করেই অনাকাঙ্ক্ষিত সেই পুরুষালির ভয়েসটা কানে আসতেই চোখ খুললো মুহুর্তে। সামনেই সত্যি সত্যিই অপূর্বকে দেখে হতভম্ব হয়ে অপূর্বের থেকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ালো সে। মুখের নিকাব ঠিক করলো পরমুহূর্তেই। তারপর বললো,
‘ আপনি এখানে?’
‘ হুম আমি তা এভাবে বৃষ্টিতে ভিজচ্ছো কেন?’
উওরে খানিকটা বিব্রত ভরা মুখটা নিয়ে বললো প্রিয়তা,
‘ না মানে ছাতা নেই আমার তাই আর কি।’
‘ তাই আর কি ছাতা নেই বলে এভাবে ভিজে ভিজে বাড়ি ফিরবে একজায়গায় দাঁড়ানো যেত না।’
শেষের কথাগুলো একটু রাগী ভাবেই বলে অপূর্ব। অপূর্বের রাগী গলার কথা শুনে খানিকটা ধমকে চায় প্রিয়তা। মাথা নিচু করে বলে,
‘ আসলে ভার্সিটিতে কেউ ছিল না তাই দাঁড়াতে পারি নি। আমি একা একা কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতাম ভার্সিটিতে তাই বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছিলাম।’
প্রিয়তার কথা শুনে কিছু বলছে না অপূর্ব। নিশ্চুপ থাকলো অনেকক্ষণ। তারপর কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে বলে,
‘ গাড়িতে ওঠো,
প্রিয়তা শুনতে পায় নি অপূর্বের হুকুম করে কথা বলাটা। তাই বলে,
‘ কি?’
‘ গাড়িতে উঠতে বলে ছি।’
‘ গাড়ি লাগবে না অপূর্ব আমি যেতে পারবো।’
অপূর্বের মেজাজ বিগড়ালো, খানিকটা ধমকের স্বরে বললো,
‘ এত বেশি কথা কেন বলো মেয়ে, জানো না অপূর্ব বেশি কথা বলা পছন্দ করে না।’
বলেই কোনো দ্বিধা ছাড়াই প্রিয়তার হাত ধরে এগিয়ে চললো অপূর্ব। আর প্রিয়তার মস্তিষ্ক আটকালো অপূর্বের ‘মেয়ে’ বলা শব্দটার কাছে। তার কাছে আসা দু’দুটো চিরকুটেও তো মেয়ে নাম নিয়ে কথা ছিল। তবে কি অপূর্বই ওই মোবাইলটা পাঠালো? কিন্তু কেন?’
#চলবে…..
[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ। আর গল্প কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে।]
#TanjiL_Mim♥️