অস্তিত্বের খোজে part 15

0
720

অস্তিত্বের খোজে
নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ১৫


* নিজেকে কন্টোল আর না করতে পেরে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে আছি। আজ কোন লজ্জা বা ঘৃনা লাগছেনা।
– শুভ্র পরীকে আরও একটু জাগিয়ে পরীর কপাল নিজের কপালের সাথে ঘেষে বলল কষ্ট হচ্ছে পরী!
…………………………….?
– কথা বলবা না! কাঁদছো কেন এখন। সময় থাকতে সব কিছু করতে হয়। আমার হাতে যে আর সময় নেই। আমার আশীর্বাদ হয়ে গেছে।
*
*
– কথাটি শুনে আরও জোড়ে চেপে ধরলাম শুভ্রকে।
– আহ্ এত্ত জোড়ে কেউ ধরে! অস্তি মাংস তো সব এক করে দিবা। ছাড়ো অনেক হয়েছে কথা যখন বলবাই না তাহলে তোমাকে আর কতক্ষণ এভাবে জাগিয়ে ধরে থাকব!
*
*
*
*
– বাহ্ শুভ্র যে তোমার নিজের স্ত্রী হবে তাকে তুমি একটু টার্চ করেও দেখলে না কিন্তু অন্য মেয়েকে বেশ জোড়ে শক্তি দিয়ে ঠিকিই বুকের সাথে লেপটে ধরে আছ! কথাগুলো বলে নিতু শুভ্রর সামনে এসে দাড়াল। পিছে নিদ্রাও এসে দাড়িয়ে গেল।
*
*
– শুভ্র শুধু নিতুর দিকে তাকিয়ে পরীকে একটি কিস করে বলল ছাড় পরী এখানে অনেকে এসেছে।
– না ছাড়বোনা বলে জড়িয়েই ধরে ফুপিয়ে কাঁদতে লাগল মেয়েটা।
*
*
*
*
– এই মেয়ের সাহসটা দেখে আমি just অবাক হয়ে যাচ্ছি। এই মেয়ে ছাড়ো বলছি বলেই পরীকে একটা হ্যাচকা টান দিয়ে শুভ্রর কাছ থেকে আলাদা করেই কয়েকটা চড় বসিয়ে দিল।
– নিতু বড্ড বেশি বাড়াবাড়ি করছো ওর গায়ে হাত তোলার হুকুম কে তোমায় দিয়েছে বলে পরী কে সরিয়ে আনল শুভ্র।
*
*
*
*
– কিসের হুকুম তুমি জানোনা মেয়ে মানুষ সব কিছুর ভাগ দিবে কিন্তু তার ভালবাসার স্বামীর ভাগ কখনো দিবে না বুঝছো মি. শুভ্র সেন?
– এই মেয়ে তোমার লজ্জা করেনা পর পুরুষকে এই মধ্য রাতে জড়িয়ে ধরতে! না জানি আরও কতকি করছে।
*
*
*
*
– নিতু তুমি বুঝতে একটু ভূল করছো বলে নিদ্রা ওকে থামানোর চেষ্টা করল।
*

– কিসের ভুল নিজের চোখকে তোহ আর অবিশ্বাস করা যায় না।
