#অনিমন্ত্রিত_প্রেমনদী
#দ্বিতীয়_অধ্যায়
#পর্ব_২১
#জিন্নাত_চৌধুরী_হাবিবা
(কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ)
অরু হকচকিয়ে উঠলো। মস্তিষ্ক সচল হয়নি। চোখের ঘুম উবে গেল। কেন জান বেরিয়ে যাচ্ছে! সাং*ঘা*তি*ক কিছু ঘটলো না-কি? বুক ধড়ফড় করে উঠছে। দ্রুত বিছানা ছেড়ে দরজা খুলে দিল অরু। রামি কোন কথা না বলেই রুমে ঢুকে দরজা লক করে দিল। অরু ব্যতিব্যস্ত হয়ে রামির পিছু ছুটলো। বিচলিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“কী হয়েছে?”
রামি জবাব না দিয়ে অরুকে ঝট করে বুকে চেপে ধরে চোখ বুজলো। প্রলম্বিত শ্বাস ছেড়ে বলল,
“জান ফিরে এসেছে।”
অরুর কিছুই বোধগম্য হলো না। ভুরু কুঁচকে সবটা বোঝার চেষ্টা করছে। কিন্তু রামির কাছ থেকে আশানুরূপ কোন সাড়া না পেয়ে ওঁর বুক থেকে মাথা তুলে জিজ্ঞেস করলো,
“কী হয়েছে বলবে? জান বেরিয়ে যাচ্ছে মানে?”
রামি মাথা নিচু করে অরুর দিকে তাকিয়ে বলল,
“বউ ছেড়ে দূরে থাকতে আমার জান বেরিয়ে যাচ্ছিলো। এখন ঠিক আছে।”
রামির হাতে চাপড় মে*রে অরু কপট রা*গ দেখিয়ে বলল,
“ফাজলামো হচ্ছে? আমি কী না কী ভেবে চিন্তায় পড়ে গেলাম!”
রামি হাসলো।
“বরের জন্য চিন্তা করবি না তো কার জন্য করবি?”
এবার অরু দম নিয়ে বলল,
“এতরাতে এখানে কী?”
“এটা কার বাড়ি? আমার শশুর বাড়ি। তো আমি কোথায় থাকবো? নিশ্চয়ই আমার বউয়ের ঘরে!”
অরু সূঁচালো চোখে তাকিয়ে থেকে বলল,
“অর্ধরাত যেখানে ছিলে, সেখানে কী সমস্যা? ”
রামি ভাবলেশহীন গলায় বলল,
“সমস্যা আছে, বিরাট বড়ো সমস্যা। আমার এখন বউ ছাড়া ভালোলাগে না। লাগবে কী করে? দিনে-দুপুরে, সন্ধ্যায় বউ যদি হঠাৎ হঠাৎ আমাকে চমকে দেয়, তখন আমি কী করে দূরে থাকি?”
অরু অস্বস্তিতে পড়ে গেল। দৃষ্টি এলোমেলো। তাকে এদিক-ওদিক তাকাতে দেখে রামি বলল,
“এখন এত দূরে কেন?”
