#অভিমান
#পর্বঃ২৪
……………….
কাব্যের এই মাএ বলা কথাটা শুনে সুহার অন্তর আত্মা কেঁপে উঠলো,
নিলয় ওর হাত ধরছে সেটা কাব্য জানলো কি করে ,
ও ধুক ধুক করা বুক নিয়ে কেঁপে বলে উঠলো,
-কি কি বলছো এই সব আমি তো শুধু ঘুরতে ,
সুহাকে কথাটা শেষ করতে না দিয়ে কাব্য দাঁড়িয়ে গিয়ে সুহার দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে বলে উঠল,
-কি ভেবেছিলে তুমি যা ইচ্ছা তাই করবে আর আমি কিচ্ছু জানতে পারবো না ,তোমাকে তো নিষেধ করেছিলাম শাড়ী পরে বাইরে বের না হতে ,শাড়ী পরে কেন বেরিয়েছো??আমার কথা অমান্য করার সাহস তুমি পেলে কোথায়,আর নিলয়ে সাথে কেন বাইরে গেলে তাও আমাকে না জানিয়ে, ঘরে বসে গল্প করে কি গল্প জমেছ না ,সেজন্যই কি বাইরে যাওয়া,কি ভেবেছিল আমি কিছু জানতে পারবো না,
সুহা কিছু না বলে অপরাধীর মতো মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে চোঁখ দুটি জলে টলমল করছে ,হঠাৎ করে কাব্যের এমন অদ্ভুত অদ্ভুত প্রশ্নের সম্মুখে পরে ও দিশেহারা হয়ে গেল,কি থেকে কি বলবে সব গুলিয়ে গেল,
ওকে এমন নিশ্চুপ হয়ে থাকতে দেখে কাব্য চিৎকার করে বলে উঠলো,
-কি হলো উওর দিচ্ছো না কেন ??স্পিক আউট ডেম ইট এন্ড আন্সার মি ??
ওর তিব্র চিৎকার ঘরময় বোমার মতো ফেটে পরলো,
সুহা চিৎকার শুনে ভয়ে কেঁপে উঠল, ও চোঁখ বন্ধ করে নিজের মাঝে সাহস যোগানোর চেষ্টা করলো ,মনে মনে
ঠিক করলো কাব্যকে ওর সব সত্যি জানতেই হবে ,
তারপর কাব্যের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,
-তুমি আমাকে ভুল বুঝছো,
-ও ভুল বুঝছি তা বলতো কোনটা ভুল বুঝছি আমি ,তোমার শাড়ী পরে বাইরে যাওয়া নাকি আমাকে না জানিয়ে নিলয়ের সাথে বাইরে যাওয়া না রেস্টুরেন্টে হাতে হাত ধরে বসে গল্প করা কোনটা ভুল এক্সচুয়ালি কোনটা আমি মিথ্যে বা ভুল বলছি একটু বলবে প্লিজ,
কাব্যের এমন কড়া প্রশ্নে সুহা আমার থতমত খেয়ে গিয়ে বলে উঠল,
-আসলে সত্যিটা হচ্ছে ,বলেই কাব্যের দিকে তাকিয়ে থেমে গেল,
-আসলে সত্যিটা কি বলো সত্যিটাই তো আমি জানতে চাইছি বলেই ও সুহার দিকে এক পা এক পা করে এগুতে লাগল,
কাব্যের এমন গিয়ে আসা দেখে সুহা ভয় পেয়ে বড় একটা ঢুক গিলে পিছনে পিছাতে লাগল ,ওর মুখ দিয়ে আর কোন কথায় বের হলো না শুধু চোঁখের দৃষ্টিতে ছিল অস্বাভাবিক ভয়,
কাব্য ক্রমাগত ওর দিকে এগিয়ে আসতে লাগল আর ও পিছাতে পিছাতে হঠাৎ দেয়ালের সাথে গিয়ে পিঠ ঠেকলো,সেই সাথে কাব্য ওর একদম কাছে চলে আসলো,ও ওর এতো কাছে এসে দাঁড়াল যে সুহা কাব্যের বুকের ধুকপুকানি শব্দ স্পস্ট শুনতে পাচ্ছিল ,সুহা সাথে সাথে চোঁখ বন্ধ করে চোঁখ মুখ খিচকে দাঁড়িয়ে রইল ,ওর হার্টবিট ছুটছে অস্বাভাবিক গতিতে ,