দিদি আপনি না বলছিলেন মেয়েটি বিবাহিত। কই ওর বর কে দেখতে পেলাম না। আর বর থাকবেই বা কিরে পরের ছেলের সাথে যে ফষ্টিনষ্টি শুরু করে দিয়েছে সেখানে কোন পুরুষ তার বেশ্যা স্ত্রী কে নিয়ে কিভাবে রাত কাটাবে। শুভ্র না হয় পুরুষ মানুষ ওর দোষ থাকতেই পারে কিন্তু ও একটা অন্য ধর্মের মেয়ে হয়ে কেন আরেক ধর্মের ছেলের সাথে পতিতাবৃত্তি করবে! এতই যখন করার সখ জেগেছে পতিতালয় খোলা আছে সেখানে যেতে পারলেনা রাস্তার মেয়ে কোথাকার বলেই আবার পরীর কাছে গিয়ে ওকে ধাক্কা দিয়ে শুভ্রর কাছ থেকে সরে দেয়।
*
*
*
*
– পরী দোলনার উপর গিয়ে ঠাশ করে পড়ে যেতেই শুভ্র সোজা নিতুকে একটা চড় বসে দেয়। নিতু নিজের সীমার ভিতর থাকো। সীমা অতিক্রম করতে যেওনা। কেঁদেও কুল পাবেনা তাহলে।
*
*

– তুমি আমার গায়ে হাত তুললে! এই নিতুর গায়ে……. তাও একটা ব্যাভিচারী, পতিতা, বেশ্যা, নোংরা মেয়ের জন্য….. আমি শুধু এই বাসায় আসি তার পর ঐ মেয়ের ব্যবস্থা কি করি কল্পনাও করতে পারবানা।
*
*
*
*
– পরী ওখান থেকে ছুটে বের হয়ে নিচে চলে গেল কাঁদতে কাঁদতে। শুভ্র কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেল।
*
– এই নিতু তুমি আজ যা করছো তারপরও কিভাবে আশা কর এ বাড়িতে তোমাকে আমি শুভ্র নিয়ে আসব!
*
– আনবেনা মানে তোমার ঘাড়ে আনবে আমাকে এই বাসায়। সোজা থানায় তুলব। হবু স্ত্রীকে রেখে পরকিয়া করো তাও তার সামনে। সবার সামনে আশীর্বাদ, রিং পড়ানো হয়ে গেছে আর আমার সম্মান নিয়ে টানাটানি করার ফল ভোগ করতে হবেনা। তোমার পুরো বংশকে ১৪ সিখের ভাত খাওয়াই ছাড়ব। আমিও একজন ম্যাজিষ্ট্রেও। তোমার মত পদমর্যাদা না হতে পারে কিন্তু নারী নির্যাতনের মামলা দিয়ে তোমাকে সোজা করব। দেখি তুমি কতটা নিজের সম্মান নিয়ে চলতে পারো বলেই নিতু চলে গেল।
*
*
*
*
– শুভ্র নিদ্রার দিকে তাকিয়ে বলল একটা মাত্র কাজ দিয়েছি বৌদি তোমায় আর সেটাও ঠিকঠাক করতে পারোনা!
– স্যরি শুভ্র চোখের সামনে থেকে কখন যে নিতু উপরে আসছে বুঝতেই পারিনি। এবার কি হবে শুভ্র! নিতু যা থ্রেড দিয়ে গেল তোমাকে বিয়ে না করে ছাড়বে না দেখছি।
*
*
*
*
-ছাড়তো ওর দৌড় কতদুর সেটা আমি জানি। বলেই শুভ্র নিচে নেমে গেল। পিছে নিদ্রাও নামল।

*
– অর্পিতা সেই তখন থেকে বকর বকর করতেই ছে। নিতাই সামনে এসে বসে আছে। যদি ওনার নাম বলে দেয় অর্পিতা তাহলে আর রক্ষা নাই।
– দাদু আর এক পেগ এনে দিবে?