মিছেমিছি রাগ দেখালো অরু।
“যাও তো এখান থেকে। অযথা আমার ঘুম ভাঙিয়ে রঙ্গ করা হচ্ছে।”
রামি মিটিমিটি হেসে অরুর সান্নিধ্যে এলো। পেছন থেকে জড়িয়ে ধরতেই জমে গেল অরু। তার অস্বস্তির মাত্রা দ্বিগুণ হলো। হাত-পা শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছে। রামি পরপর অরুর দু-গালে দুটো চুম্বন করে ছেড়ে দিয়ে বলল,
“শোধবোধ করে দিলাম। আমি আবার ঋণ রাখি না। বরং বাড়তি দিতে পছন্দ করি।”
অরু এদিক-ওদিক না তাকিয়ে বিছানায় লম্বা হয়ে শুয়ে পড়লো। কাঁথা দিয়ে আপাদমস্তক ঢেকে নিয়েছে। একপাশে রামির জন্য জায়গা রেখেই শুয়েছে। রামি কোন কথা না বলেই খালি জায়গায় শুয়ে অরুকে কাঁথার উপর দিয়েই আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে নিলো।
রামি একটু পরই বাসা ছেড়ে যাচ্ছে। অথচ তার ব্যাগপত্র কিছুই গোছানো হয়নি। অরু ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরতেই তার ডাক পড়লো শশুরের ঘরে। ফ্রেশ হয়ে ওখানে যেতেই তরী বলল,
“তোর বরের ব্যাগ গুছিয়ে দে। দেখে তো মনে হচ্ছে যাওয়ার ইচ্ছেই নেই।”
এই বলে তরী ঠোঁট টিপে হাসলো। অরু আড়চোখে নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বসে থাকা রামিকে পর্যবেক্ষণ করে নিলো। তরী সরে যেতেই রামির পাশে বসলো। দ্বিধাদ্বন্দ কাটিয়ে রামির হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে হাতের দিকেই তাকিয়ে রইলো। রামি ও চোখ সরিয়ে হাতের দিকেই তাকালো। অতঃপর অরুর দিকে চোখ রাখতেই অরু নরম স্বরে বলল,
“মন খা*রা*প? আবার তো আসবেই। আমাদের দেখা হবে, ঝ*গ*ড়া হবে।”
রামি অরুর চোখে চোখ রেখে কন্ঠ খাদে নামিয়ে শুধালো,
“আর? আর কিছু না?”
অরু থমকে গেলেও কিছু সময়ের ব্যবধানে নিজেকে ধাতস্থ করে নিলো। মুখ কঠিন করে কিছু বলার চেষ্টা করেও হেসে ফেলে। রামি ও আলতো হাসে। গভীর স্বরে বলে,
“আমায় বাঁধা কেন দিচ্ছিস? দূরে কেন সরিয়ে রাখছিস অরু? সত্যি বলছি, সামনের ছুটিতে আমি বাড়ি আসবো না, যদি না তুই ফোন করে আমায় আসতে বলিস।”
অরু বি*দ্রু*প হেসে বলল,
“সে দেখা যাবে। ছুটি পেয়ে কে বাড়ি না এসে নিজেকে আটকাতে পারে।”
রামি সিরিয়াস হয়ে বলল,
“আমি হেয়ালি করছি না অরু। এবার সত্যিই আসবো না।”
অরু সরল চোখে তাকিয়ে হাসে। সে জানে রামি আসবে। ছুটে তার কাছে আসবে৷
রামির চোখে আজ সূক্ষ্ম অভিমান। সে জানে সে আগামী ছুটিতে বাড়ি আসবে না। কারণ অরু তাকে ডাকবে না। তবুও কীসের যেন অপেক্ষা! পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা!
নিজ হাতে রামির ব্যাগ গুছিয়ে দিল অরু। দুজনের মাঝে আর কথা হলো না। একেবারে নিজেকে তৈরি করে মা থেকে শুরু করে একে একে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে গেল রামি। বাদ পড়লো অরু। তার কাছ থেকে আর আলাদা করে বিদায় নিলো না। যাওয়ার পূর্বে আর পেছনে তাকিয়ে পিছুটান বাড়াতে চাইলো না রামি। অরুর কেন যেন বুকের খাঁচায় চিনচিনে ব্যথা অনুভব হলো। সে চাইলেই রামিকে হাসিমুখে বিদায় দিতে পারতো। আজ আর নিজের ঘরে গেল না। রাতের খাবার শেষে রামির ঘরে গিয়ে দরজা আটকে দিল। অরুর মন খা*রা*পি টের পেয়ে কেউ আর কিছু বললো না।
রামির ঘরের সবটাই গোছানো। বিকেলেই নিজ হাতে অরু গুছিয়েছে। এখন আবার অকারণেই সবকিছু ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখছে। আলমারি খুলে রামির টি-শার্ট বের করলো। বেছে বেছে কালো টি-শার্ট নিয়ে পরে ফেললো। বাকিগুলো বিছানার উপর ছড়িয়ে রেখেই শুয়ে পড়লো। ফোন হাতে নিয়ে দেখলো রামির একটাও কল মেসেজ নেই। অথচ রামি পৌঁছে গিয়ে মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে। অরুর রাগ হলো। এভাবে রাগ চেপে রাখলে নি*র্ঘা*ত সে মা*রা যাবে। রাগ ঝাড়া প্রয়োজন। যার রাগ তার উপরই ঝাড়বে বলে ঠিক করলো। রামির নাম্বারে লাগাতার কল দিয়ে গেল। কোন রেসপন্স নেই। ফোঁস করে বিছানায় উঠে বসলো অরু। রুমের আলো জ্বালিয়ে ভিডিও অপশন অন করলো।
নিজের গায়ের টি-শার্ট, বিছানায় ছড়িয়ে রাখা সব জামাকাপড় দেখিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“এই রামি দেখ্। তোর বউ আমি, তোর টি-শার্ট পরেছি। বাকি যেগুলো দেখা যাচ্ছে? সবগুলো দিয়ে আমি ঘর মুছবো, কে*টে কুচি কুচি করবো। এত বড়ো সাহস কেন তোর! আমাকে কল না দিয়ে আরাম করা হচ্ছে? আবার আমার কল ইনগোর করা হচ্ছে? গতকাল তো খুব বলা হচ্ছিলো, আমার জান বেরিয়ে যাচ্ছে। আজ কোন জানকে পেয়ে আমার কথা ভুলে বসে আছিস?”
একেবারে সব রাগ ঝেড়ে রামির হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও সেন্ড করে শান্ত হলো অরু। এবার ভালো ঘুম হবে। ফোন রেখে শুয়ে পড়লো।
অরুর উপর অভিমান করেই তাকে কল করা হয়নি। তার কল পেয়েও পুরোদমে ইগনোর করে গিয়েছে রামি। কিন্তু একটু আগে অরুর পাঠানো ভিডিও দেখে নিজের হাসি ধরে রাখতে পারে নি। শরীর দুলিয়ে শব্দ করে হাসছে। অভিমান হাওয়া হয়ে গেলেও অরুকে রাগানোর জন্যই অভিনয়ের পথ বেছে নিলো। ফিরতি কোন বার্তা পাঠালো না।
আধাঘন্টা না যেতেই অরু ফোন হাতে নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে ঢুকলো। রামি ভিডিওটা দেখেছে। এখন নিজের কাজে নিজেরই কেমন লজ্জা লাগছে। কী দরকার ছিল এতটা ছেলেমানুষী করার! এমন তুইতোকারি না করলেও পারতো! সাথে সাথে ভিডিও রিমুভ করে দিলো। তবুও শান্তি পাচ্ছে না। রামি কি ভিডিওটা ওপেন করে দেখেছে? দেখলে কী ভাবছে? একটু বেশিই বাড়াবাড়ি হয়ে গেল না। এসব ভেবেই ছটফট করে উঠলো সে।
ওদিকে রামি ভিডিওটি বারবার দেখছে আর হাসছে।
★★★
কয়েকদিনের লুকোচুরি খেলায় একেবারে হাঁপিয়ে উঠেছে সুহা। এখন আর ইবতেসামকেও এ রাস্তায় দেখা যায় না। আজ অবনির সাথে একসাথেই অফিস থেকে বের হলো। গাড়িতে চড়ার আগে রাস্তার এপাশ-ওপাশ ভালোভাবে দেখে নিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ত্যাগ করলো। কিছুদিন না দেখেই ইবতেসামের মোহ কে*টে গিয়েছে, এটাই ধরে নিলো সুহা। দু’জন বাসায় আসতেই কিছুটা চমকালো। বাসায় অনেকগুলো অপরিচিত মুখ। অবনির মা হাসিমুখে তাঁদের সাথে কথা বলছেন। সুহা কাউকে না চিনতে পারলেও অরুকে চিনতে তার ভুল হলো না। অরু বরাবরের মতোই মিষ্টি হাসি উপহার দিয়ে বলল,
“তোমার অপেক্ষাতেই ছিলাম।”
সুহার মনে আ*ত*ঙ্ক। শিওর হয়ে কিছু বলতেও পারছে না। তবে ইবতেসাম মিঠু যে তার বর্তমান ঠিকানা জেনে গিয়েছে সেটা আর বোঝার বাকি রইলো না। অবনির মা বললেন,
“দুজনই ক্লান্ত। যাও ফ্রেশ হয়ে আসো।”
সুহা আর অবনি নিজেদের রুমে ঢুকে পড়লো। অবনি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে সুহাকে বলল,
“উনাদের তুই চিনিস? মেয়েটা তোর সাথে যেমনভাবে কথা বললো, মনে হচ্ছে তোরা পূর্ব পরিচিত!”
সুহা করুণ চোখে তাকিয়ে বলল,
“মেয়েটা ইবতেসামের ছোটো বোন।”
“মানে? ওঁ এখানে কেন? আর তুই এখানে আছিস, সেটাই বা জানলো কী করে?”
“জানিনা।”
অবনি বলল,
“আচ্ছা টেনশন করার কিছু নেই। চল ফ্রেশ হয়ে বাইরে যাই। উনারা কীজন্য এসেছেন, সেটা অন্তত জানা যাবে।”
“হুম” বলে সুহা ফ্রেশ হয়ে এলো। পরপরই অবনি গেল। দুজন একসাথে বসার ঘরে আসতেই অরু উঠে সুহার হাত টে*নে বসিয়ে দিল তার আর তরীর মাঝখানে। তরী সামান্য ঠোঁট প্রসারিত করে হাসলো। সুহার মনে হলো সে চমৎকার কোন দৃশ্য দেখছে। সাধারণ একটা হাসিতেও কতটা স্নিগ্ধতা। অপলক নাম জানা মানুষটার হাসি দেখে গেল। তরী হাস্যজ্জ্বল গলায় বলল,
“মাশাআল্লাহ! ভারি মিষ্টি দেখতে তুমি। মিঠুর পছন্দ কোনকালেই ভালো ছিলো না। কিন্তু আজ তার পছন্দ বেশ বলতে হয়।”
অতঃপর বাবার দিকে তাকিয়ে বলল,
“দেখতো বাবা, পুত্রবধূ পছন্দ হয়েছে?”
বাবা কিছু বলার পূর্বেই অরু বলে উঠলো,
“পছন্দ না হয়ে যাবে কোথায়? বাবা যা-ই বলুক না কেন, বাবার ছেলে এই নদীতেই ম*রে*ছে।”
সকলেই অরুর কথায় হাসলো। সুহা অপরিচিতদের মাঝে লজ্জায় পড়লো। লজ্জার চেয়েও অস্বস্তি বেশি হচ্ছে। আয়েশা সুলতানা বললেন,
“আমার কাছে এসে বসো।”
সুহা অবনির মায়ের দিকে তাকাতেই তিনি ইশারা দিলেন যেতে। সুহা উঠে আয়েশা সুলতানার পাশে বসলো। তিনি নিচু গলায় সুহাকে বুঝালেন,
“আমরা তোমার সম্পর্কে সব জেনেই এসেছি। তোমার বান্ধবীর মায়ের সাথেও কথা হয়েছে। অতীতে কী হয়েছে সেটা আমরা জানতে চাই না। তবে তুমি কেন ঠু*ন*কো অতীত আঁকড়ে ধরে পুরো জীবন নষ্ট করবে? এর কোন মানে হয়?”
অরু আর তরীকে দেখিয়ে বললেন,
“ওদের দুজনের দিকে তাকাও। দুজনকেই আমি ছেলের বউ না মেয়ে হিসেবে মানি। আমার এক মেয়ে আমার কাছে থাকে না তো কী হয়েছে? বাকি তিনজনতো আমার কাছেই থাকে। মিঠুর বউ হয়ে গেলে তুমিও আমার আরেকটা মেয়ে হয়ে যাবে।”
সুহা এদের সবার মধ্যাকার সম্পর্কের সূতা ধরতে পারলো না। তার তাকিয়ে থাকা দেখে অরু ফিক করে হেসে ফেললো। বাবাকে দেখিয়ে বলল,
“ইনি আমার বাবা। আমার পাশে যাকে দেখছো, সে আমার আপু। আবার আমরা দুজনই জা। আর তুমি যার পাশে আছো, তিনি আমাদের শাশুড়ী মা।”
সুহার মাথার উপর দিয়ে গেল সবটা। তবে কোন প্রশ্ন করলো না। টুকটাক কথা সেরে সবাই চলে গেল। যাওয়ার আগে আয়েশা সুলতানা বলে গেলেন,
“নিজেকে নিয়ে আরেকবার ভেবে দেখ। আমরা তোমার মতামতের অপেক্ষায় আছি।”
মেহমান বিদায় নিতেই অবনি মাকে চেপে ধরলো।
“কী হয়েছে বলোতো? উনারা তোমাকে কী কী বললো, কেন আসলো?”
“এতক্ষণেও তুই বুঝিসনি? উনারা সুহার জন্য প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন। ছেলেকে না-কি তোরা আগে থেকেই চিনিস? সুহার সম্পর্কে সব খুটিনাটি তথ্যই তো উনারা জানেন দেখছি।”
অবনি বলল,
“এখন তুমি উনাদের কী বলেছো?”
অবনির মা সুহার দিকে ফিরে তার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
“ আমি আগাম কিছুই বলিনি। এভাবে আর কত মা? এবার তো নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করো। এই জগতে একা চলা খুব কঠিন। তুমি সামান্য বাসা ম্যানেজ করতে গিয়েই বুঝেছো, আমার আর বলার প্রয়োজন নেই। আমরা তোমার উপর কিছুই চাপিয়ে দিচ্ছি না। ভালোমন্দ খোঁজখবর নিয়ে তবেই এগোবো। শুধু তোমার একটা হ্যাঁ বাকি।”
সুহা চুপ করে রইলো। অবনির মা দুজনকে একা ছেড়ে নিজের কাজে চলে গেলেন। অবনি সুহার পাশে ধপ করে বসে বলল,
“সুহা, এবার আমারও মনে হচ্ছে তোর একবার ভেবে দেখা উচিত। ইবতেসাম যদি তোকে পছন্দই না করতো, তাহলে পরিবার পাঠাতো না। তোকে এভাবে খুঁজে বের করার প্রয়োজন মনে করতো না।”
সুহা অবনির কথারও কোন প্রত্যুত্তর করলো না। রাতে সেই পুরোনো নাম্বার থেকে কল আসতে দেখে সুহা বিস্মিত হলো। বাসা ছাড়ার পরই সে পুরোনো সিম বাদ দিয়ে নতুন সিম নিয়েছে। তাহলে এই নাম্বার কোথায় পেল ইবতেসাম? এই মুহূর্তে কথা বলার ইচ্ছে করছে না তার। তাই বারবার কল কে*টে দিচ্ছে। মিঠুর নাম্বার থেকে মেসেজ এলো,
“কল কে*টে দিচ্ছেন? পালিয়ে বেড়াচ্ছেন? যা ইচ্ছে করুন। আমার তাতে সমস্যা নেই। তবে আমার কাজেও যেন আপনার কোন সমস্যা না থাকে।”
সুহা মেসেজ পড়ে রেগে গেল। পরপরই কল ব্যাক করলো। ঝাঁঝালো স্বরে বলল,
“এ্যাই আপনি কী করবেন? সমস্যা কী আপনার? আপনি আমাকে থ্রে*ট দিচ্ছেন?”
মিঠুর ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি লেপ্টে আছে। অ*ভ*দ্র গলায় বলল,
“দারুণ তো। এমন দু-একটা ঝাঁঝালো ধমক শোনার জন্য হলেও আমার আপনাকে চাই।”
সুহা অতিরিক্ত রাগে ফোন কে*টে দিল।
#চলবে……….
(রি-চেইক করা হয়নি। বানান ভুল থাকতে পারে।)