কাব্য এক দৃষ্টিতে কিছুক্ষন ওর দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে ওর মুখের কাছে মুখ নিয়ে স্লো ভয়েজে বলতে লাগল ,-কি হলো বলছো না কেন সত্যিটা কি বলো ,আমি সত্যিটা শুনতে চাই ,
সুহা কিছু না বলে ওভাবেই দাঁড়িয়ে রইল ওর মনে হচ্ছে ও আর এ পৃথিবীতে নেই অন্য কোনো জগতে চলে গেছে কেমন একটা ঘোর লেগে গেল সমস্ত শরীর মন জোরে ,
সুহাকে এভাবে দেখে কাব্যের ভীষন হাসি পেল ও কোনো মতে হাসি চাপা দিয়ে সুহার কাছে থেকে সরে গিয়ে বলে উঠল,
-আমার জন্য নিলয়ের সাথে ভয়ংকর রনো মূর্তি হয়ে জগড়া করে এলে আর এখন আমার সামনে এসে ভেজা বেড়াল হয়ে গেলে ,
কাব্যের কথা শুনে সুহার সম্মতি ফিরে ও ছট করে চোঁখ খুলে বিস্ময় ওর দিকে তাকিয়ে রইল,দু চোঁখের দৃষ্টিতে হাজারো প্রশ্ন খেলা করছে ,
সুহার এভাবে তাকানো দেখে কাব্য একটা হাসি দিয়ে বলে উঠলো,
-আমাকে খারাপ বলায় নিলয়ে ইচ্ছে মতো জেরে দিয়ে আসলে ,আর আমার সামনে সাহস করে সব সত্যিটা বলতে পারছো না ,কেন সুহা আমাকে কেন তুমি এতো ভয় পাও ,রেস্টুরেন্টে যখন তুমি আমার হয়ে নিলয়ে সাথে জগড়া করছিলে তখন তোমার চোঁখে মুখে আমার জন্য শুধু শ্রদ্ধা আর ভালবাসা ছিল,এটাই আমি চেয়েছি আর সারা জীবন এটাই দেখতে চাই ,আমাকে নিয়ে তোমার মনে কোনো ভয় বা আতংক আমি দেখতে চাই না সুহা।
সুহা তখন ও বিস্ময় ভরা দৃষ্টিতে কাব্যের দিকে তাকিয়ে রয়েছে সমস্ত কিছু ওর মাথার উপর দিয়ে যেতে লাগল কিছুই বুঝতে পারছে না ওর মাথায় শুধু একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে লাগল,কাব্য কি করে এসব কিছু জানতে পারলো,
কাব্য সুহার চোঁখে চোঁখ রেখে আবার বলতে লাগল,
-জানো সুহা তুমি আমাকে ভালবেসে ফেলেছো সেটা জানতে পেরে আমার এতো আনন্দ হচ্ছি মনে হচ্ছিল পৃথিবীতে আমার থেকে সুখী মানুষ আর কেউ নেই ,
সেই খুশি যখন ড্রাইভ করে বাড়ি ফিরছিলাম এক্সিডেন্ট হতে হতে বেঁচে গেছি,যখন একটা ট্রাক আমার গাড়ীর সামনে চলে এসেছিল আর আমি গাড়ী কন্ট্রোল করতে পারছিলাম না ভেবেছিলাম আজই বোধহয় আমার শেষ দিন ,চোঁখের সামনে তোমার চেহারাটা ভেসে উঠলো আজই জানতে পারলাম তোমার ভালবাসার কথা আর আজই কিনা পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে আমার নিয়তি কি তবে এভাবে লেখা হয়েছে ,কথা বলতে বলতে ওর চোঁখ দিয়ে এক ফোটা জল গড়িয়ে পরলো,
কাব্যের এক্সিডেন্টের কথা শুনে সুহার বুকের ভেতরটা মুচর দিয়ে উঠলো,ওর ও চোঁখ দিয়ে অজোর ধারায় জল ঝরছে কিন্তু সেদিকে ওর কোনো খেয়াল নেই ,ও শুধু মন্ত্রমুগ্ধের মতো কাব্যের বলা কথা গুলো শুনতে লাগল ,
কাব্য হাতের উল্টো পিট দিয়ে তার চোঁখের জলটা মুছে একটা হাসি দিয়ে আবার বলতে লাগলো,
