#অবেলায়_তুমি (পর্ব-১১)
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
অফিসের ম্যানেজার খালেক সাহেব তনুকে বাঁচাতে আসলো, কিন্তু তনু তাকেই উল্টো ঝাড়ি দিতে শুরু করেছে। খালেক সাহেবের মতন আকাশ ও থতমত খেয়ে যায় তনুর কথাবার্তা শুনে। কারণ সে তনুকে জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরে রেখেছিল। তনুর তাকে এখন বাটাম দেওয়ার কথা। কিন্তু তনু তা না করে উল্টো অফিসের ম্যানেজার খালেক সাহেবকেই বকছে। খালেক সাহেব আর আকাশ দু’জনেই হতভম্ব হয়ে তনুর দিকে তাকিয়ে আছে। তনুর কথাবার্তা সব কিছুই কেমন যেনো তাদের মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে খালেক সাহেবের। তনুকে বাঁচানোর কারণে তিনি যে উল্টো প্রশ্নের মুখে পড়ে যাবেন সেটা খালেক সাহেব কখনো ভাবতেও পারেনি। তনুর প্রশ্নের প্রত্যুত্তরে কি জওয়াব দিবেন খালেক সাহেব সেটা বুঝে উঠতে পারছে না। দ্বিধাদ্বন্দে পড়ে গিয়েছে খালেক সাহেব। সেই সঙ্গে মুখ থেকে কোনো কথা বের হচ্ছে না। মনে হচ্ছে যেনো কেউ খালেক সাহেবের মুখে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। বোবার মতন অদ্ভুত দৃষ্টিতে তনুর দিকে তাকিয়ে আছে খালেক সাহেব। অপরদিকে খালেক সাহেবের কাছে কোনো উত্তর না পেয়ে তনু খালেক সাহেবকে আরো রাগান্বিত কন্ঠে বলেন,
–‘কি হলো কোনো উত্তর দিচ্ছেন না কেন খালেক সাহেব? আপনি কোন সাহসে ওর কলারে হাত দিয়েছেন উত্তর দিন।’
খালেক সাহেব এবার মুখ খুলে উত্তর দেয়।
–‘ম্যাডাম আমি কেবিনের দরজা খুলা মাত্রই দেখতে পেলাম এই বেয়াদবটা জোরপূর্বক আপনাকে জড়িয়ে ধরে অশ্লীলতা করার চেষ্টা করছিল। তাই আমি ওর শার্টের কলার চেপে ধরেছি।’
–‘সে আমার সাথে অশ্লীলতা করলে তাতে আপনার সমস্যা কোথায়?’
–‘ম্যাডাম আমার কোনো সমস্যা নেই। তবে আপনি আমার অফিসের ম্যাডাম। আপনার বিপদ হলে এগিয়ে আসা আমার দায়িত্ব।’
–‘আচ্ছা মানলমা আপনি আমাকে বাঁচাতে এসেছেন। কিন্তু আপনাকে কে বলেছে সে আমার সাথে জোরপূর্বক অশ্লীলতা করছিল? বা জোরপূর্বক আমার সাথে অসভ্যতা করার চেষ্টা করছিল?’
