শ্রাবণ দিনের প্রেম পর্ব ৪

0
448

#শ্রাবণ_দিনের_প্রেম
#নুসাইবা_ইভানা
#পর্ব -৪

‘রাস্তা ছাড়েন ডাক্তার অভ্র!
‘রাস্তা ছাড়ার জন্য আটকাইনি, মিস হবু ডাক্তার।
‘আপনার সাথে আমার এমন কোন সম্পর্ক নেই, যার সুবাদে আপনি এই বিহেভ আমার সাথে করতে পারেন!
‘আচ্ছা আমাদের কি ব্রেকআপ হয়েছে!
‘এই রাতের বেলা আপনার সাথে ফালতু টপিক নিয়ো কথা বলার, মুড বা ইচ্ছে কোনটাই নেই। সো আপনি আপনার রাস্তায় আমি আমার রাস্তায়!
‘আপনার, তোমার কোন রাস্তা নেই রেইনবো। তোমার রাস্তা-ই আমার রাস্তা। আমার রাস্তা-ই তোমার রাস্তা। এখন বলো তো! আমাদের কি ব্রেকআপ হয়েছে?
‘আপনার সাথে ফালতু কথা বলার টাইম আর ইচ্ছে কোনটাই নেই।
‘না মানে একজান বলেছিলে,সম্পর্ক থাকলে বিচ্ছেদ হয়, প্রেম থাকলেও বিচ্ছেদ হয়। কিন্তু ভালোবাসার নাকি কোন বিচ্ছেদ নেই! তাই জিজ্ঞেস করলাম।
‘জীবন থেকে সময় আর কথা দু’টোই হারিয়ে যায়। আর আমি হারানো জিনিস ফিরে পেতে চাইনা। আমি চাই সব হারিয়ে যাও জিনিস নিখোঁজ হোক৷ আমার জীবন থেকে সেসব একবারের জন্য মুছে যাক।
‘আলিশা ‘আই লাভ ইউ!
‘আমি আপনাকে ঘৃনা করি। আই হেট ইউ।

‘তোমার ঘৃনার মধ্যে ভালোবাসা খুঁজে নেবো। তবুও ছেড়ে যেও না প্লিজ।
‘যে বিহেভ আপনি করছেন, সেটা আসলে আপনি না। আপনানকে এমন শান্ত মেজাজ দেখে হাসি পাচ্ছে। বাইদা ওয়ে আলিশা দ্বিতীয় বার কাউকে সুযোগ দেয় না। আর হ্যা আপনি বলেছিলেন,আমার মত,আলিশার টাকা ছিটালে অভাব হবে না ! সো তাদের কাছে যেতে পারেন, না আপনি আর না আপনার টাকা, দু’টোর কোনটার দরকার নেই আমার।

‘সম্পর্কে ঝগড়া, মান অভিমান থাকবেই! তাই বলে সম্পর্ক শেষ করে দিতে হবে!
‘মানঅভিমান আর অসম্মান, অপমান ভিন্ন জিনিস।

‘দেখো এতোক্ষণ ধরে ভালো ভাবে বলছি, এরপর আর ভালো ভাবে বলবো না, সোজা তুলে নিয়ে গিয়ে কোর্ট ম্যারেজ করবো। আহিয়ান আনান অভ্র আজ পর্যন্ত কোন কিছু চেয়ে পায়নি এমন হয়নি।
‘জোড় করে শরীর পাওয়া যায়, মন না। অবশ্য আপনার দরকার তো আমার শরীর।

‘অভ্র নিজের গাড়ীর সাথে আলিশাকে, চেপে ধরে বলে,ডোন্ট ক্রস ইউর লিমিট! আমি তোমাকে ভালোবাসি তাই চেয়েছি তোমার সাথে ইন্টিমেট হতে। কিন্তু তার মানে এটা নয় আমার ভালোবাসা মিথ্যে। আর আজকাল বিয়ের আগে এসব হচ্ছে। এটা এমন কোন বিষয় না।

‘সো হোয়াট মিস্টার অভ্র! আপনি জানেন আমি কেমন, আমার ফ্যামিলি কেমন! আপনি কি করে ভাবলেন আমি এসব মেনে নেবো! তারমানে আপনি আমাকে বুঝতেই পারেনি! আলিশা অভ্রের হাতে দাঁত বসিয়ে দিলো। অভ্র আলিশাকে ছেড়ে দিলো। আলিশার দিকে তাকিয়ে বলে, মানে এখন তুমি বাচ্চাদের মত কামড়া, কামড়ি করবে!

‘আলিশা কিছু বলবে তার আগেই ঈশান বলে, আলু তুই এখানে, তোকে পুরো কলেজ খুঁজে আসলাম!

‘তুই কেন এসেছিস!
‘মামি পাঠিয়েছে তুই এখন আমার সাথে আমাদের বাড়িতে যাবি। চল।
‘ইনি কে রে! আলু?
‘অভ্র নিজেই হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে, আমি ডাক্তার অভ্র। তুমি নিশ্চয়ই বড় ফুপির ছোট ছেলে ঈশান।
‘হ্যা একদম।কিন্তু আপনি জানলেন কি করে!
‘হবু শ্বশুর বাড়ির এতোটুকু খোঁজ রাখবো না!

‘ মানে কিছুই বুঝলাম না!
‘ঈশান কিছু মানুষের জেগে জেগে স্বপ্ন দেখে। তাদের কথা বাদ দে চল।
‘শালা বাবু কিছু মানুষ অভিমান করে ওই দূর আকাশের মেঘের মত। কিন্তু মেঘ কে’টে গেলে তারা কিন্তু আমার হাসোজ্জল!

আলিশা, ঈশানের বাইকে বসে, অভ্র কে উদ্দেশ্য করে বলল,যাকে ছেড়ে দিয়েছি তাকে ফিরিয়ে নেয়ার মত মেয়ে আলিশা না!

আলিশা চলে যেতেই, রোদ বলে, অভ্র তুই এসব কি করছিস! নিজেকে একবার দেখ, তোর সাথে এসব যায় না। তুই ডাক্তার অভ্র যার জন্য কত মেয়েরা পাগল!
‘আমার কত মেয়েকে চাই না এখন আমি আলিশাকে চাই, মানে ওকেই আমার লাগবে।

‘কিছু দূর এসে ঈশান বলে, তবে যাই বলিস জিজুকে কিন্তু আমার পছন্দ হয়েছে। হ্যান্ডসাম আর ড্যাশিং।
‘ঈশান চুপচাপ বাইক ড্রাইভ কর। আর জিজু কে রে! ও একটা হাফ মেন্টাল।
‘বুঝি, বুঝি নিশ্চয়ই ঝগড়া হয়েছে। ব্যাপার না এসব তো থাকবেই। তবে আমি কনফিউজড আসলে আমার জিজুকে!
‘বাইক থামা, এক্ষুনি থামা।
‘কি হলো!
‘জিজুকে কনফিউজড মানে?
‘যার সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোমার ভিডিও ভাইরাল। কি সুন্দর ক্যাপশন। বৃষ্টি বিলাসে মজেছে কপোত-কপোতী।
‘হোয়াট!
‘তুমি জানোনা এই দেখো।
‘এসব কি? এসবের মানে কি? কে করলো!
‘দু’দিন ধরে এটা ভাইরাল টপিক কত কত সুন্দর সুন্দর কমেন্ট।
‘আলিশা ঈশানকে সবটা খুলে বললো।
‘কিন্তু একটা বড় ভুল হয়ে গেছে। আগামীকাল এই ছেলে তোমাকে দেখতে আসবে।
‘মানে! আমার কোন মতামত নেই! আমাকে একবার জিজ্ঞেস করবে না!

‘আমি এখন পালবো তোর সাথে। বাইক ঘোরা।
‘না না তোকে আমি বিয়ে করবো না। আমার জিএফ আছে ‘হৃদা। ওকে আমি খুব ভালোবাসি।
‘তোকে বিয়ে করবে কে রাম ছাগল।তুই শুধু আমার সাথে থাকবি আমাকে রক্ষা করার জন্য।
‘তুই বাসায় চল, দেখতে আসলেই বিয়ে হয়ে যায় না। সবাইকে সবটা বুঝিয়ে বল।
‘তোর ভরসায় যাচ্ছি যদি আমার কথা কেউ না শুনে তবে তুই কিন্তু আমাকে নিয়ে পালাবি।
‘হ তোর তো আমাকে ফাঁসাতেই হবে।
‘ভাই হিসেবে এটা তোর দ্বায়ীত্ব।
‘মেরি বেহনা জো আপকা মার্জি।

✨মানাফ অফিস থেকে বের হয়ে গাড়ীতে বসবে এমন সময়, সুহানা এসে বলে, স্যার প্লিজ হেল্প মি!
‘কি সমস্যা?
‘আমাকে একটু লিফট দিতে হবে।
মানাফ আর কোন কথা না শুনে ড্রাইভারকে বলর,ড্রাইভার তাড়াতাড়ি চলো রেট হচ্ছে আমার।
‘সুহানা বোকার মত দাঁড়িয়ে রইলো। মনে মনে বরছে বজ্জাত ছেলে, লিফট দেবেনা বলে দিলেই হয়।

সুহানা একটা রিকশা ডেকে রিকশায় উঠে বসে, নিজের মোবাইল বের করে হুমায়রা কে কল করলো।
ওপাশ থেকর রিসিভ হতেই, সুহানা বলে,একবার বিয়েটা হতে দাও ননদী, তোমার ভাইয়ের একদিন কি আমার যতদিন লাগে!
‘তা হয়েছে কি সুহানা আপি?
‘তোমার ভাই তো এ্যাটিটিউডের বস্তা।
‘আচ্ছা আপি, তুমি কি জানো কাল ভাইয়ার জন্য মেয়ে দেখতে যাবে!
‘মানে কি বলছো! জানোনা তোমার ভাইয়ের সাথে আমার বিয়ের কথা চলছে!
‘সেটাই তো আমি নিজেও বুঝতে পারছিনা কি হচ্ছে!
সুহানা কল কেটে দিলো। হুট করে মুড খারাপ হয়ে গেলো। এটা কি করে হতে পারে!মানাফ শুধু আমার। আমি থাকতে ও অন্য কাউকে কেন দেখতে যাবে! স্বান্ত নদী যেমন জোয়ারে ভরে উঠে, ঠিক তেমন ভাবে সুহানার চোখ ভরে উঠলো৷

✨সেলিনা বেগম তার হ্যাসবেন্ট মনির সাহেবকে বললেন,কথা ছিলো মানাফের জন্য আমার ভাইয়ের মেয়ে সুহানাকে বউ করে আনবে!
‘কত কথাই তো থাকে। সব কথা কি রাখা হয়! ছেলে বড় হয়েছে তার ইচ্ছে আছে। আমাদের কি এতে?
‘তাই বলে, একবার মেয়েটার কথা ভাববে না। কত আশা ছিলো এ বাড়ির বউ হবে!
‘জীবনে কার সব আশা পূরণ হয় বলো তো!
‘কিন্তু এটা তো ধোঁকা একরকম।
‘ব্যাস অনেক হয়েছে আর একটা কথাও শুনতে চাই না এ বিষয়ে।

মানফ নিজের রুম থেকে বের হয়ে বলে, কোন কথা আর হবে না বাবা!

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here