-কিন্তু চোঁখের সামনে নিজের মৃত্যু দেখে আমার একটুও ভয় বা আফসোস হলো না,শুধু মনে হলো মনে গেলেও আর কোনো দু:খ নেই কারন আমি আমার ভালবাসাকে জয় করতে পেরেছি,আমি জানতে পেরে গেছি আমার ভালবাসা বিফলে যায়নি ,আমি পেরেছি তোমার মনে নিজের জায়গা তৈরি করে নিতে ,আমি হাসি মুখে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম কিন্তু আল্লাহ তালার অশেষ মেহেরবানীতে ট্রাকটা আমার গাড়ীর সাইড দিয়ে চলে যায়,
কাব্যের কথাটা শেষ হওয়া মাএ সুহা দৌড়ে গিয়ে জাপটে ওকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বলে উঠলো,
-খুব না হাসি মুখে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলে ,এতোই সোজা না কি আমাকে ছেড়ে যাওয়া ,স্বার্থ পরের মতো কথা বলছো তুমি না থাকলে আমার কি হতো আমি কি নিয়ে বাঁচতাম এই বোকা ভীতু মেয়েটাকে কে ভালবাসা,যত্ন আর মিষ্টি মিষ্টি শাসন দিয়ে আগলে রাখতো,জানি না কখন কিভাবে তোমাকে এতোটা ভালবেসে ফেললাম ,তোমাকে ছাড়া এখন আমি আমার লাইফের একটা মুহূর্তও ভাবতে পারিনা,ভালবাসি তোমাকে খুব খুব ভালবাসি,
তোমার মুখে এক্সিডেন্টের কথা শুনে আমার নি:শ্বাস আটকে আসছিল,তুমি কত সহজে বলে ফেললে মরে গেলে কোনো দু:খ নেই ,তোমার একবার ও আমার কথা মনে হলো না তোমাকে ছাড়া তোমার সুহা রানীর কি হবে বলেই ও কাব্যের বুক থেকে মাথা তুলে ওর বুকে কিল ঘুষি মারতে মারতে বলতে লাগল,
-তুমি খুব বাজে খুব পচা খুব খারাপ স্বার্থ পরের মতো আমাকে একা ফেলে চলে যাওয়ার প্ল্যান করছিলে,
সুহার এমন ছেলে মানুষি কান্ড দেখে কাব্য হেসে বলতে লাগল ,
-আরে আরে করছো কি থামো !!তখন তো মরিনি কিন্তু এখন তো মনে হচ্ছে সত্যি মরে যাবো ,বলেই সুহাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ওকে শান্ত করতে লাগল ,-আমি তো খারাপই তাই তো এতো ভালো আর লক্ষী একটা বৌ পেয়েছি,
সুহা এক নাগারে কেঁদেই চলছে,
কাব্য সুহাকে জরিয়ে ধরে বলতে লাগল,
-এতো কাঁদছো কেন ??কান্না থামাও আমি তো তোমার সাথেই রয়েছি,আমি তোমাকে ছেড়ে এতো সহজে কোথাও যাচ্ছি না সুহারানী,আমি না থাকলে তোমার ভুলগুলোর জন্য কঠিন কঠিন শাস্তি কে দিবে তোমাকে,শাড়ী পরে যে বাইরে গিয়েছিল তার শাস্তি তো বাকি রয়েছে,
কাব্যের কথা শুনে সুহা বাস্তবে ফিরলো ও এতোক্ষন একটা ঘোরের মাঝেছিল ও নিজেকে ওর বুক থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চোঁখের পানি মুছে কপাল কুচকে ওর দিকে তাকিয়ে বলে উঠল,
-শাস্তি টাস্তি পরে হবে আগে এটা বলো নিলয়ের সাথে আমার বলা কথা গুলো তুমি কোথা থেকে শুনলে ,
সুহার কথা শুনে কাব্য মৃদু হেসে ওকে হাত গ
দিয়ে ইশারা করে রুমের কোনার দিকে দেখিয়ে বলল,
-এই যে এটার মাধ্যমে,
-এটা কি?