– চুপপপপপ কি শুরু করেছিস গালে চড় না পড়লে দেখছি ঠিক হবিনা। কখন পলাকে বললাম লেবু জল আনতে এখনও দেখছি কোন খোঁজ নেই।( নিতাই সেন)
*
*
– দাদু তুমি অর্পিতাকে এগুলো খাওয়ার অনুমতি দিছো!(কৌশিক)
– চুপ কর তোর বাবা শুনলে আমায় আর আস্ত রাখবেনা। (নিতাই)
*
*
*
*
– পরী দরজা বন্ধ করে ঝিম মেরে বসে আছে ফ্লোরে। শুভ্র একবার ডেকে গেছে তবুও দরজা খোলেনি মেয়েটা। খানিক পর পর শুধু কেঁপে উঠছে। হয়ত নিশব্দে কাঁদছে।
*
*
– নিতু বাসায় এসে চুপ করে বসে আছে। নানা কথা চিন্তা করছে। বাসায় এসে বাচ্চাদের মত চিল্লাচাটি করার মত বেকুবের কাজ করে না সে। আমি বিসিএস ক্যাডার তবুও আমাকে চাচ্ছেনা। তার ফলাফল শুভ্র ওকে প্রচুর ভালবাসে। প্রথম দিন থেকেই আমার সন্দেহ ছিল। আজকের পার্টিতে ওকে শুভ্র বার বার দেখছিল আর মুচকি হাসছিল। হয়ত মেয়েটা মুসলিম বলে কিছু করতে পারছেনা। আর এটাই আমার সুযোগ। একটা হাটুর বয়সীর মেয়ের কাছে এই নিতু কখনও হারতে পারেনা। এর জবাব ওকে হারে হারে দিব বলেই ফোনটা হাতে নিল। ভ্যাগ্গিস অর্পিতার কাছ থেকে ঐ বজ্জাত মেয়েটার নাম্বার নিয়েছিলাম। ব্লাক মেইল কেমন করে করতে হয় এবার দেখ। এমনি এতকষ্ট করে পড়ালেখা করেছি যদি কাজেই না লাগাতে পারি।
*
*
*
*
– পরীর ফোনে বার বার কল আসছে সেদিকে ওর খেয়াল নেই। অনেকক্ষন পর ফোন নিয়ে দেখল অচেনা নাম্বারে কল। পরীক্ষার ডেট বদল হলনাতো। হয়ত বা কোন বান্ধবী সেটা বলার জন্যই এত রাতে কল দিয়েছে।
চোখ মুখে রিসিভ করেই সালাম দিতেই নিতু চিল্লায় বলে উঠল রাখ তোর সালাম মাগি কোথাকার। ( দুঃখিত গল্পের স্বার্থে অনেক জায়গায় ভাষা লঙ্ঘনীয় হয়েছে সবাই মার্জনার চোখে দেখবেন)

– কে আপনি! আর বাজে ভাষায় কথা কেন বলছেন?
– খারাপ মেয়ে কোথাকার কয়টা ছেলে লাগে তোর? একটা দিয়ে হয়না আমায় বল তোকে খুশি করার জন্য অনেক ছেলের ঠিকানা আমার কাছে আছে।
– পরী বুঝতে পারল এটা নিতু। কি আর বলবে ওর বা দোষ কিসের। সব দোষ তো আমার। কেন দুর্বল হয়ে গেলাম আমি।
– এর পর নিতু যে কথা বলল তাতে পরী একদম স্থির হয়ে গেল।
– শোন ভাল মেয়ে হলে শুভ্রর কাছ থেকে দুরে থাকবি। আর আমি তো আসছি তোর ব্যবস্থা আমি করি সেটা নিজেই টের পাবি বলে নিতু কল কেটে দিল।
– যাক বাবা বাঁচা গেল। যা বলেছি তাতে অন্তত শুভ্রর আশপাশে যাবেনা মেয়েটা। (নিতু)
*
*
*
*
– দাদু কে নিয়ে নিতু যেকথা গুলো বলল সেটা শুনে আমার পায়ের তলার মাটি সরে গেছে। আমি কি করব। আমিতো এভাবে শুভ্রকে চাইনা! তাই চিন্তা কিসের পরী শুভ্রর কাছ থেকে যত দুরে থাকা সম্ভব দুরে থাক।
*
*
*
*
– আজ আমার পরীক্ষা তাই সকাল সকাল উঠে নামায পড়েই পড়াগুলো রিভাইজ দিচ্ছি। এমন সময় অনিতা আন্টি এসে বলল মা! কি করছো?