–‘ম্যাডাম কেউ বলেনি। তবে আমি নিজেই তো দেখতে পেলাম সে আপনার সাথে অশ্লীলতা করতে চেষ্টা করছিল। তাই তো তার সাথে এমনটা করেছি।’
–‘আপনার দেখার গুষ্টি মা’রি। সে আমার সাথে যাই করবে করুক, কিন্তু আপনার কোনো রাইট নেই ওর গায়ে হাত দেওয়ার।’
–‘ম্যাডাম আপনার কথার মানে টা আমি বুঝে উঠতে পারছিনা! দোষ করলো সে। আর আমি আপনাকে বাঁচালাম। আপনি কথা শুনালে তো তাকে শুনানো উচিত। কিন্তু আপনি তা না করে উল্টো আমায় কেন কথা শুনাচ্ছেন? আমি তো কোনো দোষ করিনি ম্যাডাম। দোষ তো সে করেছে। আর আমি তো আপনার উপকার করেছি।’
–‘খালেক সাহেব নিজের লিমিটে থাকেন। আপনাকে কেউ বলেনি আমার উপকার করার জন্য। আর না আমি চেঁচিয়ে কারোর কাছে কোনো সাহায্য চেয়েছি। সে আমার সাথে যা ইচ্ছে হয়েছে করেছে। আর ভবিষ্যতে যা ইচ্ছে হবে তাই করবে। তার ইচ্ছে হলে সে হাজার বার আমায় জড়িয়ে ধরবে। তার ইচ্ছে হলে সে হাজার বার আমার গায়ে হাত দিবে। তার ইচ্ছে হলে সে হাজার বার আমার সাথে জোড়াজুড়ি করবে। তার ইচ্ছে হলে সে হাজার বার আমার সাথে অসভ্যতা করবে। মোট কথা তার যা ইচ্ছে হবে সে আমার সাথে করবে। কিন্তু আপনার তো কোনো অধিকার নাই তার ইচ্ছার মাঝে এসে বাঁধা হয়ে দাঁড়ানোর। কারণ হি ইজ মাই হাজবেন্ড। তার পুরোপুরি অধিকার আছে আমার শরীরে স্পর্শ করার। কিন্তু আপনি কোন অধিকারে আকাশের শার্টের কলার চেপে ধরেছেন তাও আবার আমার চোখের সামনে?’
খালেক সাহেব তনুর কথা শুনে পুরো আবুল হয়ে যায়। তনুর কথা শুনে প্রথমে কি অবাক হয়েছে, তার চাইতে তিনগুণ বেশি অবাক হয়েছে বর্তমানে তনুর মুখে আকাশের সম্পর্কে জানতে পেরে। অফিসের একজন সাধারণ এ্যাসিস্ট্যান্ট বা নিম্নমানের কর্মচারী যে অফিসের ম্যাডামের স্বামী হতে পারে সেই বিষয়ে খালেক সাহেবের আগে কোনো ধারণাই ছিল না। খালেক সাহেব পুরোদমে অবাক। শ্বাসপ্রশ্বাস উল্টো-পাল্টা ভাবে চলতে শুরু করেছে খালেক সাহেবের। বীর বাহাদুর সাজতে গিয়ে যে নিজের পায়েই কুড়াল মে’রেছে সেটা খালেক সাহেবের এখন বুঝে এসেছে। চাকুরী বাঁচাতে করুন সুরে তনুকে বলে,
–‘ম্যাডাম আমার ভুল হয়ে গেছে। আমাকে ক্ষমা করে দিন। বিশ্বাস করুন আমি জানতাম না আকাশ সাহেব আপনার হাজবেন্ড! ম্যাডাম আমার মস্ত বড় ভুল হয়ে গেছে। প্লিজ ম্যাডাম এবারের মতন আমায় ক্ষমা করে দিন।’
–‘ক্ষমা আমার কাছে নয়। ক্ষমা চাওয়ার হলে আকাশের কাছে চান।’
–‘আকাশ সাহেব আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি সত্যিই জানতাম না আপনি ম্যাডামের হাজবেন্ড। আমি ভেবেছি আপনি ম্যাডামের সাছে দুনম্বরী কিছু করার চেষ্টা করছেন। তাই না বুঝে আপনার শার্টের কলার ধরে ফেলেছি৷ আকাশ সাহেব আমায় এবারের মতন ক্ষমা করে দিন।’
আকাশের মুখে কোনো কথাবার্তা নেই। খালেক সাহেবের কথার কোনো উত্তর না দিয়ে ড্যাবড্যাব করে তনুর দিকে তাকিয়ে আছে সে। খালেক সাহেব আকাশকে কলার চেপে ধরে অপমান করায় তনু যা রিয়াকশন করেছে তা দেখে আকাশ হুঁশ- জ্ঞান হারিয়ে বসেছে। তনু আকাশের বিষয়টা বুঝতে পেরে খালেক সাহেবকে চলে যেতে বলে। খালেক সাহেব আর এক সেকেন্ড ও দেরি না করে তনুর কথা মতন কেবিন থেকে বেরিয়ে যায়। খালেক সাহেব কেবিন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর তনু আকাশকে বলে,
–‘আপনার আবার কি হলো? আপনি আমার দিকে এমন ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছেন কেন?’