-সিসি ক্যামেরা,তুমি যখন রুমের মধ্যে রেডি হচ্ছিলে তখন আমি অফিসে বসে দেখছিলাম তুমি কোথাও যাওয়ার জন্য তৈরী হচ্ছো আর সেটা শাড়ী পরে ,আমার ভীষন রাগ হলো একে তো আমাকে জানাও নি তার উপর শাড়ী পরে যাচ্ছো ,আমি রেগে অফিস থেকে বাসায় চলে আসছিলাম কিন্তু বাসার কাছে এসে দেখি তুমি নিলয়ে সাথে গাড়ী করে কোথা ও যাচ্ছো তাই আমি বাসায় না গিয়ে তোমাদের ফলো করা শুরু করি,
-ওয়েট ওয়েট এক সেকেন্ড আমাদের রুমের মধ্যে সিসি ক্যামেরা কবে থেকে আসলো,এটা কি আগেই ছিল??
-না আগে ছিল না আমি অফিস জয়িন করার পরের দিন লাগিয়েছি,তোমাকে মা দেখে আমি অফিসে থাকতে পারছিলাম না ,তাই তোমাকে একান্তে দেখার জন্য লাগিয়েছিলাম,
-তারপর
-তারপর আর কি ও তোমাকে নিয়ে রেস্টুরেন্ট এ গেল আমি ও গেলাম পিছু পিছু ,সেখানে ও তোমাকে নিয়ে একটা কেবিনে ঢুকলো আর আমি গেলাম রেস্টুরেন্টের ম্যানেজারের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কেবিনে সিসি ক্যামেরা আছে কিনা উনি বলেন আছে আমি তোমাদের কেবিনের কি হচ্ছে দেখতে চাইলাম কিন্তু উনি সাফ মানা করে দিলেন তারপর উনাকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে উনাকে রুম থেকে বের করে দিয়ে উনার রুমে বসে তোমাদের সব কথা শুনতে লাগলাম ,ও যখন তোমার হাত ধরেছিল আর তোমাকে ওর সাথে পালিয়ে যেতে বলেছিল বিশ্বাস করো আমার এত মাথা গরম হয়েছিল ওকে তখনই খুন করে ফেলতাম কিন্তু তোমার বলা কথাগুলো শুনে আমার সমস্ত রাগ চলে গেল,তোমাকে বের হতে দেখে তোমার আগেই আমি সেখান থেকে বেরিয়ে গেলাম,
কাব্যের কথা শুনে সুহা চোঁখ গুল গুল করে তাকিয়ে বিস্ময় নিয়ে বলে উঠল,
-ওহ মাই গড তোমার এতো বুদ্ধি!!
-হু বুদ্ধিই তো তোমার গর্ব হওয়া উচিত তোমার হাজব্যান্ডের বুদ্ধি নিয়ে সুহারানী,
বাট এখন নিচে চলো একটা কাজ এখনও বাকি আছে
-কি কাজ??