– এইতো আন্টি পড়া রিভাইজ দিচ্ছি।
– উনি আমাকে বাটিতে পায়েস এনে হাতে ধরিয়ে দিল অনেক পড়েছো এটা খাওতো।
– আমি পায়েস দেখে মুখ সিটকিয়ে বললাম আন্টি আমি পায়েস তো খাইনা। বাদামে প্রচুর আর্লাজিও আছে। পরীক্ষা হলে তাহলে লেখার বদলে গা চুলকাতে হবে বলে মুচকি হাসি দিলাম।
– অহ! আমি জানতাম না পরী। শুভ্র, কৌশিক, অর্পিতার খুব পছন্দ পায়েশ তাই ভাবলাম তোমারও।
– আচ্ছা দেন আমি একটু খাচ্ছি।
– আরে নানা থাক….
বল কি খাবে সেটা বানিয়ে আনছি।
– সাদা ভাত, আলু ভরতা আর বেগুন ভাজি।
– ঠিক আছে আমি নিয়ে আসছি বলে উনি চলে গেলেন।
*
*
*
*
– দুপুর ২ টা থেকে পরীক্ষা। তাও পড়েই যাচ্ছি। আমার পড়া জাষ্ট পরীক্ষার ৩ দিন আগে থেকে। তাছাড়া বই খুলেও দেখিনা। এতেই বেশ রেজাল্ট।

– ১১.৩০ এর দিকে খেয়ে রেডী হয়ে সবাই কে বলে বাসা থেকে বের হলাম। দাদু অসুস্থ খুব তানাহলে একা ছাড়তো না। আন্টি যেতে চাইল আমি বললাম থাক আজ যেতে হবেনা।
– রিক্সাই যেতে বেশ সময় লাগে তার উপর জ্যাম থাকলেতো কথাই নেই।
– পরীক্ষার হলে গিয়ে দেখি আমার আগে বিদ্যুৎ এর সিট আর পরে আবিদার। কি ব্যাপার এরা প্লান করে এসব করছে নাকি। বিদ্যুৎ আবার রাজনিতি করে। ক্ষমতা তার আর কম নাই।
– পরীক্ষা শুরু হয়ে গেল। কশ্চিন হাতে পেয়ে দেখলাম মন্দ হয়নি প্রশ্ন গুলো। লিখতে শুরু করলাম।
*
*
*
*
– পরীক্ষা শেষ হলে বাহিরে এসে দেখি সন্ধার কাছাকাছি সময়। দিন ছোট বলে হয়ত। বিদ্যুৎ আমাকে ডাকতেই ভয় পেলাম একটু। কারন ওর মতিগতি ভাল না। ও আমার কাছে এসে বলল কিরে পরীক্ষা কেমন হল।
——————————-?
– এত দেমাক! সাবধানে যাস বলা যায় না কোথায় তোর সাথে রাস্তায় কি ঘটল। এখন সব কিছুই হতে পারে। কথাগুলো বলেই হাঁসতে হাঁসতে চলে গেল বিদ্যুৎ।
-ফোন ও আনি নাই যে বাসায় কল দিয়ে কাউকে আসতে বলব। এমনি বর্ষার মৌসুম বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে। কিছুই পাওয়া সম্ভব নয়।
*
*
*
*
– অনেকে ভিজেই চলে যাচ্ছে তাই আমিও বের হলাম ভার্সিটি গেট পেরিয়ে রাস্তায়। একটু হাটতেই পিছনে দেখি বিদ্যুৎ আমার পিছে পিছে আসছে। মানুষ একনিমিষেই পাল্টে যায়। আগে কত ভাল বন্ধু ছিল আর এখন ক্ষতি করার জন্য উঠে পরে গেছে।
– আমিও জোড়ে জোড়ে পা চালালাম।
*
*
*
*
– বৃষ্টিও ধরছে। আমার বৃষ্টি খুব ভাল লাগে কিন্তু আর ভাল লাগছেনা। এমন সময় আমার সামনে একটি কার থামে। আমি থমকে দাড়িয়ে যাই। শুভ্র! ও এখানে কেন?
– কি দাড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজবা না গাড়িতে উঠবা। ওকে দেখেই নিতুর কথা মনে পড়ে গেল। না না ওর সাথে কথা বলা ঠিক হবে না বলে পা বাড়ালাম।
– শুভ্র কোন উপায় না পেয়ে গাড়ি থেকে ছাতা নিয়ে বের হয়ে পরীর হাত ধরে বলল রাস্তায় সিনক্রিয়েট করতে শুরু করছো? কথা কানে যায়না? না কানের নিচে ২ টা দিতে হবে?
– আমাকে টেনে হিচড়ে গাড়িতে তুলেই ডাইভার কে বলল দাদা আপনি ছাতা নিয়ে বাসায় চলে যান বাঁকিটা আমি ড্রাইভ করব। সমস্যা হবেনা।
*
*
*
*
– ডাইভার গাড়ি থেকে বের হয়ে চলে গেল। গাড়ি স্টার্ট দিয়ে শুভ্র ড্রাইভ করল।
– বিদ্যুৎ পরীকে গাড়িতে উঠতে দেখেই দৌড়ে কাছে আসতেই গাড়িটা ওর চোখের সামনে দিয়ে চলে যায়। যাক আজও পারলাম না কিন্তু কই গেল ও।
*
*
*
*
– পরী পরীক্ষা কেমন হল?
– ছাতার মাথার মত…….
– পড়লেতো পরীক্ষা ভাল হবে! পড়বে না সারা দিন প্রেম করে বেড়াবে মৃদুলের সাথে।
– ———————–?
– পরী আজ তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে?
– কী সেটা!
– চল গেলেই বুঝবা বলেই আমার গালে টপ করে একটা কিস করে বসল।
– কি শুরু করে দিছো লজ্জা শরম কি বিক্রি করে খেয়েছো!
– হুম তোমার কাছে বিক্রি করে দিছি।
– বউ আমাকে একটা কিস করবা?
– শুভ্রর মুখে এই প্রথম বউ ডাক শুনলাম। আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি রাগী দৃষ্টিতে।
*
*
*
*
– ভুতের মত তাকিয়ে আছো কেন? দেখি তোমার question বলে হাত থেকে ও ফাইল নিতেই আমি ওর হাত থেকে কেড়ে নিয়ে বললাম যা করছো সেটাই করো। রাস্তায় মনযোগ দাও।
– শুভ্র একটু হেসে বলল পরী তোমার থেকেও আমার অনেক কিছু শিখার আছে। ২ দিন আগে ও আমায় আষ্টে পৃষ্টে জড়িয়ে ধরে ছিলে আর এখন এমন করছো যেন মনে হয় আমায় চিনো না।
– আমি চুপ করে থেকে একটু পর বললাম আমরা কোথায় যাচ্ছি রাস্তাটা অপিরিচিত লাগছে।
– Surprise……….. বলেই হাঁসতে লাগল।
*
*
*
*
– গাড়ি থামল একটা জায়গায়। পুরোই সন্ধা হয়ে গেছে তাই বুঝতেও পারলাম না।
– নামো বলে শুভ্র নেমে গেল। আমি নামতেই বলল পরী এখানে থাক আমি গাড়ি পার্ক করে আসছি বলেই গাড়ি নিয়ে আবার চলে গেল। আমি উপরে তাকিয়ে দেখি এটা একটা ফাইভ স্টার হোটেল। শুভ্র এখানে কেন আমাকে নিয়ে আসল। কু মতলবে আনেনিতো। না না সেটা হলেই আগেই কিছু করতে পারত। তাহলে কেন!
– কিছুক্ষন পর শুভ্র কয়েকটা শপিং ব্যাগ হাতে নিয়ে আমার কাছে এসে বলল আসো আমার সাথে।
– আমি শুভ্রের পিছে পিছে ওর সাথে ঢুকলাম। দেখছি আগেই সব রেডী করে রেখেছে। সোজা রুমের ভিতর ঢুকে গেলাম। চমৎকার রুম কিন্তু এখানে আমাকে কেন নিয়ে আসল।
*
*
*
*
– শুভ্র বলল কিছু খাবা!
– না! এখানে কেন আনছেন?
-Surprise…….
– ধ্যাত কি করে আল্লাহ্ জানে বলে বসে রইলাম।
– পরী ড্রেস গুলো চেঞ্জ করে নাও ভিজে গেছ তুমি আর আগের গুলো শুকাতে দাও।
– লাগবেনা!
– অবশ্যই লাগবে বলে ব্যাগ থেকে একটা সিম্পল শাড়ী বের করে দিল। এটা পড়ে নাও।
*
*
*
*
– আমি শাড়ী কেন পড়ব! আর শাড়ী পড়তে পারিনা।
– তো কি করতে পার! আমার সাথে শুধু লাগতে পারিস? যা যেভাবে পারিস পরে নে……
– বাধ্য হয়ে ওয়াসরুমে গিয়ে চেঞ্জ করে আসলাম।
– শুভ্র আমার দিকে তাকিয়ে বলল পরী যেভাবেই তুমি থাকনা কেন তোমার সৌন্দর্যতা কমে না।
– আর কিছু আছে?- হুম বলে কাকে যেন কল দিল এবং বলল আপনারা আসেন আমাদের হাতে বেশি টাইম নেই বলে কল কেটে দিল।
– শুভ্র কি করছো। কাকে আসতে বললে?
-Surprise…….
– এবার আমি রেগে গিয়ে বললাম তোমার এই সারপ্রাইজ সারপ্রাইজ খেলা বাদ দিবা! আমার ভাল লাগছেনা বাসায় যাব। সবাই টেনশন করছে।
*
*
*
*
– এমন সময় নিদ্রার কল এলো।
– শুভ্র!
– হুম বৌদি বল।
– নিতু তো বাসায় এসে মাকে থ্রেড দিয়ে গেল একটু আগে। মা কাঁদছে।
– কথা শুনে শুভ্রের মাথায় চড়চড় করে রক্ত উঠে গেল। বৌদি ওর সময় শেষ হয়ে এসেছে তাই ধংসের জন্য ছটফট করছে। চিন্তা করনা কাল ওর ব্যবস্থা নিব। মাকে দেখে রেখ আমার কাছে পরী আছে একটা কাজে আটকে গেছি যেতে একটু দেরী হবে। মানেজ কর বাসায় বলে ফোন কেটে দিল।
– কি হয়েছে?
– শুভ্র আমার দিকে তাকিয়ে থেকে কিছুক্ষন পর বলল কিছুনা। এমন সময় কেউ দরজায় নক করল।
*
*
*
*
– শুভ্র দরজা খুলে দিতেই ৬ জন মানুষ ঢুকল রুমে। আমিতো অবাক। এরা কে?
– শুভ্র কোন কথা না বলে আমাকে দুরত্বে বসে রেখে ওয়াশ রুমে চলে গেল।
– লোকগুলো বসে বলল আপনি কনে?
– মানে!
– কিছুনা বলেই বিভিন্ন ফাইল বের করে সব রেডী করে
রাখল শুধু শুভ্রের আসার অপেক্ষায়।
*
*
*
– শুভ্র কি করছে এগুলো মাথায় ঢুকছে না বলতেই শুভ্রকে দেখেতো আমি আকাশ থেকে পড়লাম শুভ্র এগুলো কি পড়েছে। একটা সিম্পল পাঞ্জাবি আর পাজামা সাদা রঙ্গের। মনে হয় গোসল করে বের হলো। ও কি করতে চাচ্ছে।
*
*
– Sir আপনি রেডী তো?
– হুম রেডী। এবার বলেন কি কি করতে হবে।(শুভ্র)
– ওদের মধ্য একটা মুরব্বী ছিল সে এসে শুভ্রকে কালেমা পাঠ করতে বলল। শুভ্রও গড় গড় করে বলল।
– আমি পাথর হয়ে গেছি। শুভ্র ইসলাম ধর্ম গ্রহন করল!