তনুর কথায় আকাশের হুঁশ ফিরে আসে। এতো সময় আকাশ স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল না। তনুর প্রশ্নে আকাশ স্বাভাবিক হয়। নরম গলায় উল্টো তনুকে প্রশ্ন করে,
–‘আচ্ছা তুমি তো আমার উপরে প্রচন্ড রেগে ছিলা। একটু আগেই বললা আমাকে তোমার চাই না। আমাকে তোমার আর দরকার নাই। কিন্তু তুমি হুট করেই স্বামী ভক্ত হয়ে গেলা কি করে? যেই না খালেক সাহেব আমার কলার চেপে ধরেছে, তখনি তুমি রেগেমেগে ফায়ার হয়ে গেলা। কাহিনী কি তনু?’
–‘কাহিনী কিছুই না। আর না আমি স্বামী ভক্ত।’
–‘তাহলে একটু আগে আমার কারণে খালেক সাহেবের সাথে রেগে যাওয়া এবং খালেক সাহেবকে আমাদের বিষয়ে যেসব বললা সেসব কি ছিল?’
–‘আকাশ সাহেব আপনাকে একটা কথা বলি। আমার বলা কথা গুলো সত্যি। আর আমি সেজন্যই কথা গুলো বলেছি। তবে রেগে যাওয়ার পিছনে অন্য একটা কারণ আছে।’
–‘কি কারণ তনু?’
–‘কারণ হচ্ছে আমাদের মাঝে যেই সমস্যাটা হয়েছে সেটা আমাদের দু’জনের ব্যক্তিগত। কিন্তু তাই বলে যে আমি আপনার মতন মানুষকে সবার সামনে অপমান করবো বা সকলের সামনে অপমানিত হতে দিব এটা তো হতে পারে না। ব্যক্তিগত সমস্যা সেটা ব্যক্তিগতোই। এটাকে কেন্দ্র করে আপনার সম্মানে আঘাত করার কোনো প্রশ্নই আসে না। তবে আপনি দেখে হয়তো আমায় অপমান করতে পেরেছিলেন সকলের সামনে, কিন্তু আমার পক্ষে সম্ভব না সেটা করা। তবে হ্যাঁ আমিও আগের বার অফিসের সকলের আপনাকে অপমান করেছি। যেটা আমার মস্ত বড় ভুল ছিল। তবে তাই বলে যে প্রতিবার একই ভুল করবো সেটা তো হতে পারে না। আমার ভিতরেও মনুষ্যত্ব বলতে কিছু আছে। আমি আগের বার নিজের মনুষ্যত্বকে কাজে না লাগালেও এবার কাজে লাগিয়েছি। আর আপনি আমার সাথে যেটা করেছেন সেটা আমার নিজের কর্মফলের কারণেই হয়েছে। কিন্তু জানেন আপনাকে আমি অফিসের সকলের সামনে অপমান করলেও আপনার সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার ক্যাপাসিটি হয়তো আমার আছে। আমি অফিসের সকল কর্মচারীকে এক জায়গায় করে যদি বলি আপনি আমার হাজবেন্ড, তাহলে আপনার দিকে হয়তো আর কেউ বাঁকা চোখে তাকানোর সাহস করবে না। আমি কোনো না কোনো ভাবে আপনার উপর থেকে দাগটা উঠাতে পারবো। কিন্তু আপনি আমায় যেই সকল মানুষের সামনে অপমান করেছেন, সেই অপমানের দাগ আমার গা থেকে কখনোই সরবে না। সব সময় আমার গায়ে সেটা লেগে থাকবে। সব সময় আমাকে তাদের সামনে লজ্জায় মাথা নিচু করে থাকতে হবে। আমি আর কখনো তাদের সাথে আগের মতন করে সসম্মানে কথাবার্তা বলতে পারবো না। সেই সঙ্গে আমি তাদের সাথে কথা বলতে গেলেই আমার ভিতরে একটা লজ্জা বোধ কাজ করবে।’
তনুর কথা শুনে আকাশ আবারো রিয়েলাইজ করে সে যেটা করেছে সেটা অনেক বড় ভুল ছিল। তার ঐরকমটা করা কখনোই উচিত হয়নি। হ্যাঁ তনুও তার গায়ে দাগ লাগিয়েছে৷ তবে তনু চাইলে সেটা তার গা থেকে সত্যিই তুলেও ফেলতে পারে। কারণ এই অফিসের বস তনু। আর সবাই তনুর কর্মচারী। এছাড়া তনুর কথায় এই অফিসের অনেক কিছুই পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু আকাশ যেটা করেছে, সেটাতে করে তনুর গা থেকে কখনোই দাগ যাবে না। কারণ পার্টিতে যারা ছিল তারা তনুর কর্মচারী নয়। তারা ছিল তনুর বিজনেস পার্টনার। আকাশ বুঝতে পারছে না কি করবে৷ সেই সঙ্গে তনুর মন-খারাপ দেখে আকাশের আরো খারাপ লাগছে তনুর জন্য। তনুর মন-খারাপ আকাশ বিষয়টা কোনো ভাবেই মানতে পারছে না। আকাশ কি করবে ভেবে না পেয়ে আবারো তনুকে জড়িয়ে ধরার পরিকল্পনা করে। কারণ এতে করে হয়তো তনুর মন-খারাপটা ভালো হতে পারে। আসলে প্রিয়-মানুষটা যতোই অভিমান করুক না কেন, ভালোবেসে তাকে একবার বুকে টেনে নিলে অভিমানের মাত্রা অনেকটা কমে যায়। আকাশ নিজের পরিকল্পনা মতন তনুকে আবারো জড়িয়ে ধরার জন্য সামনে এগোয়, তখনি তনু আকাশকে হাত দিয়ে থামিয়ে দেয়। কারণ তনু আকাশের পরিকল্পনা আগেই বুঝে ফেলেছে। তনু আকাশকে হাত দিয়ে থামিয়ে দেওয়ার পর আকাশকে বলে,
–‘আকাশ সাহেব আমাকে আপনার খেলনার পুতুল বলে মনে হয় তাই না? যখন ইচ্ছে হবে আমার শরীরে কাঁদা ছুঁড়বেন। আবার যখন ইচ্ছে হবে আমার এই কাঁদা মাখা শরীর টাকে নিজের কাছে টেনে নিবেন? দেখুন এসব বন্ধ করুন। আমার এসব আর ভালো লাগছে না। আপনি প্লিজ নিজের কাজে গিয়ে মন দিন। তাতেই আমার কিছুটা স্বস্তি ফিল হবে। অতিরিক্ত কিছু করার কোনো প্রয়োজন নেই। প্লিজ এবার আপনি যান।’
আকাশ তনুর কথা শুনে সমস্ত পরিকল্পনা বাদ দিয়ে চুপচাপ কেবিন থেকে বেরিয়ে নিজের ডেস্কে চলে যায়। মনটা তারো ভিষণ খারাপ। চেহারা মলিন করে চেয়ারের উপরে বসে শান্ত মাথায় ভাবতে থাকে কি ভাবে সব কিছু আবার আগের মতো করা যায়। ভাবতে ভাবতে অনেকক্ষন পর আকাশের মাথায় একটা বুদ্ধি আসে। আকাশ ঠিক করে বুদ্ধিটা সে কাজে খাটাবে। তবে সেটা এখন নয় সঠিক সময়ে। দেখতে দেখতে দুপুর হয়ে যায়। অফিসে লাঞ্চ ব্রেক দেয়। আকাশ নিজের ডেস্কেই বসে আসে। আর তনুকে নিয়ে ভাবছে। কখন তনু তাকে ডাকবে। না হয় তনু খাওয়ার জন্য কেবিন থেকে বের হবে। আর সে তনুকে এক নজর দেখবে। কিন্তু লাঞ্চের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে তনু আকাশকে ডাকে না। এবং সে নিজেও কেবিন থেকে বের হয় না। আকাশ বুঝতে পারে তনুর হয়তো মন ভিষণ খারাপ। আকাশ ডেস্ক থেকে উঠে সোজা কেন্টিনে চলে যায়। এরপর কেন্টিন থেকে নিজের টাকায় তনুর জন্য এক প্যাকেট খাবার কিনে তনুর কেবিনে যায়। কেবিনে গিয়ে দেখে তনু ডেস্কের উপরে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। আকাশ কেবিনে ঢুকে তনুকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে খাবারের প্যাকেট টা ডেস্কের এক পাশে রেখে তনুর মাথায় আলতো করে হাত দিয়ে তনুকে ডেকে বলে,
–‘তনু লাঞ্চের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। আমি তোমার জন্য খাবার এনেছি। তুমি উঠে ফ্রেশ হয়ে খাবার গুলো খেয়ে নাও।’
তনু ঘুম থেকে উঠে চোখ কচলাতে কচলাতে আকাশকে বলে,
–‘আমি কি আপনাকে বলেছি আমার জন্য খাবার আনতে?’
–‘নাহ বলোনি।’
–‘তাহলে কেন এনেছেন?’
–‘এমনিতেই।’
–‘দেখুন আমি বাচ্চা নই। আমাকে এক্সট্রা কেয়ার দেখাতে আসবেন না। অনুগ্রহ করে খাবার গুলো নিয়ে গিয়ে নিজেই গিলে খান।’
তনুর কথায় আকাশের চরম মন খারাপ হয়। তবে আকাশ সেটা প্রকাশ করে না। তনুর কথায় চুপ করে খাবারের প্যাকেট টা ডেস্ক থেকে উঠিয়ে নিয়ে চলে আসতে ধরে। এমন সময় পিছন থেকে তনু আকাশকে ডেকে বলে,
–‘আচ্ছা শুনেন খাবার গুলা যেহেতু কষ্ট করে এনেছেন তাহলে আর দ্বিতীয়বার কষ্ট করে নিয়ে যেতে হবে না। ডেস্কের উপরেই আবার রেখে যান। আমি খেয়ে নিব নে। আর এই যে নিন খাবারের টাকা।’
তনু ব্যাগ থেকে পাঁচশ টাকার একটা নোট বের করে ডেস্কের উপরে রাখে। আকাশ তনুর কথা অনুযায়ী ডেস্কের উপরে খাবারটা রাখে। তবে যখন টাকা নেওয়ার পালা আসে তখন সে তনুকে বলে,
–‘তনু টাকা টা না নিলে হয় না?’
–‘আকাশ সাহেব ফ্রি-তে খাওয়ার স্বভাব আমার খুব কম। তার উপরে আপনার পকেটের টাকা অপচয় করে খাওয়ার কোনো ইচ্ছে আমার নেই। টাকাটা নিন। আর আপনি দুপুরের খাবার খেয়েছেন?’
আকাশ তনুকে খেয়েছে বলে মিথ্যা জওয়াব দেয়। সত্যিকারত্বে আকাশ কিছুই খায়নি। আসলে আকাশের কেন জানি কিছু ইচ্ছে করছে না। তাই সে কোনো কিছুই খায়নি। কেন্টিন থেকে তনুর জন্য খাবার নিয়ে সোজা ফিরে এসেছে। তবে কোনো একটা অজানা কারণে আকাশ তনুকে মিথ্যা বলে ডেস্কের উপরে খাবারটা রেখে তনুর দেওয়া টাকাটা নিয়ে সে চলে আসে। দেখতে দেখতে বিকাল হয়৷ অফিস ছুটি হয়ে গিয়েছে। সবাই অফিস শেষ করে যে যার মতন বাড়ি চলে যাচ্ছে। আকাশ ও অফিস ছুটি হওয়ায় চলে যায়। পরেরদিন যথারীতি আকাশ অফিসে চলে আসে। অফিস শুরু হয়ে গেছে। তনুও অফিসে চলে এসেছে। অফিস শুরু হওয়ার ঘন্টা খানিক পর তনুর কাছে একটা ফোন আসে। তনু ফোনটা রিসিভ করে। অপরপাশের মানুষটা তনু ফোন রিসিভ করার পর যা বলে তা শুনে তনু পুরোদমে চমকে উঠে…
চলবে….
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো)