আঙুলে আঙুল
পর্ব (২১)
অরুণিমা পূর্বের কফি হাউজটার সামনে এসে রিকশা থেকে নামে। ভাড়া পরিশোধ করতে করতে ঘড়িটায় চোখ বুলিয়ে নিল। দেরি হয়নি, ঠিক সময়েই এসেছে। রিকশাওয়ালাকে বিদায় দিয়ে কফি হাউজের দিকে মুখ করে দাঁড়াল। আগের বারের মতো এবারও পাত্রের ছবি দেখেনি, অর্থাৎ মুখ ও কণ্ঠ উভয় অপরিচিত। সে মিনিট দুই বাইরে অপেক্ষা করার মনস্থির করল। যদি এবারও পাত্র স্বয়ং এসে উপস্থিত হয়, উপকৃত হবে। তেমনটা হলো না, কেউ এলো না। অরুণিমা ভেতরে ঢোকার পূর্বে চারিপার্শ্বে চোখ ঘুরিয়ে আনল। সন্ধিৎসু দৃষ্টি! মিয়া ভাই কিংবা তার সঙ্গীদের কারও মুখের দেখা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। আকাঙ্ক্ষিণী অপূর্ণ মনোবাসনা নিয়ে কফি হাউজের ভেতরে প্রবেশ করল। বেশি দূর হেঁটে যেতে পারল না। মানসিক ও শারীরিক দুইভাবেই দুর্বলতা অনুভব করছে। দরজার নিকটে একটা খালি টেবিলের আসন গ্রহণ করল চট করে। সঙ্গে সঙ্গে টের পেল, তার ভেতর ও বাহির ক্রমাগত কাঁপছে! শ্বাসে টান পড়ছে। চিন্তা-চেতনা রকেটের গতিতে পেছনে ছুটে যাচ্ছে। চোখ দুটি বন্ধ হয়ে আসছে। সে খুব চেষ্টা করেও খোলা রাখতে পারছে না। একাধিক বার মাথা ঝাঁকাল, ঠোঁট কামড়ে ধরল, কাঁধের ব্যাগটা হাত দিয়ে চেপে ধরেও নিজের চেতনাকে বর্তমানে আটকে রাখতে পারল না। থামল গিয়ে মাইমূনের সাথে রেস্টুরেন্টে দেখা করার মুহূর্তটিতে। প্রাকৃতিক ও যান্ত্রিক সকল শব্দ স্তব্ধ হয়ে গেছে। শুধু মাইমূনের কণ্ঠটাই শুনতে পেল,
” অরুণিমা, তুমি শুধু কথা দেও, যখন ভালোবাসতে ইচ্ছে হবে তখন আমাকেই ভালোবাসবে। বিয়ে করার সময় হলে আমাকেই করবে। তাহলে আমিও কথা দিব, তুমি না ডাকলে কখনও তোমার সামনে আসব না। ”
অরুণিমার বন্ধ চোখজোড়া খুলে গেল আপনাআপনি। অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ল সর্বাঙ্গে। নির্দিষ্ট কোথাও দৃষ্টি আটকে রাখতে পারছে না। বসেও শান্তি পাচ্ছে না। শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে অস্বাভাবিকভাবে। সে নিশ্চিত, মাইমূন তার বিয়ের সম্পর্কে জানে। তারপরও আটকানোর চেষ্টা করছে না। সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে না পর্যন্ত। এর একটাই কারণ হতে পারে, তাকে দেওয়া অরুণিমার প্রতিশ্রুতি! যেটাকে সে হালকাভাবে নিলেও মাইমূন নিজের ভবিষ্যৎের ভার ঢেলে দিয়েছে। ভারটা এবার পুরোপুরি অনুভব করতে পারছে। এটাকে উপেক্ষা করা, ঠেলে সরিয়ে দেওয়ার মতো জোর তার নেই।
সঞ্জয়ান সময়ের আগে কফি হাউজে উপস্থিত হয়েছিল। ভেতর দিকের কর্ণারের একটি টেবিলে বসেছিল। অরুণিমাকে দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করতে দেখেও জায়গা ছাড়েনি। তার ইচ্ছা ছিল, চমকের পর্বটা জাঁকজমকভাবে আনন্দের সাথে উপভোগ করবে। তাই একটু সময় নিয়ে পরিকল্পনা করছিল। অরুণিমাকে নজরে রাখতে রাখতে দেখল, সে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছে। তার মনোভাব ও গতিবিধি ঠিকমতো বুঝার আগেই অরুণিমা কফি হাউজ থেকে বেরিয়ে যায়। সঞ্জয়ানও সত্বর বেগে ছোটা শুরু করে। কফি হাউজের কাচের দরজা টেনে বাইরে বেরিয়ে একবার নাম ধরে ডাকও দেয়। অরুণিমা শুনতে পায় না। খালি রিকশায় চড়ে ফিরতি পথে রওনা দেয়। প্রায় আধ ঘণ্টা পর কাঙ্ক্ষিত ও পরিচিত ক্লাবের সামনে পৌঁছায়। অশান্ত হৃদয় নিয়ে রিকশা ভাড়া মিটিয়ে ভেতরে ঢুকে। তার আকস্মিক প্রবেশে ভেতরে উপস্থিতি সবকটা মুখ বিস্মিত হয়। সকলের মধ্যে একই দৃষ্টি ও ভাব। অরুণিমা এক এক করে সবগুলো মুখে চাহনি রেখে বলল,
” মিয়া ভাই কোথায়? আমাকে তার কাছে নিয়ে চলো। ”
তার কণ্ঠে অনুরোধ, ব্যাকুলতা। নয়ন দুটিতে ভীষণ কাতরতার ছায়া।
ক্লাবে উপস্থিতিদের মধ্যে একজন সামনে এগিয়ে এসে বলল,
” আমি নিয়ে যাচ্ছি। ভাবি, আমার সঙ্গে আসুন। ”
অরুণিমা বিনাবাক্যে তাকে অনুসরণ করে চলল। ক্লাবের বাঁদিকে একটি মাটির রাস্তা হারিয়ে গেছে ভেতরে। এই রাস্তা ধরে কিছুদূর এগুতে একটি এক তলা বাড়ি নজরে এলো। বাড়িটি ইটের দেয়ালে ঘেরা। অসংখ্য নারকেল গাছ ও আম গাছ চোখে পড়ে। গেইট নেই, স্থানটি ফাঁকা। অরুণিমা অভ্যন্তরে গমন করতে করতে সুধাল,
” এটা রিহ্যাব? কোথাও সাইনবোর্ড নেই যে। ”
তাকে চিনিয়ে আনা ছেলেটি সামনে অগ্রসর হতে হতে প্রত্ত্যতর করল,
” এটা রিহ্যাব না, ভাবি। মিয়াভাইয়ের বাসা। ”
অরুণিমা আশ্চর্যান্বিত স্বরে বলল,
” আমি শুনেছিলাম, মিয়াভাই রিহ্যাবে। এত দ্রুত ছাড়া পেয়ে গেছে? ”
বাড়ির মূল দরজার সামনে এসে দাঁড়াতে চার-পাঁচটি ছেলে বেরিয়ে এলো বাড়ির দুইপাশ থেকে। তাদের প্রত্যেকের হাতে গাছের কাচা ডাল। অরুণিমা ভ য়ে চমকে ওঠল। বুকের ভেতরটা ধুকপুক করছে। মনে মনে ভাবছে, এদের বিশ্বাস করে এখানে আসাটা ঠিক হয়নি। কেনো বি পদ হলে বাঁচানোর মতো কেউ নেই।
” আসসালামু আলাইকুম, ভাবি। ”
সমস্বরে সালাম পেয়ে অরুণিমা ছিটকে ওঠে। উত্তর দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই। যাকে অনুসরণ করে এখানে এসেছে সে বলল,
” মিয়া ভাই ভেতরে আছে। ভাবি, আসুন। আপনাকে দিয়ে আসি। ”
অরুণিমা ভীরু পায়ে পিছনে পেছনে চলল। একটা রুমের দরজার সামনে এগুতে নাকে তিতকুটে গন্ধ ঠেকে। ধীরে ধীরে গলা ছেড়ে বুক ও পেটে স্থান দখল করে নিতে গন্ধের উৎস খুঁজে পেল। খোলা দরজার ভেতর দিয়ে দেখতে পেল, রুমটার পুরো মেঝেতে সারি সারি মদের বোতল ও সিগারেটের প্যাকেট। তার মাঝে একটি খাট পাতা। সেখানে দুটো মানুষ শুয়ে আছে। একজনের পুরো শরীরে ব্যান্ডেজ। অন্যজনের হাত ও পা শে কল দিয়ে বাঁ ধা। দৃশ্যটি অরুণিমার পিল চম কে দেয়। কলিজা কাম ড়ে ধরে নতুন এক ভ’য়।
” মিয়া ভাই ঘুমাচ্ছে। আমরা ডাকলে রা’গ করবে। ভাবি, আপনি ডেকে তুলেন। আমরা বাইরে আছি। প্রয়োজন হলে ডাকবেন। ”
অরুণিমা হ্যাঁ-না কিছুই বলল না। তার স্থির দৃষ্টি বিছানায় শুয়ে থাকা মানুষ দুটিতে। এমন অবস্থা কেন ওদের? এত মদ আর সিগারেট সাজিয়ে রাখা কেন? বাড়িতে কোনো মেয়ে মানুষ নেই? মিয়া ভাই কোথায়? এমন হাজারও প্রশ্ন বৃষ্টির মতো ঝরে পড়তে থাকে মনের কুঠরিতে। প্রশ্নরা যত জমছে তত ভ’য় বাড়ছে। কোনো খারাপ জায়গায় এসে পড়েনি তো? তার চারপাশে বি’পদ ঘুরে বেড়াচ্ছে এমন অনুভব হচ্ছে। একবার ইচ্ছে হলো দৌড়ে পা’লায়। পর মুহূর্তে কৌতূহলী হয়ে পড়ে। শে’কলে বাঁ’ধা মানুষটাকে চেনা মনে হয়। সে একপা একপা করে অগ্রসর হতে হতে মানুষটাকে চিনে ফেলল। অন্যকেউ নয়, যাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে, সেই। মিয়াভাই! আরেকটু কাছে পৌঁছাতে ব্যান্ডেজে মোড়া মানুষটিকেও চিনে ফেলল। এটা রতন। যে কফি হাউজে অহীদুলের সামনে মিয়াভাই ও তার সম্পর্কের কথা জানিয়েছিল। এদের এই অবস্থা কেন? অরুণিমা সন্দেহচিত্তে মাইমূনের দিকে ঝুকে ডাকল,
” মিয়া ভাই? ”
ডাকটা ঠোঁট থেকে বেরুতেই মাইমূনের চোখদুটি খুলে গেল। খানিক কঠিন স্বরে বলল,
” মাইমূন। তোমার জন্য শুধু মাইমূন। ”
অরুণিমা ভ’য়ে পেছনে সরে গেল এক ধাপ। মাইমূন গলার স্বর নরম করে বলল,
” আমার ভালোবাসার স্মৃতিশক্তি এত দুর্বল? একটা নাম বার বার বলেও শেখাতে পারছি না। ”
তার কণ্ঠে যতটুকু আফসোস ঠিক ততটুকুই দুষ্টুমির আভাস। অরুণিমা দূর থেকেই শুধাল,
” আপনাকে বেঁ’ধে রাখছে কেন? ”
শে’কলের মাপ যথেষ্ট বড় হওয়ায় মাইমূন নিজের মতো করে নড়াচড়া করতে পারে। সে উঠে বসে। ঠোঁটে উষ্ণ হাসি নিয়ে জানাল, সে রিহ্যাবে ভর্তি হয়েছিল। সেখান থেকে অরুণিমার বিয়ের খবর পায়। রতনকে মানা করা সত্ত্বেও অরুণিমার সামনে যায়, তাদের সম্পর্কের কথা জানিয়ে অপ’মানিত করেছে। এ কথাটা জানার পর, তখনই রিহ্যাব থেকে হতে ছুটি চায়। মাইমূনের চিকিৎসা শুরু হয়ে গিয়েছিল। কর্তৃপক্ষ আসতে না দিলে পা’লিয়ে আসে ও রতনকে বেদম পে’টায়। পরবর্তীতে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও রিহ্যাবে যাওয়ার মন বানাতে পারেনি। মনে হয়েছে, তার অনুপস্থিতিতে এই ছেলেগুলো আবার কোনো ঝামেলা তৈরি করবে। আবার মাইমূন যেখান থেকে একবার পালিয়েছে, সেখান থেকে আবারও পালাতে পারবে। মদের নেশা উঠলে তার মাথা ঠিক থাকে না। যদি সত্যি পালিয়ে গিয়ে আবারও মদ খাওয়া শুরু করে? তাহলে তো অরুণিমার চাওয়াটা পূরণ করতে পারবে না এজন্য সিদ্ধান্ত নেয়, সে রিহ্যাবে যাবে না। বাড়িতেই থাকবে। নিজের মতো করে এই নেশা কাটিয়ে উঠবে। সেই উদ্দেশ্যে নিজেকে বেঁ’ধে রেখেছে। সামনে নেশা দ্রব্যও সাজিয়ে রেখেছে। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে এলে, ছেলেরা তাকে পে’টাবে। এই আ’দেশ তাদের উপর ধার্য করা হয়েছে।
মাইমূনের আচরণ শুরু থেকেই অদ্ভুত লেগেছিল অরুণিমার কাছে। সেটা এবার ভয়’ঙ্করে রূপ নিল। সভ’য়ে জিজ্ঞেস করল,
” আমার বিয়ে নিয়ে যখন মিথ্যা বলেছিলাম, তখন আপনি পাগলের মতো দৌড়ে এসেছিলেন। এবার তো সত্যি হচ্ছে, এরপরও এত শান্ত? কেন? ”
মাইমূনের ঠোঁটের হাসিটা একই রয়েছে। দৃষ্টিটা প্রগাঢ় করে বলল,
” আগের বার প্রতিশ্রুতি ছিল না, এবার আছে। যাকে ভালোবাসি তাকে অবিশ্বাস করি কী করে? আমার ভালোবাসা যত দামি তার মুখের কথাটাও ঠিক ততটাই দামি। ”
কথাটা অরুণিমার হৃদয়ের গভীরে গিয়ে আঘাত করল। কয়েক সেকেন্ডের জন্য ভাষা হারিয়ে ফেলল। হতবুদ্ধিতে তাকিয়ে থাকলে মাইমূন বলল,
” শুনেছি, ভালোবাসার বাস বুকের বাঁপাশে। সেই হিসেবে আমার ভালোবাসার সঠিক স্থান তো আমার বুকেই। সে অন্যত্র গেলে শান্তি পাবে না। তাই না, ভালোবাসা? ”
প্রশ্নটা অরুণিমার ভেতরটা নাড়িয়ে দিল। এই মানুষটা কী করে জানল, সে অশা’ন্তিতে ছিল? সে বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে মাইমূনের মুখটায় চেয়ে আছে। কয়েক মুহূর্ত পর নিজের বোকামি টের পেয়ে লজ্জিত হলো। দৃষ্টি সরিয়ে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বলল,
” আমি আসছি। ”
” আমি এগিয়ে দিচ্ছি। একটু অপেক্ষা করো। ”
মাইমূন গলা হাঁকিয়ে স্বপনকে হাজির করল। ইশারায় শে’কল খুলে দিতে বলে নিজের ভালোবাসার মানুষটির মুখের দিকে তাকিয়ে বলল,
” যতক্ষণ তোর ভাবি সাথে আছে ততক্ষণ আমি নিরাপদ। বাঁ’ধনের প্রয়োজন নেই। ”
অরুণিমা ধীর পদক্ষেপে রুম থেকে বেরুচ্ছে। তার পেছনে সামান্য দূরত্বে মাইমূন। সে মূল দরজার দিকে অগ্রসর হলেও দৃষ্টি ঘুরছে আশপাশটায়। সামনের বারান্দার শেষ মাথায় রান্নাঘর। দূর থেকেও বুঝা যাচ্ছে চুলা দুটি ধূলো ও মাকড়শার জালে আটকে পড়ে আছে। তার নিচে একটি প্লাস্টিকের ঝুড়ি। সেখানে খাবারের প্যাকেটে ছড়াছড়ি। অরুণিমা শ্বাস বন্ধ করে জিজ্ঞেস করল,
” রতনকে এখানে রেখেছেন কেন? হাসপাতালে ভর্তি করে দিতেন। ”
” দেখাশোনার জন্য আমাকে সেখানে যেতে হতো। এটা তো সম্ভব নয়। ”
” ওর পরিবার থাকলে হবে না? আপনাকেই থাকতে হবে? ”
” রতনের বাবা-মা নেই। আমরাই ওর পরিবার। ”
অরুণিমা থামল। ঘাড় ফিরে তাকাল মাইমূনের দিকে। মুখের ভাবে দুঃখের স্পর্শ। মূল দরজা পর্যন্ত পৌঁছাতে পৌঁছাতে আরও কিছু প্রশ্ন করা হলো। সেখান থেকে জানতে পারল, মাইমূনের সাথে যাদেরকে সে দেখেছে, তারা সকলেই পিতৃ-মাতৃহীন। তথ্যটা তাকে এত দুঃখিত করল! হৃদয়ে ভীষণ পীড়া দিল। সে ভার স্বরে সুধাল,
” আপনারও কি…”
কথা সম্পন্ন হওয়ার পূর্বেই মাইমূন উত্তর করল,
” না, আমি ওদের মতো এতটাও দুঃখী নই। আমার বাবা-মা দুজনেই বেঁচে আছে। ”
” তারা কোথায় থাকে? ”
মাইমূন প্রশ্নটা এড়িয়ে গিয়ে বলল,
” আজকেই সব জানতে হবে? এই প্রশ্ন-উত্তরের বাহানায় আমরা আরও কয়েকবার দেখা করতে পারব। সেই সুযোগটা দিবে না? ”
অরুণিমা অন্যদিকে তাকাল। মাইমূন তাকে মাটির রাস্তা শেষ করে ক্লাবের এখানে পৌঁছে দিল।
__________
বাসায় ঢুকে বাবার মুখোমুখি হতে হয় অরুণিমাকে। সে সত্যটা গোপন করতে পারেনি। সরাসরি নিজের প্রতিশ্রুতির কথা জানায়। অসীউল্লাহ অনেক বুঝাতে চেয়েছে। সে বুঝেনি। উল্টো এটা বুঝিয়ে দিয়েছে, যদি এখন বিয়ে করতে হয় তাহলে মাইমূনকেই করবে। অসীউল্লাহ পরেরদিন সঞ্জয়ানের সাথে দেখা করে। মাইমূনের জন্যই যে অরুণিমা কফি হাউজ থেকে চলে আসে, এই কথাটা গোপন রাখে। মিথ্যা বলে তার মনের সন্দেহ দূর করে দেয় ও দ্রুত বিয়ের আয়োজন করার আর্জি করে। সঞ্জয়ানও আর ভিন্ন মত পোষণ করে না। তিনদিনের মধ্যে সব ব্যবস্থা করে। বিয়ের আগের দিন মাইমূনকে পুলিশে ধ’রে নেয়। অরুণিমা এই খবরটা জানত না। বাবার মান-সম্মান রক্ষা করার জন্য পাত্রপক্ষের সামনে গিয়ে জানতে পারে, পাত্র স্বয়ং সঞ্জয়ান সাখাওয়াত। পাত্রী দেখাও নয়, বিয়ের আয়োজন হয়েছে। তার শুরুটাই হয় আংটি বদল দিয়ে।
চলবে