#অনুভুতির_মায়ার_খেলা_(৪)
#সায়ারা_জাহান_লেখায়।
অর্কের কথায় সিয়ামের মায়ের কাপাকাপি অবস্থা৷ সে ভয়ে আছে এবার যদি সবাই সত্যি জানে তাহলে কি হবে।
– তুমি এসব কি বলছো বাবা আমরা কেন ও কে মা র বো বলো।
– আমি যতদুর জানি সায়ারা বিবাহিত নয় যে শশুর বাড়ির লোকজন ওর সাথে এমন বিহেভ করবে। আর ও থাকে আপনার কাছে তাহলে আপনার বাসায় আপনি আর আপনার ছেলে ব্যাতিত কেই তো থাকে না।
– বাবা চুপ করো তুমি যা চাও আমি সব দিবো আমরা একটা ডিল করি। তুমি চুপ থাকলে যা চাইবা তাই পাবা।
-আর ইউ সিউর ম্যাডাম আমি যা চাইবো তাই দিতে পারবেন?
-হ্যাঁ কতো টাকা চাই তোমার তুমি শুধু এমাউন্ট টা আমাকে বলো আমি তোমাকে দিয়ে দিবো।
– আচ্ছা এখন না সময় হলে চেয়ে নিবো আপনি অপেক্ষা করুন।
– মানে বুঝলাম না আমি আমরক বিকেলে চলে যাবো এরপর কিভাবে?
– প্রতিদন আমার কাছেই সায়ারার আসা লাগবে ড্রেসিং করাতে।
– কিন্তু একটা জিনিস তোমাকে আমার খুব চিনা চিনা লাগে এর আগেও কি কোথাও আমাদের দেখা হয়েছিলো?
– হতেও পারে তা সময় বলবে আপনি এখন আসতে পারেন আমার যখন ইচ্ছা হবে আজি যোগাযোগ করবো।
অর্ক কথা বলে নিজেই বেরিয়ে গেলো হাসি দিয়ে কেবিন থেকে। অর্কের রাউন্ডে যাবার সময় হয়েছে,অর্ক বেরিয়ে যাওয়ার পড়েও খালা দাঁড়িয়ে ভাবছে ছেলেটা প্রচন্ড হেয়ালি করে কথা বলে। ওর কথা বার্তায় অনেক রহস্য প্রকাশ পায়। এবার খালাও চলে আসে আমার কাছে।।
-আপনাকে কেনো ডেকছিলো ফুপ্পি?
– উমম তেমন কিছুনা শুধু বললো ওর খেয়াল রাখতে আর ও কে সাবধানে কাজ করতে এইভাবে হলে সামনে যদি আরো বড় দু’র্ঘ’ট’না ঘটতে পারে।
খালার কথা শুনে আয়ানা আপু মনে মনে হাসছে কারণ সে জানে অর্ক ঠিক কি কি বলতে পারে। অথচ খালা কি সুন্দর বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যে বলে দিলো । আয়ানা আপু শুধু মুচকি মুচকি হাসছে আর মনেমনে ভাবছে কিছু।
– ফুপি তুমি এখন থাকবে না কি চলে যাবে কারণ আমি তো আছি আর বিকেলে ডিসচার্জ করিয়ে একবারেই বাড়িতে ফিরবো আমরা।
– তুই যখন এখানে থাকতে চাইছিস থাক আমি না করবো না। আকি বরং আসি এখানে থাকা আমার সম্ভব না। নিজের খেয়াল রাখিস আর সাবধানে থাকিস।
– আচ্ছা ফুপি তুমি যাও এতো চিন্তা করো না আমি বাচ্চা না।।
খালা কি সত্যি আয়ানা আপুকে নিয়ে এতো চিন্তিত না কি পুরাটাই তার নাটক। কত সুন্দর উনি আয়ানা আপুকে স্নেহ করেন। হয়তো সত্যিই খালা আয়ানা আপুকে ভালোবাসেন একমাত্র ভাতিজি বলে কথা। মনেমনে এসব ভাবছিলো সায়ারা সুয়ে সুয়ে।
– কি রে সায়ু পিচ্চি তোর মন খারাপ কেন?
– তেমন কিছু না আপু আসলে ভাবছি কিছু।
– কি এমন ভাবে এই পিচ্চি আমিও একটু শুনি।
সায়ারা’র কথা শেষ হতেই পিছন থেকে কেউ একজন বলে উঠলো কথাটি। দরজার দিকে না তাকিয়ে সায়ারা আর আয়ানা বুঝতে পারলো ডক্টর অর্ক এসেছে। সায়ারা’ কে পিচ্চি সম্মোধন করায় সায়ারা একটু ক্ষিপ্ত হলো তবে বুঝতে দিলো না কাওকে। সায়ারা চোখ বন্ধ করে সুয়ে আছে চুপচাপ আসলে সে এখন কি করনে বুঝতে না পেরে ওমন ভাবে পরে আছে। অর্কের তৃষ্ণার্ত আঁখিযুগোল তো কেবল এতো বছরের তৃষ্না মিটাচ্ছে তাকে দেখে। এই দেখায় কোনদিন কোনো ক্লান্তি আসবেনা। কতোগুলো দিন শুধু দূরে থেকেছে এই মানুষ টা কে পেতে অথচ ভাগ্যের এমন খেলা আজ হসলিটালের চার দেওয়ালের মাঝে এসে দেখা হলো তাদের। তবে অর্ক আজ মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে কাল থেকে সায়ারার জিবনে সায়ারার সায়ান ভাই ফিরত আসবে। সায়ান এসে সায়ানের দেওয়া প্রতিটা কথা রাখবে। সায়ান যে তার পিচ্চি কে সবার থেলে আগলে আগলে রাখবে। কেউ যেনো আর কোনো ক্ষ’তি করতে না পারে এই পিচ্চির সেই সব ব্যবস্থা সে করবে। আয়ানা ভাইকে ওভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ভাইয়ের দিকে এগিয়ে গেলো। ভাইয়ের কাধে হাত রেখে তাকে বললো।
– দেখিস সব ঠিক হয়ে যাবে ব্রো চিন্তা করিস না তুই।
– আমি তো চাই ছুটকি সব ঠিক হয়ে যাক, আজ জানিস ফুপ্পি আমাকে মানি অফার করছে যা তে সায়ারা কে মা’রা’র এই সাব আমি ধামাচাপা দিয়ে দেই। আমাকেও চিন্তে পারে নি। আমি না ছোটবেলার সেই ফুপির সাথে এই ফুপির কোনো মিল পাচ্ছি না।
– ভাই কি করবি কিভাবে সায়ারা কে আমাদের বাসায় নিবি ফুপ্পি আর সিয়াম কি রাজি হবে?