*
*
*
– এবার আমাদের বিয়ে পড়াল এবং রেজিস্ট্রি করল। দেনমোহর হিসেবে ওর স্হাবর অস্থাবর সম্পত্তি সাথে আগামী বছরে একসাথে হজ্ব করার অগ্রীম টিকেট, ২ টা কোরআন, ২ টা জায়নামায,২ টা তসবিহ্, হিজাব এবং একজোড়া নেকাবসহ বোরখা দিল।
– আমার সব কিছু মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।
– শুভ্র কবুল বলার সময় আলহামদুলিল্লাহ বলে ৩ বার মুচকি হেঁসে কবুল বলে ফেলল।
– আর আমি চুপ করে আছি।
– কিরে এখানেও সিনক্রিয়েট করবি? না অন্য কাউকে বিয়ে করার ধান্দা বলে চুপ করে আছিস। শুভ্রে কথা গুলো শুনে ওর দিকে তাকাতেই বলল Surprise….
– আমি আলহামদুলিল্লাহ বলে কবুল বললাম ৩ বার।
– আমাদের বিয়ে পড়ার পর মোনাজাত করে ওদের কিছু মিষ্টি খেতে দিল হোটেলের ২ টা বয় এসে। তারপর ওরা চলে গেল।
*
*
*
– আমি বসে আছি চুপ করে। নিতু যদি যানে তাহলে সব শেষ করে দিবে।
– শুভ্র পরীর কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে বলল পরী এবার তুমি খুশি তো?
– আমি ওকে কিছু না বলে বললাম ওঠো।
– কেন?
– ওঠো বলে ওকে তুলে জায়নামায পেরে বললাম নামায পড়তে পারোনা তো। আমি যেভাবে পড়ি তুমিও পড়বা। আর মনে মনে আল্লাহ বলে বার বার ডাকবা ওকে!
– ওকে বলে আমরা পাশাপাশি জায়নামাযে দাড়িয়ে ২ রাকাত নফল নামায পড়ে মুনাজাত করে নামায শেষ করলাম।
– ওঠো এবার।
– হয়ে গেছে! আর কিছু করতে হবে?
– না……আস্তে আস্তে সব শিখবা বলে উঠে পড়লাম। একবারে কেউ গাছে উঠতে পারেনা।
– ও উঠে আমাকে বলল পরী বাসার কাউকে কিছু বলনা তাহলে সবাই কষ্ট পাবে। আমি কষ্ট দিতে চাইনা কাউকে তাই সব গোপনে সব কিছু করলাম বুঝছো?
-হুম বুঝেছি বলে আমি সেদিনের কথা রাখতেই উন্মুক্ত বুকে শুভ্রর কাছে এসে দাড়িয়ে রইলাম।
– শুভু আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বলল প্রয়োজন নাই তোমাকে প্রমান দিতে। বলে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল তোমার সাথে ঝগড়া করতে করতে কবে যে এতটা ভালবেসে ফেলছি আমি নিজেও জানিনা।
– আমার চোখদুটি দিয়ে অশ্রু ঝড়ে পরছিল শুভ্রর বুকে।
– এই কাঁদসিস কেন এখন আর রেগে গিয়ে কামড় দিতে পারবিনা বলে?
– আমি ওকে একটা কামড় দিয়ে বললাম সেটাতো আরও বেশি পড়বে এখন থেকে।
– কি ঝাল রে…… সত্যি পরী তোমার মত ঝাঝালো মেয়ে আমার লাইফে একটাও দেখি নাই বলেই আমাকে কোলে উঠিয়ে নিয়ে আমার কপালে কয়েকটা কিস করল।

গল্পটি শেষ করে দিব জলদি তাই পরপর পর্ব দিচ্ছি। ২টা গল্প চালানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়। ফোন নিয়ে বেশি থাকার জন্য বকাও খেতে হয়।


চলবে——

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here