-নিচে চলো দেখতেই পারবে,
বলেই কাব্য সুহাকে নিয়ে নিচে চলে এলো ,নিচে আসতেই দেখলো নিলয় শিস বাজিয়ে সদর দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকছে ,ওকে দেখে কাব্য সুহাকে চোঁখ দিয়ে এখানেই দাড়িয়ে তাকার ইশারা করে নিলয়ের দিকে এগিয়ে গেল,
কাব্যের এমন রুপ দেখে সুহা ভয় পেয়ে গেল আজ যে নিলয়ের রক্ষা নেই সেটা ও মনে মনে আন্দাজ করে নিল,
কাব্য গিয়ে নিলয়ের সামনে দাঁড়ালো ,ওকে সামনে দেখে নিলয় থমকে দাঁড়ালো সাথে সাথে কাব্য ওর শার্টের কলার ধরে টেনে নিয়ে এসে নাক বরাবর এক ঘুষি মারলো ,ঘুষি খেয়ে নিলয় ছিটকে গিয়ে ফ্লোরে পরলো,হঠাৎ এমন হওয়ায় ও হতবাক হয়ে কাব্যের দিকে তাকিয়ে রইলো,
কাব্যের মা আর ভাবি দৌড়ে ওর কাছে এলো এবং ওর মা বলতে লাগলেন,-কি হয়েছে কাব্য ওকে এভাবে মারছিস কেন??
কাব্য রাগে চিবিয়ে চিবিয়ে বলে উঠল,-তুমি জানো না মা ও কি করেছে ,এই শাস্তিটা ওর প্রাপ ওকে এটা পেতেই হবে,বলেই আবার নিলয়ে কাছে গিয়ে ওকে টেনে তুলে কষে এক তাপ্পড় মেরে বলে উঠল ,
-অনেক দিন ধরে তোর এসব সহ্য করছি আর নয়,
তাপ্পড় খেয়ে নিলয় গালে হাত দিয়ে কি না জানার ভান করে বলে উঠল,
-ব্রো কি হয়েছে তুমি আমাকে মারছো কেন??আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না,
নিলয়ে এমন বেচারা ভাব দেখে কাব্যের রাগ আরো বেড়ে গেল ও ওকে এলোপাতাড়ি পেটাতে শুরু করলো আর বলতে লাগল,
-কিছুই বুঝতে পারছিস না তাই না ,ওয়েট আমি বুঝিয়ে দিচ্ছি তোর এত বড় স্পর্ধা হলো কি করে যে তুই আমার নামে বাজে কথা বলে আমার স্ত্রী কে তোর সাথে পালিয়ে যাওয়ার প্রপোজাল দিস,ওর হাত ধরার সাহস হলো কি করে তো,
কাব্যের কথা শুনে ওর মা আর ভাবি বিস্ময় নিয়ে একবার সুহার দিকে তাকিয়ে আবার কাব্যের দিকে তাকালো ,
কাব্য ইচ্ছে মতো ওকে মারছে আর কথা বলছে ,ওর কাছে মার খেয়ে নিলয় ও পাল্টা আঘাত করতে চাইলো কিন্তু ওর সাথে পেরে উঠলো না,
কাব্য মারতে মারতে বলতে লাগলো,
-আমি মেয়েদের জীবন নষ্ট করেছি তাই না তাহলে তুই কি করেছি ,আমি তো শুধু ওদের সাথে রিলেশন করেছি কখনও ঘনিষ্ট হইনি কারো সাথে কিন্তু তুই কি করেছি একের পর এক মেয়ের সাথে ফিজিক্যাল রিলেশন করে ছেড়ে দিয়েছিস ,তুই কি ভেবেছিস আমি কিছু জানি না তুই বিদেশ থেকে করছিস না করছিস,আরে আমি তো সুহাকে দেখার আগে ওকে ভালবাসার আগে মেয়েদের সাথে টাইম পাস করেছি কিন্তু যবে থেকে ওকে ভালবেসেছি ভুলেও কোনো মেয়ের দিকে অন্য নজরে তাকাই নি ,শুধু ওকেই ভালবেসেছি,কিন্তু তুই ওকে ভালবাসার পরও অন্য মেয়েদের সাথে রিলেশনে গিয়েছিস,কি ভেবেছিল বিদেশে ইচ্ছে মতো মজা মাস্তি করে এসে সুহার মতো পবিএ একটা মেয়েকে বিয়ে করে নিবি,,তুই নিজে ও জানিস না তুই এই কাব্য মেহরাবের কোথায় হাত দিয়েছিস,
মারতে মারতে ওকে রক্তাক্ত করে ফেললো তারপর নিলয় দু হাত জোর করে ওর কাছে ক্ষমা চাইতে লাগলো,
কাব্যের মাও এসে ওকে থামতে বললেন,কাব্য থেমে চোঁখ মুখ শক্ত করে বলে উঠলো ,-মা ওকে বলো এক্ষুনি এখান থেকে চলে যেতে আর কখন যেন ওকে আমার বাড়ীর আশাপাশে না দেখি ,যদি দেখি তাহলে সেদিনই হবে ওর শেষ দিন,
কাব্যের মা নিলয়ের কাছে গিয়ে রেগে বলে উঠলেন,
-তোকে নিজের ছেলের মতো ভালবাসতাম আর তুই কিনা এমন একটা কাজ করতে পারলি ,ছি!!নিলয় তোকে চিনতে আমার ভুল করেছিলাম,এক্ষুনি তুই এখান থেকে চলে যা,
উনার বলা কথা শুনে নিলয় হাত দিয়ে নিজের ঠোঁটের রক্ত মুছে সুহার দিকে একবার তাকিয়ে দ্রুত পায়ে বাড়ী থেকে বেরিয়ে গেল।
.
রাতে কাব্য আর সুহা বেলকুনিতে দাড়িয়ে আছে,চারিদিকে মৃদু মন্দ বাতাস বইছে,চাঁদের আলোয় চেয়ে গেছে চারিপাশ সেই সাথে দুজন মানুষ তাদের বুকে একে অপরের জন্য পবিএ ভালবাসা নিয়ে একে অপরকে জরিয়ে রয়েছে,সব মিলিয়ে পরিবেশটা হয়ে উঠেছে এক প্রেমময় স্বর্গপুরি, কাব্য পেছন দিক থেকে সুহাকে জরিয়ে ধরে ওর চুলে নাক ডুবিয়ে রয়েছে ,
সুহা বিরক্তি নিয়ে বার বার বলছে ,-আহ কি করছো ছাড়ো না,সুরসুরি লাগছে তো,
-সুহারানী তোমার চুলে এতো মিষ্টি ঘ্রান কেন বলতো
-ওটা আমার চুলের ঘ্রান না শ্যাম্পুর ঘ্রান
-আরে দূর শ্যাম্পুর ঘ্রান এতো মিষ্টি হয় নাকি এটা তোমার চুলে পরেছে তাই এমন মিষ্টি ঘ্রান ছাড়াচ্ছে বুঝলে সুহারানী ,
-হুম বুঝলাম এবার তো ছাড়ো
-না ছাড়বো না আগে বলো,
-কি বলবো ?
-কি ভাবে হলো আই মিন আমার প্রতি তোমার ভালো বাসাটা কিভাবে হলো,আর সেটা কখন থেকে হলো
-দূর বাবা জানি না হয়ে গেছে,
সুহার কথা শুনে কাব্য সুহাকে ছেড়ে পাজো কোলে তুলে নিয়ে বলে উঠল,
-হয়েই যখন গেছে সুহারানী,তাহলে আমাদের প্রিনসেস কে পৃথিবীতে আনার ব্যবস্তা করে ফেলি কি বলে,
ওর কথা শুনে লজ্জায় সুহার মুখ লাল হয়ে গেল ও লজ্জা পেয়ে ওর বুকে মুখ লুকালো।
#চলবে???