– ও টা তুই আমার উপর ছেড়ে দে। শোন তুই বাসায় গিয়ে সায়ারা আর তোর সব কিছু গুছিয়ে রাখবি আমি গিয়ে শুধু পিক করবো তোদের।
– আচ্ছা বাট সিয়াম কিছুতেই রাজি হবে না সায়ারা কে দিতে, একটা জিনিস বুঝতে পারলাম না সায়ারার হাত সত্যি কিভাবে পু/ড়/লো? ফুপ্পি করছে না কি সিয়াম আমরা তো সিউর নই। আর অই বোকা মেয়েও বলবে না।
– ওর বলার দরকার ও নাই ছুটকি, ডোন্ট ওয়ারি আম আছিনা দেখিস এখন থেকে সবাই ভালো থাকবে।
– আমি জানি তো আমার ব্রো সবার থেকে বেষ্ট তাই তো আমি আমার ব্রো কে এতো ভালোবাসি।
– আই লাভ ইউ টু মাই লিটল কিউটি।
আয়ানার আর অর্ককে অনেক্ক্ষণ ধরে ফিসফিস করে কথা বলতে দেখে যাচ্ছে সায়ারা। বেডের থেকে অনেক টা দূরে হওয়ায় ওদের কথা ঠিক বুঝতে পারলো না সে। সায়ারার খুব পানির পিপাসা পেয়েছে তাই সে এবার আয়ানা কে ডাল দিলো।
– আয়ানা আপু আমাকে একটু পানি এনে দিবে আমার খুব পিপাসা লেগেছে।
– আচ্ছা তুই বস আর ব্রো তুমি একটু ওর পাশে থাকো আমি আসছি পানি নিয়ে।
আয়ানা চলে যেতেই অর্ক এবার এগিয়ে বেডের কাছে রাখা টুল পেতে বসলো।
– আচ্ছ মিস সায়ারা আপনার পুরো নাম কি?
– আমার নাম সায়ারা জাহান।
– কোন ক্লাসে পড়েন আপনি?
– এইতো এবার ইন্টারে।
– হাতের এই অবস্থা কিভবে হলো এটার সত্যি এন্সার টা দিন ।
সায়ারা এইবার কি এন্সার দজবে ভেবে পাচ্ছে না কারণ সে কিভাবে বলবে এটা সিয়াম করছে। সিয়াম তো যাওয়ার আগে বারবার সাবধান করে গেছে সাথ্ব খালাও।
– ভুল করে হাত ফসকে পড়েছে।
– আমি কি আপনার কাছে কোনো বানানো গল্প শুনতে এসেছি মিস সায়ারা জাহান?
– আমি আপনাকে কেনো কোনো গল্প শুনাবো ডক্টর।
– আপনি না বললেও অনেক কিছুই জানি আমি। অন্যায় মেনে চুপ থাক সহ্য করা টা অন্যায় করার থেকেও বড় অপরাধ বুঝলেন আপনি?
– আমি আপনার কথা কিছুই বুঝতে পারছি না ডক্টর।
-ছেড়ে দিন সময় হলেই বুঝবেন আসি নিজের খেয়াল রাখবেন।
অর্ক চলে গেলো সায়ারা অর্কের যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে। অর্কের এমন অদ্ভুদ ব্যবহার তাকে ভাবাচ্ছে৷ আয়ানা পানি নিয়ে এসে সায়ারা কে খাওয়ালো । যথা সময় আয়ানা সায়ারাকে নিয়ে বাড়ি চলে গেলো৷ সায়ারা কে নিজের রুমে রেখে আয়ানা চলে গেলো তার রুমে ফ্রেস হতে তার গোসল প্রয়োজন। সায়ারা পা মেলে খাটের উপর আধ সোয়া হয়ে বসে বসে ভাবছে সায়ান ভাই কি তাকে মনে রেখেছে না কি ভুলে গেছে । সায়ারার ভাবনার মাঝেই সিয়াম সায়ারা খাটের উপ সুয়ে সায়ারার কোলে মাথা রাখলো। হঠাৎ এই ভাবে আসায় সায়ারা চমকে তাকিয়ে দেখে সিয়াম। সায়ারা প্রচন্ড অবাক হয়ে গেছে সিয়ামের কাজে৷
– এ কি সিয়াম ভাইয়া আপনি আমার কোলের উপর এভাবে সুয়ে আছেন কেনো উঠুন।।”
…চ ল বে..?