আঙুলে আঙুল
পর্ব (১৯)
অরুণিমা কফি মুখে দিয়ে চোখ-মুখ কুঁচকে ফেলল। অহীদুলের আগ্রহান্বিত দৃষ্টি তার দিকেই নিবদ্ধ আছে। সে খেয়াল করে বলল,
” কফিটা বিশ মিনিট আগে দিয়ে গেছে, তাই ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। ”
ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়ায় কফির স্বাদ হয়েছে তেতো, বিদঘুটে। অরুণিমা দ্বিতীয় চুমুক দেওয়ার আগ্রহ পেল না। তাই টেবিলে নামিয়ে রেখে বলল,
” আমি তো জানতাম, এসব জায়গায় অর্ডার করার পরও খাবার পেতে বিশ-ত্রিশ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়। ”
” ঠিকই জানেন। এখানেও তাই। ”
” তার মানে আপনি মিনিটের বেশি সময় অপেক্ষা করেছেন? ”
অহীদুল এতক্ষণ কফিতে চুমুক দেয়নি। এবার দিল। অরুণিমার মতো তার মুখমন্ডলের কোনো অংশই কুঁচকাল না। দিব্যি স্বাভাবিক। একের পর এক চুমুক দিয়ে যাচ্ছে। সেই অবস্থায় প্রত্যুত্তর করল,
” না। বিশ মিনিটই করেছি। এখানে আসার পূর্বে কল করে কফির কথা বলে রেখেছিলাম। ”
অরুণিমা জবাবে মৃদু হাসল। বুঝে গেল, অহীদুলকে বিশ মিনিট অপেক্ষা করানোর শাস্তি এই বিস্বাদের কফি। যা উপেক্ষা করা মানে তাকে অপমান করা। এই মুহূর্তটাকে অপমানে ভাসিয়ে দেওয়ার মনোবাসনা নেই। তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও ঠাণ্ডা কফি পান করতে শুরু করে অহীদুলকে সঙ্গ দিতে চাইল। সেটাও বেশিক্ষণ সম্ভব হলো না। চোখের চাহনি অহীদুলের শরীরটা ছাড়িয়ে পেছনের টেবিলটায় পৌঁছাতে দেহ, মন পাথরের মতো শক্ত ও নিশ্চল হয়ে এলো নিমিষেই। মিয়া ভাইয়ের সেই ছেলেটা বসে আছে তার দিকে মুখ করে। চোখের পাতা দুটো এক সেকেন্ডের জন্যও পলক পড়ছে না। কী আকুতি, ব্যাকুলতা সেই চাহনিতে! কিছু একটা বলার তীব্র প্রার্থনা।
” পরিচিত? ”
অহীদুলের আকস্মিক প্রশ্নবাণে অরুণিমা চমকে ওঠল। চট করে দৃষ্টি সরিয়ে আনল। দোলাচল চিত্তে দুই হাতে কফির গ্লাস চেপে ধরে খেতে শুরু করার পরও ছাড় পেল না। আগের প্রশ্নটায় আরেকটু স্পষ্টভাবে শুনতে পেল,
” ছেলেটি আপনার পরিচিত? ”
অরুণিমা বিচলিত স্বরে উত্তর করল,
” না, চিনি না। ”
” আপনার কি গরম লাগছে? হঠাৎ করে ঘামছেন যে! ”
অহীদুলের দৃষ্টিভঙ্গি তীক্ষ্ণ ও সন্দেহগ্রস্থ। অরুণিমা ওড়না দিয়ে ঘাম মুছার জন্য ব্যস্ত হলে সে টিস্যু বক্স এগিয়ে দিয়ে বলল,
” কাঁপছেনও। তার মানে গরম নয় ভয়। অরুণিমা, আপনি ভয় পাচ্ছেন! ভয়ের কারণ কি ঐ ছেলেটি? ”
এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই অরুণিমা। সুযোগও পেল না। অহীদুল ঘাড় বাঁকিয়ে চড়া স্বরে ডাকল,
” এই ছেলে? এদিকে এসো তো। ”
ছেলেটিও খানিক ঘাবড়ে গেল। ধীর পদক্ষেপে তাদের পাশে এসে দাঁড়ালে অহীদুল প্রশ্ন করল,
” এনাকে চেন? ”
অরুণিমা না তাকিয়েও বুঝল, তাকে উদ্দেশ্য করেই প্রশ্নটা করেছে। সে তাৎক্ষণিক উত্তর করল,
” না চিনে না। আমিও চিনি না। ও কে চলে যেতে বলুন, প্লিজ। ”
তার এই অনুনয়-বিনয়ের বিপরীতে অহীদুল অভিমত প্রকাশ করতে পারল না। তার পূর্বেই ছেলেটি জোর গলায় বলল,
” মিথ্যা বলছেন কেন, ভাবি? আমরা তো একে-অপরকে চিনি। আমি রতন। মিয়া ভাইয়ের সঙ্গে থাকি। দেখেছেন তো। ”
অহীদুলের চোখ-মুখ কঠিন হলো। ধারাল ও সন্দেহে ভরপুর চোখজোড়া রতনের থেকে সরিয়ে আনল। অরুণিমার মুখপানে স্থির রেখে প্রশ্ন করল,
” ও আপনাকে ভাবি ডাকছে কেন? এই মিয়াভাইটা কে? আপনার কী আগে বিয়ে হয়েছিল? ”
তার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিল রতন। নির্ভয়ে সঠিক তথ্যটা বলল,
” বিয়ে হয়নি এখনও। হবে। তার আগে প্রেম চলছে। ”
অহীদুলের মাথায় ভারী কোনো বস্তুর আঘাত পড়ল যেন! তেমনি আঘাতপ্রাপ্ত গলায় সুধাল,
” আপনি প্রেম করছেন! এ বিষয়ে সঞ্জয়ান কিছু বলেনি আমাকে। ”
অরুণিমা বিপদগ্রস্থ। অসহায় সুরে প্রতিবাদ করল,
” আমি প্রেম করছি না। ও ভুল বুঝছে। ”
রতনও চুপ থাকার ছেলে নয়। আগের চেয়েও অধিক জোরাল স্বরে বলল,
” আবার মিথ্যা বলছেন, ভাবি। আমি নিজে দেখেছি, আপনারা রেস্টুরেন্টে দেখা করেছেন। ভালোবাসার চিঠি আদান-প্রদান করেছেন। ”
” ঐ চিঠিতে ভালোবাসা নেই ”
” তাহলে মিয়া ভাই রিহ্যাবে গিয়েছে কেন? আপনি বলেননি, মদ-সিগারেট থেকে দূরে থাকতে? ”
অরুণিমা অত্যন্ত বিরক্ত স্বরে পাল্টা প্রশ্ন করল,
” মদ-সিগারেট থেকে দূরে থাকতে বললে ভালোবাসা হয়ে যায়? ”
অহীদুল এতক্ষণ চুপচাপ দুজনের কথা-বার্তা শুনছিল। এবার মুখ খুলল। অরুণিমার উদ্দেশ্যে বলল,
” আমার এত কিছু জানার প্রয়োজন নেই। শুধু জানতে চাই, তুমি মিয়াভাইকে ভালোবাসো কিনা। ”
অরুণিমা তাৎক্ষণিক কিছু বলতে পারল না। নত দৃষ্টি নিয়ে নীরব দাঁড়িয়ে থাকলে অহীদুল পুনরায় বলল,
” অরুণিমা? তাকাও আমার দিকে। ”
সে ধীরে ধীরে দৃষ্টি উঁচু করল। অহীদুলের চোখে চোখ পড়তে সে প্রশ্ন করল,
” মিয়াভাইকে ভালোবাসো? ”
অরুণিমা কয়েক সেকেন্ড স্থির চেয়ে থাকল। তারপরে চাহনি নিচে নামিয়ে নিতে নিতে মাথা দু’পাশে নাড়ল। অহীদুল কী বুঝল কে জানে! বিনাবাক্যে তাকে আর রতনকে ফেলে কফি হাউস থেকে বেরিয়ে গেল।
__________
” এত মনোযোগ দিয়ে কী দেখছিস, বাবা? ”
সঞ্জয়ান চমকাল। গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখতে থাকা ছবিটা হাত থেকে পড়ে গেল সঙ্গে সঙ্গে। স্বর্নলতা উবুড় হয়ে ছবিখানা তুলে মুখের সামনে ধরে আছে। কয়েক সেকেন্ড পর ঠোঁট দুটো প্রসারিত করে বললেন,
” ভারি মিষ্টি দেখতে। কে ওরা? ”
সঞ্জয়ান শুরুতে হকচকিয়ে গিয়েছিল। সুযোগ পেলে হয়তো ছবিটাও লুকাত। এখন আর সেই চেষ্টা করল না। স্বাভাবিক স্বরেই বলল,
” দুই বোন। অরুণিমা ও শূভ্রা। ”
” কোনটা কার নাম? ”
সঞ্জয়ান ছবির উপর আঙুল রেখে চিনিয়ে দিলে তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
” ওদের ছবি তোর কাছে কেন? ”
” চাচা দিয়েছেন। ”
” চাচা কে? ”
” অরুণিমার বাবা। আমি চাচা বলে ডাকি। ”
স্বর্নলতা বুঝতে পেরেছেন এমন ভঙ্গিতে মাথা নাড়লেন। পরক্ষণে আবারও প্রশ্ন ছুড়লেন,
” তোকে ছবি দিয়েছে কেন? ”
” বিয়ের জন্য। অরুণিমাকে বিয়ে দিতে চাচ্ছেন। ”
বিয়ের কথা শুনে স্বর্ণলতা আনন্দে উচ্ছ্বসিত হলো। পর মুহূর্তে বিস্ময় ঝরে পড়ল কণ্ঠ থেকে। বললেন,
” তুই বিয়ে করবি আমাকে জানাসনি তো। নিজের বিয়ের ঘটকালি নিজেই করছিস! ”
সঞ্জয়ান বলতে চাইল, ঘটকালি নিজের জন্য নয় অন্য কারও জন্য করছে। কিন্তু বলা হলো না। মনসুর সাখাওয়াতের গলার স্বর পাওয়া গেল। দরজা থেকে বলছেন,
” কার বিয়ের কথা হচ্ছে? ”
স্বর্ণলতা এগিয়ে গিয়ে স্বামীর হাত ও কাঁধ ধরলেন। ভেতরে হাঁটিয়ে নিতে নিতে বললেন,
” তোমার ছেলের। ”
তিনি ছেলের দিকে তাকালেন সরাসরি। বললেন,
” এখনই কিসের বিয়ে? বয়স কত তোর? ”
বাবার প্রশ্ন শুনে সঞ্জয়ান থতমত খেল। বয়সটাও ভুলে গেল বোধ হয়। তাকে রক্ষা করল জন্মদাত্রী। স্বামীর পাশ থেকে বললেন,
” পুরো ছাব্বিশ। ভুলে গেছেন? ”
” ভুলব কেন? এই বয়সে আমি বাবার খেতে হাল চষে বেড়িয়েছি। ”
” আপনি বাবার ছেলে ছিলেন তাই হাল চষেছেন। সঞ্জয়ান আমার ছেলে তাই বিয়ে করবে। ”
কথাটা বলতে বলতে মনসুর সাখাওয়াতকে ছেলের বিছানায় বসিয়ে দিলেন। তারপরে ছেলের উদ্দেশ্যে বললেন,
” উনার কথা বাদ দে তো, বাবা। তুই আমাকে বল, অরুণিমাকে পছন্দ হয়েছে নাকি। ”
মনসুর সাখাওয়াত ছেলের পছন্দ জানানোর পূর্বে বললেন,
” ওর পছন্দ হলে হবে না। আমার পছন্দ হতে হবে। নাহলে বউ নিয়ে ঘরে ঢুকতে দিব না। ”
স্বর্ণলতা রাগ চোখে তাকালেন। পর মুহূর্তে দারুন উৎসাহে দুই বোনের ছবিটা দেখালেন স্বামীকে। তিনি বয়সের চাপে ছোট হয়ে আসা চোখদুটো আরও ছোট করে ছবিতে তাকিয়ে সুধালেন,
” এখানে অরুণিমা কোনটা? ”
স্বর্ণলতা দুষ্টুমি করে বললেন,
” আপনি খুঁজে বের করেন। দেখি, ছেলের পছন্দ খুঁজে পান নাকি। ”
সঞ্জয়ান বাবা-মায়ের দিকে চেয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলল। সে ঠিক জানত, অরুণিমাকে তারা এক দেখায় পছন্দ করে ফেলবেন। তেমনটায় হয়েছে। তবুও খুশি হতে পারছে না। কারণ, অরুণিমার বাবা তাকে পছন্দ করেনি। যেদিন অরুণিমার বিয়ের কথা তুলল সেদিন ‘ মেয়ের যোগ্য ছেলে পাবে কোথায় ‘ প্রশ্নটা এমনভাবে করেছিলেন যে সে বিস্মিত না হয়ে পারল না। এই সমাজে সকলে ছেলের সাথে মেয়ের যোগ্যতার তুলনা করে। অসীউল্লাহ করছেন মেয়ের সাথে ছেলের যোগ্যতার তুলনা। সেই মুহূর্তে তার মনের আয়নায় অরুণিমাকে মনে হয়েছিল, নিঁখুত সুন্দরী, সর্বগুণে গুণান্বিতা। যার কখনও নিন্দা করা যায় না। শুধু প্রশংসা করতে হয়। তার পাশে নিজেকে বড্ড ছোট, বেমানান লাগছিল। যেন স্বর্গীয় কিছু পাওয়ার অবিশ্রাম বৃথা চেষ্টা!
সঞ্জয়ানের মোবাইলটা বেজে ওঠল। সে পকেট থেকে মোবাইল বের করল। অহীদুল কল করেছে। বাবা-মায়ের থেকে একটু দূরে সরে কলটা ধরল। ওপাশের কথা শুনতে শুনতে তার মুখের রঙ বদলে গেল। কিছুটা চড়া স্বরে বলল,
” অহীদ, তুই ভুল বুঝছিস। অরুণিমা কাউকে ভালোবাসে না। ”
অহীদুল দৃঢ় স্বরে উত্তর করল,
” বাসে। ”
” ও তোকে বলেছে? ”
” মুখে বলেনি। ”
” তাহলে? ”
” আমি যখন জিজ্ঞেস করেছি, সে মিয়াভাইকে ভালোবাসে নাকি। তখনই চোখ নামিয়ে নিয়েছে। ”
” এতেই প্রমাণ হয়ে গেল, ও মিয়াভাইকে ভালোবাসে? তোর সাথে আজই পরিচয়। ভয় পেয়ে হয়তো…”
সঞ্জয়ান বাক্যটা সম্পূর্ণ করতে পারল না। অহীদুল বলল,
” হ্যাঁ, ভয় পেয়েছে। কারণ, আমি সত্যটা ধরে ফেলেছি। সঞ্জু তুই হয়তো ভুলে যাচ্ছিস, আমি পেশায় একজন পুলিশ। শুধু মুখের কথায় না, চোখ ও চালচলনেও সত্য উদ্ঘাটন করতে পারি। ”
বন্ধুর কল কেটে দিল। অরুণিমার নাম্বারে কল ঢুকাতে বন্ধ পেল। মুহূর্তে দুশ্চিন্তা ছড়িয়ে পড়ল মুখে ও বুকে। উৎকণ্ঠায় বেরিয়ে এলো ছায়ানীড় থেকে। মা-বাবা কেউই ছেলের চলে যাওয়া খেয়াল করল না। মনসুর সাখাওয়াত অনেকটা সময় মেয়ে দুটোকে খুঁটিয়ে দেখে সিদ্ধান্তে পৌঁছালেন। ডানপাশের মেয়ের মুখের উপর হাতের আঙুল রেখে বললেন,
” এই আমার ছেলের পছন্দ। ”
স্বর্ণলতা মুখ বাঁকিয়ে বললেন,
” জি না। এই মেয়েটি অরুণিমা নয়, শূভ্রা। আপনার ছেলের পছন্দ অরুণিমা। ”
” আমার পছন্দের উপর আঙুল তুলছ? ”
” উহু, বুকে টানছি। আপনার কী মনে হয়, আপনার মনের ষড়যন্ত্র আমি বুঝতে পারিনি? ”
” কী বুঝেছ? ”
” ছেলের মতো আপনারও অরুণিমাকেই পছন্দ হয়েছে। কিন্তু দেখতে আমার চেয়েও সুন্দরী মেয়ে আপনার চোখের সামনে দিয়ে ঘুরঘুর করবে এটা সহ্য হবে না। তাই অরুণিমাকে রেখে শূভ্রার উপর আঙুক রেখেছেন। ”
” কচু বুঝেছ! ”
__________
কলিংবেলের শব্দ পেয়ে শূভ্রা রুম থেকে বেরিয়ে এলো। দরজা তাকে খুলতে হলো না। নাজিয়া বেগমই খুলেছেন। সে আগ্রহ নিয়ে দরজার ওপাশের মানুষটার মুখ দেখতে চাইল। মুখটা দৃষ্টি সীমা আসতে তার বুকের মধ্যে আগুন জ্বলে ওঠল। স্বগোতক্তি করল, ‘ সাজনা শাক এখানেও চলে এসেছে! ‘ সে মুখ ফিরিয়ে নিজের রুমে ঢুকতে চাইল, তখনই মায়ের গলা পেল। ফিসফিসে বলছে, ‘ তুই উনার বসার ব্যবস্থা কর। আমি দোকান থেকে এক প্যাকেট বিস্কুট নিয়ে আসি৷ ‘ শূভ্রা বুঝতে পারল, মা তার পড়ার টেবিলের সামনে থাকা চেয়ারটা এনে বসতে দিতে বলেছে। সে আনল না। সঞ্জয়ানের সামনে পড়ে থাকা টুলটাও সরিয়ে নিতে চাইল। সঞ্জয়ান ধরে ফেলল। জোর করে টেনে নিয়ে তার উপর বসে বলল,
” একমাত্র সাজনা শাকই পারবে তোমার এই বেয়াদবি ছাড়াতে। অপেক্ষা করো, সঠিক সাজনা শাককে তোমার সামনে হাজির করব। ”
সেও তেজ দেখিয়ে পাল্টা জবাব দিল,
” একমাত্র শূভ্রার বেয়াদবিই পারবে, আপনার ভালো মানুষি মুখোশটা খুলতে। অপেক্ষা করুন, বেঠিক সাজনা শাককে সকলের সামনে হাজির করব। ”
